ঢাকা ০১:২৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ মে ২০২৪, ৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

কিংবদন্তি গায়ক ডেভিড ক্রসবি মারা গেছেন

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৪:০৮:০৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ জানুয়ারী ২০২৩
  • / ৪৬২ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

বিনোদন ডেস্ক : 

যুক্তরাষ্ট্রের প্রবীণ মার্কিন রক সঙ্গীত তারকা ও গীতিকার ডেভিড ক্রসবি মারা গেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮১ বছর। গায়কের প্রতিনিধি তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) এক বিবৃতিতে এসব তথ্য জানিয়েছে ডেভিড ক্রসবির পরিবার।

এ বিবৃতিতে বলা হয়েছে আমরা অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি, দীর্ঘ দিন অসুস্থ থাকার পর আমাদের প্রিয় ডেভিড ক্রসবি মারা গেছে।’ ডেভিডের পরিবারের মুখপাত্র সিএনএনকে বলেন, ‘তিনি আর আমাদের মাঝে নেই। কিন্তু তার মানবিক ও দয়ালু আত্মা আমাদের পথ দেখাবে, অনুপ্রেরণা জুগাবে। তিনি বেঁচে থাকবেন তার গানে গানে।

১৯৬০ এর দশকের বিখ্যাত ব্যান্ড ‘দ্য বার্ডস’ এবং ‘ক্রসবি, স্টিলস অ্যান্ড ন্যাশ’–এর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন এই গায়ক। প্রখ্যাত গিটারিষ্ট হিসেবে তিনি সঙ্গীত জগতে সুপরিচিত ছিলেন।

ক্রসবির স্ত্রী জ্যান ডান্স বিনোদন গণমাধ্যম ভ্যারাইটিকে জানান, দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থতায় ভুগছিলেন গায়ক। অবশেষে মৃত্যুকে বরণ করে নিয়েছেন। তার কিংবদন্তি সঙ্গীতের মাধ্যমে বেঁচে থাকবে তার উত্তরাধিকার।

প্রায় সাত দশকের ক্যারিয়ারে ব্যান্ডের পাশাপাশি একক গানও প্রকাশ করেছেন তিনি। বিশ্বজুড়ে আলোচিত ‘এইট মাইলস হাই’, ‘উডেন শিপস’, ‘অলমোস্ট কাট মাই হেয়ার’–এর মতো গানের সহলেখক ছিলেন ডেভিড। ‘দ্য বার্ডস’ ও ‘ক্রসবি, স্টিলস অ্যান্ড ন্যাশ’-ব্যান্ডের সদস্যদের সঙ্গে এসব গান লিখেছিলেন তিনি।

১৯৪১ সালের ১৪ আগস্ট ক্যালিফোর্নিয়ায় জন্ম নেওয়া ক্রসবি ষাটের দশকে লস অ্যাঞ্জেলেসে চলে যান। তিনি অস্কার বিজয়ী হলিউড চিত্রগ্রাহক ফ্লয়েড ক্রসবির পুত্র। ১৯৬৩ সালে রজার ম্যাকগুইন ও জেনে ক্লার্কের সঙ্গে ‘দ্য বার্ডস’ গঠন করেন তিনি। ‘দ্য বার্ডস’ একটি লোকসঙ্গীত রক গ্রুপ। গ্রুপটি বব ডিলানের ‘ট্যাম্বোরিন ম্যান’-এর মাধ্যমে প্রথম জনপ্রিয়তা লাভ করে। ১৯৬৫ সালে সেরা নতুন শিল্পী হিসেবে গ্র্যামির মনোনয়ন পেয়েছিল ব্যান্ডটি। ১৯৬৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ব্যান্ডের গান ‘টার্ন! টার্ন! টার্ন!’ বেশ আলোচিত হয়েছিল।

১৯৬৯ সালে ‘স্টিলস এবং ন্যাশ’ নামে একটি ব্যান্ড দল প্রতিষ্ঠা করেন ক্রসবি। খুব শীঘ্রই একটি সুপারগ্রুপ হিসেবে জনপ্রিয়তা পায় ব্যান্ডটি। ব্যান্ডে থাকাকালীন ক্রসবির লেখা হিট গানগুলোর মধ্যে রয়েছে হিপি সঙ্গীত ‘অলমোস্ট কাট মাই হেয়ার’ এবং ‘দেজা ভু।’ ১৯৭১ সালে তার প্রথম অ্যালবাম ‘ইউ আই কুড অনলি রিমেম্বার মাই নেম’ প্রকাশিত হয়। তার চতুর্থ অ্যালবাম ‘ক্রজ’ বিলবোর্ড টপ ১০০ চার্টে জায়গা করে নিয়েছিল। বার্ডস (১৯৯১) এবং ‘ক্রসবি, স্টিলস অ্যান্ড ন্যাশ’ (১৯৯৭) এর সদস্য হিসাবে তিনি দুইবার ‘রক অ্যান্ড রোল’ হল অফ ফেমে অন্তর্ভুক্ত হন।

জীবনের এক পর্যায়ে মাদকাসক্ত হয়ে পড়েন ডেভিড ক্রসবি। ১৯৯৬ সালে মাস পাঁচেক কারাগারে থাকতে হয়েছিল তাকে। শরীরে নানা রোগ দানা বাঁধতে থাকে। কারাগারে যাওয়ার আগেই তার লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট করাতে হয়েছিল; সঙ্গে হৃদ্রোগ ও ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ছিলেন তিনি।

সাংস্কৃতিক রাজনীতি এবং ট্রেডমার্ক গোঁফের পাশাপাশি তার সঙ্গীত জীবনের জন্য পরিচিত হয়ে ওঠেন ক্রসবি। ২০২১ সালে প্রকাশিত তার সর্বশেষ অ্যালবাম ‘ফর ফ্রি’র মাধ্যমে দীর্ঘ ছয়-দশকের কর্মজীবনের সমাপ্তি ঘটে এই বিখ্যাত গায়কের। তবে সঙ্গীত জীবনের বাইরে ক্রসবি একাধিকবার আইনি জটিলতায় জড়িয়েছিলেন। ১৯৮২ সালে মাদক ও অস্ত্রের অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছিলেন এই তারকা।

ব্যক্তিগত জীবনে জান ড্যান্সকে বিয়ে করেন ডেভিড ক্রসবি। ১৯৮৭ সালে তাদের বিয়ে হয়। এ সংসারে তাদের একটি পুত্রসন্তান রয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

কিংবদন্তি গায়ক ডেভিড ক্রসবি মারা গেছেন

আপডেট সময় : ০৪:০৮:০৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ জানুয়ারী ২০২৩

বিনোদন ডেস্ক : 

যুক্তরাষ্ট্রের প্রবীণ মার্কিন রক সঙ্গীত তারকা ও গীতিকার ডেভিড ক্রসবি মারা গেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮১ বছর। গায়কের প্রতিনিধি তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) এক বিবৃতিতে এসব তথ্য জানিয়েছে ডেভিড ক্রসবির পরিবার।

এ বিবৃতিতে বলা হয়েছে আমরা অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি, দীর্ঘ দিন অসুস্থ থাকার পর আমাদের প্রিয় ডেভিড ক্রসবি মারা গেছে।’ ডেভিডের পরিবারের মুখপাত্র সিএনএনকে বলেন, ‘তিনি আর আমাদের মাঝে নেই। কিন্তু তার মানবিক ও দয়ালু আত্মা আমাদের পথ দেখাবে, অনুপ্রেরণা জুগাবে। তিনি বেঁচে থাকবেন তার গানে গানে।

১৯৬০ এর দশকের বিখ্যাত ব্যান্ড ‘দ্য বার্ডস’ এবং ‘ক্রসবি, স্টিলস অ্যান্ড ন্যাশ’–এর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন এই গায়ক। প্রখ্যাত গিটারিষ্ট হিসেবে তিনি সঙ্গীত জগতে সুপরিচিত ছিলেন।

ক্রসবির স্ত্রী জ্যান ডান্স বিনোদন গণমাধ্যম ভ্যারাইটিকে জানান, দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থতায় ভুগছিলেন গায়ক। অবশেষে মৃত্যুকে বরণ করে নিয়েছেন। তার কিংবদন্তি সঙ্গীতের মাধ্যমে বেঁচে থাকবে তার উত্তরাধিকার।

প্রায় সাত দশকের ক্যারিয়ারে ব্যান্ডের পাশাপাশি একক গানও প্রকাশ করেছেন তিনি। বিশ্বজুড়ে আলোচিত ‘এইট মাইলস হাই’, ‘উডেন শিপস’, ‘অলমোস্ট কাট মাই হেয়ার’–এর মতো গানের সহলেখক ছিলেন ডেভিড। ‘দ্য বার্ডস’ ও ‘ক্রসবি, স্টিলস অ্যান্ড ন্যাশ’-ব্যান্ডের সদস্যদের সঙ্গে এসব গান লিখেছিলেন তিনি।

১৯৪১ সালের ১৪ আগস্ট ক্যালিফোর্নিয়ায় জন্ম নেওয়া ক্রসবি ষাটের দশকে লস অ্যাঞ্জেলেসে চলে যান। তিনি অস্কার বিজয়ী হলিউড চিত্রগ্রাহক ফ্লয়েড ক্রসবির পুত্র। ১৯৬৩ সালে রজার ম্যাকগুইন ও জেনে ক্লার্কের সঙ্গে ‘দ্য বার্ডস’ গঠন করেন তিনি। ‘দ্য বার্ডস’ একটি লোকসঙ্গীত রক গ্রুপ। গ্রুপটি বব ডিলানের ‘ট্যাম্বোরিন ম্যান’-এর মাধ্যমে প্রথম জনপ্রিয়তা লাভ করে। ১৯৬৫ সালে সেরা নতুন শিল্পী হিসেবে গ্র্যামির মনোনয়ন পেয়েছিল ব্যান্ডটি। ১৯৬৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ব্যান্ডের গান ‘টার্ন! টার্ন! টার্ন!’ বেশ আলোচিত হয়েছিল।

১৯৬৯ সালে ‘স্টিলস এবং ন্যাশ’ নামে একটি ব্যান্ড দল প্রতিষ্ঠা করেন ক্রসবি। খুব শীঘ্রই একটি সুপারগ্রুপ হিসেবে জনপ্রিয়তা পায় ব্যান্ডটি। ব্যান্ডে থাকাকালীন ক্রসবির লেখা হিট গানগুলোর মধ্যে রয়েছে হিপি সঙ্গীত ‘অলমোস্ট কাট মাই হেয়ার’ এবং ‘দেজা ভু।’ ১৯৭১ সালে তার প্রথম অ্যালবাম ‘ইউ আই কুড অনলি রিমেম্বার মাই নেম’ প্রকাশিত হয়। তার চতুর্থ অ্যালবাম ‘ক্রজ’ বিলবোর্ড টপ ১০০ চার্টে জায়গা করে নিয়েছিল। বার্ডস (১৯৯১) এবং ‘ক্রসবি, স্টিলস অ্যান্ড ন্যাশ’ (১৯৯৭) এর সদস্য হিসাবে তিনি দুইবার ‘রক অ্যান্ড রোল’ হল অফ ফেমে অন্তর্ভুক্ত হন।

জীবনের এক পর্যায়ে মাদকাসক্ত হয়ে পড়েন ডেভিড ক্রসবি। ১৯৯৬ সালে মাস পাঁচেক কারাগারে থাকতে হয়েছিল তাকে। শরীরে নানা রোগ দানা বাঁধতে থাকে। কারাগারে যাওয়ার আগেই তার লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট করাতে হয়েছিল; সঙ্গে হৃদ্রোগ ও ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ছিলেন তিনি।

সাংস্কৃতিক রাজনীতি এবং ট্রেডমার্ক গোঁফের পাশাপাশি তার সঙ্গীত জীবনের জন্য পরিচিত হয়ে ওঠেন ক্রসবি। ২০২১ সালে প্রকাশিত তার সর্বশেষ অ্যালবাম ‘ফর ফ্রি’র মাধ্যমে দীর্ঘ ছয়-দশকের কর্মজীবনের সমাপ্তি ঘটে এই বিখ্যাত গায়কের। তবে সঙ্গীত জীবনের বাইরে ক্রসবি একাধিকবার আইনি জটিলতায় জড়িয়েছিলেন। ১৯৮২ সালে মাদক ও অস্ত্রের অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছিলেন এই তারকা।

ব্যক্তিগত জীবনে জান ড্যান্সকে বিয়ে করেন ডেভিড ক্রসবি। ১৯৮৭ সালে তাদের বিয়ে হয়। এ সংসারে তাদের একটি পুত্রসন্তান রয়েছে।