ঢাকা ০৪:২৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

ওদের ঈদ আনন্দ বিষাদে পরিণত করেছে ভাঙন

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৩:৫৭:১৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৬ জুন ২০২৩
  • / ৪৯১ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

// মাহবুবুল আলম, শাহজাদপুর //

আর দু’দিন পরেই মুসলিমদের পবিত্র ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা অনুষ্ঠিত হবে। ক’দিন হলো যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধির সাথে শুরু হয়েছে তীব্র ভাঙন। ফলে নদী ভাঙা মানুষের বরাতমানে প্রতিটি দিন প্রতি মুহুর্ত কাটছে চরম উদ্বেগ আর উৎকন্ঠায়! কখন বুঝি ওদের ঘরবাড়ি, সহায় সম্বল যমুনার কড়াল গ্রাসে চলে যায়- এ শংকায় সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার যমুনা ভাঙন কবলিত এলাকাবাসীর মাঝে ঈদ নিয়ে নেই কোন উৎসাহ উদ্দীপনা! ঈদের দিন আর সবার মতো পরিবার পরিজন নিয়ে ওরাও চায় একটু ফিরনি-সেমাই, একটু ভালোমন্দ খেতে; নতুন জামা কাপড় পড়তে! কিন্তু প্রবলা, প্রমত্তা, প্রগলভা, উত্তাল যমুনা যেভাবে ভাঙনের তান্ডবলীলা চালিয়ে যাচ্ছে তাতে নদী ভাঙন কবলিত চির অবহেলিত, চির পতিত, চির অপাংক্তেয়, যাদের বুক ফাঁটলেও মুখ ফোঁটেনা ; যাদের বিচারের বাণী নিরবে নিভৃতেই কাঁদছে-তাদের মাঝে ঈদের আনন্দ যেন বিষাদে পরিণত হচ্ছে !

শাহজাদপুর উপজেলার কৈজুরী ইউনিয়ন হাটপাঁচিল , জালালপুর ইউনিয়নের আরকান্দিসহ এনায়েতপুরের বিভিন্ন পয়েন্টে নতুন করে ভাঙন শুরু হওয়ায় আতঙ্কে দিন পার করেছে যমুনা ভাঙন এলাকার মানুষ।

তীব্র এই নদী ভাঙনে গত কয়েকদিনে প্রায় শতাধিক ঘর-বাড়ী ফসলি জমি ও গাছপালাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। ঈদ উদযাপন তো দূরের কথা তাদের এখন শেষ সম্বল ঘরবাড়ি সরানোর চিন্তায়ই দিন কাটছে। এদিকে ঘর ভেঙে অন্যত্র সরাতে মিস্ত্রি না পাওয়ায় অনেক ঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়াও এনায়েতপুরের যে অঞ্চলে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের জন্য অর্থবরাদ্দ হয়ে সে সকল অঞ্চলেও কাজের ধীর গতির কারণে ভাঙন রোধ সম্ভব হচ্ছে না।

যমুনার ভাঙন কবলিত উপজেলার কৈজুরী ইউনিয়নের হাটপাচিঁল গ্রামের ইয়াসিন সরকার চতুর বলেন, গত কয়েক দিনের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে যমুনা নদীতে প্রচুর পরিমাণে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নদী ভাঙন ভয়ংকর রূপ ধারণ করেছে। এতে আমরা খুব আতঙ্কে আছি। আমাদের নেই ঈদের আনন্দ। আল্লাহ’র কাছে একটাই চাওয়া আমাদের শেষ ভিটেমাটি যেন তিনি রক্ষা করেন।  সরকারও যেন দ্রুত স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের মাধ্যমে আমাদের একটু ভালোভাবে খেয়ে পড়ে বেঁচে থাকার সুযোগ করে দেয়।

এ ব্যাপারে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান জানান, ভাঙন রোধে বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। তবে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণে আরো সময় লাগবে।

অন্যদিকে, শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাদিয়া আফরিন জানান, বন্যা ও ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তদের ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে তালিকা করে তাদের সহায়তা ও পুর্নবাসনের ব্যবস্থা করার হবে ।

নিউজটি শেয়ার করুন

ওদের ঈদ আনন্দ বিষাদে পরিণত করেছে ভাঙন

আপডেট সময় : ০৩:৫৭:১৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৬ জুন ২০২৩

// মাহবুবুল আলম, শাহজাদপুর //

আর দু’দিন পরেই মুসলিমদের পবিত্র ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা অনুষ্ঠিত হবে। ক’দিন হলো যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধির সাথে শুরু হয়েছে তীব্র ভাঙন। ফলে নদী ভাঙা মানুষের বরাতমানে প্রতিটি দিন প্রতি মুহুর্ত কাটছে চরম উদ্বেগ আর উৎকন্ঠায়! কখন বুঝি ওদের ঘরবাড়ি, সহায় সম্বল যমুনার কড়াল গ্রাসে চলে যায়- এ শংকায় সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার যমুনা ভাঙন কবলিত এলাকাবাসীর মাঝে ঈদ নিয়ে নেই কোন উৎসাহ উদ্দীপনা! ঈদের দিন আর সবার মতো পরিবার পরিজন নিয়ে ওরাও চায় একটু ফিরনি-সেমাই, একটু ভালোমন্দ খেতে; নতুন জামা কাপড় পড়তে! কিন্তু প্রবলা, প্রমত্তা, প্রগলভা, উত্তাল যমুনা যেভাবে ভাঙনের তান্ডবলীলা চালিয়ে যাচ্ছে তাতে নদী ভাঙন কবলিত চির অবহেলিত, চির পতিত, চির অপাংক্তেয়, যাদের বুক ফাঁটলেও মুখ ফোঁটেনা ; যাদের বিচারের বাণী নিরবে নিভৃতেই কাঁদছে-তাদের মাঝে ঈদের আনন্দ যেন বিষাদে পরিণত হচ্ছে !

শাহজাদপুর উপজেলার কৈজুরী ইউনিয়ন হাটপাঁচিল , জালালপুর ইউনিয়নের আরকান্দিসহ এনায়েতপুরের বিভিন্ন পয়েন্টে নতুন করে ভাঙন শুরু হওয়ায় আতঙ্কে দিন পার করেছে যমুনা ভাঙন এলাকার মানুষ।

তীব্র এই নদী ভাঙনে গত কয়েকদিনে প্রায় শতাধিক ঘর-বাড়ী ফসলি জমি ও গাছপালাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। ঈদ উদযাপন তো দূরের কথা তাদের এখন শেষ সম্বল ঘরবাড়ি সরানোর চিন্তায়ই দিন কাটছে। এদিকে ঘর ভেঙে অন্যত্র সরাতে মিস্ত্রি না পাওয়ায় অনেক ঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়াও এনায়েতপুরের যে অঞ্চলে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের জন্য অর্থবরাদ্দ হয়ে সে সকল অঞ্চলেও কাজের ধীর গতির কারণে ভাঙন রোধ সম্ভব হচ্ছে না।

যমুনার ভাঙন কবলিত উপজেলার কৈজুরী ইউনিয়নের হাটপাচিঁল গ্রামের ইয়াসিন সরকার চতুর বলেন, গত কয়েক দিনের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে যমুনা নদীতে প্রচুর পরিমাণে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নদী ভাঙন ভয়ংকর রূপ ধারণ করেছে। এতে আমরা খুব আতঙ্কে আছি। আমাদের নেই ঈদের আনন্দ। আল্লাহ’র কাছে একটাই চাওয়া আমাদের শেষ ভিটেমাটি যেন তিনি রক্ষা করেন।  সরকারও যেন দ্রুত স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের মাধ্যমে আমাদের একটু ভালোভাবে খেয়ে পড়ে বেঁচে থাকার সুযোগ করে দেয়।

এ ব্যাপারে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান জানান, ভাঙন রোধে বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। তবে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণে আরো সময় লাগবে।

অন্যদিকে, শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাদিয়া আফরিন জানান, বন্যা ও ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তদের ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে তালিকা করে তাদের সহায়তা ও পুর্নবাসনের ব্যবস্থা করার হবে ।