ঢাকা ০৫:৩৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

একতরফা নির্বাচন করতে মিথ্যা মামলার হিড়িক : রিজভী

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৩:৩৩:১৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২২ মে ২০২৩
  • / ৪৩৫ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

নিজস্ব প্রতিবেদক: আবারও একতরফা নির্বাচন করার লক্ষ্যে দেশজুড়ে মিথ্যা ও গায়েবি মামলার হিড়িক পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, বিগত ১৫ বছর ধরে শেখ হাসিনার নির্যাতন-নিপীড়নের শিকার হচ্ছে গণতন্ত্রকামী হাজার হাজার মানুষ। বিএনপির কেন্দ্র ঘোষিত চলমান কর্মসূচিকে বানচাল করতে সরকার গায়েবি মামলা, মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার এবং নির্বিচারে গুলি চালিয়ে অসংখ্য মানুষকে হত্যা, অন্ধ ও পঙ্গু করে যাচ্ছে।

নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আজ সোমবার (২২ মে) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে রিজভী এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, রোববার (২১ মে) রাতে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্যসচিব রফিকুল আলম মজনুকে নিজ বাসভবন থেকে তুলে নিয়ে গেছে গোয়েন্দা পুলিশ। কিন্তু পুলিশ মজনুকে আটকের কথা এখনও পর্যন্ত স্বীকার কিংবা তার কোনো হদিস দিচ্ছে না। দেশকে পরিকল্পিতভাবে অস্থিতিশীল করার জন্য অবৈধ সরকার নানা প্রকার চক্রান্তে মেতে উঠেছে। উচ্চ মূল্যস্ফীতি, ভয়াবহ বেকারত্ব, মানুষের ক্রয়ক্ষমতা চরম হ্রাস পাওয়াসহ সারা দেশ ডুবে আছে অনাচার ও নৈরাজ্যের অমানিশায়। জনগণের বাক-ব্যক্তি ও মত প্রকাশের স্বাধীনতাসহ সকল অধিকার কেড়ে নিয়ে শেখ হাসিনা যে নিরঙ্কুশ কর্তৃত্বের অধিকারী হয়েছেন সেটি ধরে রাখতেই হিমশিম খাচ্ছেন, সেজন্যই বিএনপিসহ বিরোধী দল ও মতের ওপর নামিয়ে আনা হয়েছে নিপীড়ন-নির্যাতনের নিষ্ঠুর বিভীষিকা।

রিজভী বলেন, বর্তমান সরকার বিগত ১৪ বছর ধরে জাতির ওপর যে ঘোর দুর্দিন বিস্তার ঘটিয়েছে সেটির একমাত্র উদ্দেশ্য যেনতেন প্রকারে অবৈধ সিংহাসনকে আঁকড়ে রাখা। আওয়ামী সরকার ব্যাংক লুটেরা ও টাকা পাচারকারী গোষ্ঠীর আদর্শ হয়ে উঠেছে। তাই সুখের স্বর্গ ধরে রাখতে বিরোধীদলশূন্য বাংলাদেশ গড়তে তারা দিনরাত্রি গলদঘর্ম হচ্ছে।

বিএনপির এই নেতা বলেন, ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ সবার সামনে থেকে মজনুকে তুলে নিয়ে গেছে। তাকে ডিবি কার্যালয়েই রাখা হয়েছে, কিন্তু তারা এখনও স্বীকার করছে না। এই ঘটনায় মজনুর পরিবার ও বিএনপি নেতাকর্মীরা শঙ্কিত। মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে রিট পিটিশন নং-৪৫২৩/২০২১ এর আদেশ এখনও বলবৎ রয়েছে। উক্ত আদেশে কোনো উপযুক্ত আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ব্যতিরেকে রফিকুল আলম মজনুকে গ্রেপ্তার বা হয়রানি না করতে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। এই নির্দেশনাও রয়েছে যেন সুনির্দিষ্ট মামলা ছাড়া পেন্ডিং মামলায়ও তাকে গ্রেপ্তার দেখানো না হয়। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সর্বোচ্চ আদালতের এই আদেশের প্রতি সম্মান জানিয়ে অবিলম্বে তাকে মুক্তি দিবে বলে আমরা প্রত্যাশা করি।

রিজভী আরও বলেন, ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণে বিএনপি নেতাকর্মীদের বাসায় বাসায় পুলিশ গ্রেপ্তারের উদ্দেশ্যে ব্যাপকভাবে হানা দিচ্ছে। ঢাকাসহ সারা দেশকেই এক আতঙ্কের নগরীতে পরিণত করা হয়েছে। গত কয়েকদিন ধরে খুলনা, পটুয়াখালী, ফরিদপুর, নেত্রকোনা, ফেনীসহ বেশকিছু জেলায় বিএনপির শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে পুলিশসহ আওয়ামী সন্ত্রাসীদের সহিংস আক্রমণ চালিয়েছে ও অসংখ্য নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে।

এছাড়াও ঢাকা, যশোর, সিলেট, ঝিনাইদহ ও রাজশাহীতেও একইভাবে চলছে রক্তাক্ত আক্রমণ, নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে নির্বিচারে নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার ও আসবাবপত্র ভাঙচুর এবং মিথ্যা মামলার হিড়িক চলছে।

রিজভী আরও বলেন, দেশে-বিদেশে সকল জায়গায় এই অগণতান্ত্রিক সরকারের বিরুদ্ধে যে আওয়াজ শুরু হয়েছে তাতে তারা উপলব্ধি করছে যে, তাদের দিন শেষ হয়ে এসেছে; ক্ষমতা তাদের হারাতে হবে। এখন সরকার তাদের সুবিধাভোগী প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দিয়ে বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের নিধনে লেলিয়ে দিয়েছে। এদের ফ্যাসিজমের মাত্রা এতটাই তীব্রতর হয়েছে যে, সরকারবিরোধী যেকোন কর্মসূচিতেই প্রধানমন্ত্রী তেলে-বেগুনে জ্বলে উঠেন। তাই বিএনপির চলমান কর্মসূচিতে পরিকল্পিতভাবে হামলা করা হচ্ছে, গুলি করা হচ্ছে এবং নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে তাদের পরিবারের সদস্যদের নাজেহাল ও হয়রানি করছে। এরই নিষ্ঠুর শিকার হলেন রফিকুল আলম মজনু। বিএনপির ওপর এই অত্যাচার নামিয়ে আনার মূল লক্ষ্য হচ্ছে-আবারও একতরফা ভোট করার প্রস্তুতি।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, সহ প্রচার সম্পাদক আসাদুল করিম শাহিন, নির্বাহী কমিটির সদস্য তারিকুল আলম তেনজিং, তাঁতী দলের আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ, মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস প্রমুখ।

নিউজটি শেয়ার করুন

একতরফা নির্বাচন করতে মিথ্যা মামলার হিড়িক : রিজভী

আপডেট সময় : ০৩:৩৩:১৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২২ মে ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক: আবারও একতরফা নির্বাচন করার লক্ষ্যে দেশজুড়ে মিথ্যা ও গায়েবি মামলার হিড়িক পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, বিগত ১৫ বছর ধরে শেখ হাসিনার নির্যাতন-নিপীড়নের শিকার হচ্ছে গণতন্ত্রকামী হাজার হাজার মানুষ। বিএনপির কেন্দ্র ঘোষিত চলমান কর্মসূচিকে বানচাল করতে সরকার গায়েবি মামলা, মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার এবং নির্বিচারে গুলি চালিয়ে অসংখ্য মানুষকে হত্যা, অন্ধ ও পঙ্গু করে যাচ্ছে।

নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আজ সোমবার (২২ মে) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে রিজভী এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, রোববার (২১ মে) রাতে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্যসচিব রফিকুল আলম মজনুকে নিজ বাসভবন থেকে তুলে নিয়ে গেছে গোয়েন্দা পুলিশ। কিন্তু পুলিশ মজনুকে আটকের কথা এখনও পর্যন্ত স্বীকার কিংবা তার কোনো হদিস দিচ্ছে না। দেশকে পরিকল্পিতভাবে অস্থিতিশীল করার জন্য অবৈধ সরকার নানা প্রকার চক্রান্তে মেতে উঠেছে। উচ্চ মূল্যস্ফীতি, ভয়াবহ বেকারত্ব, মানুষের ক্রয়ক্ষমতা চরম হ্রাস পাওয়াসহ সারা দেশ ডুবে আছে অনাচার ও নৈরাজ্যের অমানিশায়। জনগণের বাক-ব্যক্তি ও মত প্রকাশের স্বাধীনতাসহ সকল অধিকার কেড়ে নিয়ে শেখ হাসিনা যে নিরঙ্কুশ কর্তৃত্বের অধিকারী হয়েছেন সেটি ধরে রাখতেই হিমশিম খাচ্ছেন, সেজন্যই বিএনপিসহ বিরোধী দল ও মতের ওপর নামিয়ে আনা হয়েছে নিপীড়ন-নির্যাতনের নিষ্ঠুর বিভীষিকা।

রিজভী বলেন, বর্তমান সরকার বিগত ১৪ বছর ধরে জাতির ওপর যে ঘোর দুর্দিন বিস্তার ঘটিয়েছে সেটির একমাত্র উদ্দেশ্য যেনতেন প্রকারে অবৈধ সিংহাসনকে আঁকড়ে রাখা। আওয়ামী সরকার ব্যাংক লুটেরা ও টাকা পাচারকারী গোষ্ঠীর আদর্শ হয়ে উঠেছে। তাই সুখের স্বর্গ ধরে রাখতে বিরোধীদলশূন্য বাংলাদেশ গড়তে তারা দিনরাত্রি গলদঘর্ম হচ্ছে।

বিএনপির এই নেতা বলেন, ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ সবার সামনে থেকে মজনুকে তুলে নিয়ে গেছে। তাকে ডিবি কার্যালয়েই রাখা হয়েছে, কিন্তু তারা এখনও স্বীকার করছে না। এই ঘটনায় মজনুর পরিবার ও বিএনপি নেতাকর্মীরা শঙ্কিত। মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে রিট পিটিশন নং-৪৫২৩/২০২১ এর আদেশ এখনও বলবৎ রয়েছে। উক্ত আদেশে কোনো উপযুক্ত আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ব্যতিরেকে রফিকুল আলম মজনুকে গ্রেপ্তার বা হয়রানি না করতে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। এই নির্দেশনাও রয়েছে যেন সুনির্দিষ্ট মামলা ছাড়া পেন্ডিং মামলায়ও তাকে গ্রেপ্তার দেখানো না হয়। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সর্বোচ্চ আদালতের এই আদেশের প্রতি সম্মান জানিয়ে অবিলম্বে তাকে মুক্তি দিবে বলে আমরা প্রত্যাশা করি।

রিজভী আরও বলেন, ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণে বিএনপি নেতাকর্মীদের বাসায় বাসায় পুলিশ গ্রেপ্তারের উদ্দেশ্যে ব্যাপকভাবে হানা দিচ্ছে। ঢাকাসহ সারা দেশকেই এক আতঙ্কের নগরীতে পরিণত করা হয়েছে। গত কয়েকদিন ধরে খুলনা, পটুয়াখালী, ফরিদপুর, নেত্রকোনা, ফেনীসহ বেশকিছু জেলায় বিএনপির শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে পুলিশসহ আওয়ামী সন্ত্রাসীদের সহিংস আক্রমণ চালিয়েছে ও অসংখ্য নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে।

এছাড়াও ঢাকা, যশোর, সিলেট, ঝিনাইদহ ও রাজশাহীতেও একইভাবে চলছে রক্তাক্ত আক্রমণ, নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে নির্বিচারে নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার ও আসবাবপত্র ভাঙচুর এবং মিথ্যা মামলার হিড়িক চলছে।

রিজভী আরও বলেন, দেশে-বিদেশে সকল জায়গায় এই অগণতান্ত্রিক সরকারের বিরুদ্ধে যে আওয়াজ শুরু হয়েছে তাতে তারা উপলব্ধি করছে যে, তাদের দিন শেষ হয়ে এসেছে; ক্ষমতা তাদের হারাতে হবে। এখন সরকার তাদের সুবিধাভোগী প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দিয়ে বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের নিধনে লেলিয়ে দিয়েছে। এদের ফ্যাসিজমের মাত্রা এতটাই তীব্রতর হয়েছে যে, সরকারবিরোধী যেকোন কর্মসূচিতেই প্রধানমন্ত্রী তেলে-বেগুনে জ্বলে উঠেন। তাই বিএনপির চলমান কর্মসূচিতে পরিকল্পিতভাবে হামলা করা হচ্ছে, গুলি করা হচ্ছে এবং নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে তাদের পরিবারের সদস্যদের নাজেহাল ও হয়রানি করছে। এরই নিষ্ঠুর শিকার হলেন রফিকুল আলম মজনু। বিএনপির ওপর এই অত্যাচার নামিয়ে আনার মূল লক্ষ্য হচ্ছে-আবারও একতরফা ভোট করার প্রস্তুতি।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, সহ প্রচার সম্পাদক আসাদুল করিম শাহিন, নির্বাহী কমিটির সদস্য তারিকুল আলম তেনজিং, তাঁতী দলের আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ, মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস প্রমুখ।