ঢাকা ০৬:০৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

ঈশ্বরদী যুবদলের ১০ নেতা কর্মীর নামে মামলা : আটক ৬

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৫:৫৮:৪৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৮ মে ২০২৩
  • / ৫১৮ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি
// ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি //
রাস্তার উপর গাড়ি দাঁড়ানোকে কেন্দ্র করে ট্রাফিক পুলিশের এক সদস্যের সঙ্গে বাক বিতন্ডার ঘটনায় ঈশ্বরদী উপজেলা যুবদলের ১০ নেতাকর্মীর নামে মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ এই ঘটনায় পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া পিন্টুর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান জাকারিয়া ইন্টারন্যাশনাল কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে ভাংচুর করে যুবদলের ৬ নেতাকর্মীকে আটক করেছে। মামলায় আরও ৩০/৩৫জনকে অজ্ঞাত আসামী করা হয়েছে।
গতকাল শনিবার রাত সাড়ে ৮ টা থেকে পৌণে ১০ টা পর্যন্ত ঈশ্বরদী শহরের রেলগেট এলাকায় এসব ঘটনা ঘটে।
আজ (রবিবার) বিকেলে আটককৃতদের মামলায় আটক দেখিয়ে পাবনা আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে বলে  নিশ্চিত করেছেন ঈশ্বরদী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি তদন্ত) মোঃ হাসান বাসির।
আটককৃতরা হলেন, ঈশ্বরদী শহরের পশ্চিম টেংরী কাচারীপাড়া এলাকার মৃত আব্দুস সামাদের ছেলে ঈশ্বরদী উপজেলা যুবদলের যুগ্ন-আহবায়ক মাহমুদ হাসান সোনামনি, তার বড় ভাই ঈশ্বরদী পৌর যুবদলের আহ্বায়ক জাকির হোসেন জুয়েল, উপজেলার মধ্য অরণকোলার মহল্লার মোঃ বাবুর ছেলে তরিকুল ইসলাম তারেক, একই এলাকার মজিবর রহমানের ছেলে হাবিবুর রহমান হাবিব, অরণকোলা পূর্বপাড়া এলাকার হাচেন মোল্লার ছেলে মামুন হোসেন, পূর্ব টেংরি গোরস্থান পাড়া এলাকার আবুল হোসেনের ছেলে চয়ন হোসেন সরদার, শাহিনুর রহমান, মিলন দাস, আরিফ ওরফে তরকারী আরিফ ও কামরুজ্জামান রিপন। এরা প্রত্যেকেই ঈশ্বরদী উপজেলা ও পৌর যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী।
প্রত্যক্ষদর্শী ও মামলার এজাহার সুত্রে জানা যায়, ঘটনার সময় উপজেলা যুবদলের যুগ্ন-আহবায়ক মাহমুদ হাসান সোনামনি নিজের হাইচ মাইক্রো চালিয়ে রেলগেট আসেন। গাড়িটি তিনি রাস্তার উপর দাঁড় করিয়ে সোনামনি পাশের দোকানে যান। এই সময় রেলগেটে দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশের সদস্য জাহিদুর রহমান গাড়িটি সরিয়ে নিতে বলেন। তখন গাড়ির ভেতরে থাকা সোনামনির সঙ্গীদের সঙ্গে ট্রাফিক পুলিশ সদস্যের কথা কাটাকাটি শুরু হয়। এক পর্যায় পুলিশ সদস্যের সঙ্গে সোনামনিসহ তার সঙ্গীদের ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে। ঘটনাটি রেলগেটের পূর্বপাশে দায়িত্বে থাকা ট্রাফিক পুলিশের টিএসআই জাহিদ শেখ বিষয়টি দেখে এগিয়ে যান। চিৎকার শুনে পাশেই জাকারিয়া পিন্টুর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান জাকারিয়া ইন্টারন্যাশনাল থেকে সোনামনির বড়ভাই জাকির হোসেন জুয়েলসহ কয়েকজন এগিয়ে আসেন। তখন টিএসআই জাহিদ শেখ ও জাকির হোসেন জুয়েল বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করেন। কিন্তু পুলিশ ও যুবদল নেতাদের মধ্যে বাকবিতন্ডা ও ধাক্কাধাক্কির ঘটনাটি ট্রাফিক পুলিশের সঙ্গে থাকা বডিঅন ক্যামেরায় রেকর্ড হচ্ছে ধারণা করে যুবদলের নেতাকর্মীরা মারমূখী আচরণ করাসহ ক্যামেরা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টাকালে ট্রাফিক কনস্টেবল জাহিদুর রহমান ও টিএসআই জাহিদ শেখ আঘাত প্রাপ্ত হন। ওয়ালেস বার্তায় থানা ও ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে দুই পুলিশ সদস্যকে উদ্ধারসহ যুবদল নেতা সোনামনিকে আটক করে থানায় নিয়ে আসেন।
সূত্র মতে, থানায় দুই ট্রাফিক পুলিশের নিকট থেকে ঘটনাটি শুনে ঈশ্বরদী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিপ্লব কুমার গোস্বামী নেতৃত্বে বিএনপি নেতা জাকারিয়া পিন্টুর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান জাকারিয়া ইন্টারন্যাশনালে অভিযান চালানো হয়। এই সময় ভয়ে নেতাকর্মীরা কার্যালয়ের ভেতর থেকে শার্টার নামিয়ে দেন। তখন প্রতিষ্ঠানটির দরজা ভাংচুর করে ভিতরে প্রবেশ করে নিচের কক্ষ থেকে সোনামনির বড়ভাই ঈশ্বরদী পৌর যুবদলের আহবায়ক জাকির হোসেন জুয়েলসহ যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবকদলের ৫ নেতাকর্মীকে আটক করে থানায় আনা হয়। থানায় জুয়েলসহ অন্যান্যরা অসুস্থ্য হয়ে পড়লে তাৎক্ষণিকভাবে আটক সকলকে ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দুই ঘন্টা ব্যাপী চিকিৎসা প্রদান করা হয়। এরপর রাত আনুমানিক সোয়া ১২ টার দিকে আটকদের থানা হাজতে নেওয়া হয়।
ঈশ্বরদী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি তদন্ত) মোঃ হাসান বাসির জানান, ট্রাফিক আইন ভঙ্গ করে রাস্তার উপর গাড়ি রাখা, সরকারী কাজে বাঁধা, ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলাসহ বডি অন ক্যামেরা চুরির ঘটনায় ট্রাফিক পুলিশের উপ-পরিদর্শক (টিএসআই) মোঃ জাহিদ শেখ বাদী হয়ে ঈশ্বরদী থানায় মামলা দায়ের করেছে। মামলায় আটক ৬জনকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। মামলায় ১০জন নামীয় ও অজ্ঞাত আরও ৩০/৩৫জনকে আসামী করা হয়েছে। পলাতকদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

ঈশ্বরদী যুবদলের ১০ নেতা কর্মীর নামে মামলা : আটক ৬

আপডেট সময় : ০৫:৫৮:৪৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৮ মে ২০২৩
// ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি //
রাস্তার উপর গাড়ি দাঁড়ানোকে কেন্দ্র করে ট্রাফিক পুলিশের এক সদস্যের সঙ্গে বাক বিতন্ডার ঘটনায় ঈশ্বরদী উপজেলা যুবদলের ১০ নেতাকর্মীর নামে মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ এই ঘটনায় পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া পিন্টুর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান জাকারিয়া ইন্টারন্যাশনাল কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে ভাংচুর করে যুবদলের ৬ নেতাকর্মীকে আটক করেছে। মামলায় আরও ৩০/৩৫জনকে অজ্ঞাত আসামী করা হয়েছে।
গতকাল শনিবার রাত সাড়ে ৮ টা থেকে পৌণে ১০ টা পর্যন্ত ঈশ্বরদী শহরের রেলগেট এলাকায় এসব ঘটনা ঘটে।
আজ (রবিবার) বিকেলে আটককৃতদের মামলায় আটক দেখিয়ে পাবনা আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে বলে  নিশ্চিত করেছেন ঈশ্বরদী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি তদন্ত) মোঃ হাসান বাসির।
আটককৃতরা হলেন, ঈশ্বরদী শহরের পশ্চিম টেংরী কাচারীপাড়া এলাকার মৃত আব্দুস সামাদের ছেলে ঈশ্বরদী উপজেলা যুবদলের যুগ্ন-আহবায়ক মাহমুদ হাসান সোনামনি, তার বড় ভাই ঈশ্বরদী পৌর যুবদলের আহ্বায়ক জাকির হোসেন জুয়েল, উপজেলার মধ্য অরণকোলার মহল্লার মোঃ বাবুর ছেলে তরিকুল ইসলাম তারেক, একই এলাকার মজিবর রহমানের ছেলে হাবিবুর রহমান হাবিব, অরণকোলা পূর্বপাড়া এলাকার হাচেন মোল্লার ছেলে মামুন হোসেন, পূর্ব টেংরি গোরস্থান পাড়া এলাকার আবুল হোসেনের ছেলে চয়ন হোসেন সরদার, শাহিনুর রহমান, মিলন দাস, আরিফ ওরফে তরকারী আরিফ ও কামরুজ্জামান রিপন। এরা প্রত্যেকেই ঈশ্বরদী উপজেলা ও পৌর যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী।
প্রত্যক্ষদর্শী ও মামলার এজাহার সুত্রে জানা যায়, ঘটনার সময় উপজেলা যুবদলের যুগ্ন-আহবায়ক মাহমুদ হাসান সোনামনি নিজের হাইচ মাইক্রো চালিয়ে রেলগেট আসেন। গাড়িটি তিনি রাস্তার উপর দাঁড় করিয়ে সোনামনি পাশের দোকানে যান। এই সময় রেলগেটে দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশের সদস্য জাহিদুর রহমান গাড়িটি সরিয়ে নিতে বলেন। তখন গাড়ির ভেতরে থাকা সোনামনির সঙ্গীদের সঙ্গে ট্রাফিক পুলিশ সদস্যের কথা কাটাকাটি শুরু হয়। এক পর্যায় পুলিশ সদস্যের সঙ্গে সোনামনিসহ তার সঙ্গীদের ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে। ঘটনাটি রেলগেটের পূর্বপাশে দায়িত্বে থাকা ট্রাফিক পুলিশের টিএসআই জাহিদ শেখ বিষয়টি দেখে এগিয়ে যান। চিৎকার শুনে পাশেই জাকারিয়া পিন্টুর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান জাকারিয়া ইন্টারন্যাশনাল থেকে সোনামনির বড়ভাই জাকির হোসেন জুয়েলসহ কয়েকজন এগিয়ে আসেন। তখন টিএসআই জাহিদ শেখ ও জাকির হোসেন জুয়েল বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করেন। কিন্তু পুলিশ ও যুবদল নেতাদের মধ্যে বাকবিতন্ডা ও ধাক্কাধাক্কির ঘটনাটি ট্রাফিক পুলিশের সঙ্গে থাকা বডিঅন ক্যামেরায় রেকর্ড হচ্ছে ধারণা করে যুবদলের নেতাকর্মীরা মারমূখী আচরণ করাসহ ক্যামেরা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টাকালে ট্রাফিক কনস্টেবল জাহিদুর রহমান ও টিএসআই জাহিদ শেখ আঘাত প্রাপ্ত হন। ওয়ালেস বার্তায় থানা ও ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে দুই পুলিশ সদস্যকে উদ্ধারসহ যুবদল নেতা সোনামনিকে আটক করে থানায় নিয়ে আসেন।
সূত্র মতে, থানায় দুই ট্রাফিক পুলিশের নিকট থেকে ঘটনাটি শুনে ঈশ্বরদী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিপ্লব কুমার গোস্বামী নেতৃত্বে বিএনপি নেতা জাকারিয়া পিন্টুর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান জাকারিয়া ইন্টারন্যাশনালে অভিযান চালানো হয়। এই সময় ভয়ে নেতাকর্মীরা কার্যালয়ের ভেতর থেকে শার্টার নামিয়ে দেন। তখন প্রতিষ্ঠানটির দরজা ভাংচুর করে ভিতরে প্রবেশ করে নিচের কক্ষ থেকে সোনামনির বড়ভাই ঈশ্বরদী পৌর যুবদলের আহবায়ক জাকির হোসেন জুয়েলসহ যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবকদলের ৫ নেতাকর্মীকে আটক করে থানায় আনা হয়। থানায় জুয়েলসহ অন্যান্যরা অসুস্থ্য হয়ে পড়লে তাৎক্ষণিকভাবে আটক সকলকে ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দুই ঘন্টা ব্যাপী চিকিৎসা প্রদান করা হয়। এরপর রাত আনুমানিক সোয়া ১২ টার দিকে আটকদের থানা হাজতে নেওয়া হয়।
ঈশ্বরদী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি তদন্ত) মোঃ হাসান বাসির জানান, ট্রাফিক আইন ভঙ্গ করে রাস্তার উপর গাড়ি রাখা, সরকারী কাজে বাঁধা, ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলাসহ বডি অন ক্যামেরা চুরির ঘটনায় ট্রাফিক পুলিশের উপ-পরিদর্শক (টিএসআই) মোঃ জাহিদ শেখ বাদী হয়ে ঈশ্বরদী থানায় মামলা দায়ের করেছে। মামলায় আটক ৬জনকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। মামলায় ১০জন নামীয় ও অজ্ঞাত আরও ৩০/৩৫জনকে আসামী করা হয়েছে। পলাতকদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।