ঢাকা ১১:২৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ মে ২০২৪, ৩০ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

ইরানের দুই খ্যাতিমান অভিনেত্রী গ্রেফতার

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০১:০৬:২৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ নভেম্বর ২০২২
  • / ৪৪১ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 
ইরানে চলমান সরকারবিরোধী গণবিক্ষোভে প্রকাশ্যে সমর্থন দেওয়ায় দেশটির দুই খ্যাতিমান অভিনেত্রীকে গ্রেফতার করেছে কর্তৃপক্ষ। ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম ইরনার বরাতে বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

গ্রেফতার দুই অভিনেত্রী হলেন হেনগামেহ গাজিয়ানি ও কাতাইয়ুন রিয়াহি। তাঁরা মাথার হিজাব ছাড়া প্রকাশ্যে এসেছিলেন। একে বিক্ষোভকারীদের প্রতি সংহতি হিসেবে দেখা হচ্ছে।

নারী বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তি। একজন বিক্ষোভকারী পুলিশের বন্দুক নিয়ে টানাটানি করছেন। ইরানের গিলান প্রদেশের রাশত শহরের এই চিত্র বুধবার (১৬ নভেম্বর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ভিডিওতে ছড়িয়ে পড়ে।

ইরনার প্রতিবেদনে বলা হয়, ইরানের কৌঁসুলির কার্যালয়ের আদেশক্রমে রোববার (২০ নভেম্বর) এই দুই অভিনেত্রীকে আটক করা হয়। তাঁরা ইরানি কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের উদ্দেশ্যে গোপন আঁতাত ও অপতৎপরতা চালিয়েছেন বলে অভিযোগ।

গাজিয়ানি ও কাতাইয়ুন একাধিক পুরস্কারজয়ী অভিনেত্রী। গ্রেফতারের আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দিয়েছিলেন গাজিয়ানি। তিনি লিখেছিলেন, যা–ই ঘটুক না কেন, জেনে রাখুন, আমি বরাবরের মতো ইরানের জনগণের পাশে থাকব। এটাই হয়তো আমার শেষ পোস্ট।

গত সেপ্টেম্বরে ইরানের নীতি পুলিশের হেফাজতে দেশটির কুর্দি তরুণী মাসা আমিনির মৃত্যু হয়। তাঁর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ইরানজুড়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। কর্তৃপক্ষের দমন–পীড়ন সত্ত্বেও এ বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে।

কঠোর বিধি মেনে হিজাব না পরার অভিযোগে গত ১৩ সেপ্টেম্বর মাসাকে তেহরানে আটক করেছিল দেশটির নীতি পুলিশ। আটকের পর পুলিশি হেফাজতে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে তেহরানের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ১৬ সেপ্টেম্বর তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। নির্যাতনে মাসার মৃত্যু হয়েছে দাবি করে ইরানের মানুষ রাস্তায় নেমে আসেন।

ইরানের অভিনেতা-অভিনেত্রী, ক্রীড়াবিদসহ বিভিন্ন অঙ্গনের বেশ কিছু বিশিষ্ট ব্যক্তি ইতিমধ্যে এ বিক্ষোভে সমর্থন দিয়েছেন।
কাতার বিশ্বকাপে ইরানের জাতীয় ফুটবল দলের অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন এহসান হাজসাফি। তিনি রোববার (২০ নভেম্বর) সকালে বলেন, আমাদের মানতে হবে যে দেশের পরিস্থিতি ঠিক নেই। আমাদের জনগণ সুখী নয়।

ইরানের বক্সিং ফেডারেশনের প্রধান হোসেইন সুরি ঘোষণা দিয়েছেন, স্পেনে টুর্নামেন্ট শেষে তিনি দেশে ফিরছেন না। দেশে বিক্ষোভকারীদের ওপর সহিংস দমন-পীড়নের কারণে তিনি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, ইরানে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে প্রায় ৪০০ বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন। গ্রেপ্তার হয়েছেন ১৬ হাজার ৮০০ জন। এ ছাড়া বিক্ষোভে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে কমপক্ষে পাঁচজনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

ইরানি কর্তৃপক্ষ চলমান বিক্ষোভকে ‘দাঙ্গা’ হিসেবে উল্লেখ করছে। তাদের ভাষ্য, বিদেশি শত্রুরা এ বিক্ষোভে মদদ দিচ্ছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

ইরানের দুই খ্যাতিমান অভিনেত্রী গ্রেফতার

আপডেট সময় : ০১:০৬:২৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ নভেম্বর ২০২২

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 
ইরানে চলমান সরকারবিরোধী গণবিক্ষোভে প্রকাশ্যে সমর্থন দেওয়ায় দেশটির দুই খ্যাতিমান অভিনেত্রীকে গ্রেফতার করেছে কর্তৃপক্ষ। ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম ইরনার বরাতে বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

গ্রেফতার দুই অভিনেত্রী হলেন হেনগামেহ গাজিয়ানি ও কাতাইয়ুন রিয়াহি। তাঁরা মাথার হিজাব ছাড়া প্রকাশ্যে এসেছিলেন। একে বিক্ষোভকারীদের প্রতি সংহতি হিসেবে দেখা হচ্ছে।

নারী বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তি। একজন বিক্ষোভকারী পুলিশের বন্দুক নিয়ে টানাটানি করছেন। ইরানের গিলান প্রদেশের রাশত শহরের এই চিত্র বুধবার (১৬ নভেম্বর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ভিডিওতে ছড়িয়ে পড়ে।

ইরনার প্রতিবেদনে বলা হয়, ইরানের কৌঁসুলির কার্যালয়ের আদেশক্রমে রোববার (২০ নভেম্বর) এই দুই অভিনেত্রীকে আটক করা হয়। তাঁরা ইরানি কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের উদ্দেশ্যে গোপন আঁতাত ও অপতৎপরতা চালিয়েছেন বলে অভিযোগ।

গাজিয়ানি ও কাতাইয়ুন একাধিক পুরস্কারজয়ী অভিনেত্রী। গ্রেফতারের আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দিয়েছিলেন গাজিয়ানি। তিনি লিখেছিলেন, যা–ই ঘটুক না কেন, জেনে রাখুন, আমি বরাবরের মতো ইরানের জনগণের পাশে থাকব। এটাই হয়তো আমার শেষ পোস্ট।

গত সেপ্টেম্বরে ইরানের নীতি পুলিশের হেফাজতে দেশটির কুর্দি তরুণী মাসা আমিনির মৃত্যু হয়। তাঁর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ইরানজুড়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। কর্তৃপক্ষের দমন–পীড়ন সত্ত্বেও এ বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে।

কঠোর বিধি মেনে হিজাব না পরার অভিযোগে গত ১৩ সেপ্টেম্বর মাসাকে তেহরানে আটক করেছিল দেশটির নীতি পুলিশ। আটকের পর পুলিশি হেফাজতে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে তেহরানের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ১৬ সেপ্টেম্বর তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। নির্যাতনে মাসার মৃত্যু হয়েছে দাবি করে ইরানের মানুষ রাস্তায় নেমে আসেন।

ইরানের অভিনেতা-অভিনেত্রী, ক্রীড়াবিদসহ বিভিন্ন অঙ্গনের বেশ কিছু বিশিষ্ট ব্যক্তি ইতিমধ্যে এ বিক্ষোভে সমর্থন দিয়েছেন।
কাতার বিশ্বকাপে ইরানের জাতীয় ফুটবল দলের অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন এহসান হাজসাফি। তিনি রোববার (২০ নভেম্বর) সকালে বলেন, আমাদের মানতে হবে যে দেশের পরিস্থিতি ঠিক নেই। আমাদের জনগণ সুখী নয়।

ইরানের বক্সিং ফেডারেশনের প্রধান হোসেইন সুরি ঘোষণা দিয়েছেন, স্পেনে টুর্নামেন্ট শেষে তিনি দেশে ফিরছেন না। দেশে বিক্ষোভকারীদের ওপর সহিংস দমন-পীড়নের কারণে তিনি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, ইরানে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে প্রায় ৪০০ বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন। গ্রেপ্তার হয়েছেন ১৬ হাজার ৮০০ জন। এ ছাড়া বিক্ষোভে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে কমপক্ষে পাঁচজনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

ইরানি কর্তৃপক্ষ চলমান বিক্ষোভকে ‘দাঙ্গা’ হিসেবে উল্লেখ করছে। তাদের ভাষ্য, বিদেশি শত্রুরা এ বিক্ষোভে মদদ দিচ্ছে।