ঢাকা ১০:৪৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২২ মে ২০২৪, ৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন : সিরাজগঞ্জ-৩ (তাড়াশ-রায়গঞ্জ)

আওয়ামী লীগে নতুন মুখের আশা, আন্দোলনে ব্যস্ত বিএনপি

আশরাফুল ইসলাম রনি
  • আপডেট সময় : ০৫:৫১:৪২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৪ অগাস্ট ২০২৩
  • / ৮১৩ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

// আশরাফুল ইসলাম রনি, তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি //

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা নতুন মুখের আশায় রয়েছেন। আর এ আসন থেকে বরাবরের মতো এবারও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী অনেক নতুন ও পুরনো মুখ। এছাড়া আন্দোলন সংগ্রামের মধ্যে নানা বাধা বিপত্তির মাঝেও বিএনপিতে রয়েছে পুরাতন ও নতুনের মধ্যে অনেকেই মনোনয়ন প্রত্যাশী। আর নির্বাচনকে ঘিরে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে মাঠে নেমে জনগণের দোড়গোড়ায় উন্নয়নের বার্তা নিয়ে প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল প্রকৌশলী মোঃ নজরুল হাসান (অবঃ)সহ একাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশী। তিনি ২০১১ সালের ডিসেম্বরে সেনাবাহিনী থেকে অবসর গ্রহনের পর প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেবার জন্য বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং ইহার অঙ্গ সংগঠনের স্থানীয় নেতৃবৃন্দ এবং বাংলাদেশ বিদ্যুতায়ন বোর্ডের চেয়ারম্যানের সঙ্গেসমন্বয় করে ২০১৮ ইং সালের মধ্যেই তাড়াশ, রায়গঞ্জ ও সলঙ্গাঁ শতভাগ বিদ্যুতের আওতায় আনার জন্য সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। বিদ্যুতায়নের রাজনৈতিক সভায় সক্রিয় অংশ গ্রহনে সরকারের ভাবমূর্তি উজ্বল করেন।

অপরদিকে, র্দীঘদিন ধরে বিরোধী দলে থাকা বিএনপি মামলা-হামলার স্বীকার হয়ে ঘরের মধ্যে দলীয় প্রোগ্রাম নিয়ে কোনঠাঁসা হয়ে পড়েছেন। রাজনীতির মাঠে তাদের কোন উৎসাহ বা উদ্দীপনা না থাকলেও বিএনপি বলছে, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আদায়ের লক্ষ্যে রাজপথে আন্দোলন-সংগ্রাম অব্যাহত রাখার পাশাপাশি নির্বাচনের প্রস্ততিও নেয়া হচ্ছে।

অন্যদিকে, রাজপথ দখলে রেখে মাঠে নিজেদের ভিত শক্তিশালী করার চেষ্টা করছে আওয়ামী লীগ। দলীয় নেতাদের দাবি, উন্নয়নের চিত্র দেখে জনগণ টানা চতুর্থবারের মতো আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় বসাবে। তবে এ আসনের ভোটাররা বরাবরই রাজনৈতিক সচেতন। গত সাড়ে ১৪বছরে এই নির্বাচনী এলাকার সার্বিক চিত্রও পাল্টে গেছে। সাড়ে ১৪ বছরের উন্নয়নের ছোঁয়ায় এই নির্বাচনী এলাকার রাস্তাঘাটসহ জীবনমানের ধরনও বদলে গেছে। ইতোমধ্যে সারাদেশের মতো এই নির্বাচনী এলাকাতেও বইছে ভোটের হাওয়া। বড় বড় রাজনৈতিক দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা ছুটে বেড়াচ্ছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে, ভোটারদের মন জয়ে এলাকার উন্নয়নে দিচ্ছেন নানামুখি জনশ্রুতি।

জানা যায়, রায়গঞ্জ উপজেলার ৯ ইউনিয়ন, এক পৌরসভা ও তাড়াশ উপজেলার ৮ ইউনিয়ন ও এক পৌরসভা নিয়ে আসনটি গঠিত। এ আসনে মোট ভোটার ৩ লাখ ৬৭ হাজার ৫শ’ ২৯। নির্বাচনের পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়, এ আসনে ১৯৯১ থেকে ২০০১ সালের নির্বাচনে পর পর তিনবারই বিএনপি প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন। ২০০৮, ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের সর্বশেষ তিনটি নির্বাচনেই পর পর আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বড় দুই দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপিতে রয়েছে মনোনয়ন প্রত্যাশী রয়েছেন অনেকেই। আওয়ামী লীগ পরপর তিনবার এই আসন থেকে বিজয়ী হয়েছে। আগামী নির্বাচনেও এই বিজয়ের ধারা অব্যাহত রাখতে কাজ করছে ক্ষমতাসীন দলটির নেতাকর্মীরা। এর আগের তিনবারের নির্বাচনে বিজয়ী বিএনপিও বসে নেই। তারাও আসনটি পুনরুদ্ধারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ফলে আগামী নির্বাচনেও আসনটিতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি প্রার্থীর মধ্যে হতে পারে শক্ত প্রতিদ্বন্দিতা।

চলনবিল অধ্যাুষিত গুরুত্বপূর্ণ এই আসনটির বর্তমান আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা.মো: আব্দুল আজিজ। তিনি ছাড়াও আসনটিতে মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল প্রকৌশলী মোঃ নজরুল হাসান (অবঃ), বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য ড. হোসেন মনসুর, রায়গঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান ইমরুল হাসান তালুকদার ইমন, সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক এ টি এম লুৎফর রহমান দিলু, কেন্দ্রীয় কৃষকলীগের সহ-সভাপতি কৃষিবিদ সাখাওয়াত হোসেন সুইট ও তাড়াশ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জিত কর্মকার।

অন্যদিকে, বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীর তালিকার শীর্ষে রয়েছেন চারবারের সাবেক সংসদ সদস্য হেভিওয়েট প্রার্থী আলহাজ আব্দুল মান্নান তালুকদার। এ ছাড়া রায়গঞ্জ উপজেলা সাবেক চেয়ারম্যান ভিপি আয়নুল হক, তাড়াশ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি খন্দকার সেলিম জাহাঙ্গীর, বিএনপির কেন্দ্রীয় গ্রাম সরকার বিষয়ক সহ-সম্পাদক সাইফুল ইসলাম শিশির।

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল প্রকৌশলী মোঃ নজরুল হাসান (অবঃ) বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পর পর দুই বার (২০১২)ইং সালে ৩ বৎসরের জন্য এবং ২০১৫ ইং ২ বৎসরের জন্য) ঢাকা পাওয়ার ডিষ্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিঃ এরব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেছেন। পরবর্তীতে রাজধানী ঢাকার বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা আধুনিকায়নসহ আমূল পরিবর্তন করে অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধন করে প্রশংসিত হয়েছেন। তিনি ২০১১ সালে সেনাবাহিনী থেকে অবসর গ্রহনের পর প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেবার জন্য বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং ইহার অঙ্গ সংগঠনের স্থানীয় নেতৃবৃন্দ এবং বাংলাদেশ বিদ্যুতায়ন বোর্ডের চেয়ারম্যানের সঙ্গে সমন্বয় করে ২০১৮ ইং সালের মধ্যেই তাড়াশ, রায়গঞ্জ ও সলঙ্গাঁ শতভাগ বিদ্যুতের আওতায় আনার জন্য সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন। বিদ্যুতায়নের রাজনৈতিক সভায় সক্রিয় অংশ গ্রহনে সরকারের ভাবমূর্তি উজ্বল করেছেন। রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সংগে সক্রিয়ভাবে কাজ করে প্রত্যন্ত অঞ্চলে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে ব্যাপক অবদান রেখেছেন। সরকারের রাজনৈতিক অঙ্গীকার ও উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের একজন কর্মী হিসেবে কাজ করেছেন এবং এখনও চলমান রেখেছেন। তাই আগামী জাতীয় সংসদের বঙ্গবন্ধু কন্যা  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে যদি মনোনয়ন দেন তাহলে বিপুল ভোটে টানা ৪র্থ বারের মত আওয়ামী লীগকে এ আসনটি উপহার দিতে পারবো। আর যদি আমাকে মনোনয়ন না দিয়ে দলের অন্য কাউকে দেয়া হয় তবুও ঐক্যবদ্ধভাবে নৌকাকে বিজয়ী করবো।

এ বিষয়ে চারবারের সাবেক সংসদ সদস্য হেভিওয়েট প্রার্থী আলহাজ আব্দুল মান্নান তালুকদার বলেন, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আদায়ের লক্ষ্যে রাজপথে আন্দোলন-সংগ্রাম অব্যাহত রাখার পাশাপাশি নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। ১৯৯১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত তিনবার এমপি নির্বাচিত হয়ে জনকল্যাণে যে কাজ করেছি, তার সাক্ষী এ অঞ্চলের জনগণ। তিনি স্থানীয় সরকার ও সমবায় মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি হিসেবে গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নে ব্যাপক কাজ করেছিলেন। তার দাবি, মনোনয়ন পেলে এ অঞ্চলের মানুষ আমাকেই জনপ্রতিনিধি হিসেবে বেছে নেবেন।

এ আসনে আওয়ামী লীগ দলীয় বর্তমান সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা. অধ্যাপক মো: আব্দুল আজিজ দলীয় সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন- বিগত নির্বাচনে দল তাঁকে মনোনয়ন দেবার পর নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে দলকে সুসংগঠিত করার কাজ করেছি। নির্বাচনে এলাকার উন্নয়নে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম, গত চার বছরে সকল প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে কাজ করেছি। আঞ্চলিক সড়ক, গ্রামীণ সড়ক, ব্রিজ, কালভার্টসহ অবকাঠামোগত অসংখ্য স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে। আগামীতে চলনবিলকে একটি পর্যটন শিল্প এলাকা গড়ে তোলার পরিকল্পনাও হাতে রয়েছে। আমি আবারও মনোনয়ন পেলে প্রধানমন্ত্রীর স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের একজন কর্মী হিসেবে কাজ করব।

নিউজটি শেয়ার করুন

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন : সিরাজগঞ্জ-৩ (তাড়াশ-রায়গঞ্জ)

আওয়ামী লীগে নতুন মুখের আশা, আন্দোলনে ব্যস্ত বিএনপি

আপডেট সময় : ০৫:৫১:৪২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৪ অগাস্ট ২০২৩

// আশরাফুল ইসলাম রনি, তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি //

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা নতুন মুখের আশায় রয়েছেন। আর এ আসন থেকে বরাবরের মতো এবারও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী অনেক নতুন ও পুরনো মুখ। এছাড়া আন্দোলন সংগ্রামের মধ্যে নানা বাধা বিপত্তির মাঝেও বিএনপিতে রয়েছে পুরাতন ও নতুনের মধ্যে অনেকেই মনোনয়ন প্রত্যাশী। আর নির্বাচনকে ঘিরে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে মাঠে নেমে জনগণের দোড়গোড়ায় উন্নয়নের বার্তা নিয়ে প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল প্রকৌশলী মোঃ নজরুল হাসান (অবঃ)সহ একাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশী। তিনি ২০১১ সালের ডিসেম্বরে সেনাবাহিনী থেকে অবসর গ্রহনের পর প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেবার জন্য বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং ইহার অঙ্গ সংগঠনের স্থানীয় নেতৃবৃন্দ এবং বাংলাদেশ বিদ্যুতায়ন বোর্ডের চেয়ারম্যানের সঙ্গেসমন্বয় করে ২০১৮ ইং সালের মধ্যেই তাড়াশ, রায়গঞ্জ ও সলঙ্গাঁ শতভাগ বিদ্যুতের আওতায় আনার জন্য সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। বিদ্যুতায়নের রাজনৈতিক সভায় সক্রিয় অংশ গ্রহনে সরকারের ভাবমূর্তি উজ্বল করেন।

অপরদিকে, র্দীঘদিন ধরে বিরোধী দলে থাকা বিএনপি মামলা-হামলার স্বীকার হয়ে ঘরের মধ্যে দলীয় প্রোগ্রাম নিয়ে কোনঠাঁসা হয়ে পড়েছেন। রাজনীতির মাঠে তাদের কোন উৎসাহ বা উদ্দীপনা না থাকলেও বিএনপি বলছে, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আদায়ের লক্ষ্যে রাজপথে আন্দোলন-সংগ্রাম অব্যাহত রাখার পাশাপাশি নির্বাচনের প্রস্ততিও নেয়া হচ্ছে।

অন্যদিকে, রাজপথ দখলে রেখে মাঠে নিজেদের ভিত শক্তিশালী করার চেষ্টা করছে আওয়ামী লীগ। দলীয় নেতাদের দাবি, উন্নয়নের চিত্র দেখে জনগণ টানা চতুর্থবারের মতো আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় বসাবে। তবে এ আসনের ভোটাররা বরাবরই রাজনৈতিক সচেতন। গত সাড়ে ১৪বছরে এই নির্বাচনী এলাকার সার্বিক চিত্রও পাল্টে গেছে। সাড়ে ১৪ বছরের উন্নয়নের ছোঁয়ায় এই নির্বাচনী এলাকার রাস্তাঘাটসহ জীবনমানের ধরনও বদলে গেছে। ইতোমধ্যে সারাদেশের মতো এই নির্বাচনী এলাকাতেও বইছে ভোটের হাওয়া। বড় বড় রাজনৈতিক দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা ছুটে বেড়াচ্ছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে, ভোটারদের মন জয়ে এলাকার উন্নয়নে দিচ্ছেন নানামুখি জনশ্রুতি।

জানা যায়, রায়গঞ্জ উপজেলার ৯ ইউনিয়ন, এক পৌরসভা ও তাড়াশ উপজেলার ৮ ইউনিয়ন ও এক পৌরসভা নিয়ে আসনটি গঠিত। এ আসনে মোট ভোটার ৩ লাখ ৬৭ হাজার ৫শ’ ২৯। নির্বাচনের পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়, এ আসনে ১৯৯১ থেকে ২০০১ সালের নির্বাচনে পর পর তিনবারই বিএনপি প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন। ২০০৮, ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের সর্বশেষ তিনটি নির্বাচনেই পর পর আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বড় দুই দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপিতে রয়েছে মনোনয়ন প্রত্যাশী রয়েছেন অনেকেই। আওয়ামী লীগ পরপর তিনবার এই আসন থেকে বিজয়ী হয়েছে। আগামী নির্বাচনেও এই বিজয়ের ধারা অব্যাহত রাখতে কাজ করছে ক্ষমতাসীন দলটির নেতাকর্মীরা। এর আগের তিনবারের নির্বাচনে বিজয়ী বিএনপিও বসে নেই। তারাও আসনটি পুনরুদ্ধারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ফলে আগামী নির্বাচনেও আসনটিতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি প্রার্থীর মধ্যে হতে পারে শক্ত প্রতিদ্বন্দিতা।

চলনবিল অধ্যাুষিত গুরুত্বপূর্ণ এই আসনটির বর্তমান আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা.মো: আব্দুল আজিজ। তিনি ছাড়াও আসনটিতে মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল প্রকৌশলী মোঃ নজরুল হাসান (অবঃ), বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য ড. হোসেন মনসুর, রায়গঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান ইমরুল হাসান তালুকদার ইমন, সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক এ টি এম লুৎফর রহমান দিলু, কেন্দ্রীয় কৃষকলীগের সহ-সভাপতি কৃষিবিদ সাখাওয়াত হোসেন সুইট ও তাড়াশ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জিত কর্মকার।

অন্যদিকে, বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীর তালিকার শীর্ষে রয়েছেন চারবারের সাবেক সংসদ সদস্য হেভিওয়েট প্রার্থী আলহাজ আব্দুল মান্নান তালুকদার। এ ছাড়া রায়গঞ্জ উপজেলা সাবেক চেয়ারম্যান ভিপি আয়নুল হক, তাড়াশ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি খন্দকার সেলিম জাহাঙ্গীর, বিএনপির কেন্দ্রীয় গ্রাম সরকার বিষয়ক সহ-সম্পাদক সাইফুল ইসলাম শিশির।

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল প্রকৌশলী মোঃ নজরুল হাসান (অবঃ) বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পর পর দুই বার (২০১২)ইং সালে ৩ বৎসরের জন্য এবং ২০১৫ ইং ২ বৎসরের জন্য) ঢাকা পাওয়ার ডিষ্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিঃ এরব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেছেন। পরবর্তীতে রাজধানী ঢাকার বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা আধুনিকায়নসহ আমূল পরিবর্তন করে অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধন করে প্রশংসিত হয়েছেন। তিনি ২০১১ সালে সেনাবাহিনী থেকে অবসর গ্রহনের পর প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেবার জন্য বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং ইহার অঙ্গ সংগঠনের স্থানীয় নেতৃবৃন্দ এবং বাংলাদেশ বিদ্যুতায়ন বোর্ডের চেয়ারম্যানের সঙ্গে সমন্বয় করে ২০১৮ ইং সালের মধ্যেই তাড়াশ, রায়গঞ্জ ও সলঙ্গাঁ শতভাগ বিদ্যুতের আওতায় আনার জন্য সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন। বিদ্যুতায়নের রাজনৈতিক সভায় সক্রিয় অংশ গ্রহনে সরকারের ভাবমূর্তি উজ্বল করেছেন। রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সংগে সক্রিয়ভাবে কাজ করে প্রত্যন্ত অঞ্চলে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে ব্যাপক অবদান রেখেছেন। সরকারের রাজনৈতিক অঙ্গীকার ও উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের একজন কর্মী হিসেবে কাজ করেছেন এবং এখনও চলমান রেখেছেন। তাই আগামী জাতীয় সংসদের বঙ্গবন্ধু কন্যা  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে যদি মনোনয়ন দেন তাহলে বিপুল ভোটে টানা ৪র্থ বারের মত আওয়ামী লীগকে এ আসনটি উপহার দিতে পারবো। আর যদি আমাকে মনোনয়ন না দিয়ে দলের অন্য কাউকে দেয়া হয় তবুও ঐক্যবদ্ধভাবে নৌকাকে বিজয়ী করবো।

এ বিষয়ে চারবারের সাবেক সংসদ সদস্য হেভিওয়েট প্রার্থী আলহাজ আব্দুল মান্নান তালুকদার বলেন, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আদায়ের লক্ষ্যে রাজপথে আন্দোলন-সংগ্রাম অব্যাহত রাখার পাশাপাশি নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। ১৯৯১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত তিনবার এমপি নির্বাচিত হয়ে জনকল্যাণে যে কাজ করেছি, তার সাক্ষী এ অঞ্চলের জনগণ। তিনি স্থানীয় সরকার ও সমবায় মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি হিসেবে গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নে ব্যাপক কাজ করেছিলেন। তার দাবি, মনোনয়ন পেলে এ অঞ্চলের মানুষ আমাকেই জনপ্রতিনিধি হিসেবে বেছে নেবেন।

এ আসনে আওয়ামী লীগ দলীয় বর্তমান সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা. অধ্যাপক মো: আব্দুল আজিজ দলীয় সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন- বিগত নির্বাচনে দল তাঁকে মনোনয়ন দেবার পর নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে দলকে সুসংগঠিত করার কাজ করেছি। নির্বাচনে এলাকার উন্নয়নে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম, গত চার বছরে সকল প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে কাজ করেছি। আঞ্চলিক সড়ক, গ্রামীণ সড়ক, ব্রিজ, কালভার্টসহ অবকাঠামোগত অসংখ্য স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে। আগামীতে চলনবিলকে একটি পর্যটন শিল্প এলাকা গড়ে তোলার পরিকল্পনাও হাতে রয়েছে। আমি আবারও মনোনয়ন পেলে প্রধানমন্ত্রীর স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের একজন কর্মী হিসেবে কাজ করব।