অগ্নিসন্ত্রাসে হুকুমদাতাদেরও বিচারের আওতায় আনতে হবে: তথ্যমন্ত্রী
- আপডেট সময় : ০৫:০৫:৩৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২২
- / ৪৪৪ বার পড়া হয়েছে
নিজস্ব প্রতিবেদক :
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, শুধু অগ্নিসন্ত্রাসীদেরই নয়, হুকুমদাতা খালেদা জিয়া, তারেক জিয়া, মির্জা ফখরুলকে বিচারের আওতায় আনতে হবে।
শনিবার (১০ ডিসেম্বর) সকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অগ্নিসন্ত্রাসের শিকার দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের আহত ও নিহতদের পরিবারের সদস্যদের সংগঠন ‘অগ্নি সন্ত্রাসের আর্তনাদ’-এর আয়োজনে মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপি আবার আগুন সন্ত্রাস শুরু করেছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ঢাকায় বাসে আগুন দেওয়া হয়েছে, চট্টগ্রামে বাসে আগুন দেওয়া হয়েছে। তারা ১০ দফা দাবি দিতে যাচ্ছে, এই দেশের মানুষের একদফা দাবি যারা রাজনীতির নামে মানুষ পোড়ায় তাদের রাজনীতি থেকে বিদায় দিতে হবে। অগ্নি সন্ত্রাসীদের শুধু নয়, এদের হুকুম দাতা খালেদা জিয়া, তারেক জিয়া, মির্জা ফখরুলকে বিচারের আওতায় আনতে হবে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, আজকে এ পোড়া মানুষগুলোর জীবন্ত দগ্ধ হয়ে মৃতদের স্বজনদের অসহনীয় জীবনের জন্য দায়ী বিএনপি-জামায়াতের নেতারা। খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নির্দেশে এবং ফখরুল, রিজভী, আব্বাস, খন্দকার মোশাররফ সাহেব যারা বড়গলায় কথা বলেন, তাদের পরিচালনায় ও অর্থায়নে দেশে অগ্নিসন্ত্রাস করা হয়েছে।
অগ্নিসন্ত্রাসের ভয়াবহতা তুলে ধরে ড. হাছান বলেন, পাঁচ শতাধিক নিরীহ মানুষকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে। ৫০ জনের বেশি পরিবহন চালক-শ্রমিককে হত্যা করা হয়েছে। তিন হাজারের বেশি মানুষকে অগ্নিদগ্ধ করা হয়েছে। সাড়ে তিন হাজার গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, বাসে-ট্রেনে-লঞ্চে আগুন দেওয়া হয়েছে। তাদের এ প্রতিহিংসার আগুন থেকে পশুপাখি-গাছপালাও রক্ষা পায়নি। বিএনপি-জামায়াত তাই মানুষের শত্রু, পশুপাখির শত্রু, প্রকৃতির শত্রু, এরা অগ্নিসন্ত্রাসী, এরা মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী।
বিশ্ব মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, তারা আজ মানবাধিকারের কথা বলেন। অথচ বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান থেকে শুরু করে খালেদা জিয়া এবং আজকের মির্জা ফখরুল সাহেবরাই বাংলাদেশে মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন ঘটিয়েছে। জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে রক্তের ওপর পাড়া দিয়ে ক্ষমতা দখল করেছিল। ক্ষমতায় টিকে থাকতে শত শত সেনা অফিসার ও জওয়ানকে হত্যা করেছে। আওয়ামী লীগের ২২ হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে। আর খালেদা জিয়া, তারেক রহমান অবৈধপথে ক্ষমতায় যাওয়ার লিপ্সায় হাজার হাজার মানুষকে আগুনে পুড়িয়ে হতাহত করেছে। এ সবই আমরা বিশ্ব অঙ্গনে নিয়ে যাবো।
মানববন্ধনে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শাহাজান খান বলেন, ‘২০১৪-১৫ সালে তারা আগুন সন্ত্রাস শুরু করলো, পেট্রোল বোমা মেরে মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করেছে। এই হত্যাকাণ্ডের মদতদাতা, হুকুমদাতা খালেদা জিয়া, তিনি ঘরে বসে বসে হুকুম দিয়েছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করবো, স্পেশাল ট্রাইবুন্যাল করে, ২০১২-১৪-১৫ সালে যারা মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করেছে, পিটিয়ে হত্যা করেছে তাদের বিচার করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, গণতন্ত্রের কথা বলে সমাবেশ করে বেড়াচ্ছেন। গণতন্ত্রের কথা বলে মানুষ হত্যা করলে মানুষ সেই গণতন্ত্র চায় না, আগুন সন্ত্রাস করে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চাইলে, সেই গণতন্ত্র মানুষ চায় না। হাওয়া ভবনের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে বাংলাদেশকে লুটেপুটে খাওয়ার চেষ্টা করছেন। রাজাকার আলবদরদের নিয়ে তারা জাতীয় সরকার গঠন করবেন যেই দেশ ৩০ লাখ মানুষের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে, সেই দেশে আর যায় হোক রাজাকারের শাসন প্রতিষ্ঠিত হবে না, আমরা তা প্রতিহত করবো।’
এছাড়াও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক বিযয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, কক্সবাজার-৩ আসনের সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য মুহাম্মদ সামাদ, অগ্নি সন্ত্রাসের শিকার দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ভুক্তোভুগী, আহত ও নিহতদের পরিবারের সদস্যরা বক্তব্য রাখেন।