ঢাকা ১১:১৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৬ জুন ২০২৪, ২ আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

১৪ ব্যাংকে মূলধন ঘাটতি ৩৭৬৪ কোটি টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ১২:৪৪:১১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৩
  • / ৪৯৩ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

সর্বশেষ সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে খেলাপি ঋণ কিছুটা কমলেও তার প্রভাব পড়েনি ব্যাংকগুলোর মূলধন সংরক্ষণে। উল্টো সংকটে থাকা ব্যাংকগুলোর মূলধন ঘাটতি আরও বেড়েছে প্রায় ৩ হাজার ৭৬৪ কোটি টাকা। এ সময়ে দেশি-বিদেশি অন্তত ১৪ ব্যাংক প্রয়োজনীয় মূলধন সংরক্ষণ করতে পারেনি। সংকটে থাকা এসব ব্যাংকের মূলধন ঘাটতির পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় সাড়ে ৩৭ হাজার কোটি টাকা।

এর মধ্যে নয়টি ব্যাংক বিপুল অঙ্কের মূলধন ঘাটতিতে পড়েছে, যার মধ্যে পাঁচটির মূলধন পর্যাপ্ততার অনুপাত (সিআরএআর) ঋণাত্মক ধারায় রয়েছে। এ ধরনের পরিস্থিতি ব্যাংকগুলোর আর্থিক পরিস্থিতির দুর্বলতা নির্দেশ করে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, বিভিন্ন আর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণেই বেশ কয়েকটি ব্যাংক বছরের পর বছর বড় ধরনের মূলধন ঘাটতি নিয়ে চলছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে নানা ছাড় ও নিবিড় তদারকির পরও তাদের মূলধন পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে না।

আন্তর্জাতিক নীতিমালার আলোকে ব্যাংকগুলোকে মূলধন সংরক্ষণ করতে হয়। বাংলাদেশে বর্তমানে ব্যাসেল-৩ নীতিমালার আলোকে ব্যাংকের ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদের ১০ শতাংশ অথবা ৪০০ কোটি টাকার মধ্যে যেটি বেশি- সে পরিমাণ মূলধন রাখতে হচ্ছে। কোনো ব্যাংক এ পরিমাণ অর্থ সংরক্ষণে ব্যর্থ হলে মূলধন ঘাটতি হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

নিয়ম অনুযায়ী, ব্যাংকের উদ্যোক্তাদের জোগান দেওয়া অর্থ ও মুনাফার একটি অংশ মূলধন হিসেবে সংরক্ষণ করা হয়। কোনো ব্যাংক মূলধনে ঘাটতি রেখে তার শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ দিতে পারে না। এছাড়া বিদেশি ব্যাংকগুলো কোনো স্থানীয় ব্যাংকের সঙ্গে লেনদেন করার আগে ব্যাংকের মূলধন পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে থাকে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, কোনো ব্যাংক মূলধন ঘাটতিতে থাকলে তার আর্থিক ভিত্তির দুর্বলতা প্রকাশ পায়। ফলে ওই ব্যাংকের ওপর গ্রাহকদের আস্থাও কমে যায়। এছাড়া অন্য দেশের ব্যাংকগুলোর সঙ্গে লেনদেনের ক্ষেত্রে তাদের অসুবিধার মুখে পড়তে হয়। তাই ব্যাংকগুলোর মূলধন ভিত্তিকে শক্তিশালী করার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংককে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের পরামর্শ দেন তিনি।

সর্বশেষ জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর এই তিন মাসে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ কমেছে প্রায় ৬৪৪ কোটি টাকা। যদিও চলতি বছরের নয় মাসের হিসাবে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়েছে ৩৪ হাজার ৭৪১ কোটি টাকা। এর ফলে গত সেপ্টেম্বর শেষে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৫৫ হাজার ৩৯৭ কোটি টাকা, যা মোট বিতরণ করা ঋণের ৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ। আর যে ব্যাংকের খেলাপি ঋণ যত বেশি, ওই ব্যাংককে তত বেশি প্রভিশন রাখতে হয়। আর প্রভিশন রাখার প্রয়োজনীয়তা বাড়লে মূলধন ঘাটতিও বাড়ে। ফলে আলোচ্য প্রান্তিকে ১৪ ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি বেড়ে হয়েছে ৩৭ হাজার ৫০৭ কোটি ৫১ লাখ টাকা।

ব্যাংকগুলো হলো- রাষ্ট্রায়ত্ত খাতের জনতা ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, বেসিক ব্যাংক ও রূপালী ব্যাংক, বিশেষায়িত খাতের বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক ও রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক। বেসরকারি খাতের ন্যাশনাল ব্যাংক, আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক, পদ্মা ব্যাংক, বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংক ও সিটিজেনস ব্যাংক।

এছাড়া বিদেশি খাতের হাবিব ব্যাংক ও ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান। এই ব্যাংকগুলোসহ মোট ১৫টি ব্যাংক আগের প্রান্তিকেও মূলধন ঘাটতিতে ছিল। সে সময় ব্যাংকগুলোর মূলধন ঘাটতির পরিমাণ ছিল ৩৩ হাজার ৭৪৪ কোটি টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত সেপ্টেম্বরেও সবচেয়ে বেশি ১৫ হাজার ৮০৩ কোটি ৬৬ লাখ টাকার মূলধন ঘাটতি রয়েছে বিশেষায়িত খাতের বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে। এ খাতের রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের ঘাটতি রয়েছে ২ হাজার ৪৭২ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। রাষ্ট্রায়ত্ত খাতের ব্যাংকগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ ঘাটতি অগ্রণী ব্যাংকের ৪ হাজার ৮২৮ কোটি ৬১ লাখ টাকা। এ সময়ে বেসিক ব্যাংকের ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ১৫০ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। এছাড়া জনতা ব্যাংকের ঘাটতি ৩ হাজার ২৯ কোটি ৫৪ লাখ টাকা ও রূপালী ব্যাংকের ঘাটতি ২ হাজার ১২১ কোটি ৯০ লাখ টাকা। বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ ১ হাজার ৮২৩ কোটি ৪৫ লাখ টাকা ঘাটতি আইসিবি ইসলামিক ব্যাংকের। এছাড়া ন্যাশনাল ব্যাংকের ২ হাজার ২৪ কোটি ৩৭ লাখ টাকা, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের ১ হাজার ৪০২ কোটি ২২ টাকা, পদ্মা ব্যাংকের ৬০৭ কোটি ৯২ লাখ টাকা, সিটিজেনস ব্যাংকের ৯৫ কোটি ৩৭ লাখ টাকা ও বেঙ্গল ব্যাংকের প্রায় ৭০ কোটি ৭০ লাখ টাকার মূলধন ঘাটতি রয়েছে।

এ সময়ে বিদেশি খাতের হাবিব ব্যাংক ও ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান মূলধন ঘাটতিতে পড়েছে। গত সেপ্টেম্বরে এই ব্যাংক দুটির ঘাটতি হয়েছে যথাক্রমে ৩৩ কোটি ৪০ লাখ ও ৪৩ কোটি ৬৫ লাখ টাকা।

প্রাপ্ত তথ্যে আরও দেখা যায়, গত তিন মাসে সার্বিক ব্যাংক খাতে মূলধন ভিত্তিরও অবনতি হয়েছে। এ সময়ে মূলধন পর্যাপ্ততা অনুপাত (সিএআর) দাঁড়িয়েছে ১১ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ, যা গত জুনে ছিল ১১ দশমিক ১৯ শতাংশ। এছাড়া গত মার্চে ছিল ১১ দশমিক ২৩ শতাংশ। আর ২০২২ সালের ডিসেম্বরে ছিল ১১ দশমিক ৮৩ শতাংশ। অন্যদিকে গত সেপ্টেম্বরে বেশ কয়েকটি ব্যাংকের সিআরএআর অনুপাত ঋণাত্মক ধারায় নেমে গেছে। এর মধ্যে বেসিক ব্যাংকের ঋণাত্মক ৬ দশমিক ৭১ শতাংশ, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের ঋণাত্মক ২৫ দশমিক ৪৯ শতাংশ, আইসিবি ইসলামিক ব্যাংকের ঋণাত্মক ১৪৭ দশমিক ৭৯ শতাংশ, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের ঋণাত্মক ৪৯ দশমিক ৩০ শতাংশ ও রাকাবের ঋণাত্মক ২৭ দশমিক ৭৪ শতাংশ। এছাড়া একই সময়ে বেশ কয়েকটি ব্যাংকের সিআরএআর ১০ শতাংশের নিচে রয়েছে। এ তালিকায় আছে- অগ্রণী, জনতা, রূপালী, সোনালী, ন্যাশনাল ও পদ্মা ব্যাংক।

নিউজটি শেয়ার করুন

১৪ ব্যাংকে মূলধন ঘাটতি ৩৭৬৪ কোটি টাকা

আপডেট সময় : ১২:৪৪:১১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৩

সর্বশেষ সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে খেলাপি ঋণ কিছুটা কমলেও তার প্রভাব পড়েনি ব্যাংকগুলোর মূলধন সংরক্ষণে। উল্টো সংকটে থাকা ব্যাংকগুলোর মূলধন ঘাটতি আরও বেড়েছে প্রায় ৩ হাজার ৭৬৪ কোটি টাকা। এ সময়ে দেশি-বিদেশি অন্তত ১৪ ব্যাংক প্রয়োজনীয় মূলধন সংরক্ষণ করতে পারেনি। সংকটে থাকা এসব ব্যাংকের মূলধন ঘাটতির পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় সাড়ে ৩৭ হাজার কোটি টাকা।

এর মধ্যে নয়টি ব্যাংক বিপুল অঙ্কের মূলধন ঘাটতিতে পড়েছে, যার মধ্যে পাঁচটির মূলধন পর্যাপ্ততার অনুপাত (সিআরএআর) ঋণাত্মক ধারায় রয়েছে। এ ধরনের পরিস্থিতি ব্যাংকগুলোর আর্থিক পরিস্থিতির দুর্বলতা নির্দেশ করে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, বিভিন্ন আর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণেই বেশ কয়েকটি ব্যাংক বছরের পর বছর বড় ধরনের মূলধন ঘাটতি নিয়ে চলছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে নানা ছাড় ও নিবিড় তদারকির পরও তাদের মূলধন পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে না।

আন্তর্জাতিক নীতিমালার আলোকে ব্যাংকগুলোকে মূলধন সংরক্ষণ করতে হয়। বাংলাদেশে বর্তমানে ব্যাসেল-৩ নীতিমালার আলোকে ব্যাংকের ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদের ১০ শতাংশ অথবা ৪০০ কোটি টাকার মধ্যে যেটি বেশি- সে পরিমাণ মূলধন রাখতে হচ্ছে। কোনো ব্যাংক এ পরিমাণ অর্থ সংরক্ষণে ব্যর্থ হলে মূলধন ঘাটতি হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

নিয়ম অনুযায়ী, ব্যাংকের উদ্যোক্তাদের জোগান দেওয়া অর্থ ও মুনাফার একটি অংশ মূলধন হিসেবে সংরক্ষণ করা হয়। কোনো ব্যাংক মূলধনে ঘাটতি রেখে তার শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ দিতে পারে না। এছাড়া বিদেশি ব্যাংকগুলো কোনো স্থানীয় ব্যাংকের সঙ্গে লেনদেন করার আগে ব্যাংকের মূলধন পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে থাকে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, কোনো ব্যাংক মূলধন ঘাটতিতে থাকলে তার আর্থিক ভিত্তির দুর্বলতা প্রকাশ পায়। ফলে ওই ব্যাংকের ওপর গ্রাহকদের আস্থাও কমে যায়। এছাড়া অন্য দেশের ব্যাংকগুলোর সঙ্গে লেনদেনের ক্ষেত্রে তাদের অসুবিধার মুখে পড়তে হয়। তাই ব্যাংকগুলোর মূলধন ভিত্তিকে শক্তিশালী করার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংককে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের পরামর্শ দেন তিনি।

সর্বশেষ জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর এই তিন মাসে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ কমেছে প্রায় ৬৪৪ কোটি টাকা। যদিও চলতি বছরের নয় মাসের হিসাবে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়েছে ৩৪ হাজার ৭৪১ কোটি টাকা। এর ফলে গত সেপ্টেম্বর শেষে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৫৫ হাজার ৩৯৭ কোটি টাকা, যা মোট বিতরণ করা ঋণের ৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ। আর যে ব্যাংকের খেলাপি ঋণ যত বেশি, ওই ব্যাংককে তত বেশি প্রভিশন রাখতে হয়। আর প্রভিশন রাখার প্রয়োজনীয়তা বাড়লে মূলধন ঘাটতিও বাড়ে। ফলে আলোচ্য প্রান্তিকে ১৪ ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি বেড়ে হয়েছে ৩৭ হাজার ৫০৭ কোটি ৫১ লাখ টাকা।

ব্যাংকগুলো হলো- রাষ্ট্রায়ত্ত খাতের জনতা ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, বেসিক ব্যাংক ও রূপালী ব্যাংক, বিশেষায়িত খাতের বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক ও রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক। বেসরকারি খাতের ন্যাশনাল ব্যাংক, আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক, পদ্মা ব্যাংক, বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংক ও সিটিজেনস ব্যাংক।

এছাড়া বিদেশি খাতের হাবিব ব্যাংক ও ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান। এই ব্যাংকগুলোসহ মোট ১৫টি ব্যাংক আগের প্রান্তিকেও মূলধন ঘাটতিতে ছিল। সে সময় ব্যাংকগুলোর মূলধন ঘাটতির পরিমাণ ছিল ৩৩ হাজার ৭৪৪ কোটি টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত সেপ্টেম্বরেও সবচেয়ে বেশি ১৫ হাজার ৮০৩ কোটি ৬৬ লাখ টাকার মূলধন ঘাটতি রয়েছে বিশেষায়িত খাতের বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে। এ খাতের রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের ঘাটতি রয়েছে ২ হাজার ৪৭২ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। রাষ্ট্রায়ত্ত খাতের ব্যাংকগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ ঘাটতি অগ্রণী ব্যাংকের ৪ হাজার ৮২৮ কোটি ৬১ লাখ টাকা। এ সময়ে বেসিক ব্যাংকের ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ১৫০ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। এছাড়া জনতা ব্যাংকের ঘাটতি ৩ হাজার ২৯ কোটি ৫৪ লাখ টাকা ও রূপালী ব্যাংকের ঘাটতি ২ হাজার ১২১ কোটি ৯০ লাখ টাকা। বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ ১ হাজার ৮২৩ কোটি ৪৫ লাখ টাকা ঘাটতি আইসিবি ইসলামিক ব্যাংকের। এছাড়া ন্যাশনাল ব্যাংকের ২ হাজার ২৪ কোটি ৩৭ লাখ টাকা, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের ১ হাজার ৪০২ কোটি ২২ টাকা, পদ্মা ব্যাংকের ৬০৭ কোটি ৯২ লাখ টাকা, সিটিজেনস ব্যাংকের ৯৫ কোটি ৩৭ লাখ টাকা ও বেঙ্গল ব্যাংকের প্রায় ৭০ কোটি ৭০ লাখ টাকার মূলধন ঘাটতি রয়েছে।

এ সময়ে বিদেশি খাতের হাবিব ব্যাংক ও ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান মূলধন ঘাটতিতে পড়েছে। গত সেপ্টেম্বরে এই ব্যাংক দুটির ঘাটতি হয়েছে যথাক্রমে ৩৩ কোটি ৪০ লাখ ও ৪৩ কোটি ৬৫ লাখ টাকা।

প্রাপ্ত তথ্যে আরও দেখা যায়, গত তিন মাসে সার্বিক ব্যাংক খাতে মূলধন ভিত্তিরও অবনতি হয়েছে। এ সময়ে মূলধন পর্যাপ্ততা অনুপাত (সিএআর) দাঁড়িয়েছে ১১ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ, যা গত জুনে ছিল ১১ দশমিক ১৯ শতাংশ। এছাড়া গত মার্চে ছিল ১১ দশমিক ২৩ শতাংশ। আর ২০২২ সালের ডিসেম্বরে ছিল ১১ দশমিক ৮৩ শতাংশ। অন্যদিকে গত সেপ্টেম্বরে বেশ কয়েকটি ব্যাংকের সিআরএআর অনুপাত ঋণাত্মক ধারায় নেমে গেছে। এর মধ্যে বেসিক ব্যাংকের ঋণাত্মক ৬ দশমিক ৭১ শতাংশ, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের ঋণাত্মক ২৫ দশমিক ৪৯ শতাংশ, আইসিবি ইসলামিক ব্যাংকের ঋণাত্মক ১৪৭ দশমিক ৭৯ শতাংশ, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের ঋণাত্মক ৪৯ দশমিক ৩০ শতাংশ ও রাকাবের ঋণাত্মক ২৭ দশমিক ৭৪ শতাংশ। এছাড়া একই সময়ে বেশ কয়েকটি ব্যাংকের সিআরএআর ১০ শতাংশের নিচে রয়েছে। এ তালিকায় আছে- অগ্রণী, জনতা, রূপালী, সোনালী, ন্যাশনাল ও পদ্মা ব্যাংক।