০৪:১৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিশ্বাসের আড়ালে লুকানো মুখোশ!

লেখক-রাজু আহমেদ

দ্বিমুখী চরিত্রের মানুষ- একরূপ আপনাকে সামনে দেখায় এবং জঘন্যরূপ আপনার আড়ালে রাখে তাদের থেকে সাবধান। যারা আপনার পেছনে আপনাকে নিয়ে কুৎসার আসর বসায়- তা যদি টের পান তবে সেই মানুষদেরকে সারাজীবনের জন্য বয়কট করুন। জীবনে ভালো থাকার জন্য খুব বেশি মানুষের দরকার হয় না। এমনকি একা একাও ভালো থাকা যায় যদি কাছের মানুষ শত্রু হয়। যে আপনাকে আঘাত করে, ব্যথা দেয় কিংবা ষড়যন্ত্র করে- সে আপনার ভালো চায়? এমন মানুষের বন্ধু হিসেবে থাকার চেয়ে পথের কুকুরের সঙ্গ মঙ্গলের।

জীবনে হাতেগোনা কয়েকজন মানুষ থাকুক। যাদের সাথে যেকোনো পরিবেশে জীবন উপভোগ্য হয়ে ওঠে। অনেক মানুষ বহুবিধ অসুখের কারণ। যারা অনুপস্থিতিতে বদনাম রটায়, সুযোগ পেলেই ক্ষতিকর কাণ্ড ঘটায় এবং বিশ্বাস করলে ক্ষতে খোঁটায় তাদের থেকে তফাতে থাকুন। নিজেকে নিরাপদে রাখুন। প্রশংসার মধুতে বিষ মিশিয়ে যারা আড়ালে আঘাত হানে, তাদের থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখুন।

সামনাসামনি বন্ধুত্ব এবং আড়ালে গোষ্ঠী উদ্ধার করা- আশেপাশে এমন মানুষের সারি লম্বা। যে আপনার বিশ্বাস ভাঙবে সে ফাঁদ পেতেই আপনার ক্ষতি করবে। অভিনয়ে এমনভাবে মধু ঢালবে যাতে অবিশ্বাস করার সুযোগ নাই। কায়দা করে ফায়দা লুটে পগারপার হবে। আপনার কূলে রয়ে যাবে বেদনা, চোখে থাকবে অশ্রু। দূরের মানুষ নয় বরং কাছের মানুষ অধিকাংশ দুঃখের কারণ।

জীবনে সবচেয়ে কঠিন কাজের একটি হচ্ছে মানুষ চেনা। আমরা সারাজীবন বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ভুল মানুষকে বিশ্বাস করেছি। অমানুষও যে মানুষের মত দেখতে। যে আপন মানুষ হবে সে তো কথা বলতে ভণিতা করবে না। অথচ রসিয়ে রসিয়ে যে হৃদয় জয় করে আপন হয় সেও স্বার্থ ফুরোলে হৃদয়কে ক্ষতবিক্ষত করে যায়। এই যে মন খারাপ, রাত জাগা কিংবা একা একা থাকতে বাধ্য হওয়া- এর অধিকাংশের প্রধান কারণ কাছে মানুষ। দুরের মানুষের দুঃখ দেওয়ার ক্ষমতা খুব সামান্যই। বাইরের শত্রু থেকে তো আমরা সাবধান থাকি।

যে মানুষগুলো সামনে পেলে ভালো কথার ভেলায় ভাসায়, প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয় তারা যখন আড়ালে বেদনার তীর ছোঁড়ে তখন তীব্রভাবে আঘাত পেতে হয়। প্রিয় মানুষ কারো কাছে আপনার বদনাম করছে- এই দৃশ্য পৃথিবীর অসুন্দর দৃশ্যের একটি। অথচ মানুষ যত্ন করে এই অসুন্দর সৃষ্টি করে। কোন লাভ নাই অথচ মানুষ একত্রিত হয়েই অনুপস্থিতদের নামে অসত্য-অমূলক কথার বাসর বসায়। অথচ নিজেদের নিয়ে আলোচনা করলে ভুল শোধরাবার সুযোগ সৃষ্টি হতো। মানুষ সেটা করে না। কেন করে না?- আপনি আমি জানি না!

আসুন বদলে যাই। আপনার-আমার কথায় তৃতীয় কারো নামে বদনাম না করি। কারো অনুপস্থিতিতে এমন কোন কথা না বলি যে কথা আমার অনুপস্থিতিতে কেউ বললে আমার মন খারাপ হতো। গীবতের পরিণতি কত ভয়ঙ্কর হতে পারে তা বোধহয় আন্দাজ করতে পারছি না। কারো পেছনে কোন কথা বলতে হলে সেটা ভালো কথা হোক। কারো নামে কুৎসা, মিথ্যা কিংবা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সত্য- এসব থেকে যাতে বিরত থাকি। মানুষের ভরসা হওয়ার মাঝে কীর্তির ছাপ আছে। কেউ ঘৃণা করুক- এমন কোন আচরণ আমাদের জীবনে না থাকুক।

[এই বিভাগের লেখা লেখকের একান্তই ব্যক্তিগত এ বিভাগের লেখার সাথে বাংলা খবর বিডির সামঞ্জস্য নাও থাকতে পারে]

শেয়ার করুন

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আপডেট : ১০:৫২:০৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪
৬৭ জন দেখেছেন

বিশ্বাসের আড়ালে লুকানো মুখোশ!

আপডেট : ১০:৫২:০৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪

দ্বিমুখী চরিত্রের মানুষ- একরূপ আপনাকে সামনে দেখায় এবং জঘন্যরূপ আপনার আড়ালে রাখে তাদের থেকে সাবধান। যারা আপনার পেছনে আপনাকে নিয়ে কুৎসার আসর বসায়- তা যদি টের পান তবে সেই মানুষদেরকে সারাজীবনের জন্য বয়কট করুন। জীবনে ভালো থাকার জন্য খুব বেশি মানুষের দরকার হয় না। এমনকি একা একাও ভালো থাকা যায় যদি কাছের মানুষ শত্রু হয়। যে আপনাকে আঘাত করে, ব্যথা দেয় কিংবা ষড়যন্ত্র করে- সে আপনার ভালো চায়? এমন মানুষের বন্ধু হিসেবে থাকার চেয়ে পথের কুকুরের সঙ্গ মঙ্গলের।

জীবনে হাতেগোনা কয়েকজন মানুষ থাকুক। যাদের সাথে যেকোনো পরিবেশে জীবন উপভোগ্য হয়ে ওঠে। অনেক মানুষ বহুবিধ অসুখের কারণ। যারা অনুপস্থিতিতে বদনাম রটায়, সুযোগ পেলেই ক্ষতিকর কাণ্ড ঘটায় এবং বিশ্বাস করলে ক্ষতে খোঁটায় তাদের থেকে তফাতে থাকুন। নিজেকে নিরাপদে রাখুন। প্রশংসার মধুতে বিষ মিশিয়ে যারা আড়ালে আঘাত হানে, তাদের থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখুন।

সামনাসামনি বন্ধুত্ব এবং আড়ালে গোষ্ঠী উদ্ধার করা- আশেপাশে এমন মানুষের সারি লম্বা। যে আপনার বিশ্বাস ভাঙবে সে ফাঁদ পেতেই আপনার ক্ষতি করবে। অভিনয়ে এমনভাবে মধু ঢালবে যাতে অবিশ্বাস করার সুযোগ নাই। কায়দা করে ফায়দা লুটে পগারপার হবে। আপনার কূলে রয়ে যাবে বেদনা, চোখে থাকবে অশ্রু। দূরের মানুষ নয় বরং কাছের মানুষ অধিকাংশ দুঃখের কারণ।

জীবনে সবচেয়ে কঠিন কাজের একটি হচ্ছে মানুষ চেনা। আমরা সারাজীবন বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ভুল মানুষকে বিশ্বাস করেছি। অমানুষও যে মানুষের মত দেখতে। যে আপন মানুষ হবে সে তো কথা বলতে ভণিতা করবে না। অথচ রসিয়ে রসিয়ে যে হৃদয় জয় করে আপন হয় সেও স্বার্থ ফুরোলে হৃদয়কে ক্ষতবিক্ষত করে যায়। এই যে মন খারাপ, রাত জাগা কিংবা একা একা থাকতে বাধ্য হওয়া- এর অধিকাংশের প্রধান কারণ কাছে মানুষ। দুরের মানুষের দুঃখ দেওয়ার ক্ষমতা খুব সামান্যই। বাইরের শত্রু থেকে তো আমরা সাবধান থাকি।

যে মানুষগুলো সামনে পেলে ভালো কথার ভেলায় ভাসায়, প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয় তারা যখন আড়ালে বেদনার তীর ছোঁড়ে তখন তীব্রভাবে আঘাত পেতে হয়। প্রিয় মানুষ কারো কাছে আপনার বদনাম করছে- এই দৃশ্য পৃথিবীর অসুন্দর দৃশ্যের একটি। অথচ মানুষ যত্ন করে এই অসুন্দর সৃষ্টি করে। কোন লাভ নাই অথচ মানুষ একত্রিত হয়েই অনুপস্থিতদের নামে অসত্য-অমূলক কথার বাসর বসায়। অথচ নিজেদের নিয়ে আলোচনা করলে ভুল শোধরাবার সুযোগ সৃষ্টি হতো। মানুষ সেটা করে না। কেন করে না?- আপনি আমি জানি না!

আসুন বদলে যাই। আপনার-আমার কথায় তৃতীয় কারো নামে বদনাম না করি। কারো অনুপস্থিতিতে এমন কোন কথা না বলি যে কথা আমার অনুপস্থিতিতে কেউ বললে আমার মন খারাপ হতো। গীবতের পরিণতি কত ভয়ঙ্কর হতে পারে তা বোধহয় আন্দাজ করতে পারছি না। কারো পেছনে কোন কথা বলতে হলে সেটা ভালো কথা হোক। কারো নামে কুৎসা, মিথ্যা কিংবা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সত্য- এসব থেকে যাতে বিরত থাকি। মানুষের ভরসা হওয়ার মাঝে কীর্তির ছাপ আছে। কেউ ঘৃণা করুক- এমন কোন আচরণ আমাদের জীবনে না থাকুক।

[এই বিভাগের লেখা লেখকের একান্তই ব্যক্তিগত এ বিভাগের লেখার সাথে বাংলা খবর বিডির সামঞ্জস্য নাও থাকতে পারে]