সরকারি নিয়ম মানতে নারাজ আওয়ামী লীগ নেতা – লোহার পাইপের পরিবর্তে বাঁশের ব্যবহার
ঠিকাদারী কাজে সরকারের বেধে দেওয়া নিময় মানতে রাজি নন ঠিকাদার। সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার সমেশপুর হাটে ২ তলা একটি ভবনে ছাদ ঢালাই কাজের লোহার পাইপের পরিবর্তে বাঁশের সাটারিং দিয়ে ভবনের ছাদ ঢালাই করা নিয়ে জটিলতা দেখা দিয়েছে। নির্মাণ কাজের ঠিকাদার সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা মীর সিরাজুল ইসলামকে কাজের নিম্নমান ও নিময় না মেনে কাজ করার জন্য প্রকৌশল অফিস থেকে ২ দফা চিঠি দিলেও তার তোয়াক্কা না করে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে কাজ করে চলছে। এবিষয়ে খুদ্ধ হাটের সাধারন মানুষ। তবে নিয়ম না মেনে কাজ করার কোন সুযোগ নেই বলে জানান, সিরাজগঞ্জ স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডির) নির্বাহী প্রকৌশলী।
সিরাজগঞ্জ স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডির) অফিস সূত্রে জানাযায়, গ্রামীণ বাজার অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের সারা দেশব্যাপী হাটভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। এর আওতায় সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার সমেশপুর বাজারে দুই তালা বিশিষ্ট ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। ২০২৩ সালের মে মাসে মেসার্স লিটন এন্টারপ্রাইজ চুক্তিবদ্ধ হয়। এতে ২ কোটি ২৫ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়। বিভিন্ন প্রকারের ব্যয়ের মধ্যে প্রায় ১৫ লাখ টাকার স্টিল সাটার ও লোহার পাইপের ব্যবহার ধরা থাকলেও ঠিকাদার ইচ্ছামতো বাঁশের ব্যবহার করে যাচ্ছে।
কাজটি ২০২৪ সালের গত এপ্রিল মাসে শেষ করার কথা থাকলেও আজ অবধি কাজ হয়েছে ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ বলে জানায় স্থানীয় প্রকৌশল অফিস। কাজের মান ও কাজের বিবরনিতে স্টিল সাটার ও লোহার পাইপের ব্যবহার করার কথা উল্লেখ করে ঠিকারদার প্রতিষ্ঠানকে চিঠিও দেওয়া হয়েছে। প্রকৌশল অফিস থেকে বার বার তাগাদা দিলেও ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে কাজ করে যাচ্ছে ঠিকাদার। দেখা যায় ভবনটিতে প্রথম তলার ঢালাই করার জন্য কাঠ ও বাঁশ দিয়ে ফ্রেম করা হয়েছে। স্থনীয়দের অভিযোগ, মীর সিরাজুল আওয়ামী লীগের প্রভাবে এখনও জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী অফিসের সাথে যোগ সাজস করে যেনতেন কাজ করে কাজটি শেষ করতে চাচ্ছে। এই হাটের স্থানীয়দের দাবী ভবনটি যেন সঠিক ভাবে করা হয়।
এবিষয়ে বেলকুচি উপজেলা প্রকৌশলী বোরহান উদ্দিন বলেন, আমরা গত মাসে ডিজাইন মোতাবেক ও মানসম্মত সামগ্রী ব্যবহারের জন্য দুই দফা চিঠি প্রদান করেছি। এই কাজের ক্ষেত্রে স্টিল ও লোহার পাইপ দিয়ে ছাদ ঢালাইয়ের উল্লেখ আছে। কিন্তু ঠিকাদার এখন পর্যন্ত বাঁশ ও কাঠ দিয়ে ঢালাইয়ের জন্য ফ্রেম করেছে। বাঁশ ও কাঠ দিয়ে ঢালাই দিলে এই ধরনের বড় মানের ভবনের জন্য ক্ষতি সাধন হতে পারে। এভাবে নির্মাণ হলে ভবনের স্থায়িত্বকাল কমিয়ে দেয়। আমাদের এই কাজে প্রায় ১৫ লাখ টাকার স্টিল সাঁটার ধরা আছে।
এবিষয়ে উপজেলার আওয়ামী লীগ নেতা ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান প্রার্থী ঠিকাদার মীর সিরাজুল ইসলাম বলেন, বাঁশ সাটারে ব্যবহার করলে কি সমস্যা, স্টিল সাটার ব্যবহার করব কিনা, আমার ব্যাপার। ভবন ভেঙ্গে গেলে ক্ষতিপূরণ আমাকে দিতে হবে তাতে অন্যের সমস্যা কি। এছাড়া এবিষয়ে অফিস সব জানে ও সমন্বয় করে কাজ করা হচ্ছে জানান তিনি। কাজে ধীরগতি কেনো এ বিষয়ে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।
এবিষয়ে সিরাজগঞ্জ এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম বলেন, যেখানে ভবনের সাটারিং এর জন্য বরাদ্দ দেয়া আছে স্টিল পাইপ সেখানে কোনভাবেই বাস ও কাঠ দিয়ে সাটারিং দেওয়া যাবে না। ঠিকাদারকে এরই মধ্যে জানানো হয়েছে সাত দিনের মধ্যে বাঁশ ও কাঠের সাটারিং খুলে ফেলাতে।
বাখ//এস