দিনাজপুরে এই মৌসুমে ৬৬, ৬৭৯ মেট্রিক টন চাল ও ১৭,৭৯১ মেট্রিক টন ধান ক্রয় লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ
দিনাজপুরে এবারের আমন মৌসুমে ৬৬ হাজার ৬৭৯ মেট্রিক টন চাল এবং ১৭ হাজার ৭৯১ মেট্রিক টন ধান ক্রয়ের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করে আগামী ১৭ ই নভেম্বর রবিবার থেকে শুরু হচ্ছে ধানচাল সংগ্রহ অভিযান। শহরের ফুলহাট এলাকায় অবস্থিত এলএসডি গোডাউন এলাকায় শুরু হবে এই কার্যক্রম বিকেল সাড়ে তিনটায়। দেশব্যাপী একযোগে শুরু হবে এই অভিযান। এতে ঢাকা থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হবেন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা।
দিনাজপুর জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সুবীর নাথ চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, এই মৌসুমে সিদ্ধ চাল প্রতি কেজি ৪৭ টাকা দরে এবং আতপ চাল প্রতি কেজি ৩৩ টাকা দরে কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আশা করছি আমাদের ধান ও চালের ক্ষেত্রে যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে তা পূরণ হবে।
স্থানীয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক কৃষিবিদ মোঃ আনিছুজ্জামান বলেন, ধান উৎপাদনে দিনাজপুর জেলার অবদান অনস্বীকার্য। এই মৌসুমে জেলায় বিভিন্ন জাতের ২ লক্ষ ৬০ হাজার ৮৫৬ হেক্টর একটা জমিতে আমন আবাদ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলনও বেশ ভালো। এরই মধ্যে আগাম জাতের ধান কাটা শুরু হয়েছে। এসব জাতের মধ্যে বেশিরভাগ মোটা ধান। গুটি স্বর্ণা, সাদা স্বর্ণা, লাল, বিআর ১১ জাতের ধান। এবছর জেলায় ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১২ লক্ষ ৬৭ হাজার ৭৬০ মেট্রিক টন যা থেকে চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৮ লক্ষ ৮৫ হাজার ১৭৩ মেট্রিক টন। ফলন যেভাবে তাতে আমরা লক্ষ্যপাত্রা পূরণ করতে পারব।
এদিকে জেলার ১৩ টি উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে মোটা জাতের বিভিন্ন ধান বিক্রি হচ্ছে ৭৫ কেজি’র প্রতি বস্তা ২৫০০ টাকা থেকে ২৬০০ টাকা পর্যন্ত।
দিনাজপুর সদর উপজেলার উলিপুর এলাকার আসাদুল্লাহ এর পুত্র নিজাম উদ্দিন বলেন, এখন ধান বিক্রি করে যে দাম পাচ্ছি তা যদি আগামীতে পাই তাহলে আমরা লাভবান হব। তবে প্রতিবছর পরের দিকে ধান এর দাম কমে যায়। অনেক সময় পাইকাররা ধান বাকিতে নিয়ে যায়। অনেক সময় সেই বাকী দেওয়া ধানের উঠাতে পাইকাদের কাছে ধরনা দিতে হয়। এছাড়া ৭৫ কেজি বস্তায় পাইকাররা ৭৭ কেজি করে নেয়। প্রতি বস্তায় আমাদেরকে দুই কেজি ধান বেশি দিতে হয়। এভাবেই কৃষকদের ঠকায় পাইকাররা।
জেলার বিরল উপজেলার নয়া মেলা এলাকার আমজাদ হোসেনের পুত্র ধান ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে আমরা ২৫০০ টাকা থেকে ২৬০০ টাকা পর্যন্ত প্রতি বস্তা ধান কিনছি। এখন যেগুলো ধান কিনছি তা সব মোটা জাতের ধান। চিকন জাতের ধান বাজারে আসতে আরো কিছুদিন সময় লাগবে। তবে বাজারে ধানের সরবরাহ বাড়লে দাম কমে যাওয়ার আশঙ্কা ব্যক্ত করেন তিনি। প্রতি বস্তায় ২ কেজি ধান বেশি নেওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, মিল মালিকরা আমাদের কাছে বেশি নেয় তাই আমাদেরকে কৃষকদের কাছ থেকেও বেশি নিতে হয়।
বিরল পৌর এলাকার মৃত আব্দুল কাদেরের পুত্র ব্যবসায়ী ও কৃষক একরামুল হক বলেন, পাইকাররা যে ধান কিনে তা কাঁচা ধান। সেই ধান মিলে আসা পর্যন্ত কিছু ধান ওয়েস্টেজ হয়। এমন অবস্থা থেকে কোন কোন মিলি মালিক হয়তো বা ৭৫ কেজির পরিবর্তে ৭৭ কেজি ধান নেয়। যদিও এটি নেওয়া উচিত নয় বলে মতামত দেন তিনি।
উল্লেখ্য যে, এবারের আমন মৌসুমে জেলায় বিভিন্ন জাতের ধানের উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১২ লক্ষ ৬৭ হাজার ৭৬০ মেট্রিক টন বিপরীতে সরকার ধান কিনবে মাত্র ১৭ হাজার ৭৯১ মেট্রিক টন, শতকরার হিসেবে যা দাড়ায় ০.১৪ শতাংশ। বাকি ধান চলে যায় বড় বড় মিল মালিক ও অসাধু ব্যবসায়ীদের হাতে। জিম্মি হয়ে পরে সরকার মিলাদের কাছে।যে কারণে অস্থির হয়ে ধান চালের বাজার। এমন সময়ের সুযোগ নেয় সিন্ডিকেট নামক কালো থাবা এমন মতামত সংশ্লিষ্টদের।
বাখ//আর