০৪:১৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কাজীপুরে যুবদল নেতার ফার্নিচারের ঘর কোপানোর অভিযোগ আ.লীগের নেতাদের বিরুদ্ধে

কাজীপুর (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি

সিরাজগঞ্জের কাজীপুরে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে এক যুবদল নেতার ফার্নিচার ঘর কোপানো ও ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে। গত শুক্রবার (১ নভেম্বর) দিবাগত-রাত সাড়ে ১২ টার দিকে উপজেলার মাইজবাড়ি ইউনিয়নের ছালাভরা গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। এ বিষয়ে ঘটনার পরদিন কাজীপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী নেতা আব্দুল মমিন। তিনি মাইজবাড়ি ইউনিয়ন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক। তার বাড়ি ছালাভরা পশ্চিম পাড়া গ্রামে।

অভিযুক্ত হলেন, মাইজবাড়ি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও ছালাভরা পূর্বপাড়া গ্রামের মহিরের ছেলে মো. শহীদ (৪৫), ছালাভরা পশ্চিমপাড়ার মৃত মকবুল হোসেনের ছেলে রুহুল আমিন (৩৫) এবং বেলতৈল গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য শফিকুল ইসলাম শফি (৪৩)।

থানায় দেয়া অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, যুবদল নেতা আব্দুল মমিনের সাথে দীর্ঘদিন ধরে বিবাদীদের রাজনৈতিক বিরোধ ও পূর্বশত্রুতা চলে আসছে। গত শুক্রবার রাতে অভিযুক্তরা মোটরসাইকেল নিয়ে এসে আব্দুল মমিনের বাড়ির সামনে অবস্থিত ‘ভাই ভাই ফার্নিচার’ ঘর কুপিয়ে ভাঙচুর করে। লোকজনের ডাক চিৎকারে দুর্বৃত্তরা মোটরসাইকেল নিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়।

জানা গেছে, এর আগে গত ২৮ অক্টোবরে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও ভাংচুরের অভিযোগ এনে দ্রুত বিচার আইনে সিরাজগঞ্জের আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন আব্দুল মমিন। মামলায় মাইজবাড়ি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুস ছালামকে প্রধান আসামী করা হয়।

এছাড়া মামলায় উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু সায়েম তালুকদার, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহীন আলম, জাতীয় শ্রমিক লীগের উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আব্দুস ছালাম, মাইজবাড়ি ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি রবিউল হাসান স্বপন, ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি মো. পলাশ, সাধারণ সম্পাদক নাদিম হায়দার সহ ১৩ জন নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করা হয়।

মামলার আর্জিতে উল্লেখ করা হয়, বাদী আব্দুল মমিন একজন সফল কাঠ ফার্নিচার ব্যবসায়ী। ছালাভরা পশ্চিমপাড়াতে তার বাড়ির সামনে ‘ভাই ভাই ফার্নিচার’ নামে একটি ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠান রেয়েছে। ওই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে এর আগে দুই লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করেন আসামীরা। সেই চাঁদা দিতে অপারগ প্রকাশ করলে গত ২৫ অক্টোবর বিকেলে আসামীরা দেশীয় অস্ত্রসস্ত্রসহ আব্দুল মমিনের বাড়িতে হামলা করে। এসময় আব্দুল মমিনকে হত্যার উদ্দেশ্যে রড দিয়ে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে আহত করে। পরে ঘরে থাকা দুই ভরি স্বর্ণালঙ্কার, নগদ দেড় লক্ষ টাকা ড্রয়ার ভেঙে বের করে নিয়ে যায়। এসময় ঘরে থাকা টিভি, ফ্রিজ, ড্রেসিং টেবিল সব ভেঙে ফেলে। এতে অন্ততঃ ৫ লক্ষ টাকার ক্ষতি সাধিত হয়েছে আব্দুল মমিনের।

মামলার বাদী আব্দুল মমিন বলেন, ‘আমি একজন ফার্নিচার ব্যবসায়ী। এলাকায় আমার ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠানে আওয়ামী লীগের নেতারা চাঁদা দাবী করে। বলে এখানে ব্যবসা করতে হলে চাঁদা দিয়ে করতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগের আমল হওয়া থানায় অভিযোগ দিতে গেলে আমাকে ফিরিয়ে দেয়া হয়। পরে আমি কয়েকদিন আগে আসামীদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজীর মামলা করি। তাতে ক্ষেপে গিয়ে ওই নেতারা রাতের আঁধারে আমার ফার্নিচার ঘর কুপিয়ে ভাঙচুর করে চলে যায় সাথে আমাকে হত্যার হুমকি দেয়।’

এ ব্যাপারে মামলার প্রধান আসামী আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুস ছালামের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল দেয়ার চেষ্টা করলে বন্ধ পাওয়া গেছে। অভিযুক্ত মো. শহিদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করে পাওয়া যায়নি।

কাজীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘একটি অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

বাখ//এস

শেয়ার করুন

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আপডেট : ১০:৪৩:১০ পূর্বাহ্ন, রোববার, ৩ নভেম্বর ২০২৪
২৬০ জন দেখেছেন

কাজীপুরে যুবদল নেতার ফার্নিচারের ঘর কোপানোর অভিযোগ আ.লীগের নেতাদের বিরুদ্ধে

আপডেট : ১০:৪৩:১০ পূর্বাহ্ন, রোববার, ৩ নভেম্বর ২০২৪

সিরাজগঞ্জের কাজীপুরে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে এক যুবদল নেতার ফার্নিচার ঘর কোপানো ও ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে। গত শুক্রবার (১ নভেম্বর) দিবাগত-রাত সাড়ে ১২ টার দিকে উপজেলার মাইজবাড়ি ইউনিয়নের ছালাভরা গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। এ বিষয়ে ঘটনার পরদিন কাজীপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী নেতা আব্দুল মমিন। তিনি মাইজবাড়ি ইউনিয়ন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক। তার বাড়ি ছালাভরা পশ্চিম পাড়া গ্রামে।

অভিযুক্ত হলেন, মাইজবাড়ি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও ছালাভরা পূর্বপাড়া গ্রামের মহিরের ছেলে মো. শহীদ (৪৫), ছালাভরা পশ্চিমপাড়ার মৃত মকবুল হোসেনের ছেলে রুহুল আমিন (৩৫) এবং বেলতৈল গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য শফিকুল ইসলাম শফি (৪৩)।

থানায় দেয়া অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, যুবদল নেতা আব্দুল মমিনের সাথে দীর্ঘদিন ধরে বিবাদীদের রাজনৈতিক বিরোধ ও পূর্বশত্রুতা চলে আসছে। গত শুক্রবার রাতে অভিযুক্তরা মোটরসাইকেল নিয়ে এসে আব্দুল মমিনের বাড়ির সামনে অবস্থিত ‘ভাই ভাই ফার্নিচার’ ঘর কুপিয়ে ভাঙচুর করে। লোকজনের ডাক চিৎকারে দুর্বৃত্তরা মোটরসাইকেল নিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়।

জানা গেছে, এর আগে গত ২৮ অক্টোবরে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও ভাংচুরের অভিযোগ এনে দ্রুত বিচার আইনে সিরাজগঞ্জের আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন আব্দুল মমিন। মামলায় মাইজবাড়ি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুস ছালামকে প্রধান আসামী করা হয়।

এছাড়া মামলায় উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু সায়েম তালুকদার, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহীন আলম, জাতীয় শ্রমিক লীগের উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আব্দুস ছালাম, মাইজবাড়ি ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি রবিউল হাসান স্বপন, ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি মো. পলাশ, সাধারণ সম্পাদক নাদিম হায়দার সহ ১৩ জন নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করা হয়।

মামলার আর্জিতে উল্লেখ করা হয়, বাদী আব্দুল মমিন একজন সফল কাঠ ফার্নিচার ব্যবসায়ী। ছালাভরা পশ্চিমপাড়াতে তার বাড়ির সামনে ‘ভাই ভাই ফার্নিচার’ নামে একটি ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠান রেয়েছে। ওই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে এর আগে দুই লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করেন আসামীরা। সেই চাঁদা দিতে অপারগ প্রকাশ করলে গত ২৫ অক্টোবর বিকেলে আসামীরা দেশীয় অস্ত্রসস্ত্রসহ আব্দুল মমিনের বাড়িতে হামলা করে। এসময় আব্দুল মমিনকে হত্যার উদ্দেশ্যে রড দিয়ে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে আহত করে। পরে ঘরে থাকা দুই ভরি স্বর্ণালঙ্কার, নগদ দেড় লক্ষ টাকা ড্রয়ার ভেঙে বের করে নিয়ে যায়। এসময় ঘরে থাকা টিভি, ফ্রিজ, ড্রেসিং টেবিল সব ভেঙে ফেলে। এতে অন্ততঃ ৫ লক্ষ টাকার ক্ষতি সাধিত হয়েছে আব্দুল মমিনের।

মামলার বাদী আব্দুল মমিন বলেন, ‘আমি একজন ফার্নিচার ব্যবসায়ী। এলাকায় আমার ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠানে আওয়ামী লীগের নেতারা চাঁদা দাবী করে। বলে এখানে ব্যবসা করতে হলে চাঁদা দিয়ে করতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগের আমল হওয়া থানায় অভিযোগ দিতে গেলে আমাকে ফিরিয়ে দেয়া হয়। পরে আমি কয়েকদিন আগে আসামীদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজীর মামলা করি। তাতে ক্ষেপে গিয়ে ওই নেতারা রাতের আঁধারে আমার ফার্নিচার ঘর কুপিয়ে ভাঙচুর করে চলে যায় সাথে আমাকে হত্যার হুমকি দেয়।’

এ ব্যাপারে মামলার প্রধান আসামী আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুস ছালামের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল দেয়ার চেষ্টা করলে বন্ধ পাওয়া গেছে। অভিযুক্ত মো. শহিদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করে পাওয়া যায়নি।

কাজীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘একটি অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

বাখ//এস