ঢাকা ০৫:১১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी
আজকের সেহরি ও ইফতার ::
ঢাকায় সেহেরি ৪:৩৩ মি. ইফতার ৬:১৭ মি.:: চট্টগ্রামে সেহেরি ৪:২৮ মি. ইফতার ৬:১১ মি. :: রাজশাহীতে সেহেরি ৪:৩৯ মি. ইফতার ৬:২৪ মি. :: খুলনায় সেহেরি ৪:৩৭ মি. ইফতার ৬:২০ মি. :: বরিশালে সেহেরি ৪:৩৪ মি. ইফতার ৬:১৭ মি. :: সিলেটে সেহেরি ৪:২৬ মি. ইফতার ৬:১১ মি. :: রংপুরে সেহেরি ৪:৩৭ মি. ইফতার ৬:২২ মি. :: ময়মনসিংহে সেহেরি ৪:৩২ মি. ইফতার ৬:১৭ মি. ::::

৫০ টাকার নিচে নেই সবজি, স্বস্তি নেই মাছ-চিনি-চালেও

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০২:৪২:৫৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ অক্টোবর ২০২২
  • / ৪৪৩ বার পড়া হয়েছে

ফাইল ছবি

বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে রোপা আমনসহ কৃষকের অন্যান্য ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বিশেষত, শীতকালীন সবজির মাঠ লণ্ডভণ্ড করে দিয়েছে সিত্রাংয়ের তাণ্ডব। সপ্তাহ না ঘুরতেই এর প্রভাব পড়েছে বাজারেও। নিত্যপ্রয়োজনীয় অন্য অনেক পণ্যের মতো শীতকালীন সবজির দামও চড়া। ডিম-চিনিতেও মেলেনি স্বস্তি। কমেনি মাছ-মাংস ও চালের দাম।

সরেজমিনে শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায় সব ধরনের জিনিসপত্রের দাম চড়া। বাড়তি দামে সবজি কিনে ক্ষুব্ধ ক্রেতারা। আর বিক্রেতারা বলেন, পাইকারি বাজারে বেশি দাম যাচ্ছে, যার প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারে। দাম কমতে শীত পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।

পেঁপে ছাড়া বাজারে অন্য প্রায় সব সবজিরই কেজি এখন ৫০ টাকার ওপরে। শীত আসার আগ পর্যন্ত এ দাম এমন থাকতে পারে বলে মনে করেন বিক্রেতারা। সপ্তাহের ব্যবধানে চিচিঙ্গা, বেগুন, পটল, ঢেড়সসহ সব ধরনের সবজির দাম কেজিতে অন্তত ৫-১০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।

বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে- লাউ বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকায়, বাঁধা কপি ও ফুলকপি (ছোট) ৫০ টাকা পিস, টমেটো ১৪০ টাকা কেজি, কাঁচা কলা প্রতি হালি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, শিম প্রতি কেজি ১০০ টাকা, বরবটি প্রতি কেজি ৮০ টাকা, কাঁচা মরিচ প্রতি কেজি ৮০ থেকে ১০০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া কেজি ৫০ টাকা, পটল ৫০ টাকা, বেগুনের কেজি ৬০ থেকে ৭০ টাকা, করোলা ৮০ টাকা কেজি, ঢেড়স প্রতি কেজি ৭০ টাকা, শসা ১০০ টাকা, ঝিঙ্গার প্রতি কেজি ৬০ টাকা। ৫০ টাকার নিচে পাওয়া গেলে একমাত্র পেঁপেই। পেঁপে বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি দরে। শীত আসার আগ পর্যন্ত এ দাম এমন থাকতে পারে বলে মনে করেন বিক্রেতারা।

সবজির দাম বাড়লে স্থিতিশীল আছে ডিম ও মাংসের বাজার। ব্রয়লার মুরগির ডিম প্রতি ডজন ১৪৫ টাকা, হাসের ডিম ২১০ আর দেশি মুরগির ডিম প্রতি ডজন বিক্রি হচ্ছে ২৩০ টাকায়। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৭০-১৮০, পাকিস্তানি কক ৩২০ টাকা, দেশি মুরগি ৫৩০-৫৫০ টাকায়, দেশি হাঁস ৪২০-৪৫০ কেজি আর কবুতর প্রতি জোড়া বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকায়। অন্যদিকে গরু ও খাসির মাংসের দাম রয়েছে অপরিবর্তিত। বাজারে আজ গরুর মাংস ৭০০ টাকা আর খাসির মাংসের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৯০০ টাকা দরে।

বাজারে চালের দামও রয়েছে স্থিতিশীল। চালের বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে ৭৩-৭৫ টাকা, আটাশ ৫৫-৫৮ টাকা, নাজিরশাইল ৮৩-৯১ টাকা, মোটা চাল ৪৮-৫৫ টাকা, চিকন চাল ৭০-৮০ টাকা, কাটারি ৬০-৬৫ টাকা, আটাশ ৪৮-৫৫ টাকা এবং পোলাওয়ের চাল বিক্রি হচ্ছে ১৩০-১৩৫ টাকা কেজি দরে।
সপ্তাহের শেষ দিন বাজারে প্রতি কেজি আলু ৩০ টাকা, পেঁয়াজ ৫০ টাকা, রসুন ১২০-১৩০ টাকা ও আদা ১২০-১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

ব্যবসায়ীদের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বাজারে পৌঁছায়নি সরকার নির্ধারিত দামের চিনি। যদিও গত সোমবার (২৪ অক্টোবর) ব্যবসায়ীরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) থেকে সরকার নির্ধারিত দাম, অর্থাৎ প্রতি কেজি খোলা চিনি ৯০ টাকা আর প্যাকেটজাত চিনি ৯৫ টাকায় বিক্রি করা হবে। বাজারে চিনির সঙ্কট থাকবে না বলে আশ্বাস দিয়েছেন তারা।

তবে এরপর পাঁচদিন পেরিয়ে গেলেও বাজারে খোলা ও প্যাকেটজাত চিনির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১২০ টাকায়। মিরপুর ৬ নম্বর এলাকার আল আমিম স্টোর সেন্টারের ব্যবসায়ী মাহমুদ জানিয়েছেন, এখনো নতুন দামের চিনি হাতে পাননি তারা। চিনির দাম গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই চড়া।

এদিকে আগের মতোই চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে মাছ। প্রতি কেজি রুই ২৬০-২৭০ টাকা, কাঁচকি ৭০০, পাবদা ৬০০, রূপচাঁদা ১ হাজার ১০০ এবং তেলাপিয়া ১৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

রামপুরা বাজারে সাপ্তাহিক বাজার করতে এসেছিলেন আসিফ হোসেন। বিক্রেতার সাথে সবজির দামাদামি করার সময় তার চোখে-মুখে এক ধরনের অসহায়ত্ব ফুটে উঠছিল। কারণ বাজারের এই ঊর্ধ্বগতির সাথে তিনি পেরে উঠছেন না।

কিছুটা ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, এই বাজারে কম টাকার মধ্যে কিছুই কেনা যায় না। এমন কোনো জিনিস নেই বাজারে যার দাম বাড়তি না। এই পরিস্থিতিতে জীবনযাত্রার ব্যয় ভার বহন করে টিকে থাকাই কঠিন। বাজারে ৫০ টাকার নিচে কোনো সবজি নেই। যেটার দাম করি সেটাই ৫০ থেকে ৮০ টাকা। এছাড়া শিম, শসা তো ১০০ আর টমেটো ১৪০ টাকা। বাজারে গরিবের সবজি বলতে শুধু পেঁপে আছে, যার দাম ৩০/৪০ টাকা। তাহলে বলেন আমরা খাবো কী?

সবজি বিক্রেতা হাসেম আলী বলেন, আসলেই বাজার বাড়তি যাচ্ছে। পাইকারি বাজারেও প্রতিটি জিনিস আগের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। এরপর আমাদের তা পরিবহনে করে এনে শ্রমিক দিয়ে নামাতে হয়। ফলে এর দাম আরও বেশি পড়ে যায়, এছাড়া পাইকারি বাজার, এই বাজার সব মিলিয়ে একটা লাইন ফি দিতে হয়। সব মিলিয়ে ক্রেতা পর্যায়ে আসতে একটা পণ্যের দাম বেড়ে যায়। মৌসুম শেষের দিকে তাই বর্তমান বাজার একটু বাড়তি যাচ্ছে।

ব্যবসায়ীরা বলেন, ঘূর্ণিঝড়ে অনেক কৃষকের সবজি ক্ষেত নষ্ট হয়েছে। ফলে বাজারে শীতকালীন সবজির সরবরাহ কিছুটা কম। এ কারণে দামও চড়া। এছাড়া চলতি সপ্তাহ থেকে বাজারে সরকার নির্ধারিত দামে খোলা ও প্যাকেটজাত চিনি বিক্রির প্রতিশ্রুতি দেন ব্যবসীয়ারা। তবে এখনো নির্ধারিত দামের চেয়ে ২০-৩০ টাকা বেশিতে চিনি বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ১১০-১২০ টাকা দামে। এছাড়া বাজারে মাছ-মাংস, সবজি, চালসহ অন্যান্য নিত্যপণ্য চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে।

অন্যদিকে বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারি সংস্থাসমূহের নিষ্ক্রিয়তার সমালোচনা করে শামসুন নাহার নামের একজন গৃহিণী বলেন, আমরা অভিযান দেখি, কিন্তু বাজারে এর প্রভাব পড়ছে না। বাজারে সবকিছুর দাম বেশি। যে কোনো সবজি এখন ৬০ টাকা কেজির কম কেনা যাচ্ছে না। ৩০ টাকার কম কোন শাকের আঁটি নেই। মাস মাস পরিবারগুলোর খরচ বাড়ছে। কিন্তু ব্যয় অনুযায়ী আয় বাড়ছে না।

রাজধানীর মালিবাগ এলাকার কাঁচাবাজারের সবজি বিক্রেতা মোজাম্মেল হক বলেন, আগের ফলনের বেশিরভাগ ফসলের শেষ চালানের মাল এগুলো। শীত আসলে সব নতুন সবজি উঠবে তখন দাম কমে আসবে। তাই সবজির দাম আসতে শীত পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। নতুন সবজি আসার পর বাজার কমতে ২/৩ সপ্তাহ সময় লেগে যেতে পারে।

The short URL of the present article is: https://banglakhaborbd.com/iqmx

নিউজটি শেয়ার করুন

৫০ টাকার নিচে নেই সবজি, স্বস্তি নেই মাছ-চিনি-চালেও

আপডেট সময় : ০২:৪২:৫৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ অক্টোবর ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে রোপা আমনসহ কৃষকের অন্যান্য ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বিশেষত, শীতকালীন সবজির মাঠ লণ্ডভণ্ড করে দিয়েছে সিত্রাংয়ের তাণ্ডব। সপ্তাহ না ঘুরতেই এর প্রভাব পড়েছে বাজারেও। নিত্যপ্রয়োজনীয় অন্য অনেক পণ্যের মতো শীতকালীন সবজির দামও চড়া। ডিম-চিনিতেও মেলেনি স্বস্তি। কমেনি মাছ-মাংস ও চালের দাম।

সরেজমিনে শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায় সব ধরনের জিনিসপত্রের দাম চড়া। বাড়তি দামে সবজি কিনে ক্ষুব্ধ ক্রেতারা। আর বিক্রেতারা বলেন, পাইকারি বাজারে বেশি দাম যাচ্ছে, যার প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারে। দাম কমতে শীত পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।

পেঁপে ছাড়া বাজারে অন্য প্রায় সব সবজিরই কেজি এখন ৫০ টাকার ওপরে। শীত আসার আগ পর্যন্ত এ দাম এমন থাকতে পারে বলে মনে করেন বিক্রেতারা। সপ্তাহের ব্যবধানে চিচিঙ্গা, বেগুন, পটল, ঢেড়সসহ সব ধরনের সবজির দাম কেজিতে অন্তত ৫-১০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।

বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে- লাউ বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকায়, বাঁধা কপি ও ফুলকপি (ছোট) ৫০ টাকা পিস, টমেটো ১৪০ টাকা কেজি, কাঁচা কলা প্রতি হালি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, শিম প্রতি কেজি ১০০ টাকা, বরবটি প্রতি কেজি ৮০ টাকা, কাঁচা মরিচ প্রতি কেজি ৮০ থেকে ১০০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া কেজি ৫০ টাকা, পটল ৫০ টাকা, বেগুনের কেজি ৬০ থেকে ৭০ টাকা, করোলা ৮০ টাকা কেজি, ঢেড়স প্রতি কেজি ৭০ টাকা, শসা ১০০ টাকা, ঝিঙ্গার প্রতি কেজি ৬০ টাকা। ৫০ টাকার নিচে পাওয়া গেলে একমাত্র পেঁপেই। পেঁপে বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি দরে। শীত আসার আগ পর্যন্ত এ দাম এমন থাকতে পারে বলে মনে করেন বিক্রেতারা।

সবজির দাম বাড়লে স্থিতিশীল আছে ডিম ও মাংসের বাজার। ব্রয়লার মুরগির ডিম প্রতি ডজন ১৪৫ টাকা, হাসের ডিম ২১০ আর দেশি মুরগির ডিম প্রতি ডজন বিক্রি হচ্ছে ২৩০ টাকায়। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৭০-১৮০, পাকিস্তানি কক ৩২০ টাকা, দেশি মুরগি ৫৩০-৫৫০ টাকায়, দেশি হাঁস ৪২০-৪৫০ কেজি আর কবুতর প্রতি জোড়া বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকায়। অন্যদিকে গরু ও খাসির মাংসের দাম রয়েছে অপরিবর্তিত। বাজারে আজ গরুর মাংস ৭০০ টাকা আর খাসির মাংসের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৯০০ টাকা দরে।

বাজারে চালের দামও রয়েছে স্থিতিশীল। চালের বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে ৭৩-৭৫ টাকা, আটাশ ৫৫-৫৮ টাকা, নাজিরশাইল ৮৩-৯১ টাকা, মোটা চাল ৪৮-৫৫ টাকা, চিকন চাল ৭০-৮০ টাকা, কাটারি ৬০-৬৫ টাকা, আটাশ ৪৮-৫৫ টাকা এবং পোলাওয়ের চাল বিক্রি হচ্ছে ১৩০-১৩৫ টাকা কেজি দরে।
সপ্তাহের শেষ দিন বাজারে প্রতি কেজি আলু ৩০ টাকা, পেঁয়াজ ৫০ টাকা, রসুন ১২০-১৩০ টাকা ও আদা ১২০-১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

ব্যবসায়ীদের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বাজারে পৌঁছায়নি সরকার নির্ধারিত দামের চিনি। যদিও গত সোমবার (২৪ অক্টোবর) ব্যবসায়ীরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) থেকে সরকার নির্ধারিত দাম, অর্থাৎ প্রতি কেজি খোলা চিনি ৯০ টাকা আর প্যাকেটজাত চিনি ৯৫ টাকায় বিক্রি করা হবে। বাজারে চিনির সঙ্কট থাকবে না বলে আশ্বাস দিয়েছেন তারা।

তবে এরপর পাঁচদিন পেরিয়ে গেলেও বাজারে খোলা ও প্যাকেটজাত চিনির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১২০ টাকায়। মিরপুর ৬ নম্বর এলাকার আল আমিম স্টোর সেন্টারের ব্যবসায়ী মাহমুদ জানিয়েছেন, এখনো নতুন দামের চিনি হাতে পাননি তারা। চিনির দাম গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই চড়া।

এদিকে আগের মতোই চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে মাছ। প্রতি কেজি রুই ২৬০-২৭০ টাকা, কাঁচকি ৭০০, পাবদা ৬০০, রূপচাঁদা ১ হাজার ১০০ এবং তেলাপিয়া ১৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

রামপুরা বাজারে সাপ্তাহিক বাজার করতে এসেছিলেন আসিফ হোসেন। বিক্রেতার সাথে সবজির দামাদামি করার সময় তার চোখে-মুখে এক ধরনের অসহায়ত্ব ফুটে উঠছিল। কারণ বাজারের এই ঊর্ধ্বগতির সাথে তিনি পেরে উঠছেন না।

কিছুটা ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, এই বাজারে কম টাকার মধ্যে কিছুই কেনা যায় না। এমন কোনো জিনিস নেই বাজারে যার দাম বাড়তি না। এই পরিস্থিতিতে জীবনযাত্রার ব্যয় ভার বহন করে টিকে থাকাই কঠিন। বাজারে ৫০ টাকার নিচে কোনো সবজি নেই। যেটার দাম করি সেটাই ৫০ থেকে ৮০ টাকা। এছাড়া শিম, শসা তো ১০০ আর টমেটো ১৪০ টাকা। বাজারে গরিবের সবজি বলতে শুধু পেঁপে আছে, যার দাম ৩০/৪০ টাকা। তাহলে বলেন আমরা খাবো কী?

সবজি বিক্রেতা হাসেম আলী বলেন, আসলেই বাজার বাড়তি যাচ্ছে। পাইকারি বাজারেও প্রতিটি জিনিস আগের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। এরপর আমাদের তা পরিবহনে করে এনে শ্রমিক দিয়ে নামাতে হয়। ফলে এর দাম আরও বেশি পড়ে যায়, এছাড়া পাইকারি বাজার, এই বাজার সব মিলিয়ে একটা লাইন ফি দিতে হয়। সব মিলিয়ে ক্রেতা পর্যায়ে আসতে একটা পণ্যের দাম বেড়ে যায়। মৌসুম শেষের দিকে তাই বর্তমান বাজার একটু বাড়তি যাচ্ছে।

ব্যবসায়ীরা বলেন, ঘূর্ণিঝড়ে অনেক কৃষকের সবজি ক্ষেত নষ্ট হয়েছে। ফলে বাজারে শীতকালীন সবজির সরবরাহ কিছুটা কম। এ কারণে দামও চড়া। এছাড়া চলতি সপ্তাহ থেকে বাজারে সরকার নির্ধারিত দামে খোলা ও প্যাকেটজাত চিনি বিক্রির প্রতিশ্রুতি দেন ব্যবসীয়ারা। তবে এখনো নির্ধারিত দামের চেয়ে ২০-৩০ টাকা বেশিতে চিনি বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ১১০-১২০ টাকা দামে। এছাড়া বাজারে মাছ-মাংস, সবজি, চালসহ অন্যান্য নিত্যপণ্য চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে।

অন্যদিকে বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারি সংস্থাসমূহের নিষ্ক্রিয়তার সমালোচনা করে শামসুন নাহার নামের একজন গৃহিণী বলেন, আমরা অভিযান দেখি, কিন্তু বাজারে এর প্রভাব পড়ছে না। বাজারে সবকিছুর দাম বেশি। যে কোনো সবজি এখন ৬০ টাকা কেজির কম কেনা যাচ্ছে না। ৩০ টাকার কম কোন শাকের আঁটি নেই। মাস মাস পরিবারগুলোর খরচ বাড়ছে। কিন্তু ব্যয় অনুযায়ী আয় বাড়ছে না।

রাজধানীর মালিবাগ এলাকার কাঁচাবাজারের সবজি বিক্রেতা মোজাম্মেল হক বলেন, আগের ফলনের বেশিরভাগ ফসলের শেষ চালানের মাল এগুলো। শীত আসলে সব নতুন সবজি উঠবে তখন দাম কমে আসবে। তাই সবজির দাম আসতে শীত পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। নতুন সবজি আসার পর বাজার কমতে ২/৩ সপ্তাহ সময় লেগে যেতে পারে।

The short URL of the present article is: https://banglakhaborbd.com/iqmx