ঢাকা ০২:০৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৫ জুলাই ২০২৪, ২০ আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

সিন্ডিকেট ভাঙার ক্ষমতা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নেই: সংসদে আলোচনা

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ১১:৪৪:৪৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ জুলাই ২০২৪
  • / ৪১৫ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে না পারায় সরকার বিপদের মধ্যে আছে বলে জাতীয় সংসদে উদ্বেগ প্রকাশ করেন বিরোধী দল জাতীয় পার্টি ও স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যরা। এসময় দ্রব্যমূল্য নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তারা। বিরোধী দলীয় সংসদ সদস্যরা বলেন, সিন্ডিকেট ভেঙে দিয়ে গরীব মানুষের কাছে নিত্যপণ্যকে সহজলভ্য করা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব। কিন্তু সিন্ডিকেট ভাঙা, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের মত ক্ষমতা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নেই।

মঙ্গলবার (২ জুলাই) সংসদের বৈঠকে ‘বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন (সংশোধন) বিল, ২০২৪’ পাসের আলোচনায় অংশ নেন জাতীয় পার্টি ও স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যরা। বিলের আলোচনায় অংশ নিয়ে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে কঠোর সমালোচনা করেন তারা।

ট্যারিফ কমিশনের সচিব পদের নাম পরিবর্তন করতেই আইন সংশোধন করা হয়েছে। বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু বিলটি পাসের জন্য সংসদে তোলেন। বিলের ওপর আনা জনমত যাচাই-বাছাই কমিটিতে প্রেরণ ও সংশোধনী প্রস্তাবগুলো নিষ্পত্তি শেষে বিলটি কণ্ঠভোটে পাস হয়। নতুন আইন অনুযায়ী, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের সচিব পদের নাম হবে পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ)।

এর আগে বিলের ওপর সংশোধনী আলোচনায় জাতীয় পার্টির এমপি হাফিজ উদ্দিন আহম্মেদ বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কাজ হচ্ছে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করা। উপজেলা পর্যায়ে দেখা গেছে, টিসিবির একটা কার্ড দেওয়া হয়েছে, যার জন্য পাঁচ-ছয়টা নির্ধারিত পণ্য কিনতে হবে। অনেক মানুষ এটা নিতে পারেন না। যার যেটা প্রয়োজন নেই, সেটাও টিসিবির কাছ থেকে নিতে বাধ্য করা হচ্ছে। এটা হচ্ছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কাজ। এ আইনটি না এনে বাজার নিয়ন্ত্রণ করার কোনো আইন, সিন্ডিকেট ভাঙার মতো কোনো আইন নিয়ে আসলে মনে করা যেত বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ভালো কোনো কাজ করছে। বিভিন্ন সময় তারা বাজার নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করে। যখন তারা যান, তখন বাজার ঠিক আছে; কিন্তু তারা চলে এলে আবার যে অবস্থায় ছিল, সেই অবস্থায় চলে যায়। সিন্ডিকেট ভাঙা, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের মতো ক্ষমতা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আছে বলে জানা নেই।

তিনি বলেন, ওষুধের দাম লাগামহীনভাবে বাড়ছে। কোম্পানিগুলো কোটি কোটি টাকা লাভ করে। ওষুধ কোম্পানিগুলো শুল্ক ফাঁকি দিয়ে, কম শুল্ক দিয়ে কাঁচামাল নিয়ে আসে; কিন্তু আমাদের দেশে দাম বেশি। ওষুধের দাম নিয়ন্ত্রণ করা গেলে মানুষ সুচিকিৎসা পেত। আইন করে ক্যান্সারে ওষুধের দাম, কিডনি চিকিৎসা কমানোর কথা বলা হচ্ছে। এ কোম্পানিগুলো কি বাইরের? এটা কি ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি? আমাদের দেশি মালিক। এদের কি বিবেক নেই? কত শতাংশ লাভ করছে? ১০০ শতাংশ লাভ করে। যারা দোকানে বিক্রি করে ৩০-৪০ শতাংশ কর দেয়। অনেক ওষুধের মধ্যে দাম লেখা থাকে না। সে জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করব, বাজার নিয়ন্ত্রণ করুন। মানুষের যে হাহাকার অবস্থা। আওয়ামী লীগের এত উন্নয়ন ও অর্জনের পরও বাজার নিয়ন্ত্রণ না করায় সরকার বিপদের মধ্যে আছে।

বিলের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে স্বতন্ত্র এমপি পংকজ নাথ বলেন, বিলটিতে জনগণের স্বার্থ নেই। জনগণের স্বার্থ তখনই থাকত, যদি ট্যারিফ কমিশনের দায়িত্ব ভোগ্যপণ্য, নিত্যপণ্যের দাম নির্ধারণ, বাজারে সহজলভ্যতা, আমদানি ও উৎপাদন সমন্বয় করে মানুষের কাছে সহজে পৌঁছে দিত। সিন্ডিকেট ভেঙে দিয়ে গরিব মানুষের কাছে নিত্যপণ্যকে সহজলভ্য করত। সে ক্ষেত্রে সরকারকে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে ট্যারিফ কমিশনের কাজ। তা না করে শুধু সচিবের পদপদবি পরিবর্তনের প্রস্তাব নিয়ে আসছে। যেখানে জনগণের স্বার্থ নেই।

নিউজটি শেয়ার করুন

সিন্ডিকেট ভাঙার ক্ষমতা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নেই: সংসদে আলোচনা

আপডেট সময় : ১১:৪৪:৪৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ জুলাই ২০২৪

বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে না পারায় সরকার বিপদের মধ্যে আছে বলে জাতীয় সংসদে উদ্বেগ প্রকাশ করেন বিরোধী দল জাতীয় পার্টি ও স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যরা। এসময় দ্রব্যমূল্য নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তারা। বিরোধী দলীয় সংসদ সদস্যরা বলেন, সিন্ডিকেট ভেঙে দিয়ে গরীব মানুষের কাছে নিত্যপণ্যকে সহজলভ্য করা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব। কিন্তু সিন্ডিকেট ভাঙা, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের মত ক্ষমতা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নেই।

মঙ্গলবার (২ জুলাই) সংসদের বৈঠকে ‘বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন (সংশোধন) বিল, ২০২৪’ পাসের আলোচনায় অংশ নেন জাতীয় পার্টি ও স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যরা। বিলের আলোচনায় অংশ নিয়ে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে কঠোর সমালোচনা করেন তারা।

ট্যারিফ কমিশনের সচিব পদের নাম পরিবর্তন করতেই আইন সংশোধন করা হয়েছে। বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু বিলটি পাসের জন্য সংসদে তোলেন। বিলের ওপর আনা জনমত যাচাই-বাছাই কমিটিতে প্রেরণ ও সংশোধনী প্রস্তাবগুলো নিষ্পত্তি শেষে বিলটি কণ্ঠভোটে পাস হয়। নতুন আইন অনুযায়ী, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের সচিব পদের নাম হবে পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ)।

এর আগে বিলের ওপর সংশোধনী আলোচনায় জাতীয় পার্টির এমপি হাফিজ উদ্দিন আহম্মেদ বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কাজ হচ্ছে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করা। উপজেলা পর্যায়ে দেখা গেছে, টিসিবির একটা কার্ড দেওয়া হয়েছে, যার জন্য পাঁচ-ছয়টা নির্ধারিত পণ্য কিনতে হবে। অনেক মানুষ এটা নিতে পারেন না। যার যেটা প্রয়োজন নেই, সেটাও টিসিবির কাছ থেকে নিতে বাধ্য করা হচ্ছে। এটা হচ্ছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কাজ। এ আইনটি না এনে বাজার নিয়ন্ত্রণ করার কোনো আইন, সিন্ডিকেট ভাঙার মতো কোনো আইন নিয়ে আসলে মনে করা যেত বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ভালো কোনো কাজ করছে। বিভিন্ন সময় তারা বাজার নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করে। যখন তারা যান, তখন বাজার ঠিক আছে; কিন্তু তারা চলে এলে আবার যে অবস্থায় ছিল, সেই অবস্থায় চলে যায়। সিন্ডিকেট ভাঙা, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের মতো ক্ষমতা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আছে বলে জানা নেই।

তিনি বলেন, ওষুধের দাম লাগামহীনভাবে বাড়ছে। কোম্পানিগুলো কোটি কোটি টাকা লাভ করে। ওষুধ কোম্পানিগুলো শুল্ক ফাঁকি দিয়ে, কম শুল্ক দিয়ে কাঁচামাল নিয়ে আসে; কিন্তু আমাদের দেশে দাম বেশি। ওষুধের দাম নিয়ন্ত্রণ করা গেলে মানুষ সুচিকিৎসা পেত। আইন করে ক্যান্সারে ওষুধের দাম, কিডনি চিকিৎসা কমানোর কথা বলা হচ্ছে। এ কোম্পানিগুলো কি বাইরের? এটা কি ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি? আমাদের দেশি মালিক। এদের কি বিবেক নেই? কত শতাংশ লাভ করছে? ১০০ শতাংশ লাভ করে। যারা দোকানে বিক্রি করে ৩০-৪০ শতাংশ কর দেয়। অনেক ওষুধের মধ্যে দাম লেখা থাকে না। সে জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করব, বাজার নিয়ন্ত্রণ করুন। মানুষের যে হাহাকার অবস্থা। আওয়ামী লীগের এত উন্নয়ন ও অর্জনের পরও বাজার নিয়ন্ত্রণ না করায় সরকার বিপদের মধ্যে আছে।

বিলের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে স্বতন্ত্র এমপি পংকজ নাথ বলেন, বিলটিতে জনগণের স্বার্থ নেই। জনগণের স্বার্থ তখনই থাকত, যদি ট্যারিফ কমিশনের দায়িত্ব ভোগ্যপণ্য, নিত্যপণ্যের দাম নির্ধারণ, বাজারে সহজলভ্যতা, আমদানি ও উৎপাদন সমন্বয় করে মানুষের কাছে সহজে পৌঁছে দিত। সিন্ডিকেট ভেঙে দিয়ে গরিব মানুষের কাছে নিত্যপণ্যকে সহজলভ্য করত। সে ক্ষেত্রে সরকারকে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে ট্যারিফ কমিশনের কাজ। তা না করে শুধু সচিবের পদপদবি পরিবর্তনের প্রস্তাব নিয়ে আসছে। যেখানে জনগণের স্বার্থ নেই।