শেখ হাসিনা উদার বলেই খালেদা জিয়া আজ বাড়িতে: কাদের
- আপডেট সময় : ০৩:৫৩:৩৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ নভেম্বর ২০২২
- / ৪৩৪ বার পড়া হয়েছে
দিনাজপুর প্রতিনিধি :
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, শেখ হাসিনা উদারতার জন্য বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এতিমের টাকা আত্মসাৎ করে দণ্ডিত হয়ে কারাগারে থাকার কথা, সেখানে নির্বাহী আদেশে শেখ হাসিনা তাকে বাসায় থাকার অনুমতি দিয়েছেন।
সোমবার (২৮ নভেম্বর) দিনাজপুর জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে উদ্দেশ্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, আপনার বাড়ি তো ঠাকুরগাঁও। সমাবেশ কাকে বলে তা আজকে দিনাজপুর জেলা আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে এসে দেখে যান। আপনারা কথায় কথায় বলেন সমাবেশে ঢল নেমেছে। কথায় কথায় তরঙ্গ নেমেছে। কিন্তু ঢল কাকে বলে, নদী আর সাগরের তরঙ্গ কাকে বলে তা আজকে দিনাজপুরে আপনি দেখে যান। আপনারা সমাবেশের তিন দিন আগে থেকে হান্ডি, পাতিল, বিছানা, বালিশ নিয়ে নাটক শুরু করেন। সেই নাটকের অংশ থাকে মশার কয়েল। হায়রে নাটক।
বিএনপি নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আগামী ডিসেম্বরে খেলা হবে। এবার খেলা হবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে, হাওয়া ভবনের বিরুদ্ধে, ভোট চুরির বিরুদ্ধে, হাজার হাজার কোটি টাকা যারা বিদেশে পাচার করেছেন তাদের বিরুদ্ধে খেলা হবে। ১৫ ফেব্রুয়ারির মত নির্বাচন আর হবে না। সুষ্ঠু ভোট হবে। শেখ হাসিনা নির্বাচনে সময় রুটিন দায়িত্ব পালন করবেন। সে সময় একটা নিরপেক্ষ ভোট হবে। নির্বাচনকে সামনে রেখে মারামারি করবেন না।
বিএনপির নেতাকর্মীদের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, নির্বাচন কমিশনের অধীনেই এ দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে কোনো উসকানি দেবেন না। বিশৃঙ্খলা করলে খবর আছে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা কিন্তু মাঠ ছেড়ে দেয় নাই। আপনারা আমাদের ওপর হামলা করবেন, আর আমরা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ললিপপ খাব। এটা কি হয়? সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের নাম শুনলে আপনাদের গাঁ জ্বলে কেন। কারণ এই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেই পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী আত্মসমর্পণ করেছিল।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ছাত্রলীগের সম্মেলন ৮ তারিখ থেকে ৬ তারিখে করা বিএনপির আন্দোলনের ফসল নয়। এটা শেখ হাসিনার উদার নৈতিকতার ফসল। আওয়ামী লীগের একজন নেতাকর্মীও তাদের সমাবেশের ধারে-কাছে যাবে না।
বিএনপি বলে, তাদের সমাবেশ বন্ধ করার জন্য ডিসেম্বরের ৮ তারিখে ছাত্রলীগের সম্মেলন ডাকা হয়েছে। কিন্তু আমাদের নেতা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন দরকার নেই, তারা সমাবেশ করুক, সময়টা বদলে দিন। আমরা বদলে দিয়েছি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা ছাত্রলীগের সম্মেলনের সময়টা এগিয়ে নিয়ে এসেছি। এটা আপনাদের (বিএনপির) আন্দোলনের ফসল না, এটা শেখ হাসিনার উদারনৈতিকতার ফসল।
তিনি আরো বলেন, বিএনপি ১৩ বছরে ১৩ মিনিটও তাদের দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার জন্য নেতাকর্মীদের নিয়ে আন্দোলন করতে পারেনি।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, দেশে সমাবেশের নামে বিএনপি নাটক করছে, তাদের সব হুমকি-ধামকি রাজপথেই মোকাবিলা করা হবে। এদিকে, বিকেলে জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনেও যোগ দেয়ার কথা রয়েছে তার।
আসবে নতুন নেতৃত্ব। তারাই আগামী দিনে উত্তাপ ছড়াবেন রাজনীতির মাঠে। দিনাজপুর জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে তাই বাড়তি উচ্ছ্বাস ছিল নেতা-কর্মীদের মধ্যে। দীর্ঘ ১০ বছর পর অনুষ্ঠিত হচ্ছে সম্মেলন। তাই জেলাজুড়ে উৎসব মুখর পরিবেশ ছিল। রঙিন পোস্টার-ব্যানারে ছেয়ে গেছে পুরো এলাকা। মিছিল আর স্লোগানে কানায় কানায় পূর্ণ শহরের গোর-এ শহীদ মাঠ। দলের জন্য ত্যাগী ও তৃণমূল নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন করা হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন স্থানীয় নেতারা।
এদিকে, সাড়ে ৭ বছর পর জামালপুরে অনুষ্ঠিত হচ্ছে জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন। ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে শহরের জেলা স্কুল মাঠে এসেছেন নেতা-কর্মীরা। নতুন নেতৃত্বে রাজপথে আন্দোলন সংগ্রামে সামিল হবার প্রত্যাশা তাদের। বিকেলে সম্মেলনে যোগ দেয়ার কথা রয়েছে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ কেন্দ্রীয় নেতাদের। সবশেষ ২০১৪ সালে জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন হয়েছিল জামালপুরে।
দিনাজপুরের ঐতিহাসিক গোর-এ-শহিদ ময়দানে অনুষ্ঠিত সম্মেলনের উদ্বোধন করেন, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য রমেশ চন্দ্র সেন এমপি এবং প্রধান বক্তা ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এমপি। সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী শাজাহান খান এমপি।
দিনাজপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান এমপির সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন শফিক, নৌপরিবহণ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি, জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম এমপি, সাবেক মন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী এমপি, মনোরঞ্জন শীল গোপাল এমপি, মো. শিবলী সাদিক এমপি, অ্যাডভোকেট জাকিয়া তাবাসসুম জুঁই এমপি এবং কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সদস্য অ্যাডভোকেট হোসনে আরা লুতফা ডালিয়া ও অ্যাডভোকেট সফুরা বেগম রুমি।