ঢাকা ০৪:৩৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ জুন ২০২৪, ১৩ আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

শাহজাদপুরে যমুনার পানি বাড়ার সাথে সাথে ব্যাপক ভাঙ্গছে বাড়িঘর

সাগর বসাক, শাহজাদপুর (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ০৬:৪৫:৩২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ জুন ২০২৪
  • / ৪৩৯ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে গত কয়েকদিন ধরে যমুনা নদীর পানি বেড়েই চলেছে। এর মধ্যে গত তিনদিন ধরে পানি বাড়ার হার বেশি হওয়ায় যমুনা অধ্যুষিত নিন্মঞ্চলে বন্যা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। তবে এতে ছোট থেকে মাঝারি আকারের বন্যা হতে পারে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। পাশাপাশি বন্যার আগে থেকেই ভাঙ্গণ শুরু হয়েছে সিরাজগঞ্জ শাহজাদপুর উপজেলার জালালপুর এলাকায়।

সম্প্রতি বন্যার পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভাঙ্গনের র্তীব্রতা আরও বেড়েছে। ইতোমধ্যেই বিলীন হয়েছে অসংখ্য ঘরবাড়ি। তবে সেখানে দ্রæত ব্যবস্থা নেওয়ার হবে বলে জানিয়েছেন কতৃপক্ষ।

সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রঞ্জিত কুমার বলেন, সিরাজগঞ্জ হার্ড পয়েন্টে যমুনা নদীর পানির সমতল রেকর্ড করা হয়েছে ১১ দশমিক ৯৭ মিটার। ২৪ ঘণ্টায় ২০ সেন্টিমিটার পানি বেড়ে বিপৎসীমার ৯৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে (বিপৎসীমার ১২ দশমিক ৯০ মিটার)।

পাউবো সূত্রে আরও জানা যায়, জুন মাসের শুরুতে যমুনায় পানি বাড়তে শুরু করে। ৩ জুন থেকে অস্বাভাবিকভাবে পানি বাড়লেও এক সপ্তাহ পর কমতে থাকে। এরপর ১৮ জুন থেকে আবারও বাড়ছে যমুনার পানি।

এদিকে উপজেলার জালালপুর, খুকনী ও কৈজুরী ইউনিয়নের যমুনা অধ্যুষিত এলাকায় কয়েক বছর ধরেই ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। এরই মধ্যে কয়েকটি গ্রামের দেড় শতাধিক বাড়িঘর ও ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়েছে। বাস্তুহারা ও নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন ভাঙনকবলিত অসংখ্য মানুষ। পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এসকল এলাকায় ভাঙ্গণও বেড়েছে।
ভাঙ্গন কবলিত এলাকাবাসীর অভিযোগ, নদীর তীরবর্তী এলাকায় কাজের নির্দিষ্ট সময় পার হয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ শেষ না করায় দেখা দিয়েছে এই নদী ভাঙ্গন। তাই পানি উন্নয়ন বোর্ড ও ঠিকাদারের গাফিলতিকেই দূষছেন স্থানীয়রা। তাই এখনই জরুরি পদক্ষেপ নিয়ের দাবি ভাঙ্গন কবলিত এলাকাবাসীর।

জালালপুর গ্রামের বাসিন্দা ও জালালপুর ইউনিয়ন পরিষদের ১, ২ ও ৩নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী ইউপি সদস্য মোছাঃ লাইলী বেগম বলেন, এখানে প্রত্যেক বছরেই ভাঙ্গে। এবার বর্ষার আগে থেকেই ভাঙ্গছে যা এখনো অব্যাহত রয়েছে। ভাঙন কবলিত মানুষগুলোর কষ্ট দেখলে নিজেরই খুব কষ্ট লাগে কিন্তু আমরা কিছুই করতে পারি না। আমাদের কাছে তেমন কোনো অনুদানও আসে না। সব ফসলী জমিতো আগেই ভেঙ্গেছে, এ পর্যন্ত শতাধিক বাড়িঘরও নদীগর্ভে চলে গেছে।

এ ব্যাপারে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান বলেন, আরও দুই-তিনদিন যমুনায় পানি বাড়বে। এসময় বিপৎসীমা অতিক্রম করে ছোট থেকে মাঝারি বন্যা হতে পারে। তবে এরপর পানি আবার কমবে। তিনি বলেন, জালালপুর এলাকায় নদী ভাঙ্গণ রোধে বাঁধ নির্মাণ প্রকল্পের কাজ চলছে। তবে ঈদের ছুটি থাকায় ভাঙ্গণ রোধে কোনও কাজ করা সম্ভব হয়নি। আপাতত ওই ভাঙ্গণ কবলিত এলাকায় জিও টিউব ফেলা শুরু করা হবে।

তিনি আরও বলেন, এছাড়াও শাহজাদপুরে আমাদের একটি প্রকল্প অব্যাহত রয়েছে যেটি জুন ২০২৪-এ শেষ হবার কথা ছিল। তবে কাজ শেষ না হওয়ায় আরও এক বছর মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। এ প্রকল্পে সাড়ে ছয় কিলোমিটার তীর সংরক্ষণ কাজ রয়েছে। যেটি এনায়েতপুর স্পার থেকে হাট পাঁচিল পর্যন্ত বিস্তৃত। এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হওয়ার পরে অত্র এলাকার ভাঙন পুরোদমে রোধ করা যাবে বলে মনে করেন এ কর্মকর্তা।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

শাহজাদপুরে যমুনার পানি বাড়ার সাথে সাথে ব্যাপক ভাঙ্গছে বাড়িঘর

আপডেট সময় : ০৬:৪৫:৩২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ জুন ২০২৪

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে গত কয়েকদিন ধরে যমুনা নদীর পানি বেড়েই চলেছে। এর মধ্যে গত তিনদিন ধরে পানি বাড়ার হার বেশি হওয়ায় যমুনা অধ্যুষিত নিন্মঞ্চলে বন্যা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। তবে এতে ছোট থেকে মাঝারি আকারের বন্যা হতে পারে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। পাশাপাশি বন্যার আগে থেকেই ভাঙ্গণ শুরু হয়েছে সিরাজগঞ্জ শাহজাদপুর উপজেলার জালালপুর এলাকায়।

সম্প্রতি বন্যার পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভাঙ্গনের র্তীব্রতা আরও বেড়েছে। ইতোমধ্যেই বিলীন হয়েছে অসংখ্য ঘরবাড়ি। তবে সেখানে দ্রæত ব্যবস্থা নেওয়ার হবে বলে জানিয়েছেন কতৃপক্ষ।

সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রঞ্জিত কুমার বলেন, সিরাজগঞ্জ হার্ড পয়েন্টে যমুনা নদীর পানির সমতল রেকর্ড করা হয়েছে ১১ দশমিক ৯৭ মিটার। ২৪ ঘণ্টায় ২০ সেন্টিমিটার পানি বেড়ে বিপৎসীমার ৯৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে (বিপৎসীমার ১২ দশমিক ৯০ মিটার)।

পাউবো সূত্রে আরও জানা যায়, জুন মাসের শুরুতে যমুনায় পানি বাড়তে শুরু করে। ৩ জুন থেকে অস্বাভাবিকভাবে পানি বাড়লেও এক সপ্তাহ পর কমতে থাকে। এরপর ১৮ জুন থেকে আবারও বাড়ছে যমুনার পানি।

এদিকে উপজেলার জালালপুর, খুকনী ও কৈজুরী ইউনিয়নের যমুনা অধ্যুষিত এলাকায় কয়েক বছর ধরেই ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। এরই মধ্যে কয়েকটি গ্রামের দেড় শতাধিক বাড়িঘর ও ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়েছে। বাস্তুহারা ও নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন ভাঙনকবলিত অসংখ্য মানুষ। পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এসকল এলাকায় ভাঙ্গণও বেড়েছে।
ভাঙ্গন কবলিত এলাকাবাসীর অভিযোগ, নদীর তীরবর্তী এলাকায় কাজের নির্দিষ্ট সময় পার হয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ শেষ না করায় দেখা দিয়েছে এই নদী ভাঙ্গন। তাই পানি উন্নয়ন বোর্ড ও ঠিকাদারের গাফিলতিকেই দূষছেন স্থানীয়রা। তাই এখনই জরুরি পদক্ষেপ নিয়ের দাবি ভাঙ্গন কবলিত এলাকাবাসীর।

জালালপুর গ্রামের বাসিন্দা ও জালালপুর ইউনিয়ন পরিষদের ১, ২ ও ৩নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী ইউপি সদস্য মোছাঃ লাইলী বেগম বলেন, এখানে প্রত্যেক বছরেই ভাঙ্গে। এবার বর্ষার আগে থেকেই ভাঙ্গছে যা এখনো অব্যাহত রয়েছে। ভাঙন কবলিত মানুষগুলোর কষ্ট দেখলে নিজেরই খুব কষ্ট লাগে কিন্তু আমরা কিছুই করতে পারি না। আমাদের কাছে তেমন কোনো অনুদানও আসে না। সব ফসলী জমিতো আগেই ভেঙ্গেছে, এ পর্যন্ত শতাধিক বাড়িঘরও নদীগর্ভে চলে গেছে।

এ ব্যাপারে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান বলেন, আরও দুই-তিনদিন যমুনায় পানি বাড়বে। এসময় বিপৎসীমা অতিক্রম করে ছোট থেকে মাঝারি বন্যা হতে পারে। তবে এরপর পানি আবার কমবে। তিনি বলেন, জালালপুর এলাকায় নদী ভাঙ্গণ রোধে বাঁধ নির্মাণ প্রকল্পের কাজ চলছে। তবে ঈদের ছুটি থাকায় ভাঙ্গণ রোধে কোনও কাজ করা সম্ভব হয়নি। আপাতত ওই ভাঙ্গণ কবলিত এলাকায় জিও টিউব ফেলা শুরু করা হবে।

তিনি আরও বলেন, এছাড়াও শাহজাদপুরে আমাদের একটি প্রকল্প অব্যাহত রয়েছে যেটি জুন ২০২৪-এ শেষ হবার কথা ছিল। তবে কাজ শেষ না হওয়ায় আরও এক বছর মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। এ প্রকল্পে সাড়ে ছয় কিলোমিটার তীর সংরক্ষণ কাজ রয়েছে। যেটি এনায়েতপুর স্পার থেকে হাট পাঁচিল পর্যন্ত বিস্তৃত। এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হওয়ার পরে অত্র এলাকার ভাঙন পুরোদমে রোধ করা যাবে বলে মনে করেন এ কর্মকর্তা।