ঢাকা ১২:০৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

রোজার আগে নিত্যপণ্যের বাজার চড়া

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৯:৫৩:০৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ মার্চ ২০২৩
  • / ৪৮০ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

নিজস্ব প্রতিবেদক: রোজার এক সপ্তাহ আগেই রাজধানীর নিত্যপণ্যের বাজার চড়া। খেজুরের দাম প্রকারভেদে কেজিতে বেড়েছে একশ’ টাকা। মুরগি, ডিম, ছোলার দামও বাড়তি। এজন্য বাজারে নজরদারির অভাবকেই দুষছেন ক্রেতারা। এদিকে, রোজাকে কেন্দ্র করে একসাথে বেশি পণ্য না কিনতে ক্রেতাদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।

রোজায় যেসব পণ্যের ব্যবহার বেশি, এবারও বাড়তে শুরু করেছে সেসব পণ্যের দাম। প্রতি বছর রোজার আগে সরকারের পক্ষ থেকে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখার আশ্বাস যেমন কাজে আসে না, সে পরিস্থিতির ব্যতিক্রম নয় এ বছরও। চাল ডাল তেল চিনি ছোলা খেজুরসহ নিত্যপণ্যের দাম বাড়তি।

রোজার সপ্তাহ বাকি থাকতেই খরচের হিসাবের লাগাম টানা আরেকটু কঠিন হয়ে পড়েছে। হিমশিম অবস্থা নিন্ম ও মধ্যবিত্তদের। এর জন্য ব্যবসায়ীরা দেখাচ্ছেন পোল্ট্রি ফিডের দাম বৃদ্ধির অজুহাত। কিন্তু বাস্তবতার সঙ্গে এর কোনো মিল নেই। এক মাসে খাদ্যের দাম বিয়াল্লিশ টাকা থেকে বেড়ে এখন চুয়াল্লিশ টাকা। মুরগির দাম বেড়েছে প্রায় ৭০ শতাংশ।

গরুর গোশত বহু আগে থেকেই বাদ পড়েছে নিম্ন ও মধ্যবিত্তের খাদ্য তালিকা থেকে। এখন ব্রয়লার মুরগির মতো মাছও নাগালের বাইরে। পাঙ্গাস-তেলাপিয়াও মিলছে না ২০০ থেকে ২৫০ টাকার কমে। এদিকে, সপ্তাহের ব্যবধানে সবজির দামও ঊর্ধ্বমুখী। বাজারে ৫০ টাকা কেজির কমে মিলছে না কোনো সবজি।

রমজানের আগে প্রতিটি পণ্যের দাম কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়ে স্থিতিশীল রয়েছে। রমজানে ছোলার চাহিদা থাকায় কেজিতে দাম বেড়েছে ১০ টাকা। দুই সপ্তাহ আগে ছোলার কেজি ছিল ৮০ থেকে ৯০ টাকা। মানভেদে এখন বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ১০০ টাকা, অ্যাংকর ডাল কেজিতে ১০ টাকার মতো বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা, বেসনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকা, খেসারির ডাল ৯০ থেকে ১০০ টাকা, সয়াবিন লুজ তেল কেজি ১৯০ টাকা, পাম ওয়েল ১৫০ টাকা এবং চিনি বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা কেজি দরে।

ছুটির দিনে বাজারে প্রতি কেজি শসা বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকায়। লম্বা ও গোল বেগুনের কেজি ৮০ টাকা। ৪০ টাকা কেজি টমেটো। এছাড়া- শিম ৪০-৫০ টাকা, করলা ১০০-১২০ টাকা, চিচিঙ্গা ৮০, পটল ৮০, ঢেঁড়স ১০০, কচুর লতি ১০০, পেঁপে ৩০-৪০, বরবটি ১২০ ও ধুন্দুল ৫০-৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারে প্রতিকেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা।

এছাড়া আকার ভেদে লাউ ৫০-৬০ টাকা, চাল কুমড়া প্রতিটি ৫০-৬০ টাকা পিস হিসেবে বিক্রি হচ্ছে। কাঁচা কলার হালি ৪০ টাকা। লেবুর হালি বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়।

আজকের বাজারেও বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে মুরগি। ব্রয়লার মুরগির কেজি ২৫০ থেকে ২৬০ টাকা। যা গত সপ্তাহে ছিল ২৫০ টাকা। সোনালি মুরগির কেজি ৩৫০ টাকা। লেয়ার মুরগির বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ২৯০ টাকা কেজিতে।

মুরগি বিক্রেতা মো. রুবেল বলেন, জীবনে কখনো ব্রয়লার মুরগি ২৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করিনি। দাম বাড়ার পেছনে মূল কারণ সিন্ডিকেট। রোজায় সিন্ডিকেটের কারণে আবারও বাড়তে পারে।

বাজারে বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে গরুর মাংস। এক কেজি গরুর মাংসের দাম ৭২০ থেকে ৭৫০ টাকা। বাজারে খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১০৫০-১১০০ টাকা কেজিতে।

বাজারে খোলা আটার কেজি ৬০ টাকা ও প্যাকেট আটা ৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা আগে ৭০ টাকা। দুই কেজির প্যাকেট আটা বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকায়।

বাজারে বর্তমানে সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে লিটার প্রতি ১৮৭ টাকা। লবণ ৩৮-৪০ টাকা কেজি। ফার্মের মুরগির ডিম এক ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকায়। হাঁসের ডিম ১৮০-১৯০ টাকা ও দেশি মুরগির ডিমের ডজন ১৯০-২০০ টাকা।

রোজাকে কেন্দ্র করে একসঙ্গে পুরো মাসের বাজার না কিনতে ক্রেতাদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার । দাম নিয়ে কেউ কারসাজি করলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার হুঁশিয়ারিও দেন তিনি।

এদিকে শুক্রবার (১৭ মার্চ) আসন্ন রমজান উপলক্ষে এক বিশেষ তদারকিমূলক অভিযানে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার বলেন, সামনে রোজা। দয়া করে আপনারা এক মাসের বাজার একসঙ্গে কিনতে যাবেন না। আপনারা ১০ দিনের বা এক সপ্তাহের বাজার করেন। হঠাৎ করে বেশি পণ্য কিনলে বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি হয়। তখন কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী ফায়দা লোটার চেষ্টা করে। এই কারণে অনুরোধ করব আপনারা একসঙ্গে পুরো মাসের বাজার করবেন না।

তিনি আরও বলেন, পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে সরকারের বিভিন্ন সংস্থা বাজার নিয়ন্ত্রণে মাঠে কাজ করছে। আমরা জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে নিত্যপণ্যের বাজার, বিশেষ করে রমজান কেন্দ্রিক পণ্যের মূল্য এবং সরবরাহ ঠিক আছে কিনা তা দেশব্যাপী যাচাই করছি বলে তিনি উল্লেখ করেন।

অন্যদিকে, রোজাদারদের প্রতি সম্মান দেখিয়ে নিত্যপণ্যের দাম সহনীয় রাখতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান ও সংসদের বিরোধীদলীয় উপনেতা জিএম কাদের।

এক বিবৃতিতে জাপা চেয়ারম্যান বলেন, দ্রব্যমূল্য ক্রমবর্ধমান ঊর্ধ্বগতির কারণে দেশের মানুষের মাঝে চাপা হাহাকার বিরাজ করছে। ইতোমধ্যেই নিত্যপণ্যের দাম আকাশচুম্বি হয়ে আছে। দেশের মানুষের আয় বাড়েনি, কিন্তু ব্যয় বেড়েছে অনেক। তাই সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতা অনেক কমেছে। অর্থের অভাবে সাধারণ মানুষ বাজার করতে পারছে না, শিশুখাদ্য কিনতে পারছে না। এমনকি অর্থের অভাবে চিকিৎসা নিতে পারছে না এবং ওষুধ কিনতে পারছে না সাধারণ মানুষ। এমন বাস্তবতায়, পবিত্র মাহে রমজান আমাদের সামনে। তাই, রোজাদারদের প্রতি সম্মান দেখিয়ে মাহে রমজানে নিত্যপণ্যের দাম সহনীয় রাখার দাবি করেন তিনি।

অপরদিকে সম্প্রতি একটি অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, সামনে রমজান মাস আসছে। ধর্ম বলেছে সংযমী হতে, নিজেকে কন্ট্রোল করতে। ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে একটাই কথা সেটি আবারও বলতে চাই, অন্তত এই মাসটাতে একটুখানি সংযমী হওয়া দরকার। আপনারা দয়া করে যেটি ন্যায্য হওয়া উচিত সেটাই করবেন।

টিপু মুনশি বলেন, আমরা আপনাদের (ব্যবসায়িদের) সারা দিন ধরে পাহারা দিয়ে রাখতে পারব না। তারপরও আমরা চেষ্টা করব। আপনাদের বিবেকের কাছে প্রশ্ন দিয়ে গেলাম, আপনার যেটা ন্যায্য হয় সেটা করবেন।

তবে ভোক্তারা মনে করেন, সরকারে উচিত হবে এখনো রমজান শুরু হতে সপ্তাহখানিক বাকি রয়েছে। এরই মধ্যে কঠোর মনিটরিংয়ের মাধ্যমে নিত্যপণ্যের দাম ক্রেতাদের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে নিয়ে আসা। যাতে করে রমজানে দু’বেলা একটু ভালো খেয়ে গরিব মানুষ সংযম সাধনা করতে পারে।

নিউজটি শেয়ার করুন

রোজার আগে নিত্যপণ্যের বাজার চড়া

আপডেট সময় : ০৯:৫৩:০৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ মার্চ ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক: রোজার এক সপ্তাহ আগেই রাজধানীর নিত্যপণ্যের বাজার চড়া। খেজুরের দাম প্রকারভেদে কেজিতে বেড়েছে একশ’ টাকা। মুরগি, ডিম, ছোলার দামও বাড়তি। এজন্য বাজারে নজরদারির অভাবকেই দুষছেন ক্রেতারা। এদিকে, রোজাকে কেন্দ্র করে একসাথে বেশি পণ্য না কিনতে ক্রেতাদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।

রোজায় যেসব পণ্যের ব্যবহার বেশি, এবারও বাড়তে শুরু করেছে সেসব পণ্যের দাম। প্রতি বছর রোজার আগে সরকারের পক্ষ থেকে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখার আশ্বাস যেমন কাজে আসে না, সে পরিস্থিতির ব্যতিক্রম নয় এ বছরও। চাল ডাল তেল চিনি ছোলা খেজুরসহ নিত্যপণ্যের দাম বাড়তি।

রোজার সপ্তাহ বাকি থাকতেই খরচের হিসাবের লাগাম টানা আরেকটু কঠিন হয়ে পড়েছে। হিমশিম অবস্থা নিন্ম ও মধ্যবিত্তদের। এর জন্য ব্যবসায়ীরা দেখাচ্ছেন পোল্ট্রি ফিডের দাম বৃদ্ধির অজুহাত। কিন্তু বাস্তবতার সঙ্গে এর কোনো মিল নেই। এক মাসে খাদ্যের দাম বিয়াল্লিশ টাকা থেকে বেড়ে এখন চুয়াল্লিশ টাকা। মুরগির দাম বেড়েছে প্রায় ৭০ শতাংশ।

গরুর গোশত বহু আগে থেকেই বাদ পড়েছে নিম্ন ও মধ্যবিত্তের খাদ্য তালিকা থেকে। এখন ব্রয়লার মুরগির মতো মাছও নাগালের বাইরে। পাঙ্গাস-তেলাপিয়াও মিলছে না ২০০ থেকে ২৫০ টাকার কমে। এদিকে, সপ্তাহের ব্যবধানে সবজির দামও ঊর্ধ্বমুখী। বাজারে ৫০ টাকা কেজির কমে মিলছে না কোনো সবজি।

রমজানের আগে প্রতিটি পণ্যের দাম কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়ে স্থিতিশীল রয়েছে। রমজানে ছোলার চাহিদা থাকায় কেজিতে দাম বেড়েছে ১০ টাকা। দুই সপ্তাহ আগে ছোলার কেজি ছিল ৮০ থেকে ৯০ টাকা। মানভেদে এখন বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ১০০ টাকা, অ্যাংকর ডাল কেজিতে ১০ টাকার মতো বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা, বেসনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকা, খেসারির ডাল ৯০ থেকে ১০০ টাকা, সয়াবিন লুজ তেল কেজি ১৯০ টাকা, পাম ওয়েল ১৫০ টাকা এবং চিনি বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা কেজি দরে।

ছুটির দিনে বাজারে প্রতি কেজি শসা বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকায়। লম্বা ও গোল বেগুনের কেজি ৮০ টাকা। ৪০ টাকা কেজি টমেটো। এছাড়া- শিম ৪০-৫০ টাকা, করলা ১০০-১২০ টাকা, চিচিঙ্গা ৮০, পটল ৮০, ঢেঁড়স ১০০, কচুর লতি ১০০, পেঁপে ৩০-৪০, বরবটি ১২০ ও ধুন্দুল ৫০-৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারে প্রতিকেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা।

এছাড়া আকার ভেদে লাউ ৫০-৬০ টাকা, চাল কুমড়া প্রতিটি ৫০-৬০ টাকা পিস হিসেবে বিক্রি হচ্ছে। কাঁচা কলার হালি ৪০ টাকা। লেবুর হালি বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়।

আজকের বাজারেও বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে মুরগি। ব্রয়লার মুরগির কেজি ২৫০ থেকে ২৬০ টাকা। যা গত সপ্তাহে ছিল ২৫০ টাকা। সোনালি মুরগির কেজি ৩৫০ টাকা। লেয়ার মুরগির বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ২৯০ টাকা কেজিতে।

মুরগি বিক্রেতা মো. রুবেল বলেন, জীবনে কখনো ব্রয়লার মুরগি ২৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করিনি। দাম বাড়ার পেছনে মূল কারণ সিন্ডিকেট। রোজায় সিন্ডিকেটের কারণে আবারও বাড়তে পারে।

বাজারে বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে গরুর মাংস। এক কেজি গরুর মাংসের দাম ৭২০ থেকে ৭৫০ টাকা। বাজারে খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১০৫০-১১০০ টাকা কেজিতে।

বাজারে খোলা আটার কেজি ৬০ টাকা ও প্যাকেট আটা ৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা আগে ৭০ টাকা। দুই কেজির প্যাকেট আটা বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকায়।

বাজারে বর্তমানে সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে লিটার প্রতি ১৮৭ টাকা। লবণ ৩৮-৪০ টাকা কেজি। ফার্মের মুরগির ডিম এক ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকায়। হাঁসের ডিম ১৮০-১৯০ টাকা ও দেশি মুরগির ডিমের ডজন ১৯০-২০০ টাকা।

রোজাকে কেন্দ্র করে একসঙ্গে পুরো মাসের বাজার না কিনতে ক্রেতাদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার । দাম নিয়ে কেউ কারসাজি করলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার হুঁশিয়ারিও দেন তিনি।

এদিকে শুক্রবার (১৭ মার্চ) আসন্ন রমজান উপলক্ষে এক বিশেষ তদারকিমূলক অভিযানে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার বলেন, সামনে রোজা। দয়া করে আপনারা এক মাসের বাজার একসঙ্গে কিনতে যাবেন না। আপনারা ১০ দিনের বা এক সপ্তাহের বাজার করেন। হঠাৎ করে বেশি পণ্য কিনলে বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি হয়। তখন কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী ফায়দা লোটার চেষ্টা করে। এই কারণে অনুরোধ করব আপনারা একসঙ্গে পুরো মাসের বাজার করবেন না।

তিনি আরও বলেন, পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে সরকারের বিভিন্ন সংস্থা বাজার নিয়ন্ত্রণে মাঠে কাজ করছে। আমরা জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে নিত্যপণ্যের বাজার, বিশেষ করে রমজান কেন্দ্রিক পণ্যের মূল্য এবং সরবরাহ ঠিক আছে কিনা তা দেশব্যাপী যাচাই করছি বলে তিনি উল্লেখ করেন।

অন্যদিকে, রোজাদারদের প্রতি সম্মান দেখিয়ে নিত্যপণ্যের দাম সহনীয় রাখতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান ও সংসদের বিরোধীদলীয় উপনেতা জিএম কাদের।

এক বিবৃতিতে জাপা চেয়ারম্যান বলেন, দ্রব্যমূল্য ক্রমবর্ধমান ঊর্ধ্বগতির কারণে দেশের মানুষের মাঝে চাপা হাহাকার বিরাজ করছে। ইতোমধ্যেই নিত্যপণ্যের দাম আকাশচুম্বি হয়ে আছে। দেশের মানুষের আয় বাড়েনি, কিন্তু ব্যয় বেড়েছে অনেক। তাই সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতা অনেক কমেছে। অর্থের অভাবে সাধারণ মানুষ বাজার করতে পারছে না, শিশুখাদ্য কিনতে পারছে না। এমনকি অর্থের অভাবে চিকিৎসা নিতে পারছে না এবং ওষুধ কিনতে পারছে না সাধারণ মানুষ। এমন বাস্তবতায়, পবিত্র মাহে রমজান আমাদের সামনে। তাই, রোজাদারদের প্রতি সম্মান দেখিয়ে মাহে রমজানে নিত্যপণ্যের দাম সহনীয় রাখার দাবি করেন তিনি।

অপরদিকে সম্প্রতি একটি অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, সামনে রমজান মাস আসছে। ধর্ম বলেছে সংযমী হতে, নিজেকে কন্ট্রোল করতে। ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে একটাই কথা সেটি আবারও বলতে চাই, অন্তত এই মাসটাতে একটুখানি সংযমী হওয়া দরকার। আপনারা দয়া করে যেটি ন্যায্য হওয়া উচিত সেটাই করবেন।

টিপু মুনশি বলেন, আমরা আপনাদের (ব্যবসায়িদের) সারা দিন ধরে পাহারা দিয়ে রাখতে পারব না। তারপরও আমরা চেষ্টা করব। আপনাদের বিবেকের কাছে প্রশ্ন দিয়ে গেলাম, আপনার যেটা ন্যায্য হয় সেটা করবেন।

তবে ভোক্তারা মনে করেন, সরকারে উচিত হবে এখনো রমজান শুরু হতে সপ্তাহখানিক বাকি রয়েছে। এরই মধ্যে কঠোর মনিটরিংয়ের মাধ্যমে নিত্যপণ্যের দাম ক্রেতাদের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে নিয়ে আসা। যাতে করে রমজানে দু’বেলা একটু ভালো খেয়ে গরিব মানুষ সংযম সাধনা করতে পারে।