ঢাকা ১১:৪১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

যুব সমাজ ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তুলবে : প্রধানমন্ত্রী

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০১:৫৪:১২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ নভেম্বর ২০২২
  • / ৪৪৩ বার পড়া হয়েছে

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

নিজস্ব প্রতিবেদক : 
দক্ষ যুব সমাজ আমাদের সম্পদ। তাদের কাজে লাগাতে হবে। তারাই ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তুলবে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুবকরাই শক্তি। তাদের সঠিকভাবে প্রশিক্ষণ দিয়ে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছি। আমরা মনে করি, প্রশিক্ষিত যুব সমাজ গড়ে তোলা একান্তভাবে অপরিহার্য। আজ কত প্রশিক্ষিত যুব সমাজ আছে, তার ডাটাবেজ থাকা দরকার। এখনো বাংলাদেশের অনেক কর্মক্ষম যুব শক্তি আছে, এটাই আমাদের বড় শক্তি। আমাদের এই জনশক্তিকে কাজে লাগাতে হবে। আমাদের যুবকরা এত বেশি মেধাবী, তারা সব কাজে পারদর্শিতা দেখাতে পারবে।

মঙ্গলবার (১ নভেম্বর) জাতীয় যুব দিবস-২০২২ এর উদ্বোধন এবং ‘জাতীয় যুব পুরস্কার-২০২২’ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে তিনি ভার্চুয়ালে অংশগ্রহণ করেন। মূল অনুষ্ঠানটি রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়। ‘প্রশিক্ষিত যুব উন্নত দেশ, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ’ এই প্রতিপাদ্য নিয়ে পালিত হচ্ছে এবারের জাতীয় যুব দিবস।

তিনি বলেন, আমরা দক্ষ ও প্রশিক্ষিত যুব সমাজ গড়ে তুলতে চাই। এজন্য নানা উদ্যোগও গ্রহণ করেছি। আমরা বিজয়ী জাতি। মর্যাদার সঙ্গে বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে চাই। কারো কাছে হাত পেতে বা মাথা নিচু করে নয়। আমাদের কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না।

শেখ হাসিনা বলেন, করোনাকালীন আমি দেখেছি, চিকিৎসাসেবা থেকে শুরু করে যুবকরাই সব কাজে এগিয়ে এসেছে। এটা কিন্তু গর্বের বিষয়। নতুন নতুন আবিস্কারে বিশ্ব এগিয়ে যাচ্ছে, তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হবে। এটা আমাদের যুবকরাই করবে। আমাদের যুবকরা এতো বেশি মেধাবী, তারা সব কাজে অবদান রাখতে পারবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুব উন্নয়ন কেন্দ্র লেখা থাকে জাতীয় যুব উন্নয়ন প্রশিক্ষণ দেওয়া প্রতিষ্ঠানে। সেখানে আমি নিজে গিয়েছিলাম দেখেছিলাম দুর্বস্থার চিত্র। সরকার গঠন করে সেগুলোকে আমরা উন্নতি করেছি। বাংলাদেশের প্রতিটি জেলা-উপজেলায় পর্যায় পর্যন্ত যুবকদের ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করেছি। তারা নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। তাদের সফলভাবে প্রশিক্ষণ দিয়ে তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা যাতে হয় সেদিকে আবার বিশেষভাবেই নজর রাখছি।

এসময় বঙ্গবন্ধুর উদ্ধৃতি দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, যুবকদের সঙ্গে আত্মিক ও মানসিক সম্পর্ক ছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের। তিনি তরুণদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে, অসত্যকে পরিহার করতে, শোষণ-বঞ্চনা, অত্যাচার, অবিচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে অনুপ্রেরণা জোগাতেন।

সরকারপ্রধান বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের ডাকে এদেশে লাখো মানুষ অস্ত্র তুলে নিয়েছিল। প্রকৃতপক্ষে যুবকরা জাতির পিতা ডাকে উদ্বুদ্ধ হয়ে মুক্তিযোদ্ধে অংশ নিয়েছেন।

তিনি বলেন, তরুণ যুবকদের ভবিষ্যৎ নিয়ে জাতির পিতা ১৯৭২ সালের ১৯ আগস্ট সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এক জনসভায় দেশ গড়ার জন্য যুবক ও তরুণদের কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেছিলেন, কাজ কর কঠোর পরিশ্রম কর, না হলে বাঁচতে পারবে না, শুধু বিএ, এমএ পাস করে লাভ নেই। আমি চাই কৃষি কলেজ, কৃষি স্কুল, ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ ও স্কুলে যাতে সত্যিকারের মানুষ পয়দা হয়। বুনিয়াদি শিক্ষা নিলে কাজ করে খেয়ে বেঁচে থাকতে পারবে।

শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে জীবন বাজি রেখে স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল যুবকরা। সর্ব্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারের মাধ্যমে লাল-সবুজের একটি নতুন দেশ সৃষ্টি করে এ দেশের যুবসমাজ। যুবদের তিনি সংগঠিত করেছিলেন দেশপ্রেমের মহান দীক্ষায়। জাতির পিতা স্বাধীনতা অর্জনের পর দেশ পুনর্গঠনেও যুবসমাজকে কাজে লাগান এবং শিক্ষিত ও কর্মদক্ষ যুবসমাজ সৃষ্টিতে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেন ও রূপরেখা প্রণয়ন করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের দুর্ভাগ্য, ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্ট স্বাধীনতা বিরোধীচক্র জাতির পিতাকে পরিবারের বেশির ভাগ সদস্যসহ নির্মমভাবে হত্যা করে অবৈধভাবে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব হাতে তুলে নেয়। তারা দেশের যুব সমাজকে বিপথে পরিচালিত করে এবং ইতিহাস বিকৃত করে নতুন প্রজন্মকে বিভ্রান্ত করে। শিক্ষা উপকরণের বদলে তাদের হাতে তুলে দেয় অস্ত্র, মাদক এবং কালো টাকা। যার ফলে দেশের শিক্ষাঙ্গনগুলো পরিণত হয় সন্ত্রাসের স্বর্গরাজ্যে। বাংলাদেশের যুব সমাজকে সন্ত্রাস, নৈরাজ্য ও বিশৃঙ্খলা পথে ঠেলে দেওয়ার অপচেষ্টা করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ ১৯৯৬ সালে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেয়ে জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে যুবসমাজকে উন্নয়নের মূলধারায় সম্পৃক্ত করতে দেশব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করে। পরে ২০০৮ সালের নির্বাচনে জয়লাভের পর থেকে সরকার যুবসমাজকে দক্ষ মানবসম্পদে উন্নীত করতে তথ্য প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন কারিগরি, বৃত্তিমূলক এবং কৃষিভিত্তিক বহুমুখী প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছে।

তিনি আরো বলেন, প্রতি উপজেলায় আমরা যুব প্রশিক্ষণ ও বিনোদন কেন্দ্র করে দিচ্ছি। যুবকদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে যানবাহন চালনা প্রকল্প নিয়েছি। এতে যুব কর্মসংস্থান সৃষ্টি ছাড়াও দেশে ৪০ হাজার দক্ষ ড্রাইভার সৃষ্টি হবে। যুব কর্মসংস্থানের জন্য দেশব্যাপী ইমপ্যাক্ট প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এ প্রকল্পের আওতায় ৬৪ জেলায় ৬৪ হাজার যুব ও যুব নারীকে খামারভিত্তিক প্রশিক্ষণ ও প্রশিক্ষণ পরবর্তী ঋণ প্রদানসহ পরিবেশবান্ধব বায়োগ্যাস প্লান্ট স্থাপনে সহায়তা প্রদান করা হবে।

যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ হাসান রাসেল অনুষ্ঠানটির সভাপতিত্ব করেন। অনুষ্ঠানের ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তন মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি সভাপতি আব্দুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব, যুব ও ক্রীড়া সচিব মেজবাহ উদ্দিন, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (গ্রেড-১) আজহারুল ইসলাম খান।

এদিকে অনুষ্ঠানে আত্মকর্মসংস্থানে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপনের স্বীকৃতি স্বরূপ ১৫ জন আত্মকর্মী এবং স্বেচ্ছাসেবায় অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপনের জন্য ছয় জন যুবসংগঠক অর্থাৎ মোট ২১ জন সফল যুবকে জাতীয় যুব পুরস্কার-২০২২ দেওয়া হয়েছে। অনুষ্ঠানে শুরুতে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর একটি ভিডিও উপস্থাপন এবং একটি থিমসং প্রদর্শন করা হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

যুব সমাজ ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তুলবে : প্রধানমন্ত্রী

আপডেট সময় : ০১:৫৪:১২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ নভেম্বর ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : 
দক্ষ যুব সমাজ আমাদের সম্পদ। তাদের কাজে লাগাতে হবে। তারাই ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তুলবে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুবকরাই শক্তি। তাদের সঠিকভাবে প্রশিক্ষণ দিয়ে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছি। আমরা মনে করি, প্রশিক্ষিত যুব সমাজ গড়ে তোলা একান্তভাবে অপরিহার্য। আজ কত প্রশিক্ষিত যুব সমাজ আছে, তার ডাটাবেজ থাকা দরকার। এখনো বাংলাদেশের অনেক কর্মক্ষম যুব শক্তি আছে, এটাই আমাদের বড় শক্তি। আমাদের এই জনশক্তিকে কাজে লাগাতে হবে। আমাদের যুবকরা এত বেশি মেধাবী, তারা সব কাজে পারদর্শিতা দেখাতে পারবে।

মঙ্গলবার (১ নভেম্বর) জাতীয় যুব দিবস-২০২২ এর উদ্বোধন এবং ‘জাতীয় যুব পুরস্কার-২০২২’ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে তিনি ভার্চুয়ালে অংশগ্রহণ করেন। মূল অনুষ্ঠানটি রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়। ‘প্রশিক্ষিত যুব উন্নত দেশ, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ’ এই প্রতিপাদ্য নিয়ে পালিত হচ্ছে এবারের জাতীয় যুব দিবস।

তিনি বলেন, আমরা দক্ষ ও প্রশিক্ষিত যুব সমাজ গড়ে তুলতে চাই। এজন্য নানা উদ্যোগও গ্রহণ করেছি। আমরা বিজয়ী জাতি। মর্যাদার সঙ্গে বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে চাই। কারো কাছে হাত পেতে বা মাথা নিচু করে নয়। আমাদের কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না।

শেখ হাসিনা বলেন, করোনাকালীন আমি দেখেছি, চিকিৎসাসেবা থেকে শুরু করে যুবকরাই সব কাজে এগিয়ে এসেছে। এটা কিন্তু গর্বের বিষয়। নতুন নতুন আবিস্কারে বিশ্ব এগিয়ে যাচ্ছে, তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হবে। এটা আমাদের যুবকরাই করবে। আমাদের যুবকরা এতো বেশি মেধাবী, তারা সব কাজে অবদান রাখতে পারবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুব উন্নয়ন কেন্দ্র লেখা থাকে জাতীয় যুব উন্নয়ন প্রশিক্ষণ দেওয়া প্রতিষ্ঠানে। সেখানে আমি নিজে গিয়েছিলাম দেখেছিলাম দুর্বস্থার চিত্র। সরকার গঠন করে সেগুলোকে আমরা উন্নতি করেছি। বাংলাদেশের প্রতিটি জেলা-উপজেলায় পর্যায় পর্যন্ত যুবকদের ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করেছি। তারা নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। তাদের সফলভাবে প্রশিক্ষণ দিয়ে তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা যাতে হয় সেদিকে আবার বিশেষভাবেই নজর রাখছি।

এসময় বঙ্গবন্ধুর উদ্ধৃতি দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, যুবকদের সঙ্গে আত্মিক ও মানসিক সম্পর্ক ছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের। তিনি তরুণদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে, অসত্যকে পরিহার করতে, শোষণ-বঞ্চনা, অত্যাচার, অবিচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে অনুপ্রেরণা জোগাতেন।

সরকারপ্রধান বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের ডাকে এদেশে লাখো মানুষ অস্ত্র তুলে নিয়েছিল। প্রকৃতপক্ষে যুবকরা জাতির পিতা ডাকে উদ্বুদ্ধ হয়ে মুক্তিযোদ্ধে অংশ নিয়েছেন।

তিনি বলেন, তরুণ যুবকদের ভবিষ্যৎ নিয়ে জাতির পিতা ১৯৭২ সালের ১৯ আগস্ট সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এক জনসভায় দেশ গড়ার জন্য যুবক ও তরুণদের কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেছিলেন, কাজ কর কঠোর পরিশ্রম কর, না হলে বাঁচতে পারবে না, শুধু বিএ, এমএ পাস করে লাভ নেই। আমি চাই কৃষি কলেজ, কৃষি স্কুল, ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ ও স্কুলে যাতে সত্যিকারের মানুষ পয়দা হয়। বুনিয়াদি শিক্ষা নিলে কাজ করে খেয়ে বেঁচে থাকতে পারবে।

শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে জীবন বাজি রেখে স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল যুবকরা। সর্ব্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারের মাধ্যমে লাল-সবুজের একটি নতুন দেশ সৃষ্টি করে এ দেশের যুবসমাজ। যুবদের তিনি সংগঠিত করেছিলেন দেশপ্রেমের মহান দীক্ষায়। জাতির পিতা স্বাধীনতা অর্জনের পর দেশ পুনর্গঠনেও যুবসমাজকে কাজে লাগান এবং শিক্ষিত ও কর্মদক্ষ যুবসমাজ সৃষ্টিতে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেন ও রূপরেখা প্রণয়ন করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের দুর্ভাগ্য, ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্ট স্বাধীনতা বিরোধীচক্র জাতির পিতাকে পরিবারের বেশির ভাগ সদস্যসহ নির্মমভাবে হত্যা করে অবৈধভাবে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব হাতে তুলে নেয়। তারা দেশের যুব সমাজকে বিপথে পরিচালিত করে এবং ইতিহাস বিকৃত করে নতুন প্রজন্মকে বিভ্রান্ত করে। শিক্ষা উপকরণের বদলে তাদের হাতে তুলে দেয় অস্ত্র, মাদক এবং কালো টাকা। যার ফলে দেশের শিক্ষাঙ্গনগুলো পরিণত হয় সন্ত্রাসের স্বর্গরাজ্যে। বাংলাদেশের যুব সমাজকে সন্ত্রাস, নৈরাজ্য ও বিশৃঙ্খলা পথে ঠেলে দেওয়ার অপচেষ্টা করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ ১৯৯৬ সালে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেয়ে জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে যুবসমাজকে উন্নয়নের মূলধারায় সম্পৃক্ত করতে দেশব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করে। পরে ২০০৮ সালের নির্বাচনে জয়লাভের পর থেকে সরকার যুবসমাজকে দক্ষ মানবসম্পদে উন্নীত করতে তথ্য প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন কারিগরি, বৃত্তিমূলক এবং কৃষিভিত্তিক বহুমুখী প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছে।

তিনি আরো বলেন, প্রতি উপজেলায় আমরা যুব প্রশিক্ষণ ও বিনোদন কেন্দ্র করে দিচ্ছি। যুবকদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে যানবাহন চালনা প্রকল্প নিয়েছি। এতে যুব কর্মসংস্থান সৃষ্টি ছাড়াও দেশে ৪০ হাজার দক্ষ ড্রাইভার সৃষ্টি হবে। যুব কর্মসংস্থানের জন্য দেশব্যাপী ইমপ্যাক্ট প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এ প্রকল্পের আওতায় ৬৪ জেলায় ৬৪ হাজার যুব ও যুব নারীকে খামারভিত্তিক প্রশিক্ষণ ও প্রশিক্ষণ পরবর্তী ঋণ প্রদানসহ পরিবেশবান্ধব বায়োগ্যাস প্লান্ট স্থাপনে সহায়তা প্রদান করা হবে।

যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ হাসান রাসেল অনুষ্ঠানটির সভাপতিত্ব করেন। অনুষ্ঠানের ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তন মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি সভাপতি আব্দুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব, যুব ও ক্রীড়া সচিব মেজবাহ উদ্দিন, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (গ্রেড-১) আজহারুল ইসলাম খান।

এদিকে অনুষ্ঠানে আত্মকর্মসংস্থানে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপনের স্বীকৃতি স্বরূপ ১৫ জন আত্মকর্মী এবং স্বেচ্ছাসেবায় অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপনের জন্য ছয় জন যুবসংগঠক অর্থাৎ মোট ২১ জন সফল যুবকে জাতীয় যুব পুরস্কার-২০২২ দেওয়া হয়েছে। অনুষ্ঠানে শুরুতে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর একটি ভিডিও উপস্থাপন এবং একটি থিমসং প্রদর্শন করা হয়।