ঢাকা ০১:৩৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

মাহী তুই কই? প্রশ্নের জবাব ও তোলপাড় রাজনৈতিকপাড়া

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৩:২৫:২১ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২২
  • / ৪৮৮ বার পড়া হয়েছে

মাহী তুই কই? প্রশ্নের জবাব ও তোলপাড় রাজনৈতিকপাড়া

বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

এ্যাডভোকেট মো. আসলাম-উদ-দৌলাঃ

একটি ফোনালাপ হয়তো আমরা অনেকে ভুলে যায়নি। মোবাইল ফোনের এক প্রান্তে ছিলেন তরুণ সম্ভাবনাময় রাজনীতিবিদ সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান, অপরপ্রান্তে ছিলেন অভিনেত্রী মাহিয়া মাহী।

ডা. মুরাদ টানা কন্ঠে বলছেন,“মাহী তুই কই?” বেশ কৌশলে মন্ত্রী মহাশয়কে সামাল দিলেন সেই জনপ্রিয় অভিনেত্রী। এরপর তরুণ মন্ত্রীর পতনের কথা সবাই জানি। কিন্তু অমিমাংসিত প্রশ্নের জবাব আমরা কেউ পায় নি।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের টানা তিন বারের সাধারন সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের অবস্থান ও অভিনেত্রী মাহিয়া মাহীর জাতীয় রাজনীতিতে প্রবেশে সে প্রশ্নের জবাব হয়তো মিলিছে। রাজনীতি এখন নতুন সমীকরণে চলছে।
উপমহাদেশের ঐতিহাসিক রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ অনেক কিংবদন্তি নেতার জন্ম দিয়েছে।সাংগঠনিক রাজনীতিতে আমীর হোসেন আমু, প্রয়াত আব্দুর রাজ্জাক এবং জাতির পিতাকে বঙ্গবন্ধু উপাধি দেয়া তোফায়েল আহমেদ। তাঁদের রাজনৈতিক জীবন ও কর্মকাণ্ড বলে দেয়- উপমহাদেশের রাজনীতিতে পার্শ্ববর্তী ভারত ও পাকিস্তানে সেদেশের প্রাচীনতম দলগুলো যখন প্রভাব হারাচ্ছে তখন বাংলাদেশে কেন ভিন্ন চিত্র? সকল কৌশলে কেন আওয়ামী লীগ এগিয়ে?? অবশ্যই ১৫ই আগস্ট নারকীয় হত্যাকান্ড থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেঁচে যাওয়া এবং ২১ আগস্ট গ্রেনেড হত্যাকান্ড থেকে মৃত্যুকুপ থেকে ফিরে আশা বড় ফ্যাক্টর ছিল।

নতুন ইতিহাস রচনাকারী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের টানা তিনবারের সাধারন সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরেরও হাল আমলের রাজনীতির চুলচেরা বিশ্লেষণ হবে। চলমান রাজনীতিতে চমৎকারভাবে খাপ খাওনোর কথা বিবেচনায় আসবে। রাজনীতিতে পাপিয়াদের উত্থান ও উৎখাত, মাহীদের মতো ইতিবাচক, সুপরিচিত মুখদের রাজনীতিতে জায়গা করে দেওয়ার জন্য তিনি প্রশংসার দাবি রাখেন।

তবে, জাতীয় রাজনীতির এই পরিবর্তনে তৃণমূলের সবচেয়ে শক্তিশালী ও সম্ভাবনাময় সংসদীয় আসন ভুক্তভোগি হয় কিনা সেটাই এখন দেখার বিষয়। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ যখন চাঁপাইনবাবগঞ্জের তিনটি সংসদীয় আসন নিয়ে খুব একটা আগ্রহ দেখানোর জায়গায় ছিলো না তখনও। এমনকি যখন হাইব্রিড, ট্রিপলব্রিডের ভিড়ে টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া জ্বলছে তখন চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ (নাচোল, গোমস্তাপুর,ভোলাহাট) সংসদীয় আসনে রাজনীতি করা ব্যক্তিদের হাতেই রাজনীতি ছিল। প্রতিযোগিতা ও প্রতিদ্বন্দ্বিতার মাঝেও এক মঞ্চে থেকে নেতৃত্ব সংগঠনিক ভিতকে শক্তিশালী করেছে।

যখন উত্তরবঙ্গে নৌকার অকাল তখন এই সংসদীয় আসন থেকে ৯৬ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছিলেন এ্যাডভোকেট আফসার আলী। নিজস্ব শক্ত ভোট ব্যাংক ও দলীয় নেতাকর্মী নিয়ে মাঠে নিরবিচ্ছিন্নভাবে সুদিন দুর্দিনে অবস্থান করা দুইজন শক্তিশালী নেতৃত্ব চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সাবেক এমপি মু. জিয়াউর রহমান ও বিশ্বাস পরিবারের সাবেক এমপি গোলাম মোস্তফা বিশ্বাস মাঠে আছেন। পরবর্তী প্রজন্মে যুবলীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য আনোয়ার হোসেন, রাজপথ থেকে উঠে আসা নেতৃত্ব ঢেলে সাজানো যুবলীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম-সাধারন সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার সৈকত, এ্যাডভোকেট আফসার পরিবারের যুবলীগের কেন্দ্রীয় সহ-সম্পাদক কামরুল হাসান লিংকনরা তিনটি সংসদীয় আসনের মধ্যে এই আসনটিতে রাজনৈতিক সুস্থ ও কাঙ্খিত পরিবেশ বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছে। এর বাইরে গ্রুপিং রাজনীতির ঊর্ধ্বে থাকা প্রবীণ রাজনীতিবিদ সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট আব্দুস সামাদ নির্বাচনে অংশ গ্রহণের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। এমন সময় কেন্দ্রীয় পছন্দনীয় মুখ বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের কেন্দ্রীয় যুগ্ম-সাধারন সম্পাদক মাহিয়া মাহি সরকারের প্রতি নীতি নির্ধারণী পর্যায়ের আগ্রহ দেশের ঐতিহ্যবাহী দলটিকে আগামীতে ক্ষতিগ্রস্থ করবে কিনা তা সময়ই বলে দিবে।

প্রসঙ্গত,নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে রাজনৈতিক দলের সর্বস্তরে ২০২০ সালের মধ্যে এক-তৃতীয়াংশ নারীর প্রতিনিধিত্ব বাধ্যতামূলক করার বিধান ২০০৯ সালে সংশোধিত গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২-এ যুক্ত করা হয়, যাতে রাজনীতিতে নারীর দৃশ্যমান অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা যায়। এই ৩৩ শতাংশ নারী নেতৃত্বের কোটা পূরণ করতে সম্ভাবনাময় নেতৃত্বদের মাইনাস করা হলে তৃণমূলে ভুল ম্যাসেজ যাবে। সম্ভাবনাময় নারী নেতৃত্বকেও শুরুতে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলা হবে।

[লেখকঃ এ্যাডভোকেট মো. আসলাম-উদ-দৌলা, আহ্বায়ক-বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ চাই ও সাধারন সম্পাদক-রাজশাহী প্রেস ক্লাব।]

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

মাহী তুই কই? প্রশ্নের জবাব ও তোলপাড় রাজনৈতিকপাড়া

আপডেট সময় : ০৩:২৫:২১ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২২

এ্যাডভোকেট মো. আসলাম-উদ-দৌলাঃ

একটি ফোনালাপ হয়তো আমরা অনেকে ভুলে যায়নি। মোবাইল ফোনের এক প্রান্তে ছিলেন তরুণ সম্ভাবনাময় রাজনীতিবিদ সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান, অপরপ্রান্তে ছিলেন অভিনেত্রী মাহিয়া মাহী।

ডা. মুরাদ টানা কন্ঠে বলছেন,“মাহী তুই কই?” বেশ কৌশলে মন্ত্রী মহাশয়কে সামাল দিলেন সেই জনপ্রিয় অভিনেত্রী। এরপর তরুণ মন্ত্রীর পতনের কথা সবাই জানি। কিন্তু অমিমাংসিত প্রশ্নের জবাব আমরা কেউ পায় নি।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের টানা তিন বারের সাধারন সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের অবস্থান ও অভিনেত্রী মাহিয়া মাহীর জাতীয় রাজনীতিতে প্রবেশে সে প্রশ্নের জবাব হয়তো মিলিছে। রাজনীতি এখন নতুন সমীকরণে চলছে।
উপমহাদেশের ঐতিহাসিক রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ অনেক কিংবদন্তি নেতার জন্ম দিয়েছে।সাংগঠনিক রাজনীতিতে আমীর হোসেন আমু, প্রয়াত আব্দুর রাজ্জাক এবং জাতির পিতাকে বঙ্গবন্ধু উপাধি দেয়া তোফায়েল আহমেদ। তাঁদের রাজনৈতিক জীবন ও কর্মকাণ্ড বলে দেয়- উপমহাদেশের রাজনীতিতে পার্শ্ববর্তী ভারত ও পাকিস্তানে সেদেশের প্রাচীনতম দলগুলো যখন প্রভাব হারাচ্ছে তখন বাংলাদেশে কেন ভিন্ন চিত্র? সকল কৌশলে কেন আওয়ামী লীগ এগিয়ে?? অবশ্যই ১৫ই আগস্ট নারকীয় হত্যাকান্ড থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেঁচে যাওয়া এবং ২১ আগস্ট গ্রেনেড হত্যাকান্ড থেকে মৃত্যুকুপ থেকে ফিরে আশা বড় ফ্যাক্টর ছিল।

নতুন ইতিহাস রচনাকারী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের টানা তিনবারের সাধারন সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরেরও হাল আমলের রাজনীতির চুলচেরা বিশ্লেষণ হবে। চলমান রাজনীতিতে চমৎকারভাবে খাপ খাওনোর কথা বিবেচনায় আসবে। রাজনীতিতে পাপিয়াদের উত্থান ও উৎখাত, মাহীদের মতো ইতিবাচক, সুপরিচিত মুখদের রাজনীতিতে জায়গা করে দেওয়ার জন্য তিনি প্রশংসার দাবি রাখেন।

তবে, জাতীয় রাজনীতির এই পরিবর্তনে তৃণমূলের সবচেয়ে শক্তিশালী ও সম্ভাবনাময় সংসদীয় আসন ভুক্তভোগি হয় কিনা সেটাই এখন দেখার বিষয়। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ যখন চাঁপাইনবাবগঞ্জের তিনটি সংসদীয় আসন নিয়ে খুব একটা আগ্রহ দেখানোর জায়গায় ছিলো না তখনও। এমনকি যখন হাইব্রিড, ট্রিপলব্রিডের ভিড়ে টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া জ্বলছে তখন চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ (নাচোল, গোমস্তাপুর,ভোলাহাট) সংসদীয় আসনে রাজনীতি করা ব্যক্তিদের হাতেই রাজনীতি ছিল। প্রতিযোগিতা ও প্রতিদ্বন্দ্বিতার মাঝেও এক মঞ্চে থেকে নেতৃত্ব সংগঠনিক ভিতকে শক্তিশালী করেছে।

যখন উত্তরবঙ্গে নৌকার অকাল তখন এই সংসদীয় আসন থেকে ৯৬ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছিলেন এ্যাডভোকেট আফসার আলী। নিজস্ব শক্ত ভোট ব্যাংক ও দলীয় নেতাকর্মী নিয়ে মাঠে নিরবিচ্ছিন্নভাবে সুদিন দুর্দিনে অবস্থান করা দুইজন শক্তিশালী নেতৃত্ব চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সাবেক এমপি মু. জিয়াউর রহমান ও বিশ্বাস পরিবারের সাবেক এমপি গোলাম মোস্তফা বিশ্বাস মাঠে আছেন। পরবর্তী প্রজন্মে যুবলীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য আনোয়ার হোসেন, রাজপথ থেকে উঠে আসা নেতৃত্ব ঢেলে সাজানো যুবলীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম-সাধারন সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার সৈকত, এ্যাডভোকেট আফসার পরিবারের যুবলীগের কেন্দ্রীয় সহ-সম্পাদক কামরুল হাসান লিংকনরা তিনটি সংসদীয় আসনের মধ্যে এই আসনটিতে রাজনৈতিক সুস্থ ও কাঙ্খিত পরিবেশ বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছে। এর বাইরে গ্রুপিং রাজনীতির ঊর্ধ্বে থাকা প্রবীণ রাজনীতিবিদ সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট আব্দুস সামাদ নির্বাচনে অংশ গ্রহণের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। এমন সময় কেন্দ্রীয় পছন্দনীয় মুখ বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের কেন্দ্রীয় যুগ্ম-সাধারন সম্পাদক মাহিয়া মাহি সরকারের প্রতি নীতি নির্ধারণী পর্যায়ের আগ্রহ দেশের ঐতিহ্যবাহী দলটিকে আগামীতে ক্ষতিগ্রস্থ করবে কিনা তা সময়ই বলে দিবে।

প্রসঙ্গত,নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে রাজনৈতিক দলের সর্বস্তরে ২০২০ সালের মধ্যে এক-তৃতীয়াংশ নারীর প্রতিনিধিত্ব বাধ্যতামূলক করার বিধান ২০০৯ সালে সংশোধিত গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২-এ যুক্ত করা হয়, যাতে রাজনীতিতে নারীর দৃশ্যমান অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা যায়। এই ৩৩ শতাংশ নারী নেতৃত্বের কোটা পূরণ করতে সম্ভাবনাময় নেতৃত্বদের মাইনাস করা হলে তৃণমূলে ভুল ম্যাসেজ যাবে। সম্ভাবনাময় নারী নেতৃত্বকেও শুরুতে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলা হবে।

[লেখকঃ এ্যাডভোকেট মো. আসলাম-উদ-দৌলা, আহ্বায়ক-বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ চাই ও সাধারন সম্পাদক-রাজশাহী প্রেস ক্লাব।]