ঢাকা ০৮:০৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

মানবতাবিরোধী অপরাধে ত্রিশালের ৬ জনের মৃত্যুদণ্ড

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১২:৩৭:১৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৩
  • / ৪৪০ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ময়মনসিংহের ত্রিশাল এলাকার পলাতক ছয় রাজাকারের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

সোমবার (২৩ জানুয়ারি) চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ রায় দেন।

ছয় আসামি হলেন- মো. মোখলেসুর রহমান মুকুল, মো. সাইদুর রহমান রতন, শামসুল হক ফকির, নুরুল হক ফকির, মো. সুলতান মাহমুদ ফকির ও নাকিব হোসেন আদিল সরকার।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন- সুলতান মাহমুদ সীমন ও তাপস কান্তি বল। আর আসামিদের পক্ষে ছিলেন- গাজী এম এইচ তামিম।

মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, ১৯৭১ সালের জুন-জুলাইয়ে ত্রিশালের আহমেদাবাদে একটি বিদ্যালয়ে ক্যাম্প স্থাপন করে শান্তি ও রাজাকার বাহিনী। ওই সময় কাকচর গ্রামের ইউনুছ আলী বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নদী পারাপার করতেন। এ কারণে ইউনুছ আলীকে ধরে ক্যাম্পে নিয়ে যান ২০-২৫ জন। নির্যাতনের পর ৭১ সালের ১৫ আগস্ট সকালে তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এছাড়া ওই রাজাকার বাহিনীর সদস্যরা মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে এলাকায় লুটপাট ও ধর্ষণের মতো অপরাধ করে।

এসব অভিযোগে পরে আসামিদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। এ অভিযোগ আমলে নিয়ে ফরমাল চার্জগঠন করে বিচার কাজ শুরু করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

২০১৫ সালের ২৮ ডিসেম্বর ময়মনসিংহের বিচারিক আদালতে মামলাটি করেন মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ইউনুছ আলীর ছেলে রুহুল আমিন। পরে ওইদিনই দুপুরে বিচারক আবেদা সুলতানা মামলাটি আমলে নিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে পাঠানোর আদেশ দেন।

এ মামলার তদন্ত শুরু হয় ২০১৭ সালে ২৬ জানুয়ারি। ওই বছরের ৩১ ডিসেম্বর তদন্ত সম্পন্ন করে প্রতিবেদন দাখিল করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা।

পরে ২০১৮ সালের ৫ ডিসেম্বর এ মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। তখন এ মামলায় আসামি ছিলেন নয়জন। এর মধ্যে গ্রেপ্তার দুইজন ও পলাতক এক আসামি মারা যান।

মামলায় ১৯ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। সবশেষ যুক্তিতর্ক শেষে গত বছরে ৫ ডিসেম্বর মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমান রাখেন ট্রাইব্যুনাল। এ মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে ছয়টি অভিযোগ আনা হয়।

রায়ের পর রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী গাজী এম এইচ তামিম বলেছেন, আসামিরা যুদ আইনের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আত্মসমপর্ণের পর রায়ের বিরুদ্ধে যদি আপিল করে তাহলে তারা ন্যায় বিচার পাবেন বলে আমার বিশ্বাস।

২০১৭ সালের ২৬ জানুয়ারি মামলাটির তদন্ত শুরু হয়। তদন্ত শেষে ওই বছরের ৩১ ডিসেম্বর ৯ আসামির বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দেয় ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। তাঁদের বিরুদ্ধে অপহরণ, আটক, নির্যাতন, হত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের ছয়টি অভিযোগ আনে প্রসিকিউশন। পরের বছর ৫ ডিসেম্বর এই ছয় অভিযোগে ৯ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়।

২০১৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি আসামিদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ মোট ১৯ জন আসামিদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেন। গত বছর ৫ ডিসেম্বর উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক শেষ হলে ট্রাইব্যুনাল মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখেন। গতকাল মামলাটি কার্যতালিকায় উঠলে ট্রাইব্যুনাল রায় ঘোষণার দিন ঠিক করে দেন।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

মানবতাবিরোধী অপরাধে ত্রিশালের ৬ জনের মৃত্যুদণ্ড

আপডেট সময় : ১২:৩৭:১৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ময়মনসিংহের ত্রিশাল এলাকার পলাতক ছয় রাজাকারের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

সোমবার (২৩ জানুয়ারি) চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ রায় দেন।

ছয় আসামি হলেন- মো. মোখলেসুর রহমান মুকুল, মো. সাইদুর রহমান রতন, শামসুল হক ফকির, নুরুল হক ফকির, মো. সুলতান মাহমুদ ফকির ও নাকিব হোসেন আদিল সরকার।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন- সুলতান মাহমুদ সীমন ও তাপস কান্তি বল। আর আসামিদের পক্ষে ছিলেন- গাজী এম এইচ তামিম।

মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, ১৯৭১ সালের জুন-জুলাইয়ে ত্রিশালের আহমেদাবাদে একটি বিদ্যালয়ে ক্যাম্প স্থাপন করে শান্তি ও রাজাকার বাহিনী। ওই সময় কাকচর গ্রামের ইউনুছ আলী বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নদী পারাপার করতেন। এ কারণে ইউনুছ আলীকে ধরে ক্যাম্পে নিয়ে যান ২০-২৫ জন। নির্যাতনের পর ৭১ সালের ১৫ আগস্ট সকালে তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এছাড়া ওই রাজাকার বাহিনীর সদস্যরা মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে এলাকায় লুটপাট ও ধর্ষণের মতো অপরাধ করে।

এসব অভিযোগে পরে আসামিদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। এ অভিযোগ আমলে নিয়ে ফরমাল চার্জগঠন করে বিচার কাজ শুরু করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

২০১৫ সালের ২৮ ডিসেম্বর ময়মনসিংহের বিচারিক আদালতে মামলাটি করেন মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ইউনুছ আলীর ছেলে রুহুল আমিন। পরে ওইদিনই দুপুরে বিচারক আবেদা সুলতানা মামলাটি আমলে নিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে পাঠানোর আদেশ দেন।

এ মামলার তদন্ত শুরু হয় ২০১৭ সালে ২৬ জানুয়ারি। ওই বছরের ৩১ ডিসেম্বর তদন্ত সম্পন্ন করে প্রতিবেদন দাখিল করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা।

পরে ২০১৮ সালের ৫ ডিসেম্বর এ মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। তখন এ মামলায় আসামি ছিলেন নয়জন। এর মধ্যে গ্রেপ্তার দুইজন ও পলাতক এক আসামি মারা যান।

মামলায় ১৯ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। সবশেষ যুক্তিতর্ক শেষে গত বছরে ৫ ডিসেম্বর মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমান রাখেন ট্রাইব্যুনাল। এ মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে ছয়টি অভিযোগ আনা হয়।

রায়ের পর রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী গাজী এম এইচ তামিম বলেছেন, আসামিরা যুদ আইনের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আত্মসমপর্ণের পর রায়ের বিরুদ্ধে যদি আপিল করে তাহলে তারা ন্যায় বিচার পাবেন বলে আমার বিশ্বাস।

২০১৭ সালের ২৬ জানুয়ারি মামলাটির তদন্ত শুরু হয়। তদন্ত শেষে ওই বছরের ৩১ ডিসেম্বর ৯ আসামির বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দেয় ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। তাঁদের বিরুদ্ধে অপহরণ, আটক, নির্যাতন, হত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের ছয়টি অভিযোগ আনে প্রসিকিউশন। পরের বছর ৫ ডিসেম্বর এই ছয় অভিযোগে ৯ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়।

২০১৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি আসামিদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ মোট ১৯ জন আসামিদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেন। গত বছর ৫ ডিসেম্বর উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক শেষ হলে ট্রাইব্যুনাল মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখেন। গতকাল মামলাটি কার্যতালিকায় উঠলে ট্রাইব্যুনাল রায় ঘোষণার দিন ঠিক করে দেন।