ঢাকা ১১:৫৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

বায়ুদূষণ রোধে নির্দেশনা বাস্তবায়নের অগ্রগতি জানতে চান হাইকোর্ট

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৫:১৪:৪৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২৩
  • / ৪৮৬ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুসারে ঢাকার বায়ুদূষণে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা জানানোর নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আগামী ৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে পরিবেশ অধিদফতরসহ সংশ্লিষ্টদের এ আদেশ বাস্তবায়ন করতে বলেছেন আদালত।

এক আবেদনের শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) বিচারপতি কেএম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ মৌখিকভাবে এ আদেশ দেন।

আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। পরিবেশ অধিদফতরের পক্ষে আইনজীবী আমাতুল করিম বলেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের পক্ষে আইনজীবী সাঈদ আহমেদ রাজা উপস্থিত ছিলেন।

শুনানিকালে পরিবেশ অধিদফতরের আইনজীবীর উদ্দেশে আদালত বলেন, আপনারা কি আমাদের মেরে ফেলবেন নাকি? নির্দেশনা বাস্তবায়নে বার বার আপনাদের ডাকতে হয়। আমরা নিজেরাই লজ্জা পাচ্ছি। পরিবেশ দূষণ রোধে কি পদক্ষেপ নিয়েছেন, তা আগামী ৫ জানুয়ারি জানান।

পরে আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, আদালতের নির্দেশনা বাস্তবায়ন চেয়ে আমরা একটি আবেদন করেছিলাম। সেই আবেদনের শুনানি নিয়ে আদালত পরিবেশ অধিদফতর, সিটি করপোরেশনসহ সব পক্ষের কাছে জানতে চেয়েছেন।

এর আগে ‘বছরে ৩১৭ দিন মারাত্মক দূষিত থাকে ঢাকার বায়ু’ শীরোনামে জাতীয় দৈনিকে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, দূষণের মানমাত্রা বিবেচনায় বছরের বেশির ভাগ সময় ‘অস্বাস্থ্যকর’ থাকে রাজধানী ঢাকার বাতাস। মাঝেমধ্যে এটা ‘বিপজ্জনক’ পর্যায়ে গিয়েও ঠেকে। বিশেষত শীতকালে বায়ুদূষণ পরিস্থিতি থাকে সবচেয়ে খারাপ। ৪৮ দিন ছাড়া বছরের বাকি সময় (৩১৭ দিন) ঢাকার বাতাস বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) নির্মল বায়ুর মানমাত্রার চেয়ে খারাপ থাকে। এক গবেষণায় উঠে এসেছে, স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে শীতকালে ঢাকার বাতাস ১৬ গুণ বেশি দূষিত থাকছে।

পরে ওই প্রতিবেদন সংযুক্ত করে ঢাকার বায়ু দূষণ রোধে উচ্চ আদালতের যে নয় দফা নির্দেশনা রয়েছে তার বাস্তবায়নের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।

বায়ু দূষণরোধে ৯ দফা নির্দেশনা দিয়ে ২০২০ সালে রায় দিয়েছিলেন উচ্চ আদালত।

৯ দফা নির্দেশনায় বলা হয়-

১. ঢাকা শহরের মধ্যে বালি বা মাটি বহনকারী ট্রাকগুলোকে ঢেকে পরিবহণ করতে হবে।

২. যে সব জায়গায় নির্মাণকাজ চলছে সেসব জায়গার কনট্রাকটররা তা ঢেকে রাখবে।

৩. এছাড়া ঢাকার সড়কগুলোতে পানি ছিটানোর যে নির্দেশ ছিল, সে নির্দেশ অনুযায়ী যেসব জায়গায় এখনো পানি ছিটানো হচ্ছে না, সেসব এলাকায় পানি ছিটানোর ব্যবস্থা নিতে হবে।

৪. সড়কের মেগা প্রজেক্টের নির্মাণ এবং যেসব কার্পেটিংয়ের কাজ চলছে, যেসব কাজ যেন আইন-কানুন এবং চুক্তির টার্মস অ্যান্ড কন্ডিশন মেনে করা হয় সেটা নিশ্চিত করতে হবে।

৫. যে যানবাহন কালো ধোয়া ছাড়ে সেগুলো জব্দ করতে হবে।

৬. সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ অনুযায়ী রাস্তায় চলাচলকারী গাড়ির ইকোনোমিক লাইফ নির্ধারণ করতে হবে এবং যেসব গাড়ি পুরাতন হয়ে গেছে সেগুলো চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের নির্দেশ দিতে হবে।

৭. যেসব উটভাটা লাইসেন্সবিহীনভাবে চলছে সেগুলো বন্ধ করে দুই মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে।

৮.পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতি ছাড়া টায়ার পোড়ানো এবং ব্যাটারি রিসাইকিলিং বন্ধের করতে হবে।

৯. মার্কেট এবং দোকানের বর্জ্য প্যাকেট করে রাখতে এবং তা মার্কেট ও দোকান বন্ধের পরে সিটি করপোরেশনকে ওই বর্জ্য অপসারণ করতে হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

বায়ুদূষণ রোধে নির্দেশনা বাস্তবায়নের অগ্রগতি জানতে চান হাইকোর্ট

আপডেট সময় : ০৫:১৪:৪৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুসারে ঢাকার বায়ুদূষণে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা জানানোর নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আগামী ৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে পরিবেশ অধিদফতরসহ সংশ্লিষ্টদের এ আদেশ বাস্তবায়ন করতে বলেছেন আদালত।

এক আবেদনের শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) বিচারপতি কেএম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ মৌখিকভাবে এ আদেশ দেন।

আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। পরিবেশ অধিদফতরের পক্ষে আইনজীবী আমাতুল করিম বলেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের পক্ষে আইনজীবী সাঈদ আহমেদ রাজা উপস্থিত ছিলেন।

শুনানিকালে পরিবেশ অধিদফতরের আইনজীবীর উদ্দেশে আদালত বলেন, আপনারা কি আমাদের মেরে ফেলবেন নাকি? নির্দেশনা বাস্তবায়নে বার বার আপনাদের ডাকতে হয়। আমরা নিজেরাই লজ্জা পাচ্ছি। পরিবেশ দূষণ রোধে কি পদক্ষেপ নিয়েছেন, তা আগামী ৫ জানুয়ারি জানান।

পরে আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, আদালতের নির্দেশনা বাস্তবায়ন চেয়ে আমরা একটি আবেদন করেছিলাম। সেই আবেদনের শুনানি নিয়ে আদালত পরিবেশ অধিদফতর, সিটি করপোরেশনসহ সব পক্ষের কাছে জানতে চেয়েছেন।

এর আগে ‘বছরে ৩১৭ দিন মারাত্মক দূষিত থাকে ঢাকার বায়ু’ শীরোনামে জাতীয় দৈনিকে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, দূষণের মানমাত্রা বিবেচনায় বছরের বেশির ভাগ সময় ‘অস্বাস্থ্যকর’ থাকে রাজধানী ঢাকার বাতাস। মাঝেমধ্যে এটা ‘বিপজ্জনক’ পর্যায়ে গিয়েও ঠেকে। বিশেষত শীতকালে বায়ুদূষণ পরিস্থিতি থাকে সবচেয়ে খারাপ। ৪৮ দিন ছাড়া বছরের বাকি সময় (৩১৭ দিন) ঢাকার বাতাস বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) নির্মল বায়ুর মানমাত্রার চেয়ে খারাপ থাকে। এক গবেষণায় উঠে এসেছে, স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে শীতকালে ঢাকার বাতাস ১৬ গুণ বেশি দূষিত থাকছে।

পরে ওই প্রতিবেদন সংযুক্ত করে ঢাকার বায়ু দূষণ রোধে উচ্চ আদালতের যে নয় দফা নির্দেশনা রয়েছে তার বাস্তবায়নের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।

বায়ু দূষণরোধে ৯ দফা নির্দেশনা দিয়ে ২০২০ সালে রায় দিয়েছিলেন উচ্চ আদালত।

৯ দফা নির্দেশনায় বলা হয়-

১. ঢাকা শহরের মধ্যে বালি বা মাটি বহনকারী ট্রাকগুলোকে ঢেকে পরিবহণ করতে হবে।

২. যে সব জায়গায় নির্মাণকাজ চলছে সেসব জায়গার কনট্রাকটররা তা ঢেকে রাখবে।

৩. এছাড়া ঢাকার সড়কগুলোতে পানি ছিটানোর যে নির্দেশ ছিল, সে নির্দেশ অনুযায়ী যেসব জায়গায় এখনো পানি ছিটানো হচ্ছে না, সেসব এলাকায় পানি ছিটানোর ব্যবস্থা নিতে হবে।

৪. সড়কের মেগা প্রজেক্টের নির্মাণ এবং যেসব কার্পেটিংয়ের কাজ চলছে, যেসব কাজ যেন আইন-কানুন এবং চুক্তির টার্মস অ্যান্ড কন্ডিশন মেনে করা হয় সেটা নিশ্চিত করতে হবে।

৫. যে যানবাহন কালো ধোয়া ছাড়ে সেগুলো জব্দ করতে হবে।

৬. সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ অনুযায়ী রাস্তায় চলাচলকারী গাড়ির ইকোনোমিক লাইফ নির্ধারণ করতে হবে এবং যেসব গাড়ি পুরাতন হয়ে গেছে সেগুলো চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের নির্দেশ দিতে হবে।

৭. যেসব উটভাটা লাইসেন্সবিহীনভাবে চলছে সেগুলো বন্ধ করে দুই মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে।

৮.পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতি ছাড়া টায়ার পোড়ানো এবং ব্যাটারি রিসাইকিলিং বন্ধের করতে হবে।

৯. মার্কেট এবং দোকানের বর্জ্য প্যাকেট করে রাখতে এবং তা মার্কেট ও দোকান বন্ধের পরে সিটি করপোরেশনকে ওই বর্জ্য অপসারণ করতে হবে।