ঢাকা ০৩:২৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

প্রতিদিন ২০০ কোটি টাকার অবৈধ সোনা আসছে : বাজুস

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৯:২৭:০৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২২
  • / ৪৪৮ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস) জানিয়েছে, সারা দেশের জল, স্থল ও আকাশপথে প্রতিদিন প্রায় ২০০ কোটি টাকার অবৈধ সোনার অলঙ্কার ও বার চোরাচালানের মাধ্যমে দেশে আসছে। ৩৬৫ দিন বা একবছর শেষে এই সোনার মূল্য দাঁড়ায় প্রায় ৭৩ হাজার কোটি টাকা।

বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকে আয়োজিত বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) ও বাজুসের এক বৈঠকে এ তথ্য উপস্থাপন করা হয়।

বিএফআইইউ’র প্রধান কর্মকর্তা মো. মাসুদ বিশ্বাস বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। বাজুসের প্রেসিডেন্ট সায়েম সোবহান আনভীরের নেতৃত্বে ১৩ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল এতে অঙ্ক নেয়। এছাড়া সভায় বিএফআইইউ’র উপ-প্রধান ও ইউনিটের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অঙ্কগ্রহণ করেন।

বৈঠকে জুয়েলারি সমিতির পক্ষ থেকে বলা হয়, এই শিল্পে সোনা চোরাচালান বড় ধরনের সঙ্কট ও চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। চোরাচালান শুধু দুর্নীতিকে উৎসাহিত করছে না। এর ফলে অর্থনৈতিক সঙ্কট বাড়ছে।

বৈঠকে মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসী কাজে অর্থায়ন সংক্রান্ত আর্থিক অপরাধ মোকাবিলায় ‘মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২’, ‘সন্ত্রাসবিরোধী আইন ২০০৯’ এবং এতদ্বসংক্রান্ত বিধিমালার আওতায় সংশ্লিষ্ট সব সংস্থার দায়-দায়িত্ব নিয়ে আলোচনা করা হয়। বিএফআইইউ’র প্রধান বলেন, ‘‘মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসী কাজে অর্থায়নের মতো আন্তর্জাতিক সমস্যা মোকাবিলায় বাংলাদেশ সরকারের দৃঢ় অবস্থান রয়েছে। দুর্নীতি, মানিলন্ডারিং, সন্ত্রাস ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে সরকার ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি গ্রহণ করেছে।’’ তিনি বাংলাদেশে মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসী কাজে অর্থায়ন প্রতিরোধে কেন্দ্রীয় সংস্থা হিসেবে বিএফআইইউ’র ভূমিকা অবহিত করেন।

সভায় বাজুসের প্রেসিডেন্ট জুয়েলারি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলো যেন মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসী কাজে অর্থায়নের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত না হতে পারে, সে লক্ষ্যে সব জুয়েলারি ব্যবসায়ী সম্মিলিতভাবে কার্যক্রম গ্রহণ করবেন বলে অঙ্গীকার করেন। বৈঠকে সংগঠনটির পক্ষ থেকে ৭টি প্রস্তাবনা তুলে ধরা হয়েছে।

বাজুজের সাত দফা প্রস্তাবনা হলো : 
১. সোনা চোরাচালান ও মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ এবং চোরাকারবারিদের চিহ্নিত করতে বাংলাদেশ ব্যাঙ্ক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও বাজুসের সমন্বয়ে যৌথ মনিটরিং সেল গঠন করা।

২. চোরাকারবারিরা যাতে আইনের ফাঁকফোকর দিয়ে বেড়িয়ে যেতে না পারে, সেজন্য প্রয়োজনে আইন সংশোধন করে আরও কঠোর আইন প্রণয়ন করা।

৩. সোনা চোরাচালান প্রতিরোধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যেমন- বিজিবি, র‌্যাব ও পুলিশের জোড়ালো অভিযান নিশ্চিত করা।

৪. চোরাচালান প্রতিরোধে আইন প্রয়োগকারি সংস্থাগুলোর সদস্যদের উৎসাহিত করার লক্ষ্যে উদ্ধার হওয়া সোনার মোট পরিমাণের ২৫ শতাঙ্ক সংস্থাগুলোর সদস্যদের পুরস্কার হিসেবে প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

৫. ব্যাগেজ রুলের আওতায় সোনার বার ও অলঙ্কার আনার সুবিধার অপব্যবহারের কারণে ডলার সংটট, চোরাচালান ও মানিলন্ডারিংয়ে কী প্রভাব পড়ছে, তা নিরূপণে বাজুসকে যুক্ত করে যৌথ সমীক্ষা পরিচালনা করা।

৬. অবৈধ উপায়ে কোনও চোরাকারবারি যেন সোনার বার বা অলঙ্কার দেশে আনতে এবং বিদেশে পাচার করতে না পারে, সে জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান।

৭. জল, স্থল ও আকাশপথ ব্যবহার করে অবৈধ উপায়ে কেউ যাতে সোনার বার বা অলঙ্কার আনতে না পারে, এজন্য কঠোর নজরদারির ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

প্রতিদিন ২০০ কোটি টাকার অবৈধ সোনা আসছে : বাজুস

আপডেট সময় : ০৯:২৭:০৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস) জানিয়েছে, সারা দেশের জল, স্থল ও আকাশপথে প্রতিদিন প্রায় ২০০ কোটি টাকার অবৈধ সোনার অলঙ্কার ও বার চোরাচালানের মাধ্যমে দেশে আসছে। ৩৬৫ দিন বা একবছর শেষে এই সোনার মূল্য দাঁড়ায় প্রায় ৭৩ হাজার কোটি টাকা।

বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকে আয়োজিত বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) ও বাজুসের এক বৈঠকে এ তথ্য উপস্থাপন করা হয়।

বিএফআইইউ’র প্রধান কর্মকর্তা মো. মাসুদ বিশ্বাস বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। বাজুসের প্রেসিডেন্ট সায়েম সোবহান আনভীরের নেতৃত্বে ১৩ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল এতে অঙ্ক নেয়। এছাড়া সভায় বিএফআইইউ’র উপ-প্রধান ও ইউনিটের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অঙ্কগ্রহণ করেন।

বৈঠকে জুয়েলারি সমিতির পক্ষ থেকে বলা হয়, এই শিল্পে সোনা চোরাচালান বড় ধরনের সঙ্কট ও চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। চোরাচালান শুধু দুর্নীতিকে উৎসাহিত করছে না। এর ফলে অর্থনৈতিক সঙ্কট বাড়ছে।

বৈঠকে মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসী কাজে অর্থায়ন সংক্রান্ত আর্থিক অপরাধ মোকাবিলায় ‘মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২’, ‘সন্ত্রাসবিরোধী আইন ২০০৯’ এবং এতদ্বসংক্রান্ত বিধিমালার আওতায় সংশ্লিষ্ট সব সংস্থার দায়-দায়িত্ব নিয়ে আলোচনা করা হয়। বিএফআইইউ’র প্রধান বলেন, ‘‘মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসী কাজে অর্থায়নের মতো আন্তর্জাতিক সমস্যা মোকাবিলায় বাংলাদেশ সরকারের দৃঢ় অবস্থান রয়েছে। দুর্নীতি, মানিলন্ডারিং, সন্ত্রাস ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে সরকার ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি গ্রহণ করেছে।’’ তিনি বাংলাদেশে মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসী কাজে অর্থায়ন প্রতিরোধে কেন্দ্রীয় সংস্থা হিসেবে বিএফআইইউ’র ভূমিকা অবহিত করেন।

সভায় বাজুসের প্রেসিডেন্ট জুয়েলারি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলো যেন মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসী কাজে অর্থায়নের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত না হতে পারে, সে লক্ষ্যে সব জুয়েলারি ব্যবসায়ী সম্মিলিতভাবে কার্যক্রম গ্রহণ করবেন বলে অঙ্গীকার করেন। বৈঠকে সংগঠনটির পক্ষ থেকে ৭টি প্রস্তাবনা তুলে ধরা হয়েছে।

বাজুজের সাত দফা প্রস্তাবনা হলো : 
১. সোনা চোরাচালান ও মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ এবং চোরাকারবারিদের চিহ্নিত করতে বাংলাদেশ ব্যাঙ্ক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও বাজুসের সমন্বয়ে যৌথ মনিটরিং সেল গঠন করা।

২. চোরাকারবারিরা যাতে আইনের ফাঁকফোকর দিয়ে বেড়িয়ে যেতে না পারে, সেজন্য প্রয়োজনে আইন সংশোধন করে আরও কঠোর আইন প্রণয়ন করা।

৩. সোনা চোরাচালান প্রতিরোধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যেমন- বিজিবি, র‌্যাব ও পুলিশের জোড়ালো অভিযান নিশ্চিত করা।

৪. চোরাচালান প্রতিরোধে আইন প্রয়োগকারি সংস্থাগুলোর সদস্যদের উৎসাহিত করার লক্ষ্যে উদ্ধার হওয়া সোনার মোট পরিমাণের ২৫ শতাঙ্ক সংস্থাগুলোর সদস্যদের পুরস্কার হিসেবে প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

৫. ব্যাগেজ রুলের আওতায় সোনার বার ও অলঙ্কার আনার সুবিধার অপব্যবহারের কারণে ডলার সংটট, চোরাচালান ও মানিলন্ডারিংয়ে কী প্রভাব পড়ছে, তা নিরূপণে বাজুসকে যুক্ত করে যৌথ সমীক্ষা পরিচালনা করা।

৬. অবৈধ উপায়ে কোনও চোরাকারবারি যেন সোনার বার বা অলঙ্কার দেশে আনতে এবং বিদেশে পাচার করতে না পারে, সে জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান।

৭. জল, স্থল ও আকাশপথ ব্যবহার করে অবৈধ উপায়ে কেউ যাতে সোনার বার বা অলঙ্কার আনতে না পারে, এজন্য কঠোর নজরদারির ব্যবস্থা গ্রহণ করা।