ঢাকা ০৬:২১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी
আজকের সেহরি ও ইফতার ::
ঢাকায় সেহেরি ৪:৩৩ মি. ইফতার ৬:১৭ মি.:: চট্টগ্রামে সেহেরি ৪:২৮ মি. ইফতার ৬:১১ মি. :: রাজশাহীতে সেহেরি ৪:৩৯ মি. ইফতার ৬:২৪ মি. :: খুলনায় সেহেরি ৪:৩৭ মি. ইফতার ৬:২০ মি. :: বরিশালে সেহেরি ৪:৩৪ মি. ইফতার ৬:১৭ মি. :: সিলেটে সেহেরি ৪:২৬ মি. ইফতার ৬:১১ মি. :: রংপুরে সেহেরি ৪:৩৭ মি. ইফতার ৬:২২ মি. :: ময়মনসিংহে সেহেরি ৪:৩২ মি. ইফতার ৬:১৭ মি. ::::

পারমাণবিক বিদ্যুতে বাড়বে উত্তরের কর্মসংস্থান : প্রধানমন্ত্রী

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০১:৪১:২৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ অক্টোবর ২০২২
  • / ৪৫৩ বার পড়া হয়েছে

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

নিজস্ব প্রতিবেদক : 
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের পরিবেশবান্ধব বিদ্যুতে উত্তর অঞ্চলের কর্মসংস্থান বাড়বে। আগামী ২০২৩ সালে বিদ্যুৎকেন্দ্রটির প্রথম ইউননিট এবং ২০২৪ সালে দ্বিতীয় ইউনিট উৎপাদনে যাবে। পরামাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে যে বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে সেটা অত্যন্ত পরিবেশবান্ধব হবে। এটা আমাদের দেশের কোনো রকম ক্ষতিই করবে না। বরং আমাদের দেশের মানুষ খুব স্বচ্ছ একটা বিদ্যুৎ পাবে। যে বিদ্যুৎ তাদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অবদান রেখে যাবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী আজ বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় গণভবন থেকে থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের দ্বিতীয় ইউনিটের মূল যন্ত্র রিঅ্যাক্টর প্রেসার ভেসেল (পারমাণবিক চুল্লি পাত্র) স্থাপনকাজের উদ্বোধন শেষে এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের লক্ষ্য ছিল, সবার জন্য আমরা বিদ্যুৎ দেবো। আমরা কিন্তু আমাদের কথা রেখেছি। বাংলাদেশের প্রত্যেক ঘরে ঘরে আমরা বিদ্যুৎ পৌঁছাতে পেরেছি এবং আমরা বাংলাদেশকে আলোকিত করতে পেরেছি। তবে বর্তমান বিশ্বে যে সমস্যাটা দেখা দিয়েছে, যুদ্ধাবস্থা, তার ওপর কভিড এবং সমস্ত পরিবহন ব্যবস্থা থেকে শুরু করে মূল্যস্ফীতি, যার ফলে এখন উন্নত দেশগুলো হিমশিম খাচ্ছে।

দেশে বিদ্যুৎ এবং জ্বালানি ক্ষেত্রে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র অবদান রাখবে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আজকে বাংলাদেশের জন্য বিরাট অর্জনের দিন। এটা আমাদের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। বাংলাদেশের মানুষের জন্য অত্যন্ত সম্মান বয়ে আনবে।

বিদ্যুৎ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারাও প্রতিটি ক্ষেত্রে সাশ্রয়ের দিকে নজর দিয়েছে। আমরাও, বাংলাদেশ সেদিক থেকে পিছিয়ে নেই। কারণ পৃথিবীটা এখন হচ্ছে একটা গ্লোবাল ভিলেজ। একে অপরের ওপর নির্ভরশীল। সে কারণে সারা বিশ্বে যখন অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দেয়, তার ধাক্কাটা কিন্তু আমাদের ওপরও এসে পড়ে। তাই আমাদের কিছু সাশ্রয়ী হতে হচ্ছে, তার মানে এই না যে দেশের মানুষ বিদ্যুৎ পাবে না। মানুষ বিদ্যুৎ পাচ্ছে, পাবে। তবে এখানে সবাইকে একটু মিতব্যয়ী হতে হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, কিছু কিছু ক্ষেত্রে আমাদের মিতব্যয়ী হতে হচ্ছে। আমরা বাধ্য হচ্ছি বর্তমান পরিস্থিতির কারণে। কারণ যে যুদ্ধাবস্থা বিরাজ করছে, তার ওপর স্যানকশন, এই স্যানকশন দেওয়ার ফলে আরো বেশি সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। আমি আশা করি, পৃথিবী এ রকম একটা অবস্থা থেকে খুব দ্রুত মুক্তি পাবে।

আমরা চাই, আমাদের দেশের মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নতি। সে জন্য আমরা যেমন একদিকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে সেটা গ্রাম পর্যায়ে পৌঁছে দিচ্ছি। পাশাপাশি আমরা যোগাযোগ ব্যবস্থারও উন্নয়ন করছি। বিশেষ করে রূপপুর পাওয়ার প্রজেক্ট থেকে যে বিদ্যুৎ আসবে, আমাদের উত্তরবঙ্গের মানুষ; যেখানে চিরদিন মঙ্গা-দুর্ভিক্ষ লেগে থাকতো। এই যে আশ্বিন-কার্তিক মাস এলেই সেখানে দুর্ভিক্ষ হতো। এখন সেগুলো আমরা দুর্ভিক্ষমুক্ত করতে পেরেছি। এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র যখন বিদ্যুৎ সরবরাহ করবে তখন সেখানে মানুষের আরো সুযোগ সৃষ্টি হবে কর্মসংস্থানের। আর্থ-সামাজিক উন্নতি হবে। এটা হলো বাস্তবতা। আর সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা এ কাজগুলো করে যাচ্ছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, পরামাণু শক্তি থেকে যে বিদ্যুৎ আসবে; এখন যেমন জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে সবাই উদ্বিগ্ন, আমাদের কিন্তু এ ব্যাপারে কোনো রকম ইমিশন হবে না। কোনো রকম পরিবেশের ওপর প্রভাব পড়বে না। সম্পূর্ণ পরিবেশবান্ধব বিদ্যুৎ উৎপাদন করে আমরা মানুষকে দিতে পারবো। আমরা এখনো আমাদের দেশটাকে জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত থেকে রক্ষা করে চলছি কিন্তু পরামাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে যে বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে সেটা অত্যন্ত পরিবেশবান্ধব হবে। এটা আমাদের দেশে কোনো রকম ক্ষতিই করবে না। বরং আমাদের দেশের মানুষ খুব স্বচ্ছ একটা বিদ্যুৎ পাবে। যে বিদ্যুৎ তাদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অবদান রেখে যাবে।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন রোসাটমের মহাপরিচালক আলেক্সি লিখাচেভ। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিসচিব জিয়াউল হাসান স্বাগত বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানে নির্মাণাধীন বিদ্যুৎকেন্দ্রের ওপর একটি ভিডিও চিত্র পরিবেশিত হয়।

স্বাধীনতার পর গত ৫০ বছরের মধ্যে রূপপুর প্রকল্পই দেশের সবচেয়ে বড় এবং অর্থনৈতিক দিক থেকে সর্বাধিক ব্যয়বহুল প্রকল্প এটি। এটির কাজ সম্পন্ন হলে, বাংলাদেশ হবে পারমাণবিক জ্বালানি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের অধিকারী বিশ্বের ৩৩তম দেশ।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এর ফলে প্রকল্পটি নির্ধারিত সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়েই এগিয়ে যাবে। ওই কেন্দ্রের যে যন্ত্রে নিউক্লিয়ার ফুয়েল (পারমাণবিক জ্বালানি) ইউরেনিয়াম থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়, তার মূল কাঠামো হচ্ছে এই বিশেষ যন্ত্র, পারমাণবিক চুল্লি। এটিকে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের হৃৎপিণ্ড বলা হয়।

এর আগে গত বছরের ১০ অক্টোবর প্রথম ইউনিটের রিঅ্যাক্টর প্রেসার ভেসেল স্থাপন কার্যক্রমের উদ্বোধন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

রাশিয়ার সর্বাধুনিক প্রযুক্তি, আর্থিক ও প্রকল্প বাস্তবায়নসহ সার্বিক সহযোগিতায় পাবনার ঈশ্বরদীতে নির্মিত হচ্ছে দেশের প্রথম রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র। এতে স্থাপন করা হচ্ছে রাশিয়ার উদ্ভাবিত সর্বশেষ প্রযুক্তি থ্রি জি (প্লাস) ভিভিইআর ১২০০ মডেলের রিয়াক্টর। রোসাটম প্রকৌশল শাখা এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে।
দুটি ইউনিটে দুই হাজার ৪০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটি পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০২৩ সালের শেষ দিকে প্রথম ইউনিট থেকে এক হাজার ২০০ মেগাওয়াট এবং ২০২৪ সালের শেষ দিকে দ্বিতীয় ইউনিট থেকেও এক হাজার ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে।

প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি চালু হলে টানা ৬০ বছর কার্বননিঃসরণ ছাড়াই বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব হবে। তবে অনেক ক্ষেত্রে পারমাণবিক এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের আয়ুষ্কাল আরো ২০ থেকে ৩০ বছর বাড়ানো যায়। সে হিসাবে ৮০-৯০ বছর পর্যন্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব হবে। একই সঙ্গে প্রচলিত জ্বালানি দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনে যে খরচ হচ্ছে, তার চেয়ে অনেক সাশ্রয়ী মূল্যে এখান থেকে বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে।

 

The short URL of the present article is: https://banglakhaborbd.com/yf54

নিউজটি শেয়ার করুন

পারমাণবিক বিদ্যুতে বাড়বে উত্তরের কর্মসংস্থান : প্রধানমন্ত্রী

আপডেট সময় : ০১:৪১:২৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ অক্টোবর ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : 
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের পরিবেশবান্ধব বিদ্যুতে উত্তর অঞ্চলের কর্মসংস্থান বাড়বে। আগামী ২০২৩ সালে বিদ্যুৎকেন্দ্রটির প্রথম ইউননিট এবং ২০২৪ সালে দ্বিতীয় ইউনিট উৎপাদনে যাবে। পরামাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে যে বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে সেটা অত্যন্ত পরিবেশবান্ধব হবে। এটা আমাদের দেশের কোনো রকম ক্ষতিই করবে না। বরং আমাদের দেশের মানুষ খুব স্বচ্ছ একটা বিদ্যুৎ পাবে। যে বিদ্যুৎ তাদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অবদান রেখে যাবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী আজ বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় গণভবন থেকে থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের দ্বিতীয় ইউনিটের মূল যন্ত্র রিঅ্যাক্টর প্রেসার ভেসেল (পারমাণবিক চুল্লি পাত্র) স্থাপনকাজের উদ্বোধন শেষে এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের লক্ষ্য ছিল, সবার জন্য আমরা বিদ্যুৎ দেবো। আমরা কিন্তু আমাদের কথা রেখেছি। বাংলাদেশের প্রত্যেক ঘরে ঘরে আমরা বিদ্যুৎ পৌঁছাতে পেরেছি এবং আমরা বাংলাদেশকে আলোকিত করতে পেরেছি। তবে বর্তমান বিশ্বে যে সমস্যাটা দেখা দিয়েছে, যুদ্ধাবস্থা, তার ওপর কভিড এবং সমস্ত পরিবহন ব্যবস্থা থেকে শুরু করে মূল্যস্ফীতি, যার ফলে এখন উন্নত দেশগুলো হিমশিম খাচ্ছে।

দেশে বিদ্যুৎ এবং জ্বালানি ক্ষেত্রে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র অবদান রাখবে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আজকে বাংলাদেশের জন্য বিরাট অর্জনের দিন। এটা আমাদের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। বাংলাদেশের মানুষের জন্য অত্যন্ত সম্মান বয়ে আনবে।

বিদ্যুৎ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারাও প্রতিটি ক্ষেত্রে সাশ্রয়ের দিকে নজর দিয়েছে। আমরাও, বাংলাদেশ সেদিক থেকে পিছিয়ে নেই। কারণ পৃথিবীটা এখন হচ্ছে একটা গ্লোবাল ভিলেজ। একে অপরের ওপর নির্ভরশীল। সে কারণে সারা বিশ্বে যখন অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দেয়, তার ধাক্কাটা কিন্তু আমাদের ওপরও এসে পড়ে। তাই আমাদের কিছু সাশ্রয়ী হতে হচ্ছে, তার মানে এই না যে দেশের মানুষ বিদ্যুৎ পাবে না। মানুষ বিদ্যুৎ পাচ্ছে, পাবে। তবে এখানে সবাইকে একটু মিতব্যয়ী হতে হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, কিছু কিছু ক্ষেত্রে আমাদের মিতব্যয়ী হতে হচ্ছে। আমরা বাধ্য হচ্ছি বর্তমান পরিস্থিতির কারণে। কারণ যে যুদ্ধাবস্থা বিরাজ করছে, তার ওপর স্যানকশন, এই স্যানকশন দেওয়ার ফলে আরো বেশি সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। আমি আশা করি, পৃথিবী এ রকম একটা অবস্থা থেকে খুব দ্রুত মুক্তি পাবে।

আমরা চাই, আমাদের দেশের মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নতি। সে জন্য আমরা যেমন একদিকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে সেটা গ্রাম পর্যায়ে পৌঁছে দিচ্ছি। পাশাপাশি আমরা যোগাযোগ ব্যবস্থারও উন্নয়ন করছি। বিশেষ করে রূপপুর পাওয়ার প্রজেক্ট থেকে যে বিদ্যুৎ আসবে, আমাদের উত্তরবঙ্গের মানুষ; যেখানে চিরদিন মঙ্গা-দুর্ভিক্ষ লেগে থাকতো। এই যে আশ্বিন-কার্তিক মাস এলেই সেখানে দুর্ভিক্ষ হতো। এখন সেগুলো আমরা দুর্ভিক্ষমুক্ত করতে পেরেছি। এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র যখন বিদ্যুৎ সরবরাহ করবে তখন সেখানে মানুষের আরো সুযোগ সৃষ্টি হবে কর্মসংস্থানের। আর্থ-সামাজিক উন্নতি হবে। এটা হলো বাস্তবতা। আর সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা এ কাজগুলো করে যাচ্ছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, পরামাণু শক্তি থেকে যে বিদ্যুৎ আসবে; এখন যেমন জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে সবাই উদ্বিগ্ন, আমাদের কিন্তু এ ব্যাপারে কোনো রকম ইমিশন হবে না। কোনো রকম পরিবেশের ওপর প্রভাব পড়বে না। সম্পূর্ণ পরিবেশবান্ধব বিদ্যুৎ উৎপাদন করে আমরা মানুষকে দিতে পারবো। আমরা এখনো আমাদের দেশটাকে জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত থেকে রক্ষা করে চলছি কিন্তু পরামাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে যে বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে সেটা অত্যন্ত পরিবেশবান্ধব হবে। এটা আমাদের দেশে কোনো রকম ক্ষতিই করবে না। বরং আমাদের দেশের মানুষ খুব স্বচ্ছ একটা বিদ্যুৎ পাবে। যে বিদ্যুৎ তাদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অবদান রেখে যাবে।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন রোসাটমের মহাপরিচালক আলেক্সি লিখাচেভ। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিসচিব জিয়াউল হাসান স্বাগত বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানে নির্মাণাধীন বিদ্যুৎকেন্দ্রের ওপর একটি ভিডিও চিত্র পরিবেশিত হয়।

স্বাধীনতার পর গত ৫০ বছরের মধ্যে রূপপুর প্রকল্পই দেশের সবচেয়ে বড় এবং অর্থনৈতিক দিক থেকে সর্বাধিক ব্যয়বহুল প্রকল্প এটি। এটির কাজ সম্পন্ন হলে, বাংলাদেশ হবে পারমাণবিক জ্বালানি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের অধিকারী বিশ্বের ৩৩তম দেশ।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এর ফলে প্রকল্পটি নির্ধারিত সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়েই এগিয়ে যাবে। ওই কেন্দ্রের যে যন্ত্রে নিউক্লিয়ার ফুয়েল (পারমাণবিক জ্বালানি) ইউরেনিয়াম থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়, তার মূল কাঠামো হচ্ছে এই বিশেষ যন্ত্র, পারমাণবিক চুল্লি। এটিকে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের হৃৎপিণ্ড বলা হয়।

এর আগে গত বছরের ১০ অক্টোবর প্রথম ইউনিটের রিঅ্যাক্টর প্রেসার ভেসেল স্থাপন কার্যক্রমের উদ্বোধন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

রাশিয়ার সর্বাধুনিক প্রযুক্তি, আর্থিক ও প্রকল্প বাস্তবায়নসহ সার্বিক সহযোগিতায় পাবনার ঈশ্বরদীতে নির্মিত হচ্ছে দেশের প্রথম রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র। এতে স্থাপন করা হচ্ছে রাশিয়ার উদ্ভাবিত সর্বশেষ প্রযুক্তি থ্রি জি (প্লাস) ভিভিইআর ১২০০ মডেলের রিয়াক্টর। রোসাটম প্রকৌশল শাখা এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে।
দুটি ইউনিটে দুই হাজার ৪০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটি পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০২৩ সালের শেষ দিকে প্রথম ইউনিট থেকে এক হাজার ২০০ মেগাওয়াট এবং ২০২৪ সালের শেষ দিকে দ্বিতীয় ইউনিট থেকেও এক হাজার ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে।

প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি চালু হলে টানা ৬০ বছর কার্বননিঃসরণ ছাড়াই বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব হবে। তবে অনেক ক্ষেত্রে পারমাণবিক এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের আয়ুষ্কাল আরো ২০ থেকে ৩০ বছর বাড়ানো যায়। সে হিসাবে ৮০-৯০ বছর পর্যন্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব হবে। একই সঙ্গে প্রচলিত জ্বালানি দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনে যে খরচ হচ্ছে, তার চেয়ে অনেক সাশ্রয়ী মূল্যে এখান থেকে বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে।

 

The short URL of the present article is: https://banglakhaborbd.com/yf54