পটুয়াখালীতে বাস মালিকদের গালাগাল করে উপজেলা ও ইউপি চেয়ারম্যান লাঞ্ছিত
- আপডেট সময় : ১০:০০:৩৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ৭ জুন ২০২৩
- / ৪৫২ বার পড়া হয়েছে
// পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধি //
পটুয়াখালী জেলা বাস, মিনিবাস মালিক সমিতির সাথে চেয়ারম্যান ট্রাভেলস মালিকদের বিরোধ নিরসনে মতবিনিময় সভা শেষে বাস মালিকদের গালাগাল ও কটুক্তি করার অভিযোগে মারধরের শিকার হয়েছেন গলাচিপা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শাহিন শাহ ও দশমিনা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এড.ইকবাল মাহমুদ লিটন। বুধবার বিকেলে পটুয়াখালী জেলাপ্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
পটুয়াখালী জেলা বাস মিনিবাস মালিক সমিতি সদস্য ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সূত্রে জানা গেছে, পটুয়াখালীর দশমিনা- বাউফল ও গলাচিপা উপজেলা থেকে ঢাকায় সরাসরি চেয়ারম্যান ট্রাভেলস এর বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। এ জটিলতার অবসানে বুধবার পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক মোঃ শরীফুল ইসলাম বাস মালিক ও চেয়ারম্যান ট্রাভেলস এর পরিবহন মালিক পক্ষের সাথে মতবিনিময় সভায় বসেন। সভায় পটুয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দসহ গলাচিপা পৌরসভার মেয়র এবং উপজেলা চেয়ারম্যানও উপস্থিত ছিলেন। তবে শান্তিপূর্ণভাবে সভা শেষে বের হয়ে যাওয়ার পথে গলাচিপা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শাহিন শাহ এবং দশমিনার লিটন চেয়ারম্যান পটুয়াখালী বাস মালিকদের উদ্দেশ্য করে কটুক্তি এবং গালাগাল করেন। এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে বাস মালিকরা। তোপের মুখে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শাহিন শাহ ও ইকবাল মাহমুদ লিটনকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন তারা। পরবর্তিতে ওই সভায় উপস্থিত পটুয়াখালী সদর উপজেলা চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট গোলাম সরোয়ার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের উপর থেকে দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে তাদেরকে সেখান থেকে নিয়ে গিয়ে তাদের গাড়ীতে উঠিয়ে দেন।
এ বিষয়ে দশমনিা সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এড.ইকবাল মাহমুদ লিটন বলেন, ‘স্থানীয় মালিকদের সাথে সমন্বয় করে বাস চলাচল করার বিষয় সিদ্ধান্ত হয়েছে। সভা শেষে মালিক সমিতির কিছু উশৃঙ্খল মালিক জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে আমাকে গালিগালাজ করলে গলাচিপা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান প্রতিবাদ করেন। এ সময় তারা তার উপরেও চড়াও হয়ে গালিগালাজসহ অশোভন আচরন করেন। পরবর্তীতে সন্ধ্যার বাস স্ট্যান্ডে পটুয়াখালী বাস মালিক সমিতি আমার বাসের টিকিটসহ বাসের কাগজপত্র নিয়ে গেছে এবং আমার কাউন্টার ভাংচুর করেছে।আমি এই বিষয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে রাতে অশোভন আচরনসহ কাউন্টার ভাংচুর করে ঢাকাগামী গাড়ী চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হলে তা পুনরায় চলাচলের অনুমতিসহ সুবিচার চেয়ে একটি আবেদন পত্র জমা দিয়েছি ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পটুয়াখালী জেলা বাস মিনিবাস মালিক সমিতির সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন মৃধা বলেন, ‘আজ সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে ঈদের মওসুমে পটুয়াখালী বাস মালিক সমিতি উপজেলা থেকে নিয়মিত ঢাকা পর্যন্ত বাস পরিচালনা করবে। আর উপজেলা পর্যন্ত যদি চেয়ারম্যান ট্রাভেলস এর বাসের রুপ পারমিট নিতে পারে তবে তারাও বাস পরিচালনা করবে। কিন্তু রুট পারমিট ব্যতীত কেউ বাস চলাচল করাতে পারবে না। এ ছাড়া আজ সভা শেষে বের হওয়ার লিটন চেয়ারম্যান ও গলাচিপা উপজেলা চেয়ারম্যান শাহিন শাহ বাস মালিকদের কটুক্তি করায় বাস মালিকদের সাথে তাদের হাতাহাতি ঘটনা ঘটেছে।’ বাসস্ট্যান্ডে হামলা বা গাড়ির কাগজপত্র ছিনতাইয়ের ঘটনাটি তিন অস্বীকার করে বলেন এর সাথে আমরা সর্ম্পক্ত নই।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে গলাচিপা উপজেলা চেয়ারম্যান শাহিন শাহ তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন চেয়ারম্যান লিটনকে বাসমালিকরা শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার চেষ্টাকালে আমি তাদেরকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করি। এ সময় তারা মারমুখী হয়ে উঠে। পরবর্তীতে সদর উপজেলা চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট গোলাম সরোয়ার এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন।
এ বিষয়ে পটুয়াখালী সদর উপজেলা চেয়ারম্যান গোলাম সরোয়ার বলেন ঘটনাটি অনাকাংখিত, সভা শেষে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের নীচে সামনে এ ঘটনাটি ঘটে। আমি সভা শেষে উপর থেকে নামতে একটু দেরি করি সেখানে গিয়ে উত্তপ্ত অবস্থা দেখে দুইপক্ষকে দুই দিকে সড়িয়ে দেই।
পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক মোঃ শরীফুল ইসলাম বলেন, ‘ঈদ মওসুমে মানুষের ভোগান্তি দুর করার জন্য দশমিনা এবং গলাচিপা পর্যন্ত জেলা বাস মিনিবাস মালিক সমিতি তাদের বাস সরাসরি পরিচালনা করবে।’
দশমিনা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এড.ইকবাল মাহমুদ লিটন ও গলাচিপা উপজেলা চেয়ারম্যান শাহিন শাহ লাঞ্ছিত হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক বলেন, ‘আমি বিষয়টি শুনেছি এবং জেলা বাস মালিক সমিতির সভাপতিতে সমাধানের জন্য বলেছি।’