ঢাকা ০৯:৪৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

দুর্নীতি দেখি না, দুর্নীতির কোনো সুযোগ নেই : এ কে এম সহিদ

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০১:১৯:০৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ অক্টোবর ২০২২
  • / ৪৪১ বার পড়া হয়েছে

ঢাকা ওয়াসার ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে এম সহিদ উদ্দিন

বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

নিজস্ব প্রতিবেদক : 
দুর্নীতি দেখি না, আসলে দুর্নীতির কোনো সুযোগ নেই বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা ওয়াসার ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে এম সহিদ উদ্দিন।

আজ বুধবার দুদকের প্রধান কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে এমন মন্তব্য করেন তিনি।

অনুসন্ধান কর্মকর্তা উপ-পরিচালক সৈয়দ নজরুল ইসলামের নেতৃত্ব একটি টিম তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে।

ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী তাকসিম এ খানসহ অন্যদের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি ও নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে সহিদ উদ্দিনকে এদিন জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

এ কে এম সহিদ উদ্দিন ওয়াসার উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক হলেও বর্তমানে এমডির দায়িত্ব পালন করছেন। এমডি তাকসিম বর্তমানে ছুটিতে আছেন।

এক প্রশ্নের জবাবে সহিদ উদ্দিন বলেন, আমি কোনো দুর্নীতি দেখি না, আসলে দুর্নীতির কোনো সুযোগ নেই। প্রতিটি প্রকল্পে কনসালট্যান্ট থাকে। তারাই দেখাশোনা করেন। তাদের দায়িত্ব প্রকল্পের কাজ শেষ করা। তাদের সুপারিশেই ঠিকাদারকে বিল দেওয়া হয়েছে। এর বাইরে এক টাকাও দেওয়া হয়নি। জিজ্ঞাসাবাদে যা যা জানতে চাওয়া হয়েছে, দুদক কর্মকর্তাকে তা বলেছি।

এর আগে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে তিনি দুদকে আসেন। এছাড়া আজ ঢাকা ওয়াসার কো-অর্ডিনেশন অফিসার শেখ এনায়েত আবদুল্লাহকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

গত ১৭ অক্টোবর প্রতিষ্ঠানটির প্রধান প্রকৌশলীসহ ৭ কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করেছিল দুদক। তলব করা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তারা অবৈধভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত ও পদোন্নতি সুবিধা নিয়েছেন।

এ বিষয়ে দুদক সূত্রে জানা যায়, ওয়াসার কর্মকর্তা মো. আবুল কাশেম, এ কে এম সহিদ উদ্দিন, মৌসুমি খান, ডেপুটি চিফ ফাইন্যান্স অফিসার রত্নদ্বীপ বর্মণ ও শেখ এনায়েত আবদুল্লাহ অবৈধভাবে নিয়োগ পান। পরে শেখ এনায়েত আবদুল্লাহ, প্রধান প্রকৌশলী মো. কামরুল হাসান ও অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আক্তারুজ্জামান নিয়মবহির্ভূতভাবে পদোন্নতি পান।

অন্যদিকে ওয়াসার পদ্মা জশলদিয়া প্রকল্পে প্রায় ১ হাজার ১০০ কোটি টাকা, গন্ধবপুর পানি শোধনাগার প্রকল্পে ১ হাজার কোটি টাকা, দাশেরকান্দি পয়ঃশোধনাগার প্রকল্পে ১ হাজার কোটি টাকা, গুলশান বারিধারা লেক দূষণ প্রকল্পে ৫০ কোটি টাকার দুর্নীতিসহ আরও কয়েকটি প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানা গেছে।

এর আগে তিনটি ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্ট ৬ প্রতিষ্ঠানের নথিপত্র তলব করে চিঠি দেয় দুদক। তলব করা নথিপত্র আগামী ২০ অক্টোবরের মধ্যে সরবরাহের অনুরোধ করা হয়েছে।

২০০৯ সালে ঢাকা ওয়াসার এমডি হিসেবে নিয়োগ পান প্রকৌশলী তাকসিম এ খান। এরপর ধাপে ধাপে সময় বাড়িয়ে তিনি এখনো বহাল তবিয়তে আছেন। বিতর্কিত তাকসিম এ খানের পুনঃনিয়োগের ক্ষেত্রেও বিধি মানা হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া প্রকল্প ব্যয় বাড়ানো, ঠিকাদার নিয়োগে সিন্ডিকেট, ঘুষ লেনদেন, পদ সৃষ্টি করে পছন্দের লোককে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ, অপছন্দের লোককে ওএসডি করাসহ বিস্তর অভিযোগ রয়েছে ওয়াসার এমডির বিরুদ্ধে।

ঢাকা ওয়াসা কর্মচারী বহুমুখী সমবায় সমিতির ১৩২ কোটি ৪ লাখ ১৭ হাজার ৪৬০ টাকা ছয়টি ব্যাংক থেকে বিভিন্ন চেকের মাধ্যমে ওয়াসার এমডি তাকসিম এ খানের প্রত্যক্ষ মদতে ও নির্দেশে উত্তোলন করে আত্মসাৎ করা হয়েছে- এমন অভিযোগে তাকসিম এ খানসহ নয়জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করার আবেদন জমা পড়ে। পরে দুদকের এখতিয়ার বলে আদালত রায় দেন। ওই আবেদনের সূত্র ধরেই দুদকে অনুসন্ধান শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

দুর্নীতি দেখি না, দুর্নীতির কোনো সুযোগ নেই : এ কে এম সহিদ

আপডেট সময় : ০১:১৯:০৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ অক্টোবর ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : 
দুর্নীতি দেখি না, আসলে দুর্নীতির কোনো সুযোগ নেই বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা ওয়াসার ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে এম সহিদ উদ্দিন।

আজ বুধবার দুদকের প্রধান কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে এমন মন্তব্য করেন তিনি।

অনুসন্ধান কর্মকর্তা উপ-পরিচালক সৈয়দ নজরুল ইসলামের নেতৃত্ব একটি টিম তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে।

ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী তাকসিম এ খানসহ অন্যদের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি ও নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে সহিদ উদ্দিনকে এদিন জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

এ কে এম সহিদ উদ্দিন ওয়াসার উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক হলেও বর্তমানে এমডির দায়িত্ব পালন করছেন। এমডি তাকসিম বর্তমানে ছুটিতে আছেন।

এক প্রশ্নের জবাবে সহিদ উদ্দিন বলেন, আমি কোনো দুর্নীতি দেখি না, আসলে দুর্নীতির কোনো সুযোগ নেই। প্রতিটি প্রকল্পে কনসালট্যান্ট থাকে। তারাই দেখাশোনা করেন। তাদের দায়িত্ব প্রকল্পের কাজ শেষ করা। তাদের সুপারিশেই ঠিকাদারকে বিল দেওয়া হয়েছে। এর বাইরে এক টাকাও দেওয়া হয়নি। জিজ্ঞাসাবাদে যা যা জানতে চাওয়া হয়েছে, দুদক কর্মকর্তাকে তা বলেছি।

এর আগে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে তিনি দুদকে আসেন। এছাড়া আজ ঢাকা ওয়াসার কো-অর্ডিনেশন অফিসার শেখ এনায়েত আবদুল্লাহকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

গত ১৭ অক্টোবর প্রতিষ্ঠানটির প্রধান প্রকৌশলীসহ ৭ কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করেছিল দুদক। তলব করা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তারা অবৈধভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত ও পদোন্নতি সুবিধা নিয়েছেন।

এ বিষয়ে দুদক সূত্রে জানা যায়, ওয়াসার কর্মকর্তা মো. আবুল কাশেম, এ কে এম সহিদ উদ্দিন, মৌসুমি খান, ডেপুটি চিফ ফাইন্যান্স অফিসার রত্নদ্বীপ বর্মণ ও শেখ এনায়েত আবদুল্লাহ অবৈধভাবে নিয়োগ পান। পরে শেখ এনায়েত আবদুল্লাহ, প্রধান প্রকৌশলী মো. কামরুল হাসান ও অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আক্তারুজ্জামান নিয়মবহির্ভূতভাবে পদোন্নতি পান।

অন্যদিকে ওয়াসার পদ্মা জশলদিয়া প্রকল্পে প্রায় ১ হাজার ১০০ কোটি টাকা, গন্ধবপুর পানি শোধনাগার প্রকল্পে ১ হাজার কোটি টাকা, দাশেরকান্দি পয়ঃশোধনাগার প্রকল্পে ১ হাজার কোটি টাকা, গুলশান বারিধারা লেক দূষণ প্রকল্পে ৫০ কোটি টাকার দুর্নীতিসহ আরও কয়েকটি প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানা গেছে।

এর আগে তিনটি ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্ট ৬ প্রতিষ্ঠানের নথিপত্র তলব করে চিঠি দেয় দুদক। তলব করা নথিপত্র আগামী ২০ অক্টোবরের মধ্যে সরবরাহের অনুরোধ করা হয়েছে।

২০০৯ সালে ঢাকা ওয়াসার এমডি হিসেবে নিয়োগ পান প্রকৌশলী তাকসিম এ খান। এরপর ধাপে ধাপে সময় বাড়িয়ে তিনি এখনো বহাল তবিয়তে আছেন। বিতর্কিত তাকসিম এ খানের পুনঃনিয়োগের ক্ষেত্রেও বিধি মানা হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া প্রকল্প ব্যয় বাড়ানো, ঠিকাদার নিয়োগে সিন্ডিকেট, ঘুষ লেনদেন, পদ সৃষ্টি করে পছন্দের লোককে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ, অপছন্দের লোককে ওএসডি করাসহ বিস্তর অভিযোগ রয়েছে ওয়াসার এমডির বিরুদ্ধে।

ঢাকা ওয়াসা কর্মচারী বহুমুখী সমবায় সমিতির ১৩২ কোটি ৪ লাখ ১৭ হাজার ৪৬০ টাকা ছয়টি ব্যাংক থেকে বিভিন্ন চেকের মাধ্যমে ওয়াসার এমডি তাকসিম এ খানের প্রত্যক্ষ মদতে ও নির্দেশে উত্তোলন করে আত্মসাৎ করা হয়েছে- এমন অভিযোগে তাকসিম এ খানসহ নয়জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করার আবেদন জমা পড়ে। পরে দুদকের এখতিয়ার বলে আদালত রায় দেন। ওই আবেদনের সূত্র ধরেই দুদকে অনুসন্ধান শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে।