দুর্ঘটনার জন্য বাস মালিকদের শাস্তি হয় না : সংসদে ক্ষোভ ফিরোজের
- আপডেট সময় : ১০:৩১:৫২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৩
- / ৪৩৪ বার পড়া হয়েছে
নিজস্ব প্রতিবেদক :
দুর্ঘটনার জন্য দায়ী বাস মালিকদের শাস্তি না হওয়ার কারণে সড়ক দুর্ঘটনা বাড়ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ।
প্রতিনিয়ত সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে সংসদে ক্ষোভ প্রকাশ করে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ এসব বাসের মালিক পুলিশ, রাজনীতিক ও শক্তিশালী মানুষেরা। কোনো বাসের কিছু হয় না।
সোমবার (২৩ জানুয়ারি) জাতীয় সংসদ অধিবেশনে পয়েন্ট অব অর্ডারে আলোচনার সুযোগ নিয়ে তিনি সড়ক দুর্ঘটনায় বাবা-মেয়ের মারা যাওয়ার বিষয়টি তুলে ধরার পাশাপাশি সড়ক দুর্ঘটনা বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানান।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশনে কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় অসংখ্য মানুষ মারা যাচ্ছে। একটি মানুষ মারা যাওয়া মানে একটি পরিবার ধ্বংস হয়ে যাওয়া। কিন্তু একজন বাসের ড্রাইভারের লাইসেন্স আছে কি না, ফিটনেস আছে কি না, এসব দেখার কেউ নেই। যদি দেখা হতো তাহলে হয়তো দুর্ঘটনা এড়ানো যেত।
ফিরোজ রশীদ বলেন, রোড এক্সিডেন্টে প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ মারা যাচ্ছেন। পৃথিবীর অন্য কোথাও সড়ক দুর্ঘটনায় এত মানুষ মারা যান কি না জানি না। একটি মৃত্যুর ঘটনায় ওই পরিবারটি ধ্বংস হয়ে যায়। তাদের সব আশা-আকাঙ্ক্ষা বিলীন হয়ে যায়।
সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে পত্রিকায় প্রকাশিত খবর তুলে ধরে তিনি বলেন, এই যে বাসগুলো। এর মালিক কারা? অধিকাংশ বাসের মালিক হচ্ছে পুলিশ অফিসার। আমাদের যারা রাজনীতি করেন তারা। আর যারা শক্তিশালী আমাদের পাশে বসে আছেন। আমার পেছনে বসে আছেন আমাদের দলের চিফ হুইপ। তিনি বলতে পারবেন এসব বাসের মালিক কারা।
তিনি বলেন, এসব বাসের কোনো কিছু হয় না। কিচ্ছু হয় না। বেপরোয়া বাস চলে। কোনো বাসের লাইসেন্স নেই। চালকের লাইসেন্স নেই। সিগন্যাল বাতি নেই। ডানে যাবে না বামে যাবে কেউ বলতে পারে না। এসব চালকদের আজ পর্যন্ত আমরা পথে আনতে পারলাম না। শিক্ষিত করতে পাারলাম না।
কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, দেশে গত বছর সড়ক দুর্ঘটনায় ১০ হাজার মানুষ মারা গেছে। আর ১৪ হাজার মানুষ আহত হয়েছে। এদের পরিবারের দায়িত্ব কি রাষ্ট্র নেবে? তিনি বলেন, ‘এখন থেকে ডিসিদের দায়িত্ব দিতে হবে, তাদের বলতে হবে, আপনার জেলায় কতগুলো বাস আছে, ট্রাক আছে, অন্য গাড়ি আছে, তাদের ফিটনেস আছে কি না দেখতে হবে। ড্রাইভারদের লাইসেন্স আছে কি না তা দেখার দায়িত্ব দিতে হবে।
স্মার্ট বাংলাদেশ কিভাবে বাস্তবায়ন সম্ভব হবে এমন প্রশ্ন তোলেন কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, এই যে অবস্থা, আমরা স্মার্ট বাংলাদেশের কথা বলছি, আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশে কি এসব হচ্ছে? সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়ায় কি আছে? দেশে মহাসড়কে ভটভটি-পটপটি, মোটরসাইকেল, ট্যাম্পু কত কিছু যে একসঙ্গে চলে তা ভাবা যায় না।
তিনি বলেন, সরকার রাস্তাঘাটের অনেক উন্নয়ন করেছে। এসব রাস্তা দিয়ে রাতের বেলা ২০/৩০ টনের ট্রাক চলে, রাস্তা নষ্ট হয়, সংস্কার করবে কে? ছোট ছোট সুন্দর রাস্তা বিলের মধ্যে, কিন্তু সেখান দিয়ে রাতে টাকা খেয়ে ভারী ট্রাক চলছে! কারা এসব দেখবে? এসব চললে সড়ক নষ্ট হয়ে যাবে। বাস ও চালকের লাইসেন্স আছে কি না, গাড়ির ফিটনেস আছে কি না, এসব যাচাই করলে এসব ঘটনা ঘটতো না। মহাসড়কে কোথাও মোটরসাইকেল-ভটভটি চলে না। আমাদের দেশে চলছে। এসব ভটভটি-নছিমন-করিমনের কোনো ব্রেক নেই।’ তিনি এসব দেখার জন্য জেলা প্রশাসকদের দায়িত্ব দেওয়ার দাবি জানান।
অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য পীর ফজলুর রহমান বলেন, কক্সবাজার, টেকনাফ এলাকার মাদক কারবারিদের তালিকা করা হয়েছিল। এরপর অনেকে আত্মসমর্পন করেছিলেন। কিন্তু এখন মাদক আসা তিনগুণ বেড়েছে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, এর সঙ্গে রোহিঙ্গারা জড়িত। অনেক জায়গায় ক্যাম্পের কাটাতারের বেড়া কেটে বাইরে চলে যান। তমব্রু সীমান্তের কোনাপাড়া এলাকাটি নোম্যান্স ল্যান্ড। সেখনে কিছু রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছেন। সেখানে সশস্ত্র গ্রুপ আছে। তারা মাদক কারবারে সঙ্গে জড়িত। কোনাপাড়া দিয়ে মাদক আসছে। এই মাদক কারবারের রোহিঙ্গাদের সঙ্গে এদেশের অনেকে জড়িত।
তিনি বলেন, কক্সবাজার, টেকনাফে কারা কারা মাদক কারবারে জড়িত তার নতুন তালিকা করা উচিত। আর কোনাপাড়ায় যারা অবস্থান করছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।