Deprecated: Optional parameter $avatar declared before required parameter $id_or_email is implicitly treated as a required parameter in /home/banglakhaborbd/public_html/wp-content/themes/Newspaper pro/lib/metabox/user-function.php on line 55
তরুণ-তরুণীর ভালোবাসার জয় হলো হাইকোর্টে! - বাংলা খবর
ঢাকা ০৮:২৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

তরুণ-তরুণীর ভালোবাসার জয় হলো হাইকোর্টে!

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১২:০৪:৫৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৪ নভেম্বর ২০২২
  • / ৪২১ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

রংপুর প্রতিনিধি : 
দুই তরুণ-তরুণীর ভালোবাসার জয় হলো উচ্চ আদালতে। উচ্চ আদালতের দেওয়া এক আদেশে ১০ মাস পর নিজের স্ত্রীকে ফিরে পেয়েছেন রংপুরের বদরগঞ্জের উপজেলার তরুণ শ্যাম সুন্দর রায় ভালোবেসে বিয়ে করেন হেমা শর্মাকে। কিন্তু বিয়েতে মত না থাকায় হেমাকে বিয়ের রাতেই নিয়ে চলে যায় পরিবার।

স্ত্রীকে ফিরে পেতে হাইকোর্টে রিট করেন শ্যাম সুন্দর। শুনানি শেষে সে রিট নিষ্পত্তি করে আদালত আদেশ দেন। আদেশে আদালত হেমা শর্মাকে স্বামী শ্যাম সুন্দরের হাত তুলে দেওয়ার নির্দেশ দেন। তারপর আদালত কক্ষেই শ্যাম সুন্দর তার স্ত্রীকে বুঝে নেন।

রোববার (১৩ নভেম্বর) বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের হাইকোর্ট বেঞ্চে চাঞ্চল্যকর এই রিটের নিষ্পত্তি হয়।

আদালতে শ্যাম সুন্দরের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। তিনি জানান, হেমা ও শ্যামের দাম্পত্য জীবন ফিরে পাওয়ার লড়াইটা ছিল ব্যতিক্রম। চলতি বছর ১৩ জানুয়ারি তারা ভালোবাসার সম্পর্ককে বিয়েতে রূপ দেন। শ্যামের পরিবার এ বিয়েতে সম্মত থাকলেও পিতৃহীন হেমার মা-মামারা মেনে নেননি। তাই বিয়ের রাতেই হেমাকে পুলিশের সহায়তায় তুলে নিয়ে গিয়ে মামা গণেশের বাড়িতে আটকে রেখে নির্যাতন চালায় তার পরিবার।

এক পর্যায়ে ইচ্ছার বিরুদ্ধে ঢাকায় এনে আইন ও সালিশ কেন্দ্রের হেফাজতে ৫ মাস রেখে দেওয়া হয় হেমাকে। তারপর তাকে দিয়ে শ্যামের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা করানো হয়। শ্যাম উপায় না পেয়ে স্ত্রীকে ফিরে পেতে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন।

বিচারপতি মো.মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের হাইকোর্ট বেঞ্চ গত ৩১ অক্টোবর এক আদেশে রোববার (১৩ নভেম্বর) হেমাকে হাজির করার নির্দেশ দেন। হাইকোর্টের আদেশে পুলিশি প্রহরায় হেমাকে আদালতে উপস্থিত করা হয়। পরে তিনি আদালতের কাছে শ্যামের সঙ্গে বিয়ে, মা-মামাদের অত্যাচার ও জোর করে আটক করে রাখার বিষয়ে জানান। তাকে দিয়ে মিথ্যা মামলা করানো হয় বলেও উল্লেখ করেন। এ সময় তিনি স্বামীর কাছে ফেরার ইচ্ছাও প্রকাশ করেন।

আইনজীবী তাজুল ইসলাম আরো জানান, আদালত পরে হেমার মা, মামা, শ্যাম ও শ্যামের পিতার বক্তব্যও সরাসরি জানতে চান। সবকিছু শুনে বিচার কক্ষ থেকেই হেমাকে তার স্বামী শ্যামের কাছে তুলে দিতে নির্দেশ দেন বিচারকগণ।

রিট আবেদনে বলা হয়, শ্যামের বয়স ২২ বছর, আর হেমার ১৯ বছর। হিন্দু বিবাহ নিবন্ধন বিধিমালা ২০১৩-এর বিধি ২২(১)(ক) অনুযায়ী দুজনের বিয়ে নিবন্ধিত হয়। দুজনের বাড়ি রংপুরের বদরগঞ্জে। কিন্তু বিয়ের পরদিন তার স্ত্রীকে তার কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হয়। পরে স্ত্রীর ফোন পেয়ে জানতে পারেন, বয়স ১৫ বছর দেখিয়ে তাকে আইন ও সালিশ কেন্দ্রে (আসক) রেখে গেছেন তার মামা গণেশ শর্মা। পরে সেখান থেকে ২৫ মে মামা বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। এরপর থেকে তিনি তার স্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারছেন না।

রিট আবেদনে আরও বলা হয়, আইনানুযায়ী তারা এখন স্বামী-স্ত্রী। কেউ তাদের এই পবিত্র সম্পর্ককে অস্বীকার করতে পারে না। কিন্তু এই বিয়ে মেয়ের মা ও মামারা মেনে নিতে পারছেন না। এরই মধ্যে তার স্ত্রীকে বিদেশে পাঠাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন তারা। ভিসাও করে ফেলেছেন।

স্বরাষ্ট্র সচিব, পুলিশের আইজি, রংপুর পুলিশ সুপার, বদরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ সাত জনকে রিটে বিবাদী করা হয়েছিল।

নিউজটি শেয়ার করুন

তরুণ-তরুণীর ভালোবাসার জয় হলো হাইকোর্টে!

আপডেট সময় : ১২:০৪:৫৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৪ নভেম্বর ২০২২

রংপুর প্রতিনিধি : 
দুই তরুণ-তরুণীর ভালোবাসার জয় হলো উচ্চ আদালতে। উচ্চ আদালতের দেওয়া এক আদেশে ১০ মাস পর নিজের স্ত্রীকে ফিরে পেয়েছেন রংপুরের বদরগঞ্জের উপজেলার তরুণ শ্যাম সুন্দর রায় ভালোবেসে বিয়ে করেন হেমা শর্মাকে। কিন্তু বিয়েতে মত না থাকায় হেমাকে বিয়ের রাতেই নিয়ে চলে যায় পরিবার।

স্ত্রীকে ফিরে পেতে হাইকোর্টে রিট করেন শ্যাম সুন্দর। শুনানি শেষে সে রিট নিষ্পত্তি করে আদালত আদেশ দেন। আদেশে আদালত হেমা শর্মাকে স্বামী শ্যাম সুন্দরের হাত তুলে দেওয়ার নির্দেশ দেন। তারপর আদালত কক্ষেই শ্যাম সুন্দর তার স্ত্রীকে বুঝে নেন।

রোববার (১৩ নভেম্বর) বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের হাইকোর্ট বেঞ্চে চাঞ্চল্যকর এই রিটের নিষ্পত্তি হয়।

আদালতে শ্যাম সুন্দরের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। তিনি জানান, হেমা ও শ্যামের দাম্পত্য জীবন ফিরে পাওয়ার লড়াইটা ছিল ব্যতিক্রম। চলতি বছর ১৩ জানুয়ারি তারা ভালোবাসার সম্পর্ককে বিয়েতে রূপ দেন। শ্যামের পরিবার এ বিয়েতে সম্মত থাকলেও পিতৃহীন হেমার মা-মামারা মেনে নেননি। তাই বিয়ের রাতেই হেমাকে পুলিশের সহায়তায় তুলে নিয়ে গিয়ে মামা গণেশের বাড়িতে আটকে রেখে নির্যাতন চালায় তার পরিবার।

এক পর্যায়ে ইচ্ছার বিরুদ্ধে ঢাকায় এনে আইন ও সালিশ কেন্দ্রের হেফাজতে ৫ মাস রেখে দেওয়া হয় হেমাকে। তারপর তাকে দিয়ে শ্যামের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা করানো হয়। শ্যাম উপায় না পেয়ে স্ত্রীকে ফিরে পেতে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন।

বিচারপতি মো.মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের হাইকোর্ট বেঞ্চ গত ৩১ অক্টোবর এক আদেশে রোববার (১৩ নভেম্বর) হেমাকে হাজির করার নির্দেশ দেন। হাইকোর্টের আদেশে পুলিশি প্রহরায় হেমাকে আদালতে উপস্থিত করা হয়। পরে তিনি আদালতের কাছে শ্যামের সঙ্গে বিয়ে, মা-মামাদের অত্যাচার ও জোর করে আটক করে রাখার বিষয়ে জানান। তাকে দিয়ে মিথ্যা মামলা করানো হয় বলেও উল্লেখ করেন। এ সময় তিনি স্বামীর কাছে ফেরার ইচ্ছাও প্রকাশ করেন।

আইনজীবী তাজুল ইসলাম আরো জানান, আদালত পরে হেমার মা, মামা, শ্যাম ও শ্যামের পিতার বক্তব্যও সরাসরি জানতে চান। সবকিছু শুনে বিচার কক্ষ থেকেই হেমাকে তার স্বামী শ্যামের কাছে তুলে দিতে নির্দেশ দেন বিচারকগণ।

রিট আবেদনে বলা হয়, শ্যামের বয়স ২২ বছর, আর হেমার ১৯ বছর। হিন্দু বিবাহ নিবন্ধন বিধিমালা ২০১৩-এর বিধি ২২(১)(ক) অনুযায়ী দুজনের বিয়ে নিবন্ধিত হয়। দুজনের বাড়ি রংপুরের বদরগঞ্জে। কিন্তু বিয়ের পরদিন তার স্ত্রীকে তার কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হয়। পরে স্ত্রীর ফোন পেয়ে জানতে পারেন, বয়স ১৫ বছর দেখিয়ে তাকে আইন ও সালিশ কেন্দ্রে (আসক) রেখে গেছেন তার মামা গণেশ শর্মা। পরে সেখান থেকে ২৫ মে মামা বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। এরপর থেকে তিনি তার স্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারছেন না।

রিট আবেদনে আরও বলা হয়, আইনানুযায়ী তারা এখন স্বামী-স্ত্রী। কেউ তাদের এই পবিত্র সম্পর্ককে অস্বীকার করতে পারে না। কিন্তু এই বিয়ে মেয়ের মা ও মামারা মেনে নিতে পারছেন না। এরই মধ্যে তার স্ত্রীকে বিদেশে পাঠাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন তারা। ভিসাও করে ফেলেছেন।

স্বরাষ্ট্র সচিব, পুলিশের আইজি, রংপুর পুলিশ সুপার, বদরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ সাত জনকে রিটে বিবাদী করা হয়েছিল।