ঢাকা ০৪:৩২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

জাপানি অর্থনৈতিক অঞ্চল মঙ্গলবার উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০২:১৪:৩৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ৫ ডিসেম্বর ২০২২
  • / ৪৩৭ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

নিজস্ব প্রতিবেদক : 
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে বাংলাদেশ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল বা জাপানি অর্থনৈতিক অঞ্চল মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করবেন।

এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগের (এফডিআই) পাশাপাশি জাপানি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার ক্ষেত্রে একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

সিঙ্গারের মতো একটি স্বনামধন্য বহুজাতিক কোম্পানি ইতোমধ্যে অর্থনৈতিক অঞ্চলে তাদের অবকাঠামো নির্মাণ শুরু করেছে এবং জার্মান কোম্পানি রুডলফের সঙ্গেও একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। জাপানি অর্থনৈতিক অঞ্চলের কার্যক্রম উদ্বোধনের দিনে আরও দুটি জাপানি বিনিয়োগকারীর সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে বলেও জানা গেছে।

এ ছাড়া আরও ৩০টি জাপানি প্রতিষ্ঠান এবং বিভিন্ন দেশের আরও ১০টি প্রতিষ্ঠান এ অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। বোরবার রাজধানীর আগারগাঁও এলাকায় বেজা কার্যালয়ে বাংলাদেশ উন্নয়ন সাংবাদিক ফোরামের (ডিজেএফবি) সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ ইউসুফ হারুন এসব কথা জানান।

অনুষ্ঠানে এ সময় বাংলাদেশ স্পেশাল ইকোনমিক জোন লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তারো কাওয়াচি, ডিজেএফবি সভাপতি হামিদ উজ জামান, ডিজেএফবি সদস্যরা এবং বেজার উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

হারুন জানান, জাপানি অর্থনৈতিক অঞ্চল সম্পূর্ণরূপে চালু হয়ে গেলে শিগগিরই আরও কয়েকটি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করা সম্ভব হবে। তাহলে এই জোনে ১.৫ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার পাশাপাশি এক লাখেরও বেশি লোকের প্রাথমিক কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করা সম্ভব হবে।

এক প্রশ্নের উত্তরে হারুন জানান, সিঙ্গার প্রাথমিক বিনিয়োগ করবে ৭৯ মিলিয়ন ডলার এবং রাসায়নিক কোম্পানি রুডলফ ৭ মিলিয়ন ডলার প্রাথমিক বিনিয়োগ করবে।

তিনি আরো বলেন, রেড ক্যাটাগরি’র অধীনে কোনও শিল্প বা সংস্থাকে কোনও অর্থনৈতিক অঞ্চলে তাদের শিল্প স্থাপনের অনুমতি দেয়া হবে না এবং প্রতিটি শিল্পকে ইটিপি স্থাপন করতে হবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ একটি কেন্দ্রীয় ইটিপি স্থাপন করবে।

বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান বলেন, জাপানি অর্থনৈতিক অঞ্চল-২ স্থাপনের জন্য জমি অধিগ্রহণের কার্যক্রম শেষ হয়েছে। এ ছাড়া চীনা বিনিয়োগকারীদের জন্য আরেকটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের জন্য একটি প্রস্তাব অর্থনৈতিকবিষয়ক মন্ত্রিসভা কমিটির (সিসিইএ) অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে হারুন বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব ও মহামারি কাটিয়ে ওঠার জন্য দেশ সঠিক পথে এগোচ্ছে।

তিনি বলেন, দেশ বৈদেশিক মুদ্রার সংকট কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হয়েছে এবং মহামারির ধাক্কা সত্ত্বেও বিনিয়োগ পরিস্থিতি এখন ভালো অবস্থায় রয়েছে।

বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান শিগগিরই এলএনজি আমদানি পুনরায় চালুর বিষয়ে আশাবাদ প্রকাশ করে বলেন, সরকার বেসরকারি খাতের মাধ্যমে এলএনজি আমদানির অনুমতি দেয়ার সম্ভাবনা যাচাই করছে।

তিনি জানান, নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার এবং চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে দক্ষতা উন্নয়ন কেন্দ্র স্থাপনের জন্য সরকার জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সিকে (জাইকা) অনুরোধ জানিয়েছে। জাপানি অর্থনৈতিক অঞ্চলে একটি আলাদা ওএসএস সেন্টার এবং একটি দক্ষতা উন্নয়ন কেন্দ্র স্থাপন করা হবে। ২০১৯ সালে স্বাক্ষরিত একটি চুক্তির পর বেজা এবং জাপানের সুমিতোমো করপোরেশন এখানে জাপানি অর্থনৈতিক অঞ্চলটি স্থাপন করছে।

হারুন জানান, দেশব্যাপী পাঁচটি অর্থনৈতিক অঞ্চলে এখন পর্যন্ত প্রায় ১৭৭টি বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান ৮ লাখ ১৬ হাজার ৫৪১ জনের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে ২২ হাজার ১৭৩ দশমিক ১৭৭ মিলিয়ন ডলারের সামগ্রিক বিনিয়োগ প্রস্তাব দিয়েছে। এই পাঁচটি অর্থনৈতিক অঞ্চল হলো- মিরসরাইয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প নগর (বিএসএমএসএন), জামালপুর অর্থনৈতিক অঞ্চল, সাবরাং ট্যুরিজম পার্ক, মহেশখালী অর্থনৈতিক অঞ্চল-৩ (ধলঘাটা) এবং শ্রীহট্ট অর্থনৈতিক অঞ্চল। এ ছাড়া বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে ইতোমধ্যে প্রায় ৩৫ হাজার লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করার লক্ষ্যে প্রায় ৪ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করা হয়েছে। সূত্র বাসস।

নিউজটি শেয়ার করুন

জাপানি অর্থনৈতিক অঞ্চল মঙ্গলবার উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী

আপডেট সময় : ০২:১৪:৩৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ৫ ডিসেম্বর ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : 
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে বাংলাদেশ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল বা জাপানি অর্থনৈতিক অঞ্চল মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করবেন।

এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগের (এফডিআই) পাশাপাশি জাপানি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার ক্ষেত্রে একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

সিঙ্গারের মতো একটি স্বনামধন্য বহুজাতিক কোম্পানি ইতোমধ্যে অর্থনৈতিক অঞ্চলে তাদের অবকাঠামো নির্মাণ শুরু করেছে এবং জার্মান কোম্পানি রুডলফের সঙ্গেও একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। জাপানি অর্থনৈতিক অঞ্চলের কার্যক্রম উদ্বোধনের দিনে আরও দুটি জাপানি বিনিয়োগকারীর সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে বলেও জানা গেছে।

এ ছাড়া আরও ৩০টি জাপানি প্রতিষ্ঠান এবং বিভিন্ন দেশের আরও ১০টি প্রতিষ্ঠান এ অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। বোরবার রাজধানীর আগারগাঁও এলাকায় বেজা কার্যালয়ে বাংলাদেশ উন্নয়ন সাংবাদিক ফোরামের (ডিজেএফবি) সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ ইউসুফ হারুন এসব কথা জানান।

অনুষ্ঠানে এ সময় বাংলাদেশ স্পেশাল ইকোনমিক জোন লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তারো কাওয়াচি, ডিজেএফবি সভাপতি হামিদ উজ জামান, ডিজেএফবি সদস্যরা এবং বেজার উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

হারুন জানান, জাপানি অর্থনৈতিক অঞ্চল সম্পূর্ণরূপে চালু হয়ে গেলে শিগগিরই আরও কয়েকটি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করা সম্ভব হবে। তাহলে এই জোনে ১.৫ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার পাশাপাশি এক লাখেরও বেশি লোকের প্রাথমিক কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করা সম্ভব হবে।

এক প্রশ্নের উত্তরে হারুন জানান, সিঙ্গার প্রাথমিক বিনিয়োগ করবে ৭৯ মিলিয়ন ডলার এবং রাসায়নিক কোম্পানি রুডলফ ৭ মিলিয়ন ডলার প্রাথমিক বিনিয়োগ করবে।

তিনি আরো বলেন, রেড ক্যাটাগরি’র অধীনে কোনও শিল্প বা সংস্থাকে কোনও অর্থনৈতিক অঞ্চলে তাদের শিল্প স্থাপনের অনুমতি দেয়া হবে না এবং প্রতিটি শিল্পকে ইটিপি স্থাপন করতে হবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ একটি কেন্দ্রীয় ইটিপি স্থাপন করবে।

বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান বলেন, জাপানি অর্থনৈতিক অঞ্চল-২ স্থাপনের জন্য জমি অধিগ্রহণের কার্যক্রম শেষ হয়েছে। এ ছাড়া চীনা বিনিয়োগকারীদের জন্য আরেকটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের জন্য একটি প্রস্তাব অর্থনৈতিকবিষয়ক মন্ত্রিসভা কমিটির (সিসিইএ) অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে হারুন বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব ও মহামারি কাটিয়ে ওঠার জন্য দেশ সঠিক পথে এগোচ্ছে।

তিনি বলেন, দেশ বৈদেশিক মুদ্রার সংকট কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হয়েছে এবং মহামারির ধাক্কা সত্ত্বেও বিনিয়োগ পরিস্থিতি এখন ভালো অবস্থায় রয়েছে।

বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান শিগগিরই এলএনজি আমদানি পুনরায় চালুর বিষয়ে আশাবাদ প্রকাশ করে বলেন, সরকার বেসরকারি খাতের মাধ্যমে এলএনজি আমদানির অনুমতি দেয়ার সম্ভাবনা যাচাই করছে।

তিনি জানান, নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার এবং চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে দক্ষতা উন্নয়ন কেন্দ্র স্থাপনের জন্য সরকার জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সিকে (জাইকা) অনুরোধ জানিয়েছে। জাপানি অর্থনৈতিক অঞ্চলে একটি আলাদা ওএসএস সেন্টার এবং একটি দক্ষতা উন্নয়ন কেন্দ্র স্থাপন করা হবে। ২০১৯ সালে স্বাক্ষরিত একটি চুক্তির পর বেজা এবং জাপানের সুমিতোমো করপোরেশন এখানে জাপানি অর্থনৈতিক অঞ্চলটি স্থাপন করছে।

হারুন জানান, দেশব্যাপী পাঁচটি অর্থনৈতিক অঞ্চলে এখন পর্যন্ত প্রায় ১৭৭টি বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান ৮ লাখ ১৬ হাজার ৫৪১ জনের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে ২২ হাজার ১৭৩ দশমিক ১৭৭ মিলিয়ন ডলারের সামগ্রিক বিনিয়োগ প্রস্তাব দিয়েছে। এই পাঁচটি অর্থনৈতিক অঞ্চল হলো- মিরসরাইয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প নগর (বিএসএমএসএন), জামালপুর অর্থনৈতিক অঞ্চল, সাবরাং ট্যুরিজম পার্ক, মহেশখালী অর্থনৈতিক অঞ্চল-৩ (ধলঘাটা) এবং শ্রীহট্ট অর্থনৈতিক অঞ্চল। এ ছাড়া বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে ইতোমধ্যে প্রায় ৩৫ হাজার লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করার লক্ষ্যে প্রায় ৪ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করা হয়েছে। সূত্র বাসস।