ঢাকা ১২:০০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২১ জুন ২০২৪, ৭ আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

কাঁচা মরিচের ডাবল সেঞ্চুরি, সবজির বাজারে স্বস্তি

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৩:৫৮:৫৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ জুন ২০২৪
  • / ৪২৪ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

সপ্তাহ ব্যবধানে রাজধানীর বাজারগুলোতে ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির দাম কমেছে। একই সঙ্গে উৎপাদন বাড়ায় গ্রীষ্মকালীন প্রতিটি সবজি কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা দাম কমেছে। তবে গত সপ্তাহের তুলনায় কাঁচা মরিচ কেজিতে ৫০ থেকে ৬০ টাকা বেড়েছে।

আজ শুক্রবার (১৪ জুন) রাজধানীর কারওয়ান বাজার, মহাখালী, বাড্ডা, মতিঝিল, মুগদা, রামপুরা এলাকার কাঁচাবাজার ঘুরে এ চিত্র পাওয়া গেছে।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে দেশি কাঁচা মরিচ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৪০ টাকা পর্যন্ত। ভারতীয় কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা কেজি করে।

বাজার বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, এক সপ্তাহ আগেও বাজারে কাঁচামরিচ ১২০ থেকে ১৩০ টাকায় বিক্রি হতো। এরপর আরও এক দফায় দাম বেড়ে গতকাল (বৃহস্পতিবার) পর্যন্ত কাঁচামরিচ বিক্রি হয় ১৬০ টাকায়। তবে এক রাতের ব্যবধানেই সেটির দাম বেড়ে এখন ২৪০ টাকা পর্যন্ত পৌঁছেছে। তবে কিছুটা নিম্নমানের কাঁচামরিচ কোথাও কোথাও ২২০ টাকা নেওয়া হচ্ছে।

গতবার (২০২৩) ঠিক এই সময়ে ঈদুল আজহার আগে কাঁচামরিচের দাম বেড়ে ৭০০ টাকায় উঠেছিল। ব্যবসায়ীরা বলছেন, এই সময়ে দেশে কাঁচামরিচের কিছুটা ঘাটতি থাকে, সে কারণে দাম বেড়ে যায়। তখন আমদানি করে কাঁচামরিচের ঘাটতি মেটানো হয়। আর যদি মাঝেমধ্যে আমদানি ব্যাহত হয়, তখন দামটা লাফিয়ে বাড়তে শুরু করে।

বাজারে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী সাইদুর রহমান বলেন, কয়েকদিন আগেও এক পোয়া কাঁচামরিচ কিনেছি ৪০ টাকায়, আজ সেটা কিনলাম ৬০ টাকায়। সবকিছুর দাম বাড়তি যাচ্ছে, সেখান থেকে আমাদের ছাড় দেয়নি কাঁচামরিচও। এটারও এখন বাড়তি দাম। গত সপ্তাহেও যে কাঁচামরিচ কিনেছি ১৪০ টাকা কেজি, আজ ২৪০ টাকা দরে কিনে খেতে হচ্ছে। আমার তো মনে হচ্ছে, সপ্তাহের ব্যবধানে এতো দাম বাড়ার পেছনে ব্যবসায়ীদের শক্ত সিন্ডিকেট দায়ী। তারা অধিক লাভের আশায় ইচ্ছাকৃতভাবে দাম বাড়িয়েছে।

এসব বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্রয়লার মুরগি ১৮৫ থেকে ১৯০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে ব্রয়লার ১৯৫ থেকে ২০০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। বাজারগুলোতে সোনালি মুরগি কেজিতে ৩২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। সোনালি হাইব্রিড ২০ টাকা কমে ৩০০ টাকা, দেশি মুরগি ৬৮০ থেকে ৭০০ টাকা কেজি, লেয়ার মুরগি ৩০ টাকা কমে ৩১০ টাকা এবং সাদা লেয়ার ৩০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। দেশি পেঁয়াজ কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে ৮৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহেও পেঁয়াজ ৮০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। বাজারগুলোতে গত সপ্তাহে কাঁচা মরিচ ২০০ টাকা দরে বিক্রি হলেও চলতি সপ্তাহে ২৪০ থেকে ২৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। মরিচের দাম আরও বাড়ার আশঙ্কা করছেন খুচরা ব্যবসায়ীরা।

এ ব্যাপারে তালতলা বাজারে খুচরা কাঁচা মরিচ বিক্রেতা আমিনুল ইসলাম বলেন, বাজারে মরিচ আসছে কম। আজ ২৫০ টাকা করে বিক্রি করলেও আগামী দিন এটাই ২৮০ টাকা করে কিনতে হবে। সরবরাহ কম থাকায় এমনটি হচ্ছে বলে তিনি মনে করেন।

এদিকে সপ্তাহ ব্যবধানে এসব বাজারে সব ধরনের সবজি দাম কিছুটা কমেছে। বাজারগুলোতে গ্রীষ্মকালীন সবজি কচুরমুখী ৮০ টাকা, বেগুন ৫০ থেকে ৬০ টাকা, করলা ৬০ টাকা, পটল ৪০ টাকা, ঢেঁড়স ৪০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকায়, প্রতিটি লাউ বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা, পেঁপে প্রতি কেজি ৬০ টাকা, ধুন্দুল ৫০ থেকে ৬০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, কচুর লতি ৮০ টাকা, ঝিঙা ৭০ টাকা, সাজনা ১৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে ঈদকে সামনে রেখে শসার ১০০ থেকে ১২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ফুলকপি ৪০ থেকে ৫০ টাকা পিস, বাধা কপি ৪০ থেকে ৫০ টাকা পিস, ব্রুকলি ৪০ টাকা পিস, পাকা টমেটো প্রকারভেদে ৭০ থেকে ৮০ টাকা এবং গাজর ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এসব বাজারে লেবুর হালি ১০ থেকে ৪০ টাকা, ধনে পাতা কেজি ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে , কলার হালি বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়, মিষ্টি কুমড়া কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা।

এছাড়া বাজারগুলোতে লাল শাক ১৫ টাকা আঁটি, লাউ শাক ৪০ টাকা, মূলা শাক ১৫ টাকা, পালং শাক ১৫ থেকে ২০ টাকা, কলমি শাক ১০ টাকা আঁটি দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে। বাজারগুলোতে দেশি পেঁয়াজ কেজিতে ৮৫ টাকা আর আলু ৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

রাজধানীর মহাখালী বাজারে বাজার করতে এসেছেন বেসরকারি চাকরিজীবী হাবিবুর রহমান। তিনি বলেন, বাজার একেবারেই ফাঁকা, ক্রেতা নেই বললেই চলে। ফাঁকা বাজারে বিক্রেতারা সবজির এমন বাড়তি দামের হাঁকডাক কেন দিচ্ছে, তা বুঝতে পারলাম না। বিক্রি কম সেই হিসেবে তো সবজির দাম তুলনামূলক কম হওয়ার কথা, ঢাকা শহর ছেড়ে অধিকাংশ মানুষ ইতোমধ্যে চলে গেছে, তবুও ফাঁকা বাজারে সবজির অতিরিক্ত বাড়তি দাম।

সবজির দাম বাড়তি বিষয়ে গুলশান সংলগ্ন লেকপার বাজারের সবজি বিক্রেতা শরিফুল ইসলাম বলেন, আজ অতিরিক্ত বাড়তি দামে সব ধরনের সবজি কিনে আনতে হয়েছে। যে কারণে খুচরা বাজারে সবজির দাম বেশি। মূলত ঈদের সময় হওয়ায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সবজি ভর্তি ট্রাক বাজারে কম ঢুকেছে। সরবরাহ কম হওয়ায় দাম আজ বাড়তি। যেহেতু ঈদ করতে বেশিরভাগ মানুষ ইতোমধ্যে ঢাকা ছেড়ে চলে গেছেন, তাই বলতে গেলে ঢাকা শহর অনেকটাই ফাঁকা। আজ বাজারে ক্রেতা খুবই কম, তবুও সবজির দাম একটু বাড়তি যাচ্ছে। ঈদের আগে ও পরে কয়েকদিন একটু বাড়তিই বাজার যাবে।

দোকানিরা জানান, কোরবানির ঈদের আগে সবজির সরবরাহ রাজধানীতে কমেছে। রাস্তায় যানজট এবং বেশিরভাগ পণ্যবাহী গাড়ি পশু বহন করার কারণে সবজির সবরাহ কম। তবে ঈদের পরপর দাম কমতে পারে।

বাজারে গরুর মাংস কেজি প্রতি ৬৫০ থেকে ৭৮০ টাকা, গরুর কলিজা ৭৮০ টাকা, গরুর মাথার মাংস ৪৫০ টাকা, গরুর বট ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা এবং খাসির মাংস কেজি প্রতি ১১০০-১১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বাজারগুলোতে এক ডজন লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৫৫ টাকায়, হাঁসের ডিম ২০০ টাকায়, দেশি মুরগির ডিমের হালি ৮৫ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে।

বাজারগুলোতে ৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ মাছ কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৯০০ থেকে এক হাজার টাকা এবং ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রামের মাছ ১৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারগুলোতে এক কেজি শিং মাছ চাষের (আকারভেদে) বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৬০০ টাকায়, প্রতি কেজি রুই মাছের দাম বেড়ে (আকারভেদে) ৪০০ থেকে ৬০০ টাকায়, মাগুর মাছ ৯০০ থেকে ১২০০ টাকা , মৃগেল ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকায়, চাষের পাঙাশ ২১০ থেকে ২৩০ টাকায়, চিংড়ি আকার ভেদে প্রতি কেজি ৬০০ থেকে ১৪০০ টাকায়, বোয়াল প্রতি কেজি ৫০০ থেকে ৯০০ টাকায়, কাতল ৪০০ থেকে ৬০০ টাকায়, পোয়া মাছ ৪০০ থেকে ৬০০ টাকায়, পাবদা মাছ ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায়, তেলাপিয়া ২২০ টাকায়, কৈ মাছ ২২০ থেকে ২৪০ টাকায়, মলা ৫০০ টাকা, বাতাসি টেংরা ১৪০০ টাকায়, টেংরা মাছ ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, কাচকি মাছ ৬০০ টাকায়, পাঁচমিশালি মাছ ২২০ টাকায়, রুপচাঁদা ১২০০ টাকা, বাইম মাছ ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকা, দেশি কই ১২০০ টাকা, মেনি মাছ ৭০০ টাকা, সোল মাছ ৬০০ থেকে ১০০০টাকা, আইড় মাছ ৭০০ থেকে ১০০০ টাকা, বেলে মাছ ৭০০ টাকা এবং কাইক্কা মাছ ৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

এসব বাজারে প্রতি কেজি মোটা চালের দাম ৪৮ থেকে ৫০ টাকা, বি আর-আটাশ ৫৫ থেকে-৫৮ টাকা, পাইজাম ৫৮ থেকে ৬০ টাকা। মাঝারি মানের চিকন চালের কেজি ৭৫ টাকা। আর ভালো মানের চিকন চালের কেজি ৮৫ টাকা।

বাজারগুলোতে আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে ডাল। দেশি ও আমদানি করা মসুর ডাল ১৫০ টাকা, আমদানি করা মোটা ডালের কেজি ১২০ টাকা, ছোলার ডাল ১৩০ টাকা, অ্যাংকর ডালের কেজি ৯০ টাকা। এসব বাজারে ঈদকে সামনে রেখে আদা ২৮০ থেকে ৩২০ টাকা এবং রসুন ২২০ থেকে ২৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

কাঁচা মরিচের ডাবল সেঞ্চুরি, সবজির বাজারে স্বস্তি

আপডেট সময় : ০৩:৫৮:৫৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ জুন ২০২৪

সপ্তাহ ব্যবধানে রাজধানীর বাজারগুলোতে ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির দাম কমেছে। একই সঙ্গে উৎপাদন বাড়ায় গ্রীষ্মকালীন প্রতিটি সবজি কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা দাম কমেছে। তবে গত সপ্তাহের তুলনায় কাঁচা মরিচ কেজিতে ৫০ থেকে ৬০ টাকা বেড়েছে।

আজ শুক্রবার (১৪ জুন) রাজধানীর কারওয়ান বাজার, মহাখালী, বাড্ডা, মতিঝিল, মুগদা, রামপুরা এলাকার কাঁচাবাজার ঘুরে এ চিত্র পাওয়া গেছে।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে দেশি কাঁচা মরিচ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৪০ টাকা পর্যন্ত। ভারতীয় কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা কেজি করে।

বাজার বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, এক সপ্তাহ আগেও বাজারে কাঁচামরিচ ১২০ থেকে ১৩০ টাকায় বিক্রি হতো। এরপর আরও এক দফায় দাম বেড়ে গতকাল (বৃহস্পতিবার) পর্যন্ত কাঁচামরিচ বিক্রি হয় ১৬০ টাকায়। তবে এক রাতের ব্যবধানেই সেটির দাম বেড়ে এখন ২৪০ টাকা পর্যন্ত পৌঁছেছে। তবে কিছুটা নিম্নমানের কাঁচামরিচ কোথাও কোথাও ২২০ টাকা নেওয়া হচ্ছে।

গতবার (২০২৩) ঠিক এই সময়ে ঈদুল আজহার আগে কাঁচামরিচের দাম বেড়ে ৭০০ টাকায় উঠেছিল। ব্যবসায়ীরা বলছেন, এই সময়ে দেশে কাঁচামরিচের কিছুটা ঘাটতি থাকে, সে কারণে দাম বেড়ে যায়। তখন আমদানি করে কাঁচামরিচের ঘাটতি মেটানো হয়। আর যদি মাঝেমধ্যে আমদানি ব্যাহত হয়, তখন দামটা লাফিয়ে বাড়তে শুরু করে।

বাজারে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী সাইদুর রহমান বলেন, কয়েকদিন আগেও এক পোয়া কাঁচামরিচ কিনেছি ৪০ টাকায়, আজ সেটা কিনলাম ৬০ টাকায়। সবকিছুর দাম বাড়তি যাচ্ছে, সেখান থেকে আমাদের ছাড় দেয়নি কাঁচামরিচও। এটারও এখন বাড়তি দাম। গত সপ্তাহেও যে কাঁচামরিচ কিনেছি ১৪০ টাকা কেজি, আজ ২৪০ টাকা দরে কিনে খেতে হচ্ছে। আমার তো মনে হচ্ছে, সপ্তাহের ব্যবধানে এতো দাম বাড়ার পেছনে ব্যবসায়ীদের শক্ত সিন্ডিকেট দায়ী। তারা অধিক লাভের আশায় ইচ্ছাকৃতভাবে দাম বাড়িয়েছে।

এসব বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্রয়লার মুরগি ১৮৫ থেকে ১৯০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে ব্রয়লার ১৯৫ থেকে ২০০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। বাজারগুলোতে সোনালি মুরগি কেজিতে ৩২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। সোনালি হাইব্রিড ২০ টাকা কমে ৩০০ টাকা, দেশি মুরগি ৬৮০ থেকে ৭০০ টাকা কেজি, লেয়ার মুরগি ৩০ টাকা কমে ৩১০ টাকা এবং সাদা লেয়ার ৩০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। দেশি পেঁয়াজ কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে ৮৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহেও পেঁয়াজ ৮০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। বাজারগুলোতে গত সপ্তাহে কাঁচা মরিচ ২০০ টাকা দরে বিক্রি হলেও চলতি সপ্তাহে ২৪০ থেকে ২৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। মরিচের দাম আরও বাড়ার আশঙ্কা করছেন খুচরা ব্যবসায়ীরা।

এ ব্যাপারে তালতলা বাজারে খুচরা কাঁচা মরিচ বিক্রেতা আমিনুল ইসলাম বলেন, বাজারে মরিচ আসছে কম। আজ ২৫০ টাকা করে বিক্রি করলেও আগামী দিন এটাই ২৮০ টাকা করে কিনতে হবে। সরবরাহ কম থাকায় এমনটি হচ্ছে বলে তিনি মনে করেন।

এদিকে সপ্তাহ ব্যবধানে এসব বাজারে সব ধরনের সবজি দাম কিছুটা কমেছে। বাজারগুলোতে গ্রীষ্মকালীন সবজি কচুরমুখী ৮০ টাকা, বেগুন ৫০ থেকে ৬০ টাকা, করলা ৬০ টাকা, পটল ৪০ টাকা, ঢেঁড়স ৪০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকায়, প্রতিটি লাউ বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা, পেঁপে প্রতি কেজি ৬০ টাকা, ধুন্দুল ৫০ থেকে ৬০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, কচুর লতি ৮০ টাকা, ঝিঙা ৭০ টাকা, সাজনা ১৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে ঈদকে সামনে রেখে শসার ১০০ থেকে ১২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ফুলকপি ৪০ থেকে ৫০ টাকা পিস, বাধা কপি ৪০ থেকে ৫০ টাকা পিস, ব্রুকলি ৪০ টাকা পিস, পাকা টমেটো প্রকারভেদে ৭০ থেকে ৮০ টাকা এবং গাজর ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এসব বাজারে লেবুর হালি ১০ থেকে ৪০ টাকা, ধনে পাতা কেজি ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে , কলার হালি বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়, মিষ্টি কুমড়া কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা।

এছাড়া বাজারগুলোতে লাল শাক ১৫ টাকা আঁটি, লাউ শাক ৪০ টাকা, মূলা শাক ১৫ টাকা, পালং শাক ১৫ থেকে ২০ টাকা, কলমি শাক ১০ টাকা আঁটি দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে। বাজারগুলোতে দেশি পেঁয়াজ কেজিতে ৮৫ টাকা আর আলু ৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

রাজধানীর মহাখালী বাজারে বাজার করতে এসেছেন বেসরকারি চাকরিজীবী হাবিবুর রহমান। তিনি বলেন, বাজার একেবারেই ফাঁকা, ক্রেতা নেই বললেই চলে। ফাঁকা বাজারে বিক্রেতারা সবজির এমন বাড়তি দামের হাঁকডাক কেন দিচ্ছে, তা বুঝতে পারলাম না। বিক্রি কম সেই হিসেবে তো সবজির দাম তুলনামূলক কম হওয়ার কথা, ঢাকা শহর ছেড়ে অধিকাংশ মানুষ ইতোমধ্যে চলে গেছে, তবুও ফাঁকা বাজারে সবজির অতিরিক্ত বাড়তি দাম।

সবজির দাম বাড়তি বিষয়ে গুলশান সংলগ্ন লেকপার বাজারের সবজি বিক্রেতা শরিফুল ইসলাম বলেন, আজ অতিরিক্ত বাড়তি দামে সব ধরনের সবজি কিনে আনতে হয়েছে। যে কারণে খুচরা বাজারে সবজির দাম বেশি। মূলত ঈদের সময় হওয়ায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সবজি ভর্তি ট্রাক বাজারে কম ঢুকেছে। সরবরাহ কম হওয়ায় দাম আজ বাড়তি। যেহেতু ঈদ করতে বেশিরভাগ মানুষ ইতোমধ্যে ঢাকা ছেড়ে চলে গেছেন, তাই বলতে গেলে ঢাকা শহর অনেকটাই ফাঁকা। আজ বাজারে ক্রেতা খুবই কম, তবুও সবজির দাম একটু বাড়তি যাচ্ছে। ঈদের আগে ও পরে কয়েকদিন একটু বাড়তিই বাজার যাবে।

দোকানিরা জানান, কোরবানির ঈদের আগে সবজির সরবরাহ রাজধানীতে কমেছে। রাস্তায় যানজট এবং বেশিরভাগ পণ্যবাহী গাড়ি পশু বহন করার কারণে সবজির সবরাহ কম। তবে ঈদের পরপর দাম কমতে পারে।

বাজারে গরুর মাংস কেজি প্রতি ৬৫০ থেকে ৭৮০ টাকা, গরুর কলিজা ৭৮০ টাকা, গরুর মাথার মাংস ৪৫০ টাকা, গরুর বট ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা এবং খাসির মাংস কেজি প্রতি ১১০০-১১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বাজারগুলোতে এক ডজন লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৫৫ টাকায়, হাঁসের ডিম ২০০ টাকায়, দেশি মুরগির ডিমের হালি ৮৫ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে।

বাজারগুলোতে ৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ মাছ কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৯০০ থেকে এক হাজার টাকা এবং ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রামের মাছ ১৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারগুলোতে এক কেজি শিং মাছ চাষের (আকারভেদে) বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৬০০ টাকায়, প্রতি কেজি রুই মাছের দাম বেড়ে (আকারভেদে) ৪০০ থেকে ৬০০ টাকায়, মাগুর মাছ ৯০০ থেকে ১২০০ টাকা , মৃগেল ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকায়, চাষের পাঙাশ ২১০ থেকে ২৩০ টাকায়, চিংড়ি আকার ভেদে প্রতি কেজি ৬০০ থেকে ১৪০০ টাকায়, বোয়াল প্রতি কেজি ৫০০ থেকে ৯০০ টাকায়, কাতল ৪০০ থেকে ৬০০ টাকায়, পোয়া মাছ ৪০০ থেকে ৬০০ টাকায়, পাবদা মাছ ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায়, তেলাপিয়া ২২০ টাকায়, কৈ মাছ ২২০ থেকে ২৪০ টাকায়, মলা ৫০০ টাকা, বাতাসি টেংরা ১৪০০ টাকায়, টেংরা মাছ ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, কাচকি মাছ ৬০০ টাকায়, পাঁচমিশালি মাছ ২২০ টাকায়, রুপচাঁদা ১২০০ টাকা, বাইম মাছ ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকা, দেশি কই ১২০০ টাকা, মেনি মাছ ৭০০ টাকা, সোল মাছ ৬০০ থেকে ১০০০টাকা, আইড় মাছ ৭০০ থেকে ১০০০ টাকা, বেলে মাছ ৭০০ টাকা এবং কাইক্কা মাছ ৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

এসব বাজারে প্রতি কেজি মোটা চালের দাম ৪৮ থেকে ৫০ টাকা, বি আর-আটাশ ৫৫ থেকে-৫৮ টাকা, পাইজাম ৫৮ থেকে ৬০ টাকা। মাঝারি মানের চিকন চালের কেজি ৭৫ টাকা। আর ভালো মানের চিকন চালের কেজি ৮৫ টাকা।

বাজারগুলোতে আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে ডাল। দেশি ও আমদানি করা মসুর ডাল ১৫০ টাকা, আমদানি করা মোটা ডালের কেজি ১২০ টাকা, ছোলার ডাল ১৩০ টাকা, অ্যাংকর ডালের কেজি ৯০ টাকা। এসব বাজারে ঈদকে সামনে রেখে আদা ২৮০ থেকে ৩২০ টাকা এবং রসুন ২২০ থেকে ২৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।