ঢাকা ০২:২৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

এশিয়ার সেরা শ্রীলঙ্কাকে গুঁড়িয়ে দিল নামিবিয়া

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০১:৫১:১৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২২
  • / ৪৯৭ বার পড়া হয়েছে

ফাইল ছবি

বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

স্পোর্টস ডেস্ক

এমন কিছু কে ভেবেছিল? সদ্যই এশিয়া কাপ জেতা শ্রীলঙ্কা মুখোমুখি নামিবিয়ার, সেখানে তো লঙ্কানদের জয়ই ছিল স্বাভাবিক! তবে সব পাশার দান উলটে দিয়েছে আফ্রিকান দলটি। শ্রীলঙ্কাকে শুধু হারিয়েই ক্ষান্ত হয়নি, রীতিমতো গুঁড়িয়েই দিয়েছে। তাতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শুরুটা হয়েছে বিশাল এক অঘটন দিয়ে। টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী ম্যাচে তারা লঙ্কানদের ৫৫ রানে হারিয়েছে।

নামিবিয়ার মত দলকে প্রতিপক্ষ হিসেবে পেয়ে হয়তো হালকাভাবেই নিয়েছিল শ্রীলঙ্কা। আর নামিবিয়া খেলেছিল, কিছু না হারানোর চিন্তা নিয়েই।

আজ রোববার জিলংয়ের কার্ডিনিয়া ওভালে বিশ্বকাপ যাত্রা শুরুর ঠিক আগে দিলশান মাদুশাঙ্কাকে হারিয়ে বসে শ্রীলঙ্কা। বাজে শুরুর ইঙ্গিতটাও কি পাওয়া হয়ে গিয়েছিল তাতে?

নামিবিয়াকে ব্যাটিংয়ের নামানোর পর প্রায় ১৫ ওভার ছিল লঙ্কানদেরই আধিপত্য। ১৪.২ ওভারে ৯৩ রানে তুলে নিতে পারে ষষ্ঠ উইকেট। কিন্তু ফরম্যাটটা টি-টোয়েন্টি হওয়ায় আত্মতুষ্টিতে ভুগলে তো আর চলে না। যার প্রমাণ শেষ ৫ ওভার! দুই নামিবিয়ান পাওয়ার হিটার জ্যান ফ্রাইলিঙ্ক ও জেজে স্মিট পুরো ম্যাচের গতিপথ বদলে দেন শেষ দিকে। শেষ ৫ ওভারে তারা বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে তুলেছেন ৬৮টি রান! রান আউটে শেষ বলে আউট হওয়া ফ্রাইলিঙ্ক ২৮ বলে করেছেন সর্বোচ্চ ৪৪। তাতে ছিল ৪টি চার। স্মিটের স্ট্রাইকরেট ছিল আরও বেশি। ১৬ বলের ক্যামিও ইনিংসে ৩১ রানে অপরাজিত থেকেছেন। তাতে ছিল ২টি চার ও ২টি ছয়।তাদের বিধ্বংসী ভূমিকায় ৭ উইকেটে নামিবিয়া করেছে ১৬৩।

সেই থেকে লড়াইয়ের শুরু গেল বারের সুপার টুয়েলভ খেলা আফ্রিকান দলটির। স্টেফান বার্ড আর অধিনায়ক গেরহার্ড ইরাসমাসের ৪১ বলে ৪৩ রানের জুটি স্থিতি দিয়েছে নামিবিয়াকে। তবে ইরাসমাসকে হারানোর কিছু পর বার্ড আর ডেভিড ভিসার উইকেট খুইয়ে আবারও খাদের কিনারে চলে গিয়েছিল তারা।

এরপরের গল্পটা কেবলই ইয়ান ফ্রাইলিঙ্ক আর ইয়োহাম্ন স্মিটের। দুজন মিলে সপ্তম উইকেট জুটিতে ৩৩ বলে যোগ করেন ৬৯ রান, যা সপ্তম বা তার নিচের উইকেট জুটিতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তৃতীয় সর্বোচ্চ।
ম্যাচে যে চিত্র অঙ্কিত হয়েছে, তাতে নামিবিয়াকে মনে হয়েছে শ্রীলঙ্কা এবং শ্রীলঙ্কাকে মনে হয়েছে নামিবিয়া। ১৬৪ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নামার পর নামিবিয়ান বোলারদের সামনে স্রেফ হাঁটু কাঁপতে দেখা গেছে এশিয়া কাপজয়ী লঙ্কানদের।

অন্যদিকে নামিবিয়ার বোলারদের কী দুর্দান্ত লাইন এবং লেন্থ! লঙ্কান ব্যাটারদের একটি ভালো জুটি গড়ে তোলার সুযোগ দেয়নি তারা। বিপজ্জনক হয়ে ওঠা দাসুন শানাকা কিংবা ভানুকা রাজাপাকসেকে খুব বেশি এগুতে দেয়নি। শানাকা ২৩ বলে ২৯ রান করে এবং রাজাপাকসে ২১ বলে ২০ রান করে আউট হন।

শেষ ৪ ওভারে ৫৭ রান উঠায় লজ্জার রেকর্ডেও নাম উঠেছে লঙ্কানদের। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ডেথ ওভারে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান তারা হজম করেছে।

লঙ্কানদের হয়ে ৩৭ রানে দুটি উইকেট নিয়েছেন প্রমোদ মাদুশান। একটি করে নিয়েছেন মাহিশ থিকশানা, দুশমন্থ চামিরা, চামিকা করুনারত্নে ও ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা।

জবাবে পাওয়ার প্লেতেই লঙ্কান দল বিপদে পড়ে যায়। ২১ রানের মধ্যে সাজঘরে ফেরেন কুশল মেন্ডিস (৬), পাথুম নিসাঙ্কা (৯) ও দানুশকা গুনাথিলাকা (০)। এর পেছনে বড় অবদান ছিল পেসার বেন শিকোঙ্গোর। দুটি উইকেট নিয়েছেন এই সময়।

বিপদের সময় বড় জুটির প্রয়োজনীয়তা দেখা দিলেও ধনাঞ্জয়া, রাজাপাকশে ও অধিনায়ক দাসুন শানাকা তা মেটাতে পারেননি। ধনাঞ্জয়ার সঙ্গে ১৯ রানের জুটি গড়েন রাজাপাকশে। তার পর অধিনায়ক শানাকা-রাজাপাকশে যোগ করেন ৩৪ রান। তাদের বিদায়ের পর হারের দিকে এগিয়েছে লঙ্কানদের ইনিংস। রাজাপাকশে ২১ বলে ২০ রান করেছেন আর শানাকা ২৩ বলে করেছেন ২৯। ১৯ ওভারে ১০৮ রানেই শ্রীলঙ্কা গুটিয়ে গেছে।

১৬ রানে দুটি উইকেট নিয়েছেন ডেভিড উইজে। ১৮, ২২ ও ২৬ রানে সমসংখ্যক উইকেট নিয়েছেন যথাক্রমে বের্নার্ড স্কল্টজ, বেন শিকোঙ্গো ও জ্যান ফ্রাইলিঙ্কও। ব্যাট-বলে অলরাউন্ড নৈপুণ্যে অবদান রাখায় ম্যাচসেরা হয়েছেন ফ্রাইলিঙ্ক।

নিউজটি শেয়ার করুন

এশিয়ার সেরা শ্রীলঙ্কাকে গুঁড়িয়ে দিল নামিবিয়া

আপডেট সময় : ০১:৫১:১৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২২

স্পোর্টস ডেস্ক

এমন কিছু কে ভেবেছিল? সদ্যই এশিয়া কাপ জেতা শ্রীলঙ্কা মুখোমুখি নামিবিয়ার, সেখানে তো লঙ্কানদের জয়ই ছিল স্বাভাবিক! তবে সব পাশার দান উলটে দিয়েছে আফ্রিকান দলটি। শ্রীলঙ্কাকে শুধু হারিয়েই ক্ষান্ত হয়নি, রীতিমতো গুঁড়িয়েই দিয়েছে। তাতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শুরুটা হয়েছে বিশাল এক অঘটন দিয়ে। টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী ম্যাচে তারা লঙ্কানদের ৫৫ রানে হারিয়েছে।

নামিবিয়ার মত দলকে প্রতিপক্ষ হিসেবে পেয়ে হয়তো হালকাভাবেই নিয়েছিল শ্রীলঙ্কা। আর নামিবিয়া খেলেছিল, কিছু না হারানোর চিন্তা নিয়েই।

আজ রোববার জিলংয়ের কার্ডিনিয়া ওভালে বিশ্বকাপ যাত্রা শুরুর ঠিক আগে দিলশান মাদুশাঙ্কাকে হারিয়ে বসে শ্রীলঙ্কা। বাজে শুরুর ইঙ্গিতটাও কি পাওয়া হয়ে গিয়েছিল তাতে?

নামিবিয়াকে ব্যাটিংয়ের নামানোর পর প্রায় ১৫ ওভার ছিল লঙ্কানদেরই আধিপত্য। ১৪.২ ওভারে ৯৩ রানে তুলে নিতে পারে ষষ্ঠ উইকেট। কিন্তু ফরম্যাটটা টি-টোয়েন্টি হওয়ায় আত্মতুষ্টিতে ভুগলে তো আর চলে না। যার প্রমাণ শেষ ৫ ওভার! দুই নামিবিয়ান পাওয়ার হিটার জ্যান ফ্রাইলিঙ্ক ও জেজে স্মিট পুরো ম্যাচের গতিপথ বদলে দেন শেষ দিকে। শেষ ৫ ওভারে তারা বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে তুলেছেন ৬৮টি রান! রান আউটে শেষ বলে আউট হওয়া ফ্রাইলিঙ্ক ২৮ বলে করেছেন সর্বোচ্চ ৪৪। তাতে ছিল ৪টি চার। স্মিটের স্ট্রাইকরেট ছিল আরও বেশি। ১৬ বলের ক্যামিও ইনিংসে ৩১ রানে অপরাজিত থেকেছেন। তাতে ছিল ২টি চার ও ২টি ছয়।তাদের বিধ্বংসী ভূমিকায় ৭ উইকেটে নামিবিয়া করেছে ১৬৩।

সেই থেকে লড়াইয়ের শুরু গেল বারের সুপার টুয়েলভ খেলা আফ্রিকান দলটির। স্টেফান বার্ড আর অধিনায়ক গেরহার্ড ইরাসমাসের ৪১ বলে ৪৩ রানের জুটি স্থিতি দিয়েছে নামিবিয়াকে। তবে ইরাসমাসকে হারানোর কিছু পর বার্ড আর ডেভিড ভিসার উইকেট খুইয়ে আবারও খাদের কিনারে চলে গিয়েছিল তারা।

এরপরের গল্পটা কেবলই ইয়ান ফ্রাইলিঙ্ক আর ইয়োহাম্ন স্মিটের। দুজন মিলে সপ্তম উইকেট জুটিতে ৩৩ বলে যোগ করেন ৬৯ রান, যা সপ্তম বা তার নিচের উইকেট জুটিতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তৃতীয় সর্বোচ্চ।
ম্যাচে যে চিত্র অঙ্কিত হয়েছে, তাতে নামিবিয়াকে মনে হয়েছে শ্রীলঙ্কা এবং শ্রীলঙ্কাকে মনে হয়েছে নামিবিয়া। ১৬৪ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নামার পর নামিবিয়ান বোলারদের সামনে স্রেফ হাঁটু কাঁপতে দেখা গেছে এশিয়া কাপজয়ী লঙ্কানদের।

অন্যদিকে নামিবিয়ার বোলারদের কী দুর্দান্ত লাইন এবং লেন্থ! লঙ্কান ব্যাটারদের একটি ভালো জুটি গড়ে তোলার সুযোগ দেয়নি তারা। বিপজ্জনক হয়ে ওঠা দাসুন শানাকা কিংবা ভানুকা রাজাপাকসেকে খুব বেশি এগুতে দেয়নি। শানাকা ২৩ বলে ২৯ রান করে এবং রাজাপাকসে ২১ বলে ২০ রান করে আউট হন।

শেষ ৪ ওভারে ৫৭ রান উঠায় লজ্জার রেকর্ডেও নাম উঠেছে লঙ্কানদের। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ডেথ ওভারে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান তারা হজম করেছে।

লঙ্কানদের হয়ে ৩৭ রানে দুটি উইকেট নিয়েছেন প্রমোদ মাদুশান। একটি করে নিয়েছেন মাহিশ থিকশানা, দুশমন্থ চামিরা, চামিকা করুনারত্নে ও ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা।

জবাবে পাওয়ার প্লেতেই লঙ্কান দল বিপদে পড়ে যায়। ২১ রানের মধ্যে সাজঘরে ফেরেন কুশল মেন্ডিস (৬), পাথুম নিসাঙ্কা (৯) ও দানুশকা গুনাথিলাকা (০)। এর পেছনে বড় অবদান ছিল পেসার বেন শিকোঙ্গোর। দুটি উইকেট নিয়েছেন এই সময়।

বিপদের সময় বড় জুটির প্রয়োজনীয়তা দেখা দিলেও ধনাঞ্জয়া, রাজাপাকশে ও অধিনায়ক দাসুন শানাকা তা মেটাতে পারেননি। ধনাঞ্জয়ার সঙ্গে ১৯ রানের জুটি গড়েন রাজাপাকশে। তার পর অধিনায়ক শানাকা-রাজাপাকশে যোগ করেন ৩৪ রান। তাদের বিদায়ের পর হারের দিকে এগিয়েছে লঙ্কানদের ইনিংস। রাজাপাকশে ২১ বলে ২০ রান করেছেন আর শানাকা ২৩ বলে করেছেন ২৯। ১৯ ওভারে ১০৮ রানেই শ্রীলঙ্কা গুটিয়ে গেছে।

১৬ রানে দুটি উইকেট নিয়েছেন ডেভিড উইজে। ১৮, ২২ ও ২৬ রানে সমসংখ্যক উইকেট নিয়েছেন যথাক্রমে বের্নার্ড স্কল্টজ, বেন শিকোঙ্গো ও জ্যান ফ্রাইলিঙ্কও। ব্যাট-বলে অলরাউন্ড নৈপুণ্যে অবদান রাখায় ম্যাচসেরা হয়েছেন ফ্রাইলিঙ্ক।