ঢাকা ১০:৪৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩০ জুন ২০২৪, ১৬ আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

উল্লাপাড়ায় অবহেলিত ২৭ শহীদের গণকবর

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৯:০২:৫২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২২
  • / ৪৯০ বার পড়া হয়েছে

উল্লাপাড়ায় অবহেলিত ২৭ শহীদের গণকবর

বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি :

সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার হাটিকুমরুল ইউনিয়নের পাটধারী গ্রামে ১৯৭১ সালের ২৫ এপ্রিল পাকিস্থানি বাহিনীর নির্মমতায় ২৭জন সাধারন মানুষ শহীদ হন। এসব শহীদদের পাটধারী অন্ধপুকুর পাড়ে গণকবর দেয়া হয়। কিন্তু স্বাধীনতার ৫১ বছর পেড়িয়ে গেলেও এই গণকবরটি সংরক্ষণের কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। উপজেলা প্রশাসন কিংবা স্থানীয় জনপ্রতিনিধি কেউই খোঁজ নেয়নি এ গণকবরের। ফলে এটি এখন পরিত্যক্ত ভূমিতে পরিণত হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা সেখানে গরু ছাগল বেধে রাখে। গণকবরটির কথা অজানাই রয়ে গেছে সবার।

জানা যায়, ১৯৭১ সালের ২৫ এপ্রিল পাকিস্থানি হানাদার বাহিনী সৈয়দপুর ক্যান্টনমেন্ট থেকে পাবনা জেলার কাশিনাথপুরের দিকে যাত্রা করার সময় বগুড়া-নগরবাড়ী মহাসড়কের চড়িয়া শিকার নামক স্থানে রাস্তায় ব্যারিকেডের মুখে তারা যাত্রা বিরতি করে পাশেই এক কাশিনাথপুর নামের সন্ধান পায়। এ গ্রামকেই পাবনা জেলার কাশিনাথপুর মনে করে মুক্তিযুদ্ধের ঘাঁটি খুজতে থাকে তারা। তাদের এ দেশীয় দোসর রাজাকার আলবদরদের সহযোগিতায় চড়িয়া মধ্যপাড়ায় মুক্তিযুদ্ধের প্রশিক্ষণ ঘাঁটি তছনছ করে দিতে শুরু হয় হানাদার বাহিনীর নির্মম গণহত্যা। এসময় চড়িয়া শিকারসহ আশপাশের ৩-৪টি গ্রামের প্রায় আড়াইশ মুক্তিপাগল মানুষকে আটক করে দুই লাইনে দাঁড় করিয়ে মেশিনগানের গুলিতে হত্যা করা হয়। এ গণহত্যায় পাটধারী গ্রামের ২৭জন মুক্তি পাগল মানুষ শহীদ হন আহত হয় শতাধিক। শহীদদের অন্ধপুকুর পাড়ে মাটি চাপা দেয়া হয়।

পাক বাহিনীর হাত থেকে বেঁচে যাওয়া আহত পাটধারী গ্রামের আন্না খন্দকার বলেন, সেদিন আমার পায়ে গুলি লেগে অজ্ঞান হয়ে পড়ে গিয়েছিলাম। তারা আমাকে মৃত মনে করে ফেলে যায়। এখনো সেই ক্ষত বয়ে বেড়াচ্ছি।

পাটধারী ওয়ার্ডের মেম্বার মামুন রশিদ চৌধুরী এসব শহীদদের স্মরনে একটি স্মৃতিফলক এবং পাঠাগার নির্মাণের দাবী জানান।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার উজ্জল হোসেন বলেন, গণকবরটির বিষয়ে আপনার মাধ্যমে জানতে পারলাম। আমরা অবশ্যই গণকবর সংরক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

উল্লাপাড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিকুল ইসলাম বলেন, আমি এমপি থাকা অবস্থায় ওই গণকবরে একাধিকবার গিয়েছি। কয়েকবার সেখানে দোয়া ও মিলাদের ব্যবস্থা করেছিলাম। এখন এমপিই সব। তিনি চাইলে ইউএনও চেয়ারম্যানকে নিয়ে একটা প্রকল্প বানিয়ে ওই গণকবর সংরক্ষণ করতে পারেন। আমরা সাথে থেকে সহযোগীতা করবো।

বা/খ:জই

নিউজটি শেয়ার করুন

উল্লাপাড়ায় অবহেলিত ২৭ শহীদের গণকবর

আপডেট সময় : ০৯:০২:৫২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২২

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি :

সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার হাটিকুমরুল ইউনিয়নের পাটধারী গ্রামে ১৯৭১ সালের ২৫ এপ্রিল পাকিস্থানি বাহিনীর নির্মমতায় ২৭জন সাধারন মানুষ শহীদ হন। এসব শহীদদের পাটধারী অন্ধপুকুর পাড়ে গণকবর দেয়া হয়। কিন্তু স্বাধীনতার ৫১ বছর পেড়িয়ে গেলেও এই গণকবরটি সংরক্ষণের কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। উপজেলা প্রশাসন কিংবা স্থানীয় জনপ্রতিনিধি কেউই খোঁজ নেয়নি এ গণকবরের। ফলে এটি এখন পরিত্যক্ত ভূমিতে পরিণত হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা সেখানে গরু ছাগল বেধে রাখে। গণকবরটির কথা অজানাই রয়ে গেছে সবার।

জানা যায়, ১৯৭১ সালের ২৫ এপ্রিল পাকিস্থানি হানাদার বাহিনী সৈয়দপুর ক্যান্টনমেন্ট থেকে পাবনা জেলার কাশিনাথপুরের দিকে যাত্রা করার সময় বগুড়া-নগরবাড়ী মহাসড়কের চড়িয়া শিকার নামক স্থানে রাস্তায় ব্যারিকেডের মুখে তারা যাত্রা বিরতি করে পাশেই এক কাশিনাথপুর নামের সন্ধান পায়। এ গ্রামকেই পাবনা জেলার কাশিনাথপুর মনে করে মুক্তিযুদ্ধের ঘাঁটি খুজতে থাকে তারা। তাদের এ দেশীয় দোসর রাজাকার আলবদরদের সহযোগিতায় চড়িয়া মধ্যপাড়ায় মুক্তিযুদ্ধের প্রশিক্ষণ ঘাঁটি তছনছ করে দিতে শুরু হয় হানাদার বাহিনীর নির্মম গণহত্যা। এসময় চড়িয়া শিকারসহ আশপাশের ৩-৪টি গ্রামের প্রায় আড়াইশ মুক্তিপাগল মানুষকে আটক করে দুই লাইনে দাঁড় করিয়ে মেশিনগানের গুলিতে হত্যা করা হয়। এ গণহত্যায় পাটধারী গ্রামের ২৭জন মুক্তি পাগল মানুষ শহীদ হন আহত হয় শতাধিক। শহীদদের অন্ধপুকুর পাড়ে মাটি চাপা দেয়া হয়।

পাক বাহিনীর হাত থেকে বেঁচে যাওয়া আহত পাটধারী গ্রামের আন্না খন্দকার বলেন, সেদিন আমার পায়ে গুলি লেগে অজ্ঞান হয়ে পড়ে গিয়েছিলাম। তারা আমাকে মৃত মনে করে ফেলে যায়। এখনো সেই ক্ষত বয়ে বেড়াচ্ছি।

পাটধারী ওয়ার্ডের মেম্বার মামুন রশিদ চৌধুরী এসব শহীদদের স্মরনে একটি স্মৃতিফলক এবং পাঠাগার নির্মাণের দাবী জানান।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার উজ্জল হোসেন বলেন, গণকবরটির বিষয়ে আপনার মাধ্যমে জানতে পারলাম। আমরা অবশ্যই গণকবর সংরক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

উল্লাপাড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিকুল ইসলাম বলেন, আমি এমপি থাকা অবস্থায় ওই গণকবরে একাধিকবার গিয়েছি। কয়েকবার সেখানে দোয়া ও মিলাদের ব্যবস্থা করেছিলাম। এখন এমপিই সব। তিনি চাইলে ইউএনও চেয়ারম্যানকে নিয়ে একটা প্রকল্প বানিয়ে ওই গণকবর সংরক্ষণ করতে পারেন। আমরা সাথে থেকে সহযোগীতা করবো।

বা/খ:জই