ঢাকা ১০:৫৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

আশ্রয়ণ প্রকল্পের ৭ঘর বিক্রি: তদন্ত কমিটি গঠন

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৫:৫১:১১ অপরাহ্ন, সোমবার, ৫ ডিসেম্বর ২০২২
  • / ৪৪০ বার পড়া হয়েছে

dav

বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

নিজস্ব প্রতিবেদক :

শাহজাদপুর উপজেলার গাড়াদহ ইউনিয়নের আশ্রয়ণ প্রকল্পের ১৪ টি ঘরের মধ্যে ৭টি ঘর বিক্রির করার অভিযোগ উঠেছে। ঘরগুলো সুবিধাভোগীদের মাঝে বিতরণ করেছিলেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা। এমনকি প্রকল্প তালিকায় ভুল মোবাইল নাম্বারও দেয়া হয়েছে যাতে সুবিধাভোগীদের সাথে কেউ যোগযোগ করতে না পারে। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর উপজেলা নির্বাহী অফিসার তদন্ত কমিটি গঠন করে দিয়েছেন।

সরেজমিন জানা যায়, শাহজাদপুর উপজেলার গাড়াদহ ইউনিয়নের গাড়াদহ দক্ষিণপাড়ায় প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের ১৪টি ঘর নির্মাণ করা হয়। ঘরগুলি যথাসময়ে বরাদ্দও দেয়া হয় প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের পছন্দের সুবিধাভোগীদের মধ্যে। ইতিমধ্যে প্রকল্পের ৭ টি ঘর স্ট্যাম্পে লিখিতভাবে নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে কেনা-বেঁচার অভিযোগও উঠেছে। ক্রেতারা ক্রয়ের মাধ্যমে বসবাস করছে প্রকল্পের ওই ঘরগুলিতে। একটি ঘর নির্মাণে সরকার বরাদ্দ দিয়েছে এক লাখ ৭১ হাজার টাকা। পাশাপাশি ঘরের জন্য জমি তো বরাদ্দ রয়েছেই। অথচ জমিসহ প্রকল্পের ওই ৭টি ঘর বিক্রি হয়েছে মাত্র ৮০ থেকে ১ লাখ টাকায়। এ নিয়ে চলছে আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দাসহ পুরো ইউনিয়নবাসীর মধ্যে নানা আলোচনা সমালোচনা। আশ্রয়ণ প্রকল্পে বরাদ্দ ১৪ নং ঘরের পাওয়া সুবিধাভোগী আব্দুল ছালাম ও তার স্ত্রী সেলিনা নামে বরাদ্দ পেয়ে ঘরটি স্ট্যাম্পের মাধ্যমে ১ লাখ টাকায় বিক্রি করে দিয়েছেন সিরিনা বেগম ও তার পরিবারের কাছে। বর্তমানে ক্রয়সূত্রে তারা সেখানে বসবাস করছে। ১০নং ঘরের বেল্লাল হোসেন ও তার স্ত্রী ছাড়া খাতুন দম্পতি, এই দম্পতির কাছ থেকে ৮০ হাজার টাকায় কিনে ঘরটিতে বসবাস করছেন আনু ও সাবিনা বেগম দম্পতি। ৮ নং ঘর রশিদ দম্পতি পেলেও ঐ ঘরে বসবাস করছেন জাহের তার পরিবার নিয়ে। ৯ নং ঘর ঠান্ডু দম্পতি পেলেও সে ঘরে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকায় কিনে বসবাস করছেন পিঞ্জিরা খাতুন তার সন্তানদের নিয়ে। ১৩ নং ঘর রফিকুল ও মোছাঃ ফুলমালা দম্পতি পেলেও ১লাখ টাকা দিয়ে কিনে বসবাস করছেন নাজমুল তার পরিবার নিয়ে। ১৬ নং ঘর বিধবা রেশমা খাতুন পেলেও সে ঘর ১ লাখ টাকায় কিনে বসবাস করছে হাফিজুল নাছিমা দম্পতি। ১৭ নং ঘর জহুরুল ইসলাম ও আফরোজা বেগম দম্পতি পেলেও সে ঘর ১লাখ ১১ হাজার টাকায় কিনে হালিমা বেগম তার পরিবার নিয়ে বসবাস করছে। প্রকল্পের ওই ৭টি ঘর টাকা দিয়ে কিনে বসবাসের কথা স্বীকার করে তারা বলেন, আমাদের ঘরবাড়ি কিছু নাই, ‘আমাদের সহযোগিতা করার কোন মানুষ নাই, তাই দৌঁড়াদৌঁড়ি করেও একটা ঘর পাইনি। এজন্য স্ট্যাম্পের মাধ্যমে ঘর কিনে বসবাস করছি।’
ঘর বিক্রির বিষয়ে সুবিধাভোগীগের কাছে মুঠোফোনে সাংবাদিক পরিচয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তারা পরিচয় শুনে ফোন কেটে দেন। পরিচয় গোপন করে ১৪নং ঘরের সুবিভাভোগীকে মুঠোফোনে ফোন দিলে আব্দুল ছালামের স্ত্রী সেলিনা বেগম ঘর বিক্রির বিষয়ে তারা কিছুই জানেন না বলে জানান। তিনি আরও বলেন, ঘর বিক্রির একটি টাকাও পাইনি সব ডিজিটাল ভিশন বিদ্যানিকেতন (কেজি স্কুল) এর মালিক জুয়েল আহম্মেদ নিয়েছে; এ ষিয়ে সেই জানে বলে ফোন কেটে দেন। অপরদিকে জুয়েল আহম্মেদ একটি টাকাও নেননি বলে সাংবাদিকদের জানান। কিন্তু একটি ঘর কেনা বেচার সময় তিনি ছিলেন বলেও স্বীকার করেন।
গাড়াদহ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলামের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ওই প্রকল্পের বরাদ্দ, নির্মাণ ও সুপারিশের সাথে আমার কোন সম্পৃক্ততা নেই। এই প্রকল্পের ঘরগুলি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে নির্মাণ ও বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। ’
এ বিষয়ে শাহজাদপুর সহকারী কমিশনার (ভূমি) লিয়াকত সালমান বলেন, ‘বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

অপরদিকে, এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাদিয়া আফরিন বলেন, ‘আমরা তদন্তে টিম গঠন করে দিয়েছি। তদন্ত রিপোর্ট পেলে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

বা/খ:জই

নিউজটি শেয়ার করুন

আশ্রয়ণ প্রকল্পের ৭ঘর বিক্রি: তদন্ত কমিটি গঠন

আপডেট সময় : ০৫:৫১:১১ অপরাহ্ন, সোমবার, ৫ ডিসেম্বর ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক :

শাহজাদপুর উপজেলার গাড়াদহ ইউনিয়নের আশ্রয়ণ প্রকল্পের ১৪ টি ঘরের মধ্যে ৭টি ঘর বিক্রির করার অভিযোগ উঠেছে। ঘরগুলো সুবিধাভোগীদের মাঝে বিতরণ করেছিলেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা। এমনকি প্রকল্প তালিকায় ভুল মোবাইল নাম্বারও দেয়া হয়েছে যাতে সুবিধাভোগীদের সাথে কেউ যোগযোগ করতে না পারে। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর উপজেলা নির্বাহী অফিসার তদন্ত কমিটি গঠন করে দিয়েছেন।

সরেজমিন জানা যায়, শাহজাদপুর উপজেলার গাড়াদহ ইউনিয়নের গাড়াদহ দক্ষিণপাড়ায় প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের ১৪টি ঘর নির্মাণ করা হয়। ঘরগুলি যথাসময়ে বরাদ্দও দেয়া হয় প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের পছন্দের সুবিধাভোগীদের মধ্যে। ইতিমধ্যে প্রকল্পের ৭ টি ঘর স্ট্যাম্পে লিখিতভাবে নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে কেনা-বেঁচার অভিযোগও উঠেছে। ক্রেতারা ক্রয়ের মাধ্যমে বসবাস করছে প্রকল্পের ওই ঘরগুলিতে। একটি ঘর নির্মাণে সরকার বরাদ্দ দিয়েছে এক লাখ ৭১ হাজার টাকা। পাশাপাশি ঘরের জন্য জমি তো বরাদ্দ রয়েছেই। অথচ জমিসহ প্রকল্পের ওই ৭টি ঘর বিক্রি হয়েছে মাত্র ৮০ থেকে ১ লাখ টাকায়। এ নিয়ে চলছে আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দাসহ পুরো ইউনিয়নবাসীর মধ্যে নানা আলোচনা সমালোচনা। আশ্রয়ণ প্রকল্পে বরাদ্দ ১৪ নং ঘরের পাওয়া সুবিধাভোগী আব্দুল ছালাম ও তার স্ত্রী সেলিনা নামে বরাদ্দ পেয়ে ঘরটি স্ট্যাম্পের মাধ্যমে ১ লাখ টাকায় বিক্রি করে দিয়েছেন সিরিনা বেগম ও তার পরিবারের কাছে। বর্তমানে ক্রয়সূত্রে তারা সেখানে বসবাস করছে। ১০নং ঘরের বেল্লাল হোসেন ও তার স্ত্রী ছাড়া খাতুন দম্পতি, এই দম্পতির কাছ থেকে ৮০ হাজার টাকায় কিনে ঘরটিতে বসবাস করছেন আনু ও সাবিনা বেগম দম্পতি। ৮ নং ঘর রশিদ দম্পতি পেলেও ঐ ঘরে বসবাস করছেন জাহের তার পরিবার নিয়ে। ৯ নং ঘর ঠান্ডু দম্পতি পেলেও সে ঘরে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকায় কিনে বসবাস করছেন পিঞ্জিরা খাতুন তার সন্তানদের নিয়ে। ১৩ নং ঘর রফিকুল ও মোছাঃ ফুলমালা দম্পতি পেলেও ১লাখ টাকা দিয়ে কিনে বসবাস করছেন নাজমুল তার পরিবার নিয়ে। ১৬ নং ঘর বিধবা রেশমা খাতুন পেলেও সে ঘর ১ লাখ টাকায় কিনে বসবাস করছে হাফিজুল নাছিমা দম্পতি। ১৭ নং ঘর জহুরুল ইসলাম ও আফরোজা বেগম দম্পতি পেলেও সে ঘর ১লাখ ১১ হাজার টাকায় কিনে হালিমা বেগম তার পরিবার নিয়ে বসবাস করছে। প্রকল্পের ওই ৭টি ঘর টাকা দিয়ে কিনে বসবাসের কথা স্বীকার করে তারা বলেন, আমাদের ঘরবাড়ি কিছু নাই, ‘আমাদের সহযোগিতা করার কোন মানুষ নাই, তাই দৌঁড়াদৌঁড়ি করেও একটা ঘর পাইনি। এজন্য স্ট্যাম্পের মাধ্যমে ঘর কিনে বসবাস করছি।’
ঘর বিক্রির বিষয়ে সুবিধাভোগীগের কাছে মুঠোফোনে সাংবাদিক পরিচয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তারা পরিচয় শুনে ফোন কেটে দেন। পরিচয় গোপন করে ১৪নং ঘরের সুবিভাভোগীকে মুঠোফোনে ফোন দিলে আব্দুল ছালামের স্ত্রী সেলিনা বেগম ঘর বিক্রির বিষয়ে তারা কিছুই জানেন না বলে জানান। তিনি আরও বলেন, ঘর বিক্রির একটি টাকাও পাইনি সব ডিজিটাল ভিশন বিদ্যানিকেতন (কেজি স্কুল) এর মালিক জুয়েল আহম্মেদ নিয়েছে; এ ষিয়ে সেই জানে বলে ফোন কেটে দেন। অপরদিকে জুয়েল আহম্মেদ একটি টাকাও নেননি বলে সাংবাদিকদের জানান। কিন্তু একটি ঘর কেনা বেচার সময় তিনি ছিলেন বলেও স্বীকার করেন।
গাড়াদহ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলামের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ওই প্রকল্পের বরাদ্দ, নির্মাণ ও সুপারিশের সাথে আমার কোন সম্পৃক্ততা নেই। এই প্রকল্পের ঘরগুলি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে নির্মাণ ও বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। ’
এ বিষয়ে শাহজাদপুর সহকারী কমিশনার (ভূমি) লিয়াকত সালমান বলেন, ‘বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

অপরদিকে, এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাদিয়া আফরিন বলেন, ‘আমরা তদন্তে টিম গঠন করে দিয়েছি। তদন্ত রিপোর্ট পেলে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

বা/খ:জই