ঢাকা ১১:৩১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৬ জুন ২০২৪, ১২ আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

আরও অবনতি হয়েছে সিলেটের বন্যা পরিস্থিতি

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০১:৫৮:৪২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ জুন ২০২৪
  • / ৪২৯ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

টানা বৃষ্টি আর ভারত থেকে নেমে আসা উজানি ঢলে সিলেটের তিনটি নদীর ৬টি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া আরও কয়েকটি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি অবস্থান করছে। মঙ্গলবার (১৮ জুন) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা।

মঙ্গলবার সকাল থেকে সুরমা নদীর পানি সুনামগঞ্জ প‌য়েন্টের বিপৎসীমার ৬৭ সেন্টিমিটার ও ছাতক পয়েন্ট ১৩৭ সেন্টিমিটার ওপ‌র দিয়ে প্রবাহিত হ‌চ্ছে।

সুরমা নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করে সুনামগঞ্জের পৌরশহরের পশ্চিম তেঘিরয়া, সাহেববাড়ি ঘাট, পশ্চিম বাজার, মাছবাজার, কাজির পয়েন্ট, ষোলঘর পয়েন্ট, নবীনগরসহ বিভিন্ন আবাসিক এলাকায় প্রবেশ করেছে।

এছাড়াও জেলার ছাতক, দোয়ারাবাজার, সুনামগঞ্জ সদর ও তা‌হিরপুর উপ‌জেলার অন্তত শতাধিক গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে আছে। জেলার শতা‌ধিক অভ্যন্তরীণ সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় চরম দুর্ভোগ প‌ড়েছেন বা‌সিন্দারা।

সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার বলেন, বৃ‌ষ্টিপাত আরও ৪৮ ঘণ্টা অব‌্যাহত থাক‌বে এবং নিম্নাঞ্চলেও বন‌্যা প‌রি‌স্থি‌তি সৃ‌ষ্টি হ‌য়ে‌ছে।

এদিকে, বৃষ্টিপাত ও উজানের ঢলে সিলেটের সীমান্তবর্তী উপজেলাসহ বেশ কয়েকটি উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, ওসমানীনগর, বালাগঞ্জ ও বিয়ানীবাজার উপজেলার বেশকিছু পরিবার এরই মধ্যে আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছে। এছাড়াও পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন জেলার বিভিন্ন উপজেলার অসংখ্য মানুষ। তবে সোমবার বিকেল থেকে বৃষ্টিপাত কিছুটা কমায় সিলেট নগরীর জলাবদ্ধতাও কমতে শুরু করেছে।

পাউবো সিলেটের তথ্যমতে, কুশিয়ারা নদীর পানি মঙ্গলবার সকাল ৯টায় আমলশীদ পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর আগে সকাল ৬টায় বিপৎসীমার ১ সেন্টিমিটার ওপরে ছিল। এই নদীর পানি ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে সকাল ৬টায় বিপৎসীমার ৭৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। সকাল ৯টায় তা আরও বেড়ে ৭৯ সেন্টিমিটারে পৌঁছায়। সারি নদীর পানি সারিঘাট পয়েন্টে সকাল ৯টায় বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর আগে সকাল ৬টায় বিপৎসীমার ৪০ সেন্টিমিটার উপরে ছিল। সারিগোয়াইন নদীর পানি মঙ্গলবার সকাল ৬টায় বিপৎসীমার ১১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। সকাল ৯টায় তা আরও বেড়ে বিপৎসীমার ১৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়াও সারি, সারিগোয়াইন, লোভাছড়া ও ধলাইসহ সবকটি নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, ২৪ ঘণ্টায় সিলেটে বৃষ্টি হয়েছে ১৫৩ মিলিমিটার। মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত তিন ঘণ্টায় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল ৪৪ মিলিমিটার। অন্যদিকে, ভারতের চেরাপুঞ্জিতে গত ২৪ ঘন্টায় ৩৯৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে দেশটির আবহাওয়া অফিস।

সার্বিক বিষয়ে সিলেটের জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান জানান, বন্যাসহ যেকোন দূর্যোগ পরিস্থিতিতে সরকারের নির্দেশনায় সিলেট জেলা ও উপজেলার কর্মকর্তাগণ কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। আতঙ্কিত ও বিভ্রান্ত না হয়ে সকল প্রকার পরিস্থিতি মোকাবেলায় সম্মিলিতভাবে কাজ করার অনুরোধ করা হলো।

নিউজটি শেয়ার করুন

আরও অবনতি হয়েছে সিলেটের বন্যা পরিস্থিতি

আপডেট সময় : ০১:৫৮:৪২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ জুন ২০২৪

টানা বৃষ্টি আর ভারত থেকে নেমে আসা উজানি ঢলে সিলেটের তিনটি নদীর ৬টি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া আরও কয়েকটি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি অবস্থান করছে। মঙ্গলবার (১৮ জুন) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা।

মঙ্গলবার সকাল থেকে সুরমা নদীর পানি সুনামগঞ্জ প‌য়েন্টের বিপৎসীমার ৬৭ সেন্টিমিটার ও ছাতক পয়েন্ট ১৩৭ সেন্টিমিটার ওপ‌র দিয়ে প্রবাহিত হ‌চ্ছে।

সুরমা নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করে সুনামগঞ্জের পৌরশহরের পশ্চিম তেঘিরয়া, সাহেববাড়ি ঘাট, পশ্চিম বাজার, মাছবাজার, কাজির পয়েন্ট, ষোলঘর পয়েন্ট, নবীনগরসহ বিভিন্ন আবাসিক এলাকায় প্রবেশ করেছে।

এছাড়াও জেলার ছাতক, দোয়ারাবাজার, সুনামগঞ্জ সদর ও তা‌হিরপুর উপ‌জেলার অন্তত শতাধিক গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে আছে। জেলার শতা‌ধিক অভ্যন্তরীণ সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় চরম দুর্ভোগ প‌ড়েছেন বা‌সিন্দারা।

সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার বলেন, বৃ‌ষ্টিপাত আরও ৪৮ ঘণ্টা অব‌্যাহত থাক‌বে এবং নিম্নাঞ্চলেও বন‌্যা প‌রি‌স্থি‌তি সৃ‌ষ্টি হ‌য়ে‌ছে।

এদিকে, বৃষ্টিপাত ও উজানের ঢলে সিলেটের সীমান্তবর্তী উপজেলাসহ বেশ কয়েকটি উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, ওসমানীনগর, বালাগঞ্জ ও বিয়ানীবাজার উপজেলার বেশকিছু পরিবার এরই মধ্যে আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছে। এছাড়াও পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন জেলার বিভিন্ন উপজেলার অসংখ্য মানুষ। তবে সোমবার বিকেল থেকে বৃষ্টিপাত কিছুটা কমায় সিলেট নগরীর জলাবদ্ধতাও কমতে শুরু করেছে।

পাউবো সিলেটের তথ্যমতে, কুশিয়ারা নদীর পানি মঙ্গলবার সকাল ৯টায় আমলশীদ পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর আগে সকাল ৬টায় বিপৎসীমার ১ সেন্টিমিটার ওপরে ছিল। এই নদীর পানি ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে সকাল ৬টায় বিপৎসীমার ৭৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। সকাল ৯টায় তা আরও বেড়ে ৭৯ সেন্টিমিটারে পৌঁছায়। সারি নদীর পানি সারিঘাট পয়েন্টে সকাল ৯টায় বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর আগে সকাল ৬টায় বিপৎসীমার ৪০ সেন্টিমিটার উপরে ছিল। সারিগোয়াইন নদীর পানি মঙ্গলবার সকাল ৬টায় বিপৎসীমার ১১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। সকাল ৯টায় তা আরও বেড়ে বিপৎসীমার ১৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়াও সারি, সারিগোয়াইন, লোভাছড়া ও ধলাইসহ সবকটি নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, ২৪ ঘণ্টায় সিলেটে বৃষ্টি হয়েছে ১৫৩ মিলিমিটার। মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত তিন ঘণ্টায় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল ৪৪ মিলিমিটার। অন্যদিকে, ভারতের চেরাপুঞ্জিতে গত ২৪ ঘন্টায় ৩৯৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে দেশটির আবহাওয়া অফিস।

সার্বিক বিষয়ে সিলেটের জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান জানান, বন্যাসহ যেকোন দূর্যোগ পরিস্থিতিতে সরকারের নির্দেশনায় সিলেট জেলা ও উপজেলার কর্মকর্তাগণ কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। আতঙ্কিত ও বিভ্রান্ত না হয়ে সকল প্রকার পরিস্থিতি মোকাবেলায় সম্মিলিতভাবে কাজ করার অনুরোধ করা হলো।