ঢাকা ০৪:৫৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

সুনামগঞ্জে এসিড মামলা থেকে বেকসুর খালাস পেলেন সাংবাদিক মোজাম্মেল

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১২:৩২:০১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ মার্চ ২০২৩
  • / ১৩২৮ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি:

সুনামগঞ্জে দৈনিক যুগান্তর পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার হাবিব সারোয়ার আজাদের দায়েরকৃত সাজানো মিথ্যা এসিড মামলা থেকে বেকসুর খালাস পেলেন সাংবাদিক মোজাম্মেল আলম ভূঁইয়া। বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) দুপুরে সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিজ্ঞ বিচারক মহিউদ্দিন মুরাদ বিচারাধীন এসিড ১/২০১৪ নং মামলার রায়ে তাকে বেকসুর খালাস প্রদান করেন।
আদালত ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, সীমােন্ত চোরাচালান, চাঁদাবাজি ও জুয়ার বোর্ড নিয়ে সংবাদ প্রকাশের জের ধরে ২০১২ সালের ৫ জানুয়ারি মাইটিভি ও দৈনিক মানবকণ্ঠের সাবেক সুনামগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি মোজাম্মেল আলম ভূঁইয়ার ওপর হামলা চালিয়ে নগদ টাকা ও ক্যামেরা ছিনিয়ে নিয়ে যায় সীমান্ত চোরাকারবারীদের গডফাদার ও দৈনিক যুগান্তর প্রতিনিধি হাবিব সারোয়ার আজাদ ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে থানায় মামলা দিতে গেলে পুলিশ মামলা নেয়নি। পরে নির্যাতিত সাংবাদিক মোজাম্মেল ন্যায় বিচারের আশায় হাবিব সারোয়ার আজাদ ও তার বাহিনীর বিরুদ্ধে আদালতে একটি সিআর মামলা দায়ের করেন। সেই মামলা থেকে রেহাই পাওয়ার অসৎ উদ্দেশ্যে তৎকালীন তাহিরপুর থানার এসআই জামাল উদ্দিনের সহযোগীতায় আজাদ তার নিজের ছেলে শিহাব সারোয়ার শিপুকে ২০১৪ সালের ২৯ মার্চ রাত অনুমান ৮টার সময় আগুন দিয়ে পুড়িয়ে আহত করে। তাহিরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ আনিসুর রহমান হাসপাতালে গিয়ে আহত শিপুর ও কর্তব্যরত ডাক্তারদের সাথে কথা বলার এবং কর্মস্থলে উপস্থিত থাকার পরও মামলা এফআইআর করা থেকে বিরত থাকেন। পরে সাজানো এ ঘটনার মিথ্যা অভিযোগ প্রস্তুত করে এসআই জামাল ও আজাদ একে অপরের সহায়তায় নিরপরাধ সাংবাদিক মোজাম্মেল আলম ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে থানায় এসিড অপরাধ দমন আইন ২০০২ এর ৫ (ক) ধারায় মামলা নং ৬ তারিখ ৫/৪/১৪ইং দায়ের করেন। ক্ষমতার অপব্যবহার করে এসআই মোঃ জামাল উদ্দিন (বিপি নং ৭৪৯২০৯০৪২৩) তাহিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত ওসি সেজে এফআইআরে উল্লেখ করেন,“আমি নিজেই মামলাটি তদন্ত করবো”। কথিত তদন্তের নামে বিজ্ঞ আদালতে উদ্দেশ্যমূলকভাবে মিথ্যা অভিযোগপত্র নং ৫৬ তাং ৩০/৫/১৪ইং দাখিল করেন ঐ স্বঘোষিত তদন্ত কর্মকর্তা।
এসআই জামাল উদ্দিনের কথিত অভিযোগপত্রের বিরুদ্ধে বিজ্ঞ জেলা ও দায়রা জজ এর কাছে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন সুনামগঞ্জ জেলা শাখার উদ্যোগে গঠিত তদন্ত কমিটির সঙ্গে জড়িত ৯ জন সদস্য যথাক্রমে তদন্ত কমিটির আহবায়ক সাংবাদিক আল-হেলাল, জেলা ব্র্যাকের মানবাধিকার ও আইন সহায়তা কর্মসুচির কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা, জেলা নারী শিশু পাঁচার ও নির্যাতন প্রতিরোধ বিষয়ক হটলিংক এর ফোকাল পার্সন মিজানুর রহমান মিজান, কমিশন এর যুগ্ম সম্পাদক মাওলানা এমদাদুল হক, কমিশনের তাহিরপুর শাখার সভাপতি রমেন্দ্র নারায়ন বৈশাখ, দৈনিক ইত্তেফাক প্রতিনিধি আলম সাব্বির, দৈনিক যায় যায় দিন প্রতিনিধি বাবরুল হাসান বাবলু, দৈনিক সংবাদ প্রতিনিধি কামাল হোসেন, দৈনিক দেশেরপত্র প্রতিনিধি সামায়ুন আহমদ একটি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। ঐ প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, “সাংবাদিক মোজাম্মেল আলম ভূইয়া কর্তৃক ভিকটিম শিপুর উপর আদৌ এসিড বা অন্য কোন দাহ্য পদার্থ নিক্ষেপ করা হয়নি। প্রকাশ্য ও গোপনীয় তদন্তে কোনভাবেই কথিত এসিড সন্ত্রাসের সাথে আসামী মোজাম্মেল আলম ভূইয়ার নূন্যতম সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি। উদ্দেশ্যমূলকভাবে ক্ষতিসাধনের অভিপ্রায়ে বাদী হাবিব সারোয়ার আজাদ ও তদন্ত কর্মকর্তা পরস্পর যোগসাজশ ও সমঝোতাক্রমে মোজাম্মেল আলম ভূইয়ার বিরুদ্ধে এ মামলার অভিযোগ প্রস্তত, এফআইআর, অভিযোগপত্র দাখিল, জখমী সনদ হাছিল ও রাসায়নিক রিপোর্ট সংগ্রহ করেছেন।
মানবাধিকার কমিশনের তদন্ত কমিটির সাথে সংশ্লিষ্টরা মামলায় বর্ণিত ঘটনাস্থলে সরজমিনে যান। তারা স্থানীয় বাদাঘাট সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাবিবুর রহমান, অভিযোগপত্রের ২০ নং সাক্ষী সহকারী শিক্ষিকা মোছা: সামছুন্নাহার কাজল, বাদাঘাট ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের স্থানীয় ইউপি সদস্য গুল আহমদ, মোঃ সোলাইমান হেকিম,বাদাঘাট বাজারের ব্যবসায়ী আবুল হোসেন,উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার মোঃ আঃ ছালাম, বাজার কমিটির সভাপতি সেলিম হায়দার, মোঃ আব্দুল জলিল, বাদাঘাট ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ নিজাম উদ্দিন, আলী নুর এর মতামত গ্রহন করেন। ঘটনাস্থলের উভয় পার্শ্বের স্থায়ী বাসিন্দা ছাত্র যুবক বৃদ্ধ ও মহিলাদের সাথে সরাসরি আলাপ করেন। আলাপকালে কেউই সাংবাদিক মোজাম্মেল আলম ভূইয়াকে শিপুর উপর এসিড বা অন্য কোন দাহ্য পদার্থ নিক্ষেপ করতে দেখেননি বলে তদন্ত কমিটির কাছে মতামত ব্যক্ত করেন।
অন্যদিকে কথিত ঘটনার পরপরই অগ্নিদগ্ধ শিপুকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে আজাদ। এরপর হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটের মেডিকেল অফিসার আফসার উদ্দিন দগ্ধ শিপুর চিকিৎসা করেন। সেই সাথে আদালতে এসে ওই চিকিৎসক সাক্ষী দেন এই ঘটনাটি এসিডের ঘটনা নয়। আহত শিপু আগুন জাতীয় পদার্থ দ্বারা আক্রান্ত হয়েছে। তার মুখে এসিডের কোন জখম নেই। এছাড়াও এই মামলায় ২২জন আদালতে এসে সাক্ষী দিয়েছেন। ২২ জন সাক্ষীর মধ্যে ১০ জন সাক্ষীই হচ্ছেন বাদী আজাদের পরিবারভূক্ত। কিন্তু কোন সাক্ষীই সাংবাদিক মোজাম্মেলকে কথিত ঘটনায় জড়িত মর্মে সাক্ষ্য দেননি। বিজ্ঞ বিচারক দীর্ঘ ৯ বছর এই মামলাটি মনোযোগ সহকারে বিশ্লেষন করে মামলার একমাত্র আসামী সাংবাদিক মোজাম্মেল আলম ভূঁইয়াকে বেকসুর খালাস প্রদান করেন।
সাংবাদিক মোজাম্মেলের পক্ষে আদালতে মামলাটি পরিচালনা করেন এডভোকেট মিজানুর রহমান মিজান। এবং বিভিন্ন সময় তাকে সহযোগীতা করেছেন সিনিয়র আইনজীবী হুমায়ুন মঞ্জুর চৌধুরী, এডভোকেট পীর মতিউর রহমান, এডভোকেট প্রদীপ কুমার নাগ হারু ও নজরুল ইসলাম শেফুসহ আরো একাধিক আইনজীবী।
এ ব্যাপারে এডভোকেট মিজানুর রহমান মিজান বলেন, এই মামলাটি ছিল সম্পূর্ণ সাজোনো মিথ্যা মামলা। মামলা-মোকদ্দমা ও পূর্ব বিরোধের জের ধরে হাবিব সারোয়ার আজাদ তার নিজের ছেলেকে আগুনে পুড়িয়ে নিরপরাধ সাংবাদিক মোজাম্মেলকে পরিকল্পিত ভাবে ফাঁসিয়েছিল। সাক্ষী-প্রমাণ দ্বারা আমরা বিজ্ঞ আদালতে প্রমাণ করতে পেরেছি এটি একটি সাজানো মিথ্যা মামলা। এই রায়ের মাধ্যমে সত্য ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্টিত হয়েছে। এজন্য আমরা আদালতের বিজ্ঞ বিচারকের প্রতি সন্তুষ্ট ও কৃতজ্ঞ।

বা/খ: এসআর।

নিউজটি শেয়ার করুন

সুনামগঞ্জে এসিড মামলা থেকে বেকসুর খালাস পেলেন সাংবাদিক মোজাম্মেল

আপডেট সময় : ১২:৩২:০১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ মার্চ ২০২৩

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি:

সুনামগঞ্জে দৈনিক যুগান্তর পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার হাবিব সারোয়ার আজাদের দায়েরকৃত সাজানো মিথ্যা এসিড মামলা থেকে বেকসুর খালাস পেলেন সাংবাদিক মোজাম্মেল আলম ভূঁইয়া। বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) দুপুরে সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিজ্ঞ বিচারক মহিউদ্দিন মুরাদ বিচারাধীন এসিড ১/২০১৪ নং মামলার রায়ে তাকে বেকসুর খালাস প্রদান করেন।
আদালত ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, সীমােন্ত চোরাচালান, চাঁদাবাজি ও জুয়ার বোর্ড নিয়ে সংবাদ প্রকাশের জের ধরে ২০১২ সালের ৫ জানুয়ারি মাইটিভি ও দৈনিক মানবকণ্ঠের সাবেক সুনামগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি মোজাম্মেল আলম ভূঁইয়ার ওপর হামলা চালিয়ে নগদ টাকা ও ক্যামেরা ছিনিয়ে নিয়ে যায় সীমান্ত চোরাকারবারীদের গডফাদার ও দৈনিক যুগান্তর প্রতিনিধি হাবিব সারোয়ার আজাদ ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে থানায় মামলা দিতে গেলে পুলিশ মামলা নেয়নি। পরে নির্যাতিত সাংবাদিক মোজাম্মেল ন্যায় বিচারের আশায় হাবিব সারোয়ার আজাদ ও তার বাহিনীর বিরুদ্ধে আদালতে একটি সিআর মামলা দায়ের করেন। সেই মামলা থেকে রেহাই পাওয়ার অসৎ উদ্দেশ্যে তৎকালীন তাহিরপুর থানার এসআই জামাল উদ্দিনের সহযোগীতায় আজাদ তার নিজের ছেলে শিহাব সারোয়ার শিপুকে ২০১৪ সালের ২৯ মার্চ রাত অনুমান ৮টার সময় আগুন দিয়ে পুড়িয়ে আহত করে। তাহিরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ আনিসুর রহমান হাসপাতালে গিয়ে আহত শিপুর ও কর্তব্যরত ডাক্তারদের সাথে কথা বলার এবং কর্মস্থলে উপস্থিত থাকার পরও মামলা এফআইআর করা থেকে বিরত থাকেন। পরে সাজানো এ ঘটনার মিথ্যা অভিযোগ প্রস্তুত করে এসআই জামাল ও আজাদ একে অপরের সহায়তায় নিরপরাধ সাংবাদিক মোজাম্মেল আলম ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে থানায় এসিড অপরাধ দমন আইন ২০০২ এর ৫ (ক) ধারায় মামলা নং ৬ তারিখ ৫/৪/১৪ইং দায়ের করেন। ক্ষমতার অপব্যবহার করে এসআই মোঃ জামাল উদ্দিন (বিপি নং ৭৪৯২০৯০৪২৩) তাহিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত ওসি সেজে এফআইআরে উল্লেখ করেন,“আমি নিজেই মামলাটি তদন্ত করবো”। কথিত তদন্তের নামে বিজ্ঞ আদালতে উদ্দেশ্যমূলকভাবে মিথ্যা অভিযোগপত্র নং ৫৬ তাং ৩০/৫/১৪ইং দাখিল করেন ঐ স্বঘোষিত তদন্ত কর্মকর্তা।
এসআই জামাল উদ্দিনের কথিত অভিযোগপত্রের বিরুদ্ধে বিজ্ঞ জেলা ও দায়রা জজ এর কাছে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন সুনামগঞ্জ জেলা শাখার উদ্যোগে গঠিত তদন্ত কমিটির সঙ্গে জড়িত ৯ জন সদস্য যথাক্রমে তদন্ত কমিটির আহবায়ক সাংবাদিক আল-হেলাল, জেলা ব্র্যাকের মানবাধিকার ও আইন সহায়তা কর্মসুচির কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা, জেলা নারী শিশু পাঁচার ও নির্যাতন প্রতিরোধ বিষয়ক হটলিংক এর ফোকাল পার্সন মিজানুর রহমান মিজান, কমিশন এর যুগ্ম সম্পাদক মাওলানা এমদাদুল হক, কমিশনের তাহিরপুর শাখার সভাপতি রমেন্দ্র নারায়ন বৈশাখ, দৈনিক ইত্তেফাক প্রতিনিধি আলম সাব্বির, দৈনিক যায় যায় দিন প্রতিনিধি বাবরুল হাসান বাবলু, দৈনিক সংবাদ প্রতিনিধি কামাল হোসেন, দৈনিক দেশেরপত্র প্রতিনিধি সামায়ুন আহমদ একটি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। ঐ প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, “সাংবাদিক মোজাম্মেল আলম ভূইয়া কর্তৃক ভিকটিম শিপুর উপর আদৌ এসিড বা অন্য কোন দাহ্য পদার্থ নিক্ষেপ করা হয়নি। প্রকাশ্য ও গোপনীয় তদন্তে কোনভাবেই কথিত এসিড সন্ত্রাসের সাথে আসামী মোজাম্মেল আলম ভূইয়ার নূন্যতম সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি। উদ্দেশ্যমূলকভাবে ক্ষতিসাধনের অভিপ্রায়ে বাদী হাবিব সারোয়ার আজাদ ও তদন্ত কর্মকর্তা পরস্পর যোগসাজশ ও সমঝোতাক্রমে মোজাম্মেল আলম ভূইয়ার বিরুদ্ধে এ মামলার অভিযোগ প্রস্তত, এফআইআর, অভিযোগপত্র দাখিল, জখমী সনদ হাছিল ও রাসায়নিক রিপোর্ট সংগ্রহ করেছেন।
মানবাধিকার কমিশনের তদন্ত কমিটির সাথে সংশ্লিষ্টরা মামলায় বর্ণিত ঘটনাস্থলে সরজমিনে যান। তারা স্থানীয় বাদাঘাট সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাবিবুর রহমান, অভিযোগপত্রের ২০ নং সাক্ষী সহকারী শিক্ষিকা মোছা: সামছুন্নাহার কাজল, বাদাঘাট ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের স্থানীয় ইউপি সদস্য গুল আহমদ, মোঃ সোলাইমান হেকিম,বাদাঘাট বাজারের ব্যবসায়ী আবুল হোসেন,উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার মোঃ আঃ ছালাম, বাজার কমিটির সভাপতি সেলিম হায়দার, মোঃ আব্দুল জলিল, বাদাঘাট ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ নিজাম উদ্দিন, আলী নুর এর মতামত গ্রহন করেন। ঘটনাস্থলের উভয় পার্শ্বের স্থায়ী বাসিন্দা ছাত্র যুবক বৃদ্ধ ও মহিলাদের সাথে সরাসরি আলাপ করেন। আলাপকালে কেউই সাংবাদিক মোজাম্মেল আলম ভূইয়াকে শিপুর উপর এসিড বা অন্য কোন দাহ্য পদার্থ নিক্ষেপ করতে দেখেননি বলে তদন্ত কমিটির কাছে মতামত ব্যক্ত করেন।
অন্যদিকে কথিত ঘটনার পরপরই অগ্নিদগ্ধ শিপুকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে আজাদ। এরপর হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটের মেডিকেল অফিসার আফসার উদ্দিন দগ্ধ শিপুর চিকিৎসা করেন। সেই সাথে আদালতে এসে ওই চিকিৎসক সাক্ষী দেন এই ঘটনাটি এসিডের ঘটনা নয়। আহত শিপু আগুন জাতীয় পদার্থ দ্বারা আক্রান্ত হয়েছে। তার মুখে এসিডের কোন জখম নেই। এছাড়াও এই মামলায় ২২জন আদালতে এসে সাক্ষী দিয়েছেন। ২২ জন সাক্ষীর মধ্যে ১০ জন সাক্ষীই হচ্ছেন বাদী আজাদের পরিবারভূক্ত। কিন্তু কোন সাক্ষীই সাংবাদিক মোজাম্মেলকে কথিত ঘটনায় জড়িত মর্মে সাক্ষ্য দেননি। বিজ্ঞ বিচারক দীর্ঘ ৯ বছর এই মামলাটি মনোযোগ সহকারে বিশ্লেষন করে মামলার একমাত্র আসামী সাংবাদিক মোজাম্মেল আলম ভূঁইয়াকে বেকসুর খালাস প্রদান করেন।
সাংবাদিক মোজাম্মেলের পক্ষে আদালতে মামলাটি পরিচালনা করেন এডভোকেট মিজানুর রহমান মিজান। এবং বিভিন্ন সময় তাকে সহযোগীতা করেছেন সিনিয়র আইনজীবী হুমায়ুন মঞ্জুর চৌধুরী, এডভোকেট পীর মতিউর রহমান, এডভোকেট প্রদীপ কুমার নাগ হারু ও নজরুল ইসলাম শেফুসহ আরো একাধিক আইনজীবী।
এ ব্যাপারে এডভোকেট মিজানুর রহমান মিজান বলেন, এই মামলাটি ছিল সম্পূর্ণ সাজোনো মিথ্যা মামলা। মামলা-মোকদ্দমা ও পূর্ব বিরোধের জের ধরে হাবিব সারোয়ার আজাদ তার নিজের ছেলেকে আগুনে পুড়িয়ে নিরপরাধ সাংবাদিক মোজাম্মেলকে পরিকল্পিত ভাবে ফাঁসিয়েছিল। সাক্ষী-প্রমাণ দ্বারা আমরা বিজ্ঞ আদালতে প্রমাণ করতে পেরেছি এটি একটি সাজানো মিথ্যা মামলা। এই রায়ের মাধ্যমে সত্য ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্টিত হয়েছে। এজন্য আমরা আদালতের বিজ্ঞ বিচারকের প্রতি সন্তুষ্ট ও কৃতজ্ঞ।

বা/খ: এসআর।