ঢাকা ০৯:১৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ১৯ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

সাবেক ডেপুটি স্পিকার টুকু ও তার পুত্র রঞ্জনের নানা দুর্নীতি ও অপকর্মের অভিযোগ

শফিউল আযম, বেড়া (পাবনা) প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ০১:০০:৪৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • / ৬১১ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

সাবেক ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকুর অত্যাচারে অতিষ্ট সাঁথিয়া ও বেড়া উপজেলার জনগণ হাফ ছেড়ে বেঁচেছে। দুর্নীতি, অনিয়ম-অনাচার যার নামের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে মিশে গেছে।

২০০৮ সালের নির্বাচনে পাবনা-১ নির্বাচনী আসন থেকে নৌকা প্রতীকে ভোট করে জামায়াত নেতা মতিউর রহমান নিজামীকে পরাজিত করে জয়ী হন শামসুল হক টুকু। জয়ী হওয়ার পর শেখ হাসিনা মন্ত্রী পরিষদে টুকু হন বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী। ৭ মাস পর তাকে দেয়া হয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব। তারপর দশম, একাদশ এবং দ্বাদশ সংসদ নির্বোচনে জোরজবরদস্তি ভোটে টুকু স্বনির্বাচিত সংসদ সদস্য হয়ে দাপটের সঙ্গে ক্ষমতার অপব্যবহার করতে থাকেন। তার অনুমতি বা সবুজ সংকেত না পাওয়া পর্যন্ত পাবনা জেলার কোন থানায় কোন মামলা রেকর্ড করতে পারেনি পুলিশ।

মুক্তিপণ দাবি করে আটক করার পরেও ভিকটিমরা মামলা দায়ের করতে পারেনি। টুকুর মাস্তান বাহিনীর সদস্যরা মুক্তিপণ দাবি করে সাঁথিয়া থানার সামনে পৌর মেয়র মাহবুবুল আলম বাচ্চুর ব্যক্তিগত অফিসে আটকে রাখে তিনজনকে। থানা পুলিশ তাদের উদ্ধার করে মামলা রেকর্ড করলেও টুকুর চাপে তারা মিমাংসা করতে বাধ্য হন।
এমন অসংখ্য ঘটনা ঘটেছে বেড়া ও সাথিয়া উপজেলায়। জমি দখল, বাড়ি দখল এবং হাট-ঘাট সড়কে চাঁদাবাজি করেছে টুকুর বাহিনী। আর এ বাহিনী নেতৃত্বে ছিল তার ছেলে বেড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি বেড়া পৌর মেয়র আসিফ সামস্ রঞ্জন।

ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা নির্বাচনে নৌকা প্রতীক মনোয়ন দিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন শামসুল হক টুকু। জোরজবরদস্তি ভোটে তিনি নিজে সংসদ সদস্য হয়েছেন। একইভাবে তিনি তার পছন্দের ব্যক্তিকে মনোনয়ন দিয়ে চেয়ারম্যান ও মেয়রদের নির্বাচিত করেছেন। সর্বশেষ উপজেলা নির্বাচনেও তিনি তার পছন্দের দুজনকে সাঁথিয়া ও বেড়া উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত করেছেন জোরজবরদস্তি ভোটে।

একাদশ নির্বাচনের পর ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বির মৃত্যুর পর শামসুল হক টুকু হন ডেপুটি স্পিকার। এরপর আরও বেপরোয়া হয়ে দুর্নীতি করে অঢেল সম্পত্তি করেন তিনি। দেশে বিদেশে টুকুর বাড়ি অনেকগুলো। লন্ডন, মালয়েশিয়া, সুইডেন, গ্রিসে তিন ছেলের জন্য কিনেছেন ডজন খানেক বাড়ি। ব্যবসা রয়েছে লন্ডন ও সুইডেনে ছেলেদের। ঢাকা, পাবনা, বেড়া, পাবনাসহ চট্ট্রগ্রামে টুকুর বাড়ি ও জমি আছে, যার মূল্য আনুমানিক দুই’শ কোটি টাকা।

শামসুল হক টুকুর ১৬১ কোটি টাকার সম্পত্তির তদন্ত হওয়ার ফাইল গয়েব হয় ২০১৪ সালে। এরপর টুকুর সম্পদ বেড়ে পাঁচ হাজার কোটি ছাড়িয়ে গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। টুকুর ছেলে বেড়া পৌর সভার মেয়র আশিফ সামস রঞ্জন ট্যাক্স ফাঁকি দিয়েছে ১৯১ কোটি ৪৮ লাখ ৬৬ হাজার টাকা।

পিতা-পুত্র দুজনে মিলে পাবনা-১ নির্বোচনী এলাকায় বিভিষিকাময় পরিবেশ তৈরি করে কোটি কোটি টাকা কামিয়েছে অধৈভাবে। নদীর বালু ও মাটি বিক্রি করে প্রতিদিন আয় করেছে ৭/৮ লাখ টাকা।

 

বাখ//আর

নিউজটি শেয়ার করুন

সাবেক ডেপুটি স্পিকার টুকু ও তার পুত্র রঞ্জনের নানা দুর্নীতি ও অপকর্মের অভিযোগ

আপডেট সময় : ০১:০০:৪৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

সাবেক ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকুর অত্যাচারে অতিষ্ট সাঁথিয়া ও বেড়া উপজেলার জনগণ হাফ ছেড়ে বেঁচেছে। দুর্নীতি, অনিয়ম-অনাচার যার নামের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে মিশে গেছে।

২০০৮ সালের নির্বাচনে পাবনা-১ নির্বাচনী আসন থেকে নৌকা প্রতীকে ভোট করে জামায়াত নেতা মতিউর রহমান নিজামীকে পরাজিত করে জয়ী হন শামসুল হক টুকু। জয়ী হওয়ার পর শেখ হাসিনা মন্ত্রী পরিষদে টুকু হন বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী। ৭ মাস পর তাকে দেয়া হয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব। তারপর দশম, একাদশ এবং দ্বাদশ সংসদ নির্বোচনে জোরজবরদস্তি ভোটে টুকু স্বনির্বাচিত সংসদ সদস্য হয়ে দাপটের সঙ্গে ক্ষমতার অপব্যবহার করতে থাকেন। তার অনুমতি বা সবুজ সংকেত না পাওয়া পর্যন্ত পাবনা জেলার কোন থানায় কোন মামলা রেকর্ড করতে পারেনি পুলিশ।

মুক্তিপণ দাবি করে আটক করার পরেও ভিকটিমরা মামলা দায়ের করতে পারেনি। টুকুর মাস্তান বাহিনীর সদস্যরা মুক্তিপণ দাবি করে সাঁথিয়া থানার সামনে পৌর মেয়র মাহবুবুল আলম বাচ্চুর ব্যক্তিগত অফিসে আটকে রাখে তিনজনকে। থানা পুলিশ তাদের উদ্ধার করে মামলা রেকর্ড করলেও টুকুর চাপে তারা মিমাংসা করতে বাধ্য হন।
এমন অসংখ্য ঘটনা ঘটেছে বেড়া ও সাথিয়া উপজেলায়। জমি দখল, বাড়ি দখল এবং হাট-ঘাট সড়কে চাঁদাবাজি করেছে টুকুর বাহিনী। আর এ বাহিনী নেতৃত্বে ছিল তার ছেলে বেড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি বেড়া পৌর মেয়র আসিফ সামস্ রঞ্জন।

ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা নির্বাচনে নৌকা প্রতীক মনোয়ন দিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন শামসুল হক টুকু। জোরজবরদস্তি ভোটে তিনি নিজে সংসদ সদস্য হয়েছেন। একইভাবে তিনি তার পছন্দের ব্যক্তিকে মনোনয়ন দিয়ে চেয়ারম্যান ও মেয়রদের নির্বাচিত করেছেন। সর্বশেষ উপজেলা নির্বাচনেও তিনি তার পছন্দের দুজনকে সাঁথিয়া ও বেড়া উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত করেছেন জোরজবরদস্তি ভোটে।

একাদশ নির্বাচনের পর ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বির মৃত্যুর পর শামসুল হক টুকু হন ডেপুটি স্পিকার। এরপর আরও বেপরোয়া হয়ে দুর্নীতি করে অঢেল সম্পত্তি করেন তিনি। দেশে বিদেশে টুকুর বাড়ি অনেকগুলো। লন্ডন, মালয়েশিয়া, সুইডেন, গ্রিসে তিন ছেলের জন্য কিনেছেন ডজন খানেক বাড়ি। ব্যবসা রয়েছে লন্ডন ও সুইডেনে ছেলেদের। ঢাকা, পাবনা, বেড়া, পাবনাসহ চট্ট্রগ্রামে টুকুর বাড়ি ও জমি আছে, যার মূল্য আনুমানিক দুই’শ কোটি টাকা।

শামসুল হক টুকুর ১৬১ কোটি টাকার সম্পত্তির তদন্ত হওয়ার ফাইল গয়েব হয় ২০১৪ সালে। এরপর টুকুর সম্পদ বেড়ে পাঁচ হাজার কোটি ছাড়িয়ে গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। টুকুর ছেলে বেড়া পৌর সভার মেয়র আশিফ সামস রঞ্জন ট্যাক্স ফাঁকি দিয়েছে ১৯১ কোটি ৪৮ লাখ ৬৬ হাজার টাকা।

পিতা-পুত্র দুজনে মিলে পাবনা-১ নির্বোচনী এলাকায় বিভিষিকাময় পরিবেশ তৈরি করে কোটি কোটি টাকা কামিয়েছে অধৈভাবে। নদীর বালু ও মাটি বিক্রি করে প্রতিদিন আয় করেছে ৭/৮ লাখ টাকা।

 

বাখ//আর