জহুরুল ইসলাম :
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে যমুনা নদী থেকে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই উত্তাল শাহজাদপুরের রাজনৈতিক অঙ্গণ। বিশেষ করে উপজেলার গালা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল বাতেনের নেতৃত্বে যমুনা নদী থেকে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধের দাবীতে মানববন্ধন ও সংক্ষিপ্ত সমাবেশে স্থানীয় এমপিকে জড়িয়ে চেয়ারম্যান বাতেনের অপপ্রচারমূলক বক্তব্যকে কেন্দ্র করে শুরু হয় আলোচনার ঝড়। এ নিয়ে একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সচিত্র প্রতিবেদন প্রচারিত হয়। সেখানে মুঠোফোনে দেয়া সাক্ষাৎকারে সিরাজগঞ্জ-৬ (শাহজাদপুর) আসনের এমপি প্রফেসর মেরিনা জাহান কবিতা গালা ইউপি চেয়ারম্যানকে ‘প্রতিবন্ধী’ বলে উল্লেখ করেন। এমপি ও চেয়ারম্যানের এমন পাল্টাপাল্টি বক্তব্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে নানা প্রতিক্রিয়া পরিলক্ষিত হয়। এ নিয়ে মঙ্গলবার ( ১৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে শাহজাদপুর পৌর এলাকার শক্তিপুর মহল্লার নূরজাহান ভবনে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এসব অপপ্রচার ও মিথ্যাচারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জ্ঞাপন করেন প্রফেসর মেরিনা জাহান কবিতা এমপি।
সংবাদ সম্মেলনে এমপি বলেন, একটি চক্র যমুনায় অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন শুরু করলে তিনি উদ্যোগী হয়ে প্রশাসনের সহযোগিতায় তা বন্ধ করে দেন। তার ঠিক পাঁচদিন পর অজ্ঞাত কারণে গালা ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল বাতেন বালু উত্তোলন বন্ধের দাবীতে মানববন্ধন করে এমপি ও তার ছেলেকে জড়িয়ে বিতর্কিত ও অশোভনীয় বক্তব্য দেন। সেখানে চেয়ারম্যান নৌকা প্রতীককে চৈত্র মাসেই ডুবিয়ে দেয়ার হুশিয়ারি দেন। অথচ ইতিপূর্বে এমপির কাছে যমুনায় বালু কাটার তদবির নিয়ে এসেছিলেন এই ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল বাতেন। এমপি অনুমতি না দেয়ায় এবং এমপির সাফল্যে ঈর্ষান্বিত হয়ে কিছু প্রতিক্রিয়াশীল ষড়যন্ত্রকারীর প্ররোচনায়ই চেয়ারম্যান বাতেন মানববন্ধন ও আপত্তিকর বক্তব্য দিয়েছেন।
এমপি আরও জানান, নৌকার মনোনয়ন নিয়ে নির্বাচিত চেয়ারম্যান আবুল বাতেন নৌকা প্রতীককে ডুবিয়ে দেয়ার কথা বলে আওয়ামী লীগ ও নৌকার বিরুদ্ধেই অবস্থান নিয়েছেন। এজন্যই তাকে প্রতিবন্ধী সন্তান বলা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে প্রফেসর মেরিনা জাহান কবিতা এমপি চেয়ারম্যান আব্দুল বাতেনের বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির কথা উল্লেখ করে আরও বলেন, চেয়ারম্যান কখনও ইউনিয়ন পরিষদের অফিসে বসেন না। বাড়িতে বসেই পরিষদের কাজ ও গালা ইউনিয়নবাসীর কাছ থেকে বিভিন্ন কাজের অজুহাতে অর্থ আদায় করেন । মহিলাদের সাথেও তিনি আপত্তিকর আচরন করেন। কিন্তু বয়োবৃদ্ধ হওয়ায় তাকে সবসময় ছাড় দেয়া হয়।
এ বিষয়ে গালা ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল বাতেনের কাছে জানতে তার ব্যাক্তিগত মোবাইল ফোনে বারবার ফোন করা হলেও রিসিভ না করায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
উক্ত সংবাদ সম্মেলনে অন্যানের মধ্যে শাহজাদপুর প্রেস ক্লাবের সভাপতি বিমল কুন্ডু, সাবেক সভাপতি আতাউর রহমান পিন্টু, প্রেস ক্লাবের সাধারন সম্পাদক ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারন সম্পাদক মুস্তাক আহমেদ, উপজেলা আ.লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শামসুল আলম, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক মণিরুল গণি চৌধুরী শুভ্র, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি ফারুক হাসান কাহারসহ সিরাজগঞ্জ ও শাহজাদপুরে কর্মরত বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সংবাদকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
বা/খ : এসআর।