ঢাকা ০২:৩২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

রাতে দোকান খোলা রাখার সময় বৃদ্ধিসহ ব্যবসায়ীদের ৪ দাবি

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০১:৫৯:২৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
  • / ৪৩৬ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

পবিত্র ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে ক্রেতার উপস্থিতি বিবেচনায় চাঁদ রাত পর্যন্ত রাত ৮টার পরিবর্তে ১০টা বা তার বেশি সময় দোকান খোলা রাখতে চায় দোকান ব্যবসায়ী মালিক সমিতি। চার দফা দাবিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।

বৃহস্পতিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে বাংলাদেশ দোকান ব্যবসায়ী মালিক সমিতি ও ঢাকা দোকান ব্যবসায়ী মালিক সমিতি যৌথভাবে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।

ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ বলেন, বর্তমান সময়ে ভ্যাট আদায়ের পদ্ধতিতে ভুল রয়েছে, এ পদ্ধতি সহজীকরণ প্রয়োজন। বর্তমান ভ্যাট পদ্ধতির কারণে আমাদের মতো দোকান মালিকদের হয়রানির মধ্যে পড়তে হচ্ছে। চলমান হয়রানি বন্ধে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা।

আয়োজকরা বলেন, আমাদের ব্যবসায়ীদের প্রদত্ত ভ্যাট, ট্যাক্স উন্নয়নের চাবিকাঠি, আমরাও ভ্যাট দিতে চাই। দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধির প্রধান পাঁচটি খাতের মধ্যে উল্লেখযোগ্য পাইকারি ও খুচরা ব্যবসা ২০২০-২১ অর্থবছরে জিডিপিতে এ খাতের অবদান ছিল দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৩ দশমিক ০৪ শতাংশ। দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে হলে অন্যান্য খাতের পাশাপাশি এ খাতে বিশেষ দৃষ্টিক্ষেপন জরুরি।

তারা বলেন, আমরা ৫০ লাখ টাকা টার্নওভারের উপরের সকল দোকান ব্যবসায়ী বর্তমান আইন অনুযায়ী ফ্ল্যাট। মোট বিক্রয় মূল্যের উপর ৫ শতাংশ পাসে এর পরিবর্তে নীট মুনাফার উপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট প্রদান করতে চাই। বর্তমান চ্যাট আইন অনুযায়ী একজন দোকান ব্যবসায়ীকে পাঁচটি খাতা বই সংরক্ষণ করতে হয় একজন ক্ষুদ্র দোকান ব্যবসায়ীর পক্ষে তা সম্ভব হয়ে ওঠে না। কারণ ওই কাজে অভিজ্ঞ একজন লোক ১০/১৫ হাজার টাকা বেতনে নিয়োগ দিতে হবে। ৫/৬ লাখ টাকা বিনিয়োগকারী দোকান ব্যবসায়ীর পক্ষে তা সম্ভব হয়ে ওঠে না।

ব্যবসায়ী নেতারা বলেন, দোকান ব্যবসায়ী কোনো পণ্য উৎপাদন বা আমদানি করে না, ৫৪ লাখ দোকান ব্যবসায়ীর পক্ষে কোনো সিন্ডিকেট পরিচালনা সম্ভব নয় বা করতে পারে না। সিন্ডিকেট পরিচালনা করে দেশের গুটিকয়েক সর্বোচ্চ ১৫/২০ জন পণ্য আমদানিকারক, উৎপাদনকারী এবং সুপার বিপণনকারী প্রতিষ্ঠান যা আপনারা সকলে অবগত আছেন। তাদের বিরুদ্ধে দৃশ্যমান শাস্তি বা অভিযান পরিচালিত হলে দ্রব্যমূল্যের বাজার স্থিতিশীল হবে বলে। আমরা মনে করি।

বাংলাদেশ দোকান ব্যবসায়ী মালিক সমিতি সভাপতি মো. নাজমুল হাসান মাহমুদ বলেন, দোকান ব্যবসায়ীদের বেচা-বিক্রি হয়ে থাকে সাধারণত মাগরিবের নামাজের পর। সরকারের সিদ্ধান্তের সাথে একমত পোষণ করে বর্তমানে আমরা রাত আটটায় দোকানপাট বন্ধ করে ব্যবসায়িকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছি। দোকান ব্যবসায়ীদের বিষয়টি বিবেচনা করে পবিত্র ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে ১৫ রমজান পর্যন্ত রাত আটটার পরিবর্তে ১০টা পর্যন্ত এবং ১৫ রমজানের পর থেকে পবিত্র ঈদুল ফিতরের চাঁদ রাত পর্যন্ত ক্রেতার উপস্থিতির উপর ভিত্তি করে দোকান খোলা রাখাতে চাই।

সংগঠনের সভাপতি নাজমুল হাসানের সভাপতিত্বে ঢাকা মহানগর দোকান ব্যবসায়ী মালিক সমিতির কার্যনির্বাহী সাধারণ সম্পাদক আল আমিন সংবাদ সম্মেলনের সঞ্চালনা করেন। এতে চার দফা দাবি উত্থাপন করেন ঢাকা মহানগর দোকান ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সভাপতি আরিফুর রহমান টিপু।

চার দফা দাবি

১. বর্তমান ভ্যাট আইন সহজ করে পাঁচটি খাতা/বহি সংরক্ষণের পরিবর্তে মোট বিক্রয় মূল্যের নিট মুনাফার ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপের প্রস্তাব।

২. একজন ডিলার, পরিবেশক, পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতা কী পরিমাণ পণ্য মজুদ রাখতে পারবে তার নীতিমালা প্রণয়ন।

৩. পাইকারি ও খুচরা বিক্রয়ের নিট মুনাফার হার নির্ধারণের জন্য দোকান ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্ট সকল মন্ত্রণালয় প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠনের দাবি প্রস্তাব করছি।

৪. পবিত্র ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে ১৫ রমজান পর্যন্ত রাত ৮টার পরিবর্তে ১০টা এবং ১৫ রমজানের থেকে চাঁদ রাত পর্যন্ত ক্রেতার উপস্থিতির ওপর ভিত্তি করে দোকান খোলা রাখার জন্য প্রধানমন্ত্রীর নিকট আবেদন।

ঢাকা মহানগর দোকান ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সহযোগিতায় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন কার্যনির্বাহী পরিষদের নেতারা। বাংলাদেশ দোকান ব্যবসায়ী মালিক সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আহম্মেদ কবির মজুমদার তনয়, আইন সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ মাহবুব হাসান, কোষাধ্যক্ষ মো. আজিজুর রহমানসহ ঢাকার ৫০টি থানা এবং বিভিন্ন জেলার দোকান ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা উপস্থিত ছিলেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

রাতে দোকান খোলা রাখার সময় বৃদ্ধিসহ ব্যবসায়ীদের ৪ দাবি

আপডেট সময় : ০১:৫৯:২৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

পবিত্র ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে ক্রেতার উপস্থিতি বিবেচনায় চাঁদ রাত পর্যন্ত রাত ৮টার পরিবর্তে ১০টা বা তার বেশি সময় দোকান খোলা রাখতে চায় দোকান ব্যবসায়ী মালিক সমিতি। চার দফা দাবিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।

বৃহস্পতিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে বাংলাদেশ দোকান ব্যবসায়ী মালিক সমিতি ও ঢাকা দোকান ব্যবসায়ী মালিক সমিতি যৌথভাবে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।

ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ বলেন, বর্তমান সময়ে ভ্যাট আদায়ের পদ্ধতিতে ভুল রয়েছে, এ পদ্ধতি সহজীকরণ প্রয়োজন। বর্তমান ভ্যাট পদ্ধতির কারণে আমাদের মতো দোকান মালিকদের হয়রানির মধ্যে পড়তে হচ্ছে। চলমান হয়রানি বন্ধে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা।

আয়োজকরা বলেন, আমাদের ব্যবসায়ীদের প্রদত্ত ভ্যাট, ট্যাক্স উন্নয়নের চাবিকাঠি, আমরাও ভ্যাট দিতে চাই। দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধির প্রধান পাঁচটি খাতের মধ্যে উল্লেখযোগ্য পাইকারি ও খুচরা ব্যবসা ২০২০-২১ অর্থবছরে জিডিপিতে এ খাতের অবদান ছিল দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৩ দশমিক ০৪ শতাংশ। দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে হলে অন্যান্য খাতের পাশাপাশি এ খাতে বিশেষ দৃষ্টিক্ষেপন জরুরি।

তারা বলেন, আমরা ৫০ লাখ টাকা টার্নওভারের উপরের সকল দোকান ব্যবসায়ী বর্তমান আইন অনুযায়ী ফ্ল্যাট। মোট বিক্রয় মূল্যের উপর ৫ শতাংশ পাসে এর পরিবর্তে নীট মুনাফার উপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট প্রদান করতে চাই। বর্তমান চ্যাট আইন অনুযায়ী একজন দোকান ব্যবসায়ীকে পাঁচটি খাতা বই সংরক্ষণ করতে হয় একজন ক্ষুদ্র দোকান ব্যবসায়ীর পক্ষে তা সম্ভব হয়ে ওঠে না। কারণ ওই কাজে অভিজ্ঞ একজন লোক ১০/১৫ হাজার টাকা বেতনে নিয়োগ দিতে হবে। ৫/৬ লাখ টাকা বিনিয়োগকারী দোকান ব্যবসায়ীর পক্ষে তা সম্ভব হয়ে ওঠে না।

ব্যবসায়ী নেতারা বলেন, দোকান ব্যবসায়ী কোনো পণ্য উৎপাদন বা আমদানি করে না, ৫৪ লাখ দোকান ব্যবসায়ীর পক্ষে কোনো সিন্ডিকেট পরিচালনা সম্ভব নয় বা করতে পারে না। সিন্ডিকেট পরিচালনা করে দেশের গুটিকয়েক সর্বোচ্চ ১৫/২০ জন পণ্য আমদানিকারক, উৎপাদনকারী এবং সুপার বিপণনকারী প্রতিষ্ঠান যা আপনারা সকলে অবগত আছেন। তাদের বিরুদ্ধে দৃশ্যমান শাস্তি বা অভিযান পরিচালিত হলে দ্রব্যমূল্যের বাজার স্থিতিশীল হবে বলে। আমরা মনে করি।

বাংলাদেশ দোকান ব্যবসায়ী মালিক সমিতি সভাপতি মো. নাজমুল হাসান মাহমুদ বলেন, দোকান ব্যবসায়ীদের বেচা-বিক্রি হয়ে থাকে সাধারণত মাগরিবের নামাজের পর। সরকারের সিদ্ধান্তের সাথে একমত পোষণ করে বর্তমানে আমরা রাত আটটায় দোকানপাট বন্ধ করে ব্যবসায়িকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছি। দোকান ব্যবসায়ীদের বিষয়টি বিবেচনা করে পবিত্র ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে ১৫ রমজান পর্যন্ত রাত আটটার পরিবর্তে ১০টা পর্যন্ত এবং ১৫ রমজানের পর থেকে পবিত্র ঈদুল ফিতরের চাঁদ রাত পর্যন্ত ক্রেতার উপস্থিতির উপর ভিত্তি করে দোকান খোলা রাখাতে চাই।

সংগঠনের সভাপতি নাজমুল হাসানের সভাপতিত্বে ঢাকা মহানগর দোকান ব্যবসায়ী মালিক সমিতির কার্যনির্বাহী সাধারণ সম্পাদক আল আমিন সংবাদ সম্মেলনের সঞ্চালনা করেন। এতে চার দফা দাবি উত্থাপন করেন ঢাকা মহানগর দোকান ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সভাপতি আরিফুর রহমান টিপু।

চার দফা দাবি

১. বর্তমান ভ্যাট আইন সহজ করে পাঁচটি খাতা/বহি সংরক্ষণের পরিবর্তে মোট বিক্রয় মূল্যের নিট মুনাফার ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপের প্রস্তাব।

২. একজন ডিলার, পরিবেশক, পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতা কী পরিমাণ পণ্য মজুদ রাখতে পারবে তার নীতিমালা প্রণয়ন।

৩. পাইকারি ও খুচরা বিক্রয়ের নিট মুনাফার হার নির্ধারণের জন্য দোকান ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্ট সকল মন্ত্রণালয় প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠনের দাবি প্রস্তাব করছি।

৪. পবিত্র ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে ১৫ রমজান পর্যন্ত রাত ৮টার পরিবর্তে ১০টা এবং ১৫ রমজানের থেকে চাঁদ রাত পর্যন্ত ক্রেতার উপস্থিতির ওপর ভিত্তি করে দোকান খোলা রাখার জন্য প্রধানমন্ত্রীর নিকট আবেদন।

ঢাকা মহানগর দোকান ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সহযোগিতায় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন কার্যনির্বাহী পরিষদের নেতারা। বাংলাদেশ দোকান ব্যবসায়ী মালিক সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আহম্মেদ কবির মজুমদার তনয়, আইন সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ মাহবুব হাসান, কোষাধ্যক্ষ মো. আজিজুর রহমানসহ ঢাকার ৫০টি থানা এবং বিভিন্ন জেলার দোকান ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা উপস্থিত ছিলেন।