ঢাকা ০৮:৪৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ১৯ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

রাজশাহীতে নানা কর্মসূচির মাধ্যমে বিশ্ব জলাতঙ্ক দিবস পালিত

মোঃ হায়দার আলী, নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ০৩:৩৮:৩৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • / ৪৭৭ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি
বিশ্ব জলাতঙ্ক দিবস আজ (২৮ সেপ্টেম্বর) বিশ্বের দেশের অন্যান্য জেলার মত বাজশাহীতেও দিবসটি পালিত হয়েছে। এবারে দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘জলাতঙ্ক নিমূলে প্রয়োজন সব প্রতিবন্ধকতা নিরসন’। দিবসটি উপলক্ষ্যে রাজশাহীতে র‌্যালি ও আলোচনা সভা আয়োজন করা হয়েছে।
শনিবার সকাল সাড়ে ৯ টায় রাজশাহী জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তের আয়োজনে মেট্রো প্রাণিসম্পদ দপ্তরে আলোচনা সভায় জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আতোয়ার রহমানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ দপ্তরের পরিচালক ডা. মোঃ আব্দুল হাই সরকার, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোঃ ফজলে রাব্বী।
রাজবাড়ী আঞ্চলিক দুগ্ধ ও গবাদি উন্নয়ন খামারের উপপরিচালক ড. মোঃ ইসমাইল হক, কৃত্রিম প্রজনন ল্যাবরেটরী, রাজশাহীর উপপরিচালক ডাঃ গোলাম মোস্তফা, পবা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা সুব্রত কুমার সরকারসহ উপজেলা, জেলা, বিভাগের কর্মকর্তা, কর্মচারী, বিভিন্ন ঔষুধ কম্পানীর প্রতিনিধি, খামারী উপস্থিত ছিলেন।
ডা. মোঃ আব্দুল হাই সরকার বলেন, সম্প্রতি কুকুর-বিড়ালসহ অন্যান্য প্রাণীর আক্রমণের শিকার হওয়া মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। গত বছর প্রাণীর কামড়-আঁচড়ে আক্রান্ত ৫ লাখেরও বেশি মানুষ জলাতঙ্কের টিকা নিয়েছেন। এতে জলাতঙ্কে আক্রান্ত রোগীর বহুলাংশে সংখ্যা কমেছে। বাংলাদেশে ২০১০ সালের আগে প্রতিবছর জলাতঙ্ক রোগে ২০০০ এর বেশি মানুষ মারা যেত, যা ২০২৩ সালে কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ৪২ জনে। তার আগের বছর ছিল ৪৪ জন। মহাখালী সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতাল সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
মরণঘাতী জলাতঙ্ক বহু পুরোনো সংক্রামক রোগ। এই রোগের লক্ষণ দেখা দিলে মৃত্যু অনিবার্য। তবে সময়মতো সঠিক ব্যবস্থা তথা টিকা গ্রহণ করলে এ রোগ শতভাগ প্রতিরোধযোগ্য। কুকুর, বিড়াল, বানর, বেজি ও শিয়ালের কামড় বা আঁচড় দিলে সঙ্গে সঙ্গে ক্ষারযুক্ত সাবান পানি দিয়ে আক্রান্ত স্থান কমপক্ষে ১৫ মিনিট ধুয়ে নিতে হবে। সঙ্গে যথাসময়ে জলাতঙ্ক প্রতিরোধী টিকা নিলে এ রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব।
সভাপতির বক্তব্যে ডা. মো. আতোয়ার রহমান মরণঘাতী জলাতঙ্ক রোগের ভয়াবহতা উল্লেখ পূর্বক এর বিরুদ্ধে সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহনের নির্দেশনা দেন। প্রাণি থেকে মানুষে ছড়াতে পারে, এব্যপারে আতঙ্কিত না হয়ে সকলকে সচেতন থাকতে হবে। জলাতঙ্ক রোগ বহনকারী কুকুর, দিলে, আঁচড় দিলে নিকটস্থ  প্রাণিসম্পদ দপ্তরে নিয়ে গিয়ে ভ্যাকসিনসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া নেয়ার পরামার্শ দেন এ কর্মকর্তা।
এ দিকে ২০১০ সাল থেকে বাংলাদেশ সরকার জলাতঙ্ক রোগ নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূলকে একটি গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচি হিসেবে গ্রহণ করে। স্বাস্থ্য বিভাগ, প্রাণিসম্পদ ও স্থানীয় সরকার বিভাগের যৌথ উদ্যোগে ২০১১-১২ সাল থেকে জলাতঙ্ক রোগ নির্মূল কার্যক্রম ব্যাপকভাবে শুরু করার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। জলাতঙ্ক রোগ নিয়ন্ত্রণে জাতীয় কৌশল পত্র প্রস্তুত করে দেশকে জলাতঙ্কমুক্ত করার অঙ্গীকার নিয়ে এবং তা বাস্তবায়নে রোডম্যাপ তৈরি করা হয়। আর এসব বাস্তবায়নে নিরলসভাবে কাজ করছে জুনোটিক ডিজিজ কন্ট্রোল প্রোগ্রাম, রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর ল্যাবে প্রাণীদেহে জলাতঙ্কের জীবাণু নিশ্চিতকরণের কাজ করছে। এতে নির্দিষ্ট স্থানে এ রোগের উপস্থিতি ও প্রাদুর্ভাব নির্ণয় করে মানুষ ও প্রাণিদেহে জলাতঙ্ক নিয়ন্ত্রণে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। বর্তমানে বৈজ্ঞানিক ভিত্তির ওপর নির্ভর করে পরিবেশে জলাতঙ্কের প্রধান উৎস কুকুরের মধ্যে ব্যাপকহারে জলাতঙ্ক প্রতিরোধী ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে।
১৫০ টি পোষা প্রাণিকে, (বিড়াল, কুকুর) বিনামূল্যে জলাতঙ্ক রোগের প্রতিষেধক টিকা প্রদান কর হয়। বক্তাগণ জলাতঙ্ক রোগের লক্ষণ, চিকিৎসা, প্রাণি থেকে কিভাবে মানুষের দেহে বিস্তার করে সে ব্যপারে বিস্তর আলোচনা করেন।
বাখ//আর

নিউজটি শেয়ার করুন

রাজশাহীতে নানা কর্মসূচির মাধ্যমে বিশ্ব জলাতঙ্ক দিবস পালিত

আপডেট সময় : ০৩:৩৮:৩৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
বিশ্ব জলাতঙ্ক দিবস আজ (২৮ সেপ্টেম্বর) বিশ্বের দেশের অন্যান্য জেলার মত বাজশাহীতেও দিবসটি পালিত হয়েছে। এবারে দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘জলাতঙ্ক নিমূলে প্রয়োজন সব প্রতিবন্ধকতা নিরসন’। দিবসটি উপলক্ষ্যে রাজশাহীতে র‌্যালি ও আলোচনা সভা আয়োজন করা হয়েছে।
শনিবার সকাল সাড়ে ৯ টায় রাজশাহী জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তের আয়োজনে মেট্রো প্রাণিসম্পদ দপ্তরে আলোচনা সভায় জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আতোয়ার রহমানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ দপ্তরের পরিচালক ডা. মোঃ আব্দুল হাই সরকার, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোঃ ফজলে রাব্বী।
রাজবাড়ী আঞ্চলিক দুগ্ধ ও গবাদি উন্নয়ন খামারের উপপরিচালক ড. মোঃ ইসমাইল হক, কৃত্রিম প্রজনন ল্যাবরেটরী, রাজশাহীর উপপরিচালক ডাঃ গোলাম মোস্তফা, পবা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা সুব্রত কুমার সরকারসহ উপজেলা, জেলা, বিভাগের কর্মকর্তা, কর্মচারী, বিভিন্ন ঔষুধ কম্পানীর প্রতিনিধি, খামারী উপস্থিত ছিলেন।
ডা. মোঃ আব্দুল হাই সরকার বলেন, সম্প্রতি কুকুর-বিড়ালসহ অন্যান্য প্রাণীর আক্রমণের শিকার হওয়া মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। গত বছর প্রাণীর কামড়-আঁচড়ে আক্রান্ত ৫ লাখেরও বেশি মানুষ জলাতঙ্কের টিকা নিয়েছেন। এতে জলাতঙ্কে আক্রান্ত রোগীর বহুলাংশে সংখ্যা কমেছে। বাংলাদেশে ২০১০ সালের আগে প্রতিবছর জলাতঙ্ক রোগে ২০০০ এর বেশি মানুষ মারা যেত, যা ২০২৩ সালে কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ৪২ জনে। তার আগের বছর ছিল ৪৪ জন। মহাখালী সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতাল সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
মরণঘাতী জলাতঙ্ক বহু পুরোনো সংক্রামক রোগ। এই রোগের লক্ষণ দেখা দিলে মৃত্যু অনিবার্য। তবে সময়মতো সঠিক ব্যবস্থা তথা টিকা গ্রহণ করলে এ রোগ শতভাগ প্রতিরোধযোগ্য। কুকুর, বিড়াল, বানর, বেজি ও শিয়ালের কামড় বা আঁচড় দিলে সঙ্গে সঙ্গে ক্ষারযুক্ত সাবান পানি দিয়ে আক্রান্ত স্থান কমপক্ষে ১৫ মিনিট ধুয়ে নিতে হবে। সঙ্গে যথাসময়ে জলাতঙ্ক প্রতিরোধী টিকা নিলে এ রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব।
সভাপতির বক্তব্যে ডা. মো. আতোয়ার রহমান মরণঘাতী জলাতঙ্ক রোগের ভয়াবহতা উল্লেখ পূর্বক এর বিরুদ্ধে সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহনের নির্দেশনা দেন। প্রাণি থেকে মানুষে ছড়াতে পারে, এব্যপারে আতঙ্কিত না হয়ে সকলকে সচেতন থাকতে হবে। জলাতঙ্ক রোগ বহনকারী কুকুর, দিলে, আঁচড় দিলে নিকটস্থ  প্রাণিসম্পদ দপ্তরে নিয়ে গিয়ে ভ্যাকসিনসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া নেয়ার পরামার্শ দেন এ কর্মকর্তা।
এ দিকে ২০১০ সাল থেকে বাংলাদেশ সরকার জলাতঙ্ক রোগ নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূলকে একটি গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচি হিসেবে গ্রহণ করে। স্বাস্থ্য বিভাগ, প্রাণিসম্পদ ও স্থানীয় সরকার বিভাগের যৌথ উদ্যোগে ২০১১-১২ সাল থেকে জলাতঙ্ক রোগ নির্মূল কার্যক্রম ব্যাপকভাবে শুরু করার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। জলাতঙ্ক রোগ নিয়ন্ত্রণে জাতীয় কৌশল পত্র প্রস্তুত করে দেশকে জলাতঙ্কমুক্ত করার অঙ্গীকার নিয়ে এবং তা বাস্তবায়নে রোডম্যাপ তৈরি করা হয়। আর এসব বাস্তবায়নে নিরলসভাবে কাজ করছে জুনোটিক ডিজিজ কন্ট্রোল প্রোগ্রাম, রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর ল্যাবে প্রাণীদেহে জলাতঙ্কের জীবাণু নিশ্চিতকরণের কাজ করছে। এতে নির্দিষ্ট স্থানে এ রোগের উপস্থিতি ও প্রাদুর্ভাব নির্ণয় করে মানুষ ও প্রাণিদেহে জলাতঙ্ক নিয়ন্ত্রণে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। বর্তমানে বৈজ্ঞানিক ভিত্তির ওপর নির্ভর করে পরিবেশে জলাতঙ্কের প্রধান উৎস কুকুরের মধ্যে ব্যাপকহারে জলাতঙ্ক প্রতিরোধী ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে।
১৫০ টি পোষা প্রাণিকে, (বিড়াল, কুকুর) বিনামূল্যে জলাতঙ্ক রোগের প্রতিষেধক টিকা প্রদান কর হয়। বক্তাগণ জলাতঙ্ক রোগের লক্ষণ, চিকিৎসা, প্রাণি থেকে কিভাবে মানুষের দেহে বিস্তার করে সে ব্যপারে বিস্তর আলোচনা করেন।
বাখ//আর