ঢাকা ১০:৩৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২ আশ্বিন ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

রাজশাহীতে কেমন চলছে বাতিঘর

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০১:৪৬:৩২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ অগাস্ট ২০২৩
  • / ৪৯৭ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

রাজশাহী প্রতিনিধি : সাহিত্য, সংস্কৃতি ও জ্ঞান চর্চায় নতুন মাত্রা যোগ করতে শিক্ষা নগরী খ্যাত বিভাগীয় শহর রাজশাহীতে যাত্রা শুরু করেছে দেশের অন্যতম বই বিক্রেতা ও প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান বাতিঘর। ১৯ বছরে পা রাখা এ প্রতিষ্ঠানটির ষষ্ঠ আউটলেট উদ্বোধন করে গত ২৪ জুন বিকেল ৫টায়।

বাতিঘরের স্বত্বাধিকারী দীপঙ্কর দাস। বাতিঘরের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রধান সম্পাদক জাফর আহমদ রাশেদ ও জেনারেল ম্যানেজার মো. কাইয়ুম। বইয়ের প্রকাশক হিসেবে বাতিঘরের যাত্রা শুরু ২০০৫ সালে। সমসাময়িক কবি-সাহিত্যিকদের বই, ভিন্ন ভাষা থেকে অনূদিত বইয়ের পাশাপাশি ধ্রুপদী ও দুষ্প্রাপ্য সাহিত্যের মানসম্মত সংস্করণ প্রকাশ করছে বাতিঘর। ইতোমধ্যে ৩৫০টির বেশি বই প্রকাশিত হয়েছে বাতিঘর থেকে। এর মধ্যে প্রায় ১২০টি বইয়ের দ্বিতীয় থেকে ষষ্ঠ সংস্করণ পর্যন্ত প্রকাশিত হয়েছে। বাংলাদেশের জাতীয় বইমেলা বাংলা একাডেমি অমর একুশে বইমেলায় বাতিঘর অংশ নিচ্ছে ২০১৬ সাল থেকে। বইমেলায় স্টল সজ্জার জন্য একাধিকবার পুরস্কৃত হয়েছে।

বাতিঘরের স্বত্বাধিকারী দীপঙ্কর দাস বলেন, এখানে যে কেবল বই বিক্রি হবে তেমন নয়। এ বাতিঘরে কবিতা, সাহিত্য আড্ডা বসে। যেখানে কবি, সাহিত্যিক ও লেখকদের সম্মিলন ঘটে। মূলত দেশের সবগুলো শহরে না পারলেও সামর্থ্য অনুযায়ী সবখানেই জ্ঞান চর্চার পাশাপাশি শিল্প-সাহিত্যকে আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে দেওয়াই বাতিঘরের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য।

বাতিঘর থেকে প্রকাশিত বই দেশের কয়েকটি পুরস্কার অর্জন করেছে। বাতিঘর প্রকাশ করেছে ইতিহাস, রাজনীতি, আত্মস্মৃতি-আত্মজীবনী স্মৃতিকথা, মুক্তিযুদ্ধ, সাংবাদিকতা, উপন্যাস, অনুবাদ উপন্যাস, কাব্য উপন্যাস, সায়েন্স ফিকশন, ছোটগল্প, অনুবাদ ছোটগল্প, কবিতা, অনুবাদ কবিতা, নাটক, নাট্যকাব্য, ধ্রুপদী বই, শিশু-কিশোর উপযোগী বই, শিশু-বিলার উপযোগী অনূদিত বই, চলচ্চিত্র, ভ্রমণ, পুরাণ, শিল্পকলা, জীবনকথা, কিশোর জীবী, বিজ্ঞান, সংগীত, শিক্ষা, খেলাধুলা প্রভৃতি বিষয়ে বই।

বাতিঘর বিক্রয়কেন্দ্র রয়েছে- ঢাকার বাংলামোটর বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র ভবনে, শাহবাগের ৪৬ আজিজ সুপার মার্কেটে, বাংলাবাজারের রমী মার্কেট, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব ভবনে, সিলেটের গোল্ডেন সিটি কমপ্লেক্সে এবং এবার হলো রাজশাহী মহানগরীর খানসামার চকে। প্রতিটি আউটলেটই নিজ নিজ শহরের ইতিহাস ও ঐতিহ্য অনুযায়ী সাজানো হয়েছে।

রাজশাহী বাতিঘরের আউটলেটটি বিশাল পরিসরে হাজার হাজার বই দিয়ে সাজানো হয়েছে। এর নকশাও শিল্পী শাহীনুর রহমানের। ১৮ শতকে শেরপুরে প্রাপ্ত ও মহাস্থানগড় প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘরে সংরক্ষিত একটি প্রত্নতোরণের আদলে তৈরি হয়েছে রাজশাহী বাতিঘরের প্রবেশদ্বার। জানালাগুলোর অনুপ্রেরণা এসেছে ঐতিহাসিক বরেন্দ্র জাদুঘরের দরজার নকশা থেকে। নওগাঁর পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহারের বিভিন্ন নকশায় সাজানো হয়েছে অভ্যর্থনার দেরাজ ও ওপরের ছাদ। রাজশাহী শহরের ঐতিহ্যবাহী ঢোপকল বাতিঘরের সৌন্দর্য বাড়িয়েছে। রাজশাহীসহ বাড়ি-ঘরের সব কেন্দ্রে শিশুদের জন্য রয়েছে আলাদা বিন্যাস ও ব্যবস্থাপনা।

এছাড়া বাতিঘরের সব শাখাতেই আছে বাংলা-ইংরেজি দুই ভাষার বইয়ের বিপুল সংগ্রহ। কথাসাহিত্য, গল্প-প্রবন্ধ-কবিতা, শিল্প-দর্শন-ইতিহাস-রাজনীতি, মনোবিজ্ঞান, নাট্যতত্ত্ব, স্থাপত্যশিল্পসহ বিবিধ বিষয়ের বইয়ের সম্ভার আছে ছেলে-বুড়ো সবার জন্য। বাতিঘরের প্রতিটি শাখায় ছোটদের জন্য রয়েছে আলাদা শিশু-কিশোর কর্নার। গল্প, রহস্য, বিজ্ঞান, ছবির বই, ভূতের বই, গোয়েন্দা বই, কমিকস নিয়ে খুদে পাঠকদের উচ্ছ্বাস ভবিষ্যতের পাঠক প্রজন্ম নিয়ে আশার সঞ্চার করে। প্রতিষ্ঠাতা দীপঙ্কর দাশের ইচ্ছে দেশের সব বিভাগে এবং পর্যায়ক্রমে জেলা পর্যায়ে গ্রন্থ বিপণিটির শাখা চালু করার। নিশ্চয়ই পাঠক, লেখক, শুভাকাঙ্ক্ষীদের অনুপ্রেরণায় পুরো বিশ্বে পৌঁছে যাবে বাতিঘর নামে বইয়ের সাম্রাজ্যের দীপ্তি। আর এখানে কেবল বাতিঘর নয়, বাংলাদেশসহ পৃথিবীর যেকোনো দেশের মুদ্রিত বই ও প্রকাশনীর বিশাল সংগ্রহ মিলবে। বাতিঘরের নতুন সংযোজন www.baatighar.com ওয়েবসাইট।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

রাজশাহীতে কেমন চলছে বাতিঘর

আপডেট সময় : ০১:৪৬:৩২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ অগাস্ট ২০২৩

রাজশাহী প্রতিনিধি : সাহিত্য, সংস্কৃতি ও জ্ঞান চর্চায় নতুন মাত্রা যোগ করতে শিক্ষা নগরী খ্যাত বিভাগীয় শহর রাজশাহীতে যাত্রা শুরু করেছে দেশের অন্যতম বই বিক্রেতা ও প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান বাতিঘর। ১৯ বছরে পা রাখা এ প্রতিষ্ঠানটির ষষ্ঠ আউটলেট উদ্বোধন করে গত ২৪ জুন বিকেল ৫টায়।

বাতিঘরের স্বত্বাধিকারী দীপঙ্কর দাস। বাতিঘরের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রধান সম্পাদক জাফর আহমদ রাশেদ ও জেনারেল ম্যানেজার মো. কাইয়ুম। বইয়ের প্রকাশক হিসেবে বাতিঘরের যাত্রা শুরু ২০০৫ সালে। সমসাময়িক কবি-সাহিত্যিকদের বই, ভিন্ন ভাষা থেকে অনূদিত বইয়ের পাশাপাশি ধ্রুপদী ও দুষ্প্রাপ্য সাহিত্যের মানসম্মত সংস্করণ প্রকাশ করছে বাতিঘর। ইতোমধ্যে ৩৫০টির বেশি বই প্রকাশিত হয়েছে বাতিঘর থেকে। এর মধ্যে প্রায় ১২০টি বইয়ের দ্বিতীয় থেকে ষষ্ঠ সংস্করণ পর্যন্ত প্রকাশিত হয়েছে। বাংলাদেশের জাতীয় বইমেলা বাংলা একাডেমি অমর একুশে বইমেলায় বাতিঘর অংশ নিচ্ছে ২০১৬ সাল থেকে। বইমেলায় স্টল সজ্জার জন্য একাধিকবার পুরস্কৃত হয়েছে।

বাতিঘরের স্বত্বাধিকারী দীপঙ্কর দাস বলেন, এখানে যে কেবল বই বিক্রি হবে তেমন নয়। এ বাতিঘরে কবিতা, সাহিত্য আড্ডা বসে। যেখানে কবি, সাহিত্যিক ও লেখকদের সম্মিলন ঘটে। মূলত দেশের সবগুলো শহরে না পারলেও সামর্থ্য অনুযায়ী সবখানেই জ্ঞান চর্চার পাশাপাশি শিল্প-সাহিত্যকে আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে দেওয়াই বাতিঘরের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য।

বাতিঘর থেকে প্রকাশিত বই দেশের কয়েকটি পুরস্কার অর্জন করেছে। বাতিঘর প্রকাশ করেছে ইতিহাস, রাজনীতি, আত্মস্মৃতি-আত্মজীবনী স্মৃতিকথা, মুক্তিযুদ্ধ, সাংবাদিকতা, উপন্যাস, অনুবাদ উপন্যাস, কাব্য উপন্যাস, সায়েন্স ফিকশন, ছোটগল্প, অনুবাদ ছোটগল্প, কবিতা, অনুবাদ কবিতা, নাটক, নাট্যকাব্য, ধ্রুপদী বই, শিশু-কিশোর উপযোগী বই, শিশু-বিলার উপযোগী অনূদিত বই, চলচ্চিত্র, ভ্রমণ, পুরাণ, শিল্পকলা, জীবনকথা, কিশোর জীবী, বিজ্ঞান, সংগীত, শিক্ষা, খেলাধুলা প্রভৃতি বিষয়ে বই।

বাতিঘর বিক্রয়কেন্দ্র রয়েছে- ঢাকার বাংলামোটর বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র ভবনে, শাহবাগের ৪৬ আজিজ সুপার মার্কেটে, বাংলাবাজারের রমী মার্কেট, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব ভবনে, সিলেটের গোল্ডেন সিটি কমপ্লেক্সে এবং এবার হলো রাজশাহী মহানগরীর খানসামার চকে। প্রতিটি আউটলেটই নিজ নিজ শহরের ইতিহাস ও ঐতিহ্য অনুযায়ী সাজানো হয়েছে।

রাজশাহী বাতিঘরের আউটলেটটি বিশাল পরিসরে হাজার হাজার বই দিয়ে সাজানো হয়েছে। এর নকশাও শিল্পী শাহীনুর রহমানের। ১৮ শতকে শেরপুরে প্রাপ্ত ও মহাস্থানগড় প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘরে সংরক্ষিত একটি প্রত্নতোরণের আদলে তৈরি হয়েছে রাজশাহী বাতিঘরের প্রবেশদ্বার। জানালাগুলোর অনুপ্রেরণা এসেছে ঐতিহাসিক বরেন্দ্র জাদুঘরের দরজার নকশা থেকে। নওগাঁর পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহারের বিভিন্ন নকশায় সাজানো হয়েছে অভ্যর্থনার দেরাজ ও ওপরের ছাদ। রাজশাহী শহরের ঐতিহ্যবাহী ঢোপকল বাতিঘরের সৌন্দর্য বাড়িয়েছে। রাজশাহীসহ বাড়ি-ঘরের সব কেন্দ্রে শিশুদের জন্য রয়েছে আলাদা বিন্যাস ও ব্যবস্থাপনা।

এছাড়া বাতিঘরের সব শাখাতেই আছে বাংলা-ইংরেজি দুই ভাষার বইয়ের বিপুল সংগ্রহ। কথাসাহিত্য, গল্প-প্রবন্ধ-কবিতা, শিল্প-দর্শন-ইতিহাস-রাজনীতি, মনোবিজ্ঞান, নাট্যতত্ত্ব, স্থাপত্যশিল্পসহ বিবিধ বিষয়ের বইয়ের সম্ভার আছে ছেলে-বুড়ো সবার জন্য। বাতিঘরের প্রতিটি শাখায় ছোটদের জন্য রয়েছে আলাদা শিশু-কিশোর কর্নার। গল্প, রহস্য, বিজ্ঞান, ছবির বই, ভূতের বই, গোয়েন্দা বই, কমিকস নিয়ে খুদে পাঠকদের উচ্ছ্বাস ভবিষ্যতের পাঠক প্রজন্ম নিয়ে আশার সঞ্চার করে। প্রতিষ্ঠাতা দীপঙ্কর দাশের ইচ্ছে দেশের সব বিভাগে এবং পর্যায়ক্রমে জেলা পর্যায়ে গ্রন্থ বিপণিটির শাখা চালু করার। নিশ্চয়ই পাঠক, লেখক, শুভাকাঙ্ক্ষীদের অনুপ্রেরণায় পুরো বিশ্বে পৌঁছে যাবে বাতিঘর নামে বইয়ের সাম্রাজ্যের দীপ্তি। আর এখানে কেবল বাতিঘর নয়, বাংলাদেশসহ পৃথিবীর যেকোনো দেশের মুদ্রিত বই ও প্রকাশনীর বিশাল সংগ্রহ মিলবে। বাতিঘরের নতুন সংযোজন www.baatighar.com ওয়েবসাইট।