ঢাকা ০৫:৪৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৩, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

খাদ্যবান্ধব কর্মসূচী

মোরেলগঞ্জে ডিলারের বিরুদ্ধে চাল কম দেয়ার অভিযোগ

বাগেরহাট সংবাদদাতা
  • আপডেট সময় : ০৬:২০:১৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ নভেম্বর ২০২৩
  • / ৪৭১ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে  সরকার ঘোষিত খাদ্যবান্ধব কর্মসূচীর আওতায় সুবিদাভোগীদের চাল বিতরণে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন ক্রেতারা। ১৫ টাকা করে কেজি দরে ৪৫০ টাকায় জনপ্রতি ৩০ কেজি চাল প্রাপ্ত সুবিধাভোগীদের পাওয়ার কথা, সেখানে পাচ্ছেন ৯২ কেজি। ডিলার বলছেন ২৯ কেজির ১ ছটাকও বেশী দেয়ার সুযোগ নেই। কর্মকর্তা ও চেয়ারম্যানদের জানিয়েই দেয়া হচ্ছে। এ ঘটনায় এলাকায় শত শত সুবিদাভোগী ক্রেতাদের মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।

জানা গেছে, সোমবার সকালে উপজেলার নিশানবাড়ীয়া ইউনিয়নের পলিটিক্স মোড় এলাকায় খাদ্যবান্ধব কর্মসূচীর চাল বিতরণের ডিলার মোঃ রুহুল আমীন ৫ ও ৬নং ওয়ার্ডের ৪৯৮ জন সুবিদাভোগীদের মাঝে ৪৫০টাকা করে নিয়ে ২৯ কেজি করে চাল বিতরণ করছে। স্থানীয় সুবিদাভোগীরা এর প্রতিবাদ করলে ডিলার সাফ সাফ জানিয়ে দেয় ২৯ কেজির বেশী ১ ছটাকও দেয়া যাবেনা। কারণ বস্তা ছেড়া ফাঁটা, ঘাটতি আছে। বিষয়টি চেয়ারম্যানকে জানিয়েই তিনি বিতরণ করছেন।  এমনকি উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ অফিসার তিনি নিজেও জানেন বলে ডিলার দাবী করেন।

উত্তর গুলিশাখালী গ্রামের মোঃ মারুফ হোসেন, হরতকী গ্রামের সবুর হাওলাদার,  মোঃ ফরিদ শেখ, গুয়াতলা গ্রামের মোঃ মশিউর চোকদার,মতিয়ার ফরাজীসহ সুবিধাভোগী অনেকেই অভিযোগ তুলে বলেন, ২৯ কেজি চাল পাচ্ছি টাকা দিতে হচ্ছে ৩০ কেজির। এবারেতো একটু বেশী দিচ্ছে এর পূর্বে ২৭/ ২৮ কেজি ডিলারের চোখ রাঙানো ও তাড়া খেয়ে নিতে হয়েছে। বেশী কথা বললে চাল দিবেনা, কার্ড বন্ধ করে দিবে। এরকম নানাবিধ অভিযোগ ডিলারের বিরুদ্ধে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, সরকারী নির্দেশনা অনুযায়ী চাল বিতরণের পূর্ব মূহুর্তে প্রাপ্ত সুবিদাভোগীদের মাইকিং করে জানানো, ৩০ কেজির ইনটেক বস্তা, সংশ্লিষ্ট ট্যাগ অফিসারের উপস্থিতিতে চাল বিতরণ করতে হবে। এ স্পটে এর চিত্র ভিন্ন। ট্যাগ অফিসার পার্শ্ববর্তী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আবুল খায়ের বিতরণের বিষয় অবহিত নন, শুধুমাত্র উদ্ভোদনের ১ দিন এসেছিলেন। ৩০ কেজির ছোট বস্তার পরিবর্তে ৫০কেজির বস্তা ঢেলে ২৯ কেজি বিতরণ হচ্ছে । বাড়তি টাকা দিয়ে বড় বস্তায় চাল আনার তদবীর থাকে ডিলারদের। কারন এ বস্তায় চাল আনলে ক্রেতাদের কম দেয়ার সুযোগ থাকে। এরকম অভিযোগ সুবিদাভোগীদের। একই ব্যাক্তি দুই ডিলারের দায়িত্ব পালণ করছেন। গত বৃহস্পতি, শনি ও রবিবার ৩ দিনে ১,২ নং ওয়ার্ডের  ৪৯৭ জনের মাঝে  ২৯ কেজি করে চাল বিতরণ করেছেন বলে সুবিদাভোগীরা  জানিয়েছেন। তারা ডিলারের এ ধরনের দুর্নীতি ও অনিয়মের বিষয়ে ঊর্ধতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।

এ সর্ম্পকে নিশানবাড়ীয়া ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ সাইফুল ইসলাম হাওলাদার বলেন, খাদ্যবান্ধবের সুবিধাভোগীদের ৩০কেজি চালের পরিবর্তে ২৯কেজি দেয়ার নির্দেশনার তিনি ইখতিয়ার রাখেননা। এটি ডিলারের মনগড়া কথা। ডিলারদের এ ধরনের  অনিয়মের বিরুদ্ধে ইতিপূর্বে তিনি সংশ্লিষ্ট উর্ধতন কর্মকর্তাদেরকেও জানিয়েছেন।

উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা মোঃ নাসির উদ্দিন বলেন, চাল বিতরণে অনিয়ম ও কম দেয়ার কোন সুযোগ নেই। ওই ডিলারের বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ উর্ধতন কর্মকর্তাদের নিকট পাঠানো হবে।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস.এম তারেক সুলতান বলেন, চাল কম দেয়ার বিষয়ে ওই ডিলারের বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য খাদ্য কর্মকর্তাকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পাবার পর তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

খাদ্যবান্ধব কর্মসূচী

মোরেলগঞ্জে ডিলারের বিরুদ্ধে চাল কম দেয়ার অভিযোগ

আপডেট সময় : ০৬:২০:১৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ নভেম্বর ২০২৩

বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে  সরকার ঘোষিত খাদ্যবান্ধব কর্মসূচীর আওতায় সুবিদাভোগীদের চাল বিতরণে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন ক্রেতারা। ১৫ টাকা করে কেজি দরে ৪৫০ টাকায় জনপ্রতি ৩০ কেজি চাল প্রাপ্ত সুবিধাভোগীদের পাওয়ার কথা, সেখানে পাচ্ছেন ৯২ কেজি। ডিলার বলছেন ২৯ কেজির ১ ছটাকও বেশী দেয়ার সুযোগ নেই। কর্মকর্তা ও চেয়ারম্যানদের জানিয়েই দেয়া হচ্ছে। এ ঘটনায় এলাকায় শত শত সুবিদাভোগী ক্রেতাদের মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।

জানা গেছে, সোমবার সকালে উপজেলার নিশানবাড়ীয়া ইউনিয়নের পলিটিক্স মোড় এলাকায় খাদ্যবান্ধব কর্মসূচীর চাল বিতরণের ডিলার মোঃ রুহুল আমীন ৫ ও ৬নং ওয়ার্ডের ৪৯৮ জন সুবিদাভোগীদের মাঝে ৪৫০টাকা করে নিয়ে ২৯ কেজি করে চাল বিতরণ করছে। স্থানীয় সুবিদাভোগীরা এর প্রতিবাদ করলে ডিলার সাফ সাফ জানিয়ে দেয় ২৯ কেজির বেশী ১ ছটাকও দেয়া যাবেনা। কারণ বস্তা ছেড়া ফাঁটা, ঘাটতি আছে। বিষয়টি চেয়ারম্যানকে জানিয়েই তিনি বিতরণ করছেন।  এমনকি উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ অফিসার তিনি নিজেও জানেন বলে ডিলার দাবী করেন।

উত্তর গুলিশাখালী গ্রামের মোঃ মারুফ হোসেন, হরতকী গ্রামের সবুর হাওলাদার,  মোঃ ফরিদ শেখ, গুয়াতলা গ্রামের মোঃ মশিউর চোকদার,মতিয়ার ফরাজীসহ সুবিধাভোগী অনেকেই অভিযোগ তুলে বলেন, ২৯ কেজি চাল পাচ্ছি টাকা দিতে হচ্ছে ৩০ কেজির। এবারেতো একটু বেশী দিচ্ছে এর পূর্বে ২৭/ ২৮ কেজি ডিলারের চোখ রাঙানো ও তাড়া খেয়ে নিতে হয়েছে। বেশী কথা বললে চাল দিবেনা, কার্ড বন্ধ করে দিবে। এরকম নানাবিধ অভিযোগ ডিলারের বিরুদ্ধে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, সরকারী নির্দেশনা অনুযায়ী চাল বিতরণের পূর্ব মূহুর্তে প্রাপ্ত সুবিদাভোগীদের মাইকিং করে জানানো, ৩০ কেজির ইনটেক বস্তা, সংশ্লিষ্ট ট্যাগ অফিসারের উপস্থিতিতে চাল বিতরণ করতে হবে। এ স্পটে এর চিত্র ভিন্ন। ট্যাগ অফিসার পার্শ্ববর্তী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আবুল খায়ের বিতরণের বিষয় অবহিত নন, শুধুমাত্র উদ্ভোদনের ১ দিন এসেছিলেন। ৩০ কেজির ছোট বস্তার পরিবর্তে ৫০কেজির বস্তা ঢেলে ২৯ কেজি বিতরণ হচ্ছে । বাড়তি টাকা দিয়ে বড় বস্তায় চাল আনার তদবীর থাকে ডিলারদের। কারন এ বস্তায় চাল আনলে ক্রেতাদের কম দেয়ার সুযোগ থাকে। এরকম অভিযোগ সুবিদাভোগীদের। একই ব্যাক্তি দুই ডিলারের দায়িত্ব পালণ করছেন। গত বৃহস্পতি, শনি ও রবিবার ৩ দিনে ১,২ নং ওয়ার্ডের  ৪৯৭ জনের মাঝে  ২৯ কেজি করে চাল বিতরণ করেছেন বলে সুবিদাভোগীরা  জানিয়েছেন। তারা ডিলারের এ ধরনের দুর্নীতি ও অনিয়মের বিষয়ে ঊর্ধতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।

এ সর্ম্পকে নিশানবাড়ীয়া ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ সাইফুল ইসলাম হাওলাদার বলেন, খাদ্যবান্ধবের সুবিধাভোগীদের ৩০কেজি চালের পরিবর্তে ২৯কেজি দেয়ার নির্দেশনার তিনি ইখতিয়ার রাখেননা। এটি ডিলারের মনগড়া কথা। ডিলারদের এ ধরনের  অনিয়মের বিরুদ্ধে ইতিপূর্বে তিনি সংশ্লিষ্ট উর্ধতন কর্মকর্তাদেরকেও জানিয়েছেন।

উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা মোঃ নাসির উদ্দিন বলেন, চাল বিতরণে অনিয়ম ও কম দেয়ার কোন সুযোগ নেই। ওই ডিলারের বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ উর্ধতন কর্মকর্তাদের নিকট পাঠানো হবে।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস.এম তারেক সুলতান বলেন, চাল কম দেয়ার বিষয়ে ওই ডিলারের বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য খাদ্য কর্মকর্তাকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পাবার পর তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।