মীরসরাই (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি:
মীরসরাইয়ে গত কয়েক মাস ধরে একের পর এক চুরির ঘটনায় দিশেহারা হয়ে উঠছিলো মানুষ। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ইউনিয়ন পরিষদ, গরু, ঘর বাড়ি কিছুই রেহাই পায়নি সংঘবদ্ধ চোর দলের কবল থেকে। অবশেষে পুলিশ চট্টগ্রাম নগরী এবং জেলার বিভিন্ন স্থানে একাধিক অভিযান চালিয়ে এসব অপরাধের নেপথ্যে থাকা মূলহোতাসহ ৩ জনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছে।
রবিবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১২ টায় মীরসরাই থানায় চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার (মীরসরাই সার্কেল) ইফতেখার হাসান আনুষ্ঠানিক প্রেস ব্রিফিং এর মাধ্যমে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান।
এ সময় পুলিশের এ কর্মকর্তা জানান, পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা অনেক শক্তিশালী চোর-ডাকাত সিন্ডিকেটের সদস্য। তারা চট্টগ্রামকে চার ভাগে ভাগ করে সিন্ডিকেট তৈরি করে গণহারে চুরি সংঘটিত করতো। তারা দিনের বেলায় নির্দিষ্ট এলাকা গিয়ে ছক কষতো। রাতে সুযোগ বুঝে চুরি সংঘটিত করতো। তাদের মূল টার্গেট ছিলো বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সরকারি দপ্তর এবং ইউনিয়ন পরিষদ দপ্তর।
ঘটনার আদ্যোপান্ত জানিয়ে পুলিশ জানায়, গত শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) বেলা ২টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বড়তাকিয়া চক্ষু হাসপাতাল এলাকায় একটি চোরাই মোটর বাইকসহ হুমায়ুন কবির ওরফে কবির নামে একজনকে আটক করে পুলিশ। এ সময় তার কাঁধে থাকা ব্যাগ জব্দ করে তা থেকে চুরির কাজের ব্যবহৃত বিভিন্ন যন্ত্রপাতি উদ্ধার করা হয়। পরে তার দেহ তল্লাশি করে দেশি তৈরি একটি এলজি এবং দুইটি কার্তুজ উদ্ধার করা হয়। এরপর কবিরের দেয়া তথ্য অনুযায়ী চট্টগ্রামের জেলা পুলিশ সুপার এস.এম শফিউল্ল্যাহ নির্দেশে এএসপি (মীরসরাই সার্কেল) ইফতেখার হাসান ও মীরসরাই থানার ওসি মো. কবির হোসেনের নেতৃত্বে জেলা এবং চট্টগ্রাম নগরীর বায়েজীদ এলাকায় অভিযান চালিয়ে চোর-ডাকাত দলের মূল হোতা দেলোয়ার হোসেন ও আক্তারুজ্জামান রাজু নামে আরো দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় দেলোয়ারের ভাড়া বাসা থেকে চুরি হওয়া ১০টি ল্যাপটপ ও একটি স্মার্ট ফোন উদ্ধার করা হয়। এদের বিরুদ্ধে মীরসরাইয়ের জোরারগঞ্জ থানা ও মীরসরাই থানায় চুরি, ডাকাতি ও অবৈধ অস্ত্র রাখার অপরাধে মোট ৫টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মীরসরাই থানার ওসি মো. কবির হোসেন বলেন, ‘গ্রেপ্তার হওয়া ৩ জনকে রবিবার আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। আমরা তাদের থেকে আরো তথ্য পেতে বিজ্ঞ আদালতের কাছে রিমান্ড আবেদন করবো।’