স্পোর্টস ডেস্ক :
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) পুরো টুর্নামেন্ট জুড়ে দারুণ খেলে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থেকে কোয়ালিফায়ারে এসেছিল সিলেট স্ট্রাইকার্স। প্রথম কোয়ালিফায়ারে মুখোমুখি হয়েছিল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের। তবে জয় পায়নি তারা।
সিলেট স্ট্রাইকার্সের ব্যাটিংয়ের শুরুটা হলো না ভালো। এরপর মাশরাফি বিন মুর্তজা ব্যাটিং অর্ডারে উপরে এসে করলেন দারুণ। কিন্তু পারলেন না পরের ব্যাটাররা, সিলেট পারেনি বড় সংগ্রহ গড়তে। পরে গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে ক্যাচ ফেলেন মুশফিকুর রহিম। জয় নিয়ে চতুর্থবারের মতো ফাইনালে নাম লেখায় কুমিল্লা। এর আগে তিনবার ফাইনাল খেলে তিনবারই শিরোপা জিতেছিল ফ্র্যাঞ্চাইজিটি।
তবে সিলেটের সামনে এখনো সুযোগ রয়েছে। মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে রংপুরের মুখোমুখি হবে তারা। এই ম্যাচে জয় পেলে ফাইনালে আরও একবার কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের মুখোমুখি হওয়ার সুযোগ পাবে তারা।
রোববার (১২ ফেব্রুয়ারি) মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বিপিএলের প্রথম কোয়ালিফায়ার ম্যাচে সিলেট স্ট্রাইকার্সকে ৪ উইকেটে হারিয়েছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। শুরুতে ব্যাট করতে নেমে ১২৫ রানে অলআউট হয়ে যায় সিলেট স্ট্রাইকার্স। জবাব দিতে নেমে ১৯ বল আগেই জয় তুলে নেয় কুমিল্লা।
টস জিতে আগে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় কুমিল্লা। দ্বিতীয় ওভারেই উইকেটের দেখা পায় ইমরুল কায়েসের দল। আন্দ্রে রাসেলের ফুলটস বল গাফারির ব্যাটের কানায় লেগে সোজা চলে যায় মোসাদ্দেক হোসেনের হাতে। ৫ বল খেলে ৫ রান করেন তিনি। দুই বল পর রান আউটের শিকার হয়ে ফেরেন তৌহিদ হৃদয়। দুর্দান্ত ফর্মে থাকা এই ব্যাটার গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে রানের খাতাই খুলতে পারেননি। তৃতীয় ওভারের শেষ বলে জাকির হাসানকে তুলে নেন মঈন আলী।
মাত্র ১৬ রানে তিন উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় সিলেট। অনেকটা অবাক করেই পাঁচ নম্বরে ব্যাটিং করতে আসেন মাশরাফি। এরপর অধিনায় মাশরাফি ও নাজমুল শান্ত মিলে শুরুর ধাক্কা সামাল দেন। চতুর্থ উইকেট জুটিতে ৫৬ রান সংগ্রহ করে এই দুই ব্যাটার। নবম ওভাওে দলীয় ৭২ রানে রাসেলের শিকার হওয়ার আগে ১৭ বলে দুটি করে চার ও ছক্কায় ২৬ রান করেন মাশরাফি। ঠিক পরের ওভারেই তানভীর হাসানের বলে বোল্ড হন শান্ত।
২৯ বলে ৩৮ রান করে নাজমুল শান্ত ও রানের খাতা না খুলেই আউট হন রায়ান বার্ল। এরপর মুশফিক ও জর্জ লিন্ডে মিলে ইনিংস মেরামতের চেষ্টা করেন।
তবে দলীয় ১১৭ রানে ২২ বলে ২৯ রানে রান করে আউট হন মুশফিক। মুশফিকের বিদায়ের পর দ্রুতই আউট হন হন ক্রিজে আসা তানজিম সাকিব ও ইরুসু উদানা। দলীয় ১২৪ ও ১২৫ রানে ৫ বলে ৬ রান করে সাকিব ও রানের খাতা না খুলেই সাজঘরে ফিরে যান উদানা।
শেষ ব্যাটার হিসেবে লিন্ডে আউট হলে ১৭ ওভার ১ বলে মাত্র ১২৫ রানে অলআউট হয় সিলেট স্ট্রাইকার্স। ১৪ বলে ১৩ রান করে আউট হন লিন্ডে। কুমিল্লার পক্ষে তানভির, আন্দ্রে রাসেল ও মোস্তাফিজ নেন ২টি করে উইকেট।
১২৬ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে কুমিল্লকে ভালো শুরু এনে দেন দুই ওপেনার লিটন দাস ও সুনিল নারিন। উদ্বোধনী জুটিতে ৩২ রান সংগ্রহ করেন এই দুই ব্যাটার। এরপর ১০ বলে ৭ রান করে আউট হন লিটন।
লিটনের বিদায়ের পর দলীয় ৪৮ রানে ১৮ বলে ৩৯ রানের মারকুটে ইনিংস খেলে সাজঘরে ফিরে যান সুনিল নারিন। নারিনের বিদায়ের পর ক্রিজে এসে সুবিধা করতে পারেনি জনসন চার্লস।
দলীয় ৫৮ রানে ৫ বলে ৪ রান করে আউট হন জনসন চার্লস। এরপর ইমরুল কায়েস ও মোসাদ্দেক মিলে রানের চাকা সচল রাখার চেষ্টা করেন। তবে দলীয় ৭৩ রানে ১৫ বলে ১৩ রান করে আউট হন ইমরুল কায়েস।
এরপর মোসাদ্দেক ও ক্রিজে আসা মইন আলির ৩৪ রানের জুটিতে জয়ের ভীত পায় কুমিল্লা। তবে দলীয় ১০৭ রানে পর পর দুই উইকেট হারায় কুমিল্লা। ১৩ বলে ২১ মইন আলি ও জাকের আলি রানের খাতা না খুলেই সাজঘরে ফিরে যান।
শেষ পর্যন্ত মোসাদ্দেক ও আন্দ্রে রাসেলের ব্যাটে ভর করে ২০ বল হাতে রেখে ৪ উইকেটের জয় পায় কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। মোসাদ্দেক ২৭ বলে ২৭ ও আন্দ্রে রাসেল ১০ বলে ১৫ রানে অপরাজিত থাকেন। সিলেটের পক্ষে রুবেল হোসেন নেন ৩টি উইকেট।