কিশোরগঞ্জের ভৈরবে কোচিং করতে না আসায় ক্ষুদ্ধ হয়ে জিহাদ (১১) নামের ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থীকে থাপ্পড় দিয়ে কানের পর্দা ফাটিয়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে শিক্ষক মাসুম বিল্লাহ’র বিরুদ্ধে। তিনি ভৈরব পৌর এলাকার অক্সফোর্ড কিন্ডারগার্টেনের প্রধান শিক্ষক। এ বিষয়ে মাসুমের পিতা আল আমিন উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন । অভিযোগের ভিত্তিতে প্রধান শিক্ষককে উপজেলা প্রশাসন কার্যালয়ে তলব করা হয়। প্রেক্ষিতে রোববার (১২ ফেব্রুয়ারি) বিকালে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে গিয়ে দু’হাত জোড় করে ক্ষমা চান অভিযুক্ত শিক্ষক মাসুম বিল্লাহ।
জানা গেছে, পৌর এলাকার স্টেডিয়াম পাড়ায় অবস্থিত অক্সফোর্ড কিন্ডারগার্টেনের ৫ম শ্রেণি পড়ুয়া শিক্ষার্থী আল জিহাদ। তার বাবা একজন সরকারি চাকুরিজীবী।গত ৪ ফেব্রুয়ারি ক্লাস শেষে কোচিং করতে না আসায় ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক মাসুম বিল্লাহ। এ সময় তার ডান কান বরাবর তিনি সজোরে একটি থাপ্পড় দেন। এতে আল জিহাদ আহত হয়। একই সঙ্গে তার কানে ব্যথা শুরু হয়। ফলে সে অসুস্থ হয়ে পড়ে।
শিক্ষার্থীর বাবা আল আমিন বলেন, আমি চাকুরীর সুবাদে জেলা সদরে ছিলাম। খবর পেয়ে বাসায় এসে প্রথমে তাকে স্থানীয় হাসপাতালে এবং পরে রাজধানী ঢাকার সিএমএইচ হাসপাতালে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। চিকিৎসক জানিয়েছেন, আল জিহাদের কানের পর্দা ফেটে গেছে।
আল আমিন জানান, এমনিতেই তার ছেলে অসুস্থ ছিলো। শিক্ষকের এমন থাপ্পড়ে তার অঙ্গহানী হবার উপক্রম হয়েছে।এ সময় অশ্রুসিক্ত আল আমিন কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, অবশেষে বাধ্য হয়ে আমি বিচার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ভৈরব উপজেলা (ভারপ্রাপ্ত) শিক্ষা অফিসার আবু হেনা মো. মামুন বলেন, ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। তাছাড়া যদি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি সরকারি হতো, তাহলে অবশ্যই অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হতো। এমনকি বেতন-ভাতা পর্যন্ত বন্ধ হয়ে যেতো।
অভিযুক্ত শিক্ষকের ক্ষমা চাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ সাদিকুর রহমান সবুজ বলেন, সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী কোন শিক্ষার্থীকেই মারার কোন সুযোগ নেই। অক্সফোর্ড কিন্ডারগার্টেন স্কুলে যে ঘটনাটি ঘটেছে, এটি অত্যান্ত দুঃখজনক। প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ রয়েছে। তাই উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে প্রধান করে দুই সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত শেষে অভিযোগগুলো প্রমাণিত হলে প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।