ঢাকা ১০:০৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

ভূমিকম্পে তুরস্ক-সিরিয়ায় নিহত ১৫ হাজার ছাড়ালো

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১২:২৭:৪৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
  • / ৪৪৪ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

শক্তিশালী ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত তুরস্ক ও সিরিয়ায় মৃতের সংখ্যা ১৫ হাজার ছাড়িয়েছে। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) সকাল পর্যন্ত তুরস্কে মারা গেছে ১২ হাজার ৩৯১ জন। অন্যদিকে, সিরিয়ায় নিহতের সংখ্যা দুই হাজার ৯৯২ জন। এতে সব মিলিয়ে এখন মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার ৩৮৩ জনে।

ভূমিকম্পে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তুরস্কের হাতেয় প্রদেশ। বুধবার সেই অঞ্চলে যান তার্কিস প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। সেখানে তাকে ধীরগতির উদ্ধার অভিযান সম্পর্কে প্রশ্ন করা হয়। তিনি জানান, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অনেক বেশি। আর এত বড় দুর্যোগ সামাল দেওয়ার মতো প্রস্তুতি নেওয়া অসম্ভব। কিন্তু তবুও সবাইকে উদ্ধার করা হবে বলে প্রতিশ্রতি দিয়েছেন তিনি।

এদিকে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান ভূমিকম্প পরবর্তী সময়ে সরকারের সাড়াদান নিয়ে সৃষ্ট সমালোচনা প্রত্যাখ্যান করেছেন। নিজ সরকার সমর্থন করে তিনি বলেন, পর পর যে ভয়াবহ দুটি ভূমিকম্প ঘটেছে, তাতে তাৎক্ষণিকভাবে সাড়াদান খুব একটা সহজ ছিল না।

তুরস্কের প্রধান বিরোধীদলীয় নেতা কামাল কিলিচদারোগ্লু দ্বিমত পোষণ করে বলেন, যদি এত বিশাল হতাহতের জন্য কেউ দায়ী থাকেন, তবে তিনি হলেন এরদোয়ান। তার এ দাবি অস্বীকার করে এরদোয়ান বলেন, দুর্যোগের পর সবার মধ্যে ঐক্যের প্রয়োজন ছিল। দেশের এমন সংকটময় সময়েও যারা রাজনৈতিক স্বার্থে নেতিবাচক প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সময় এখন নয়।

শুধুমাত্র হাতেয় প্রদেশেই মৃত্যু হয়েছে ৩ হাজার ৩০০ মানুষের। এ অঞ্চলের বেশিরভাগ ভবন ধসে পড়েছে। ধুলোয় মিশে গেছে পাড়ার পর পাড়া।

এদিকে আনুষ্ঠানিকভাবে এখন পর্যন্ত ১৫ হাজার জনের মৃত্যুর কথা বলা হলেও, আশঙ্কা করা হচ্ছে এ সংখ্যাটি অনেক বাড়বে। কারণ এখনো হাজার হাজার মানুষ ধসে পড়া ভবনের ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়ে আছেন।

বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, ভূমিকম্প সংঘটিত হওয়ার পর তিন দিন কেটে যাওয়ায় ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনো যারা আটকে আছেন তাদের জীবিত উদ্ধারের সম্ভাবনাও ক্ষীণ হয়ে এসেছে।

যুক্তরাজ্যের নটিংহ্যাম ট্রেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাকৃতিক দুর্যোগ বিশেষজ্ঞ স্টেভেন গোডবে বলেছেন, দুর্যোগের প্রথম ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্তদের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা থাকে ৭৪ শতাংশ। ৭২ ঘণ্টা (তিন দিন) পর এটি নেমে আসে ২২ শতাংশে। আর পঞ্চম দিনে কোনো আহত বা ক্ষতিগ্রস্তের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা ৬ শতাংশে চলে আসে। তবে এ বিশেষজ্ঞ জানিয়েছেন, তা সত্ত্বেও এখনই আশা ছেড়ে দেওয়া যাবে না।

জাতিসংঘের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেছিলেন, খুব শিগগির সিরিয়ায় সহায়তা সরবরাহ চালু হতে পারে। তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত কাভুসোগলু নিশ্চিত করেছেন, সিরিয়ায় আন্তর্জাতিক সহায়তা পৌঁছানোর সুবিধার্থে আরও দুটি সীমান্ত গেট খুলে দেওয়া হবে।

ইউরোপী ইউনিয়ন (ইইউ) নিশ্চিত করেছে, সিরিয়া সরকারের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে সহায়তা বাবদ ৩০ লাখ ৫০ হাজার পাউন্ড দেওয়া হবে। তবে, ওই অর্থ অবশ্যই সরকারি ও বিদ্রোহী-নিয়ন্ত্রিত এলাকায় পৌঁছে দিতে হবে। সূত্র: আল জাজিরা।

নিউজটি শেয়ার করুন

ভূমিকম্পে তুরস্ক-সিরিয়ায় নিহত ১৫ হাজার ছাড়ালো

আপডেট সময় : ১২:২৭:৪৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

শক্তিশালী ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত তুরস্ক ও সিরিয়ায় মৃতের সংখ্যা ১৫ হাজার ছাড়িয়েছে। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) সকাল পর্যন্ত তুরস্কে মারা গেছে ১২ হাজার ৩৯১ জন। অন্যদিকে, সিরিয়ায় নিহতের সংখ্যা দুই হাজার ৯৯২ জন। এতে সব মিলিয়ে এখন মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার ৩৮৩ জনে।

ভূমিকম্পে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তুরস্কের হাতেয় প্রদেশ। বুধবার সেই অঞ্চলে যান তার্কিস প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। সেখানে তাকে ধীরগতির উদ্ধার অভিযান সম্পর্কে প্রশ্ন করা হয়। তিনি জানান, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অনেক বেশি। আর এত বড় দুর্যোগ সামাল দেওয়ার মতো প্রস্তুতি নেওয়া অসম্ভব। কিন্তু তবুও সবাইকে উদ্ধার করা হবে বলে প্রতিশ্রতি দিয়েছেন তিনি।

এদিকে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান ভূমিকম্প পরবর্তী সময়ে সরকারের সাড়াদান নিয়ে সৃষ্ট সমালোচনা প্রত্যাখ্যান করেছেন। নিজ সরকার সমর্থন করে তিনি বলেন, পর পর যে ভয়াবহ দুটি ভূমিকম্প ঘটেছে, তাতে তাৎক্ষণিকভাবে সাড়াদান খুব একটা সহজ ছিল না।

তুরস্কের প্রধান বিরোধীদলীয় নেতা কামাল কিলিচদারোগ্লু দ্বিমত পোষণ করে বলেন, যদি এত বিশাল হতাহতের জন্য কেউ দায়ী থাকেন, তবে তিনি হলেন এরদোয়ান। তার এ দাবি অস্বীকার করে এরদোয়ান বলেন, দুর্যোগের পর সবার মধ্যে ঐক্যের প্রয়োজন ছিল। দেশের এমন সংকটময় সময়েও যারা রাজনৈতিক স্বার্থে নেতিবাচক প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সময় এখন নয়।

শুধুমাত্র হাতেয় প্রদেশেই মৃত্যু হয়েছে ৩ হাজার ৩০০ মানুষের। এ অঞ্চলের বেশিরভাগ ভবন ধসে পড়েছে। ধুলোয় মিশে গেছে পাড়ার পর পাড়া।

এদিকে আনুষ্ঠানিকভাবে এখন পর্যন্ত ১৫ হাজার জনের মৃত্যুর কথা বলা হলেও, আশঙ্কা করা হচ্ছে এ সংখ্যাটি অনেক বাড়বে। কারণ এখনো হাজার হাজার মানুষ ধসে পড়া ভবনের ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়ে আছেন।

বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, ভূমিকম্প সংঘটিত হওয়ার পর তিন দিন কেটে যাওয়ায় ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনো যারা আটকে আছেন তাদের জীবিত উদ্ধারের সম্ভাবনাও ক্ষীণ হয়ে এসেছে।

যুক্তরাজ্যের নটিংহ্যাম ট্রেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাকৃতিক দুর্যোগ বিশেষজ্ঞ স্টেভেন গোডবে বলেছেন, দুর্যোগের প্রথম ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্তদের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা থাকে ৭৪ শতাংশ। ৭২ ঘণ্টা (তিন দিন) পর এটি নেমে আসে ২২ শতাংশে। আর পঞ্চম দিনে কোনো আহত বা ক্ষতিগ্রস্তের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা ৬ শতাংশে চলে আসে। তবে এ বিশেষজ্ঞ জানিয়েছেন, তা সত্ত্বেও এখনই আশা ছেড়ে দেওয়া যাবে না।

জাতিসংঘের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেছিলেন, খুব শিগগির সিরিয়ায় সহায়তা সরবরাহ চালু হতে পারে। তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত কাভুসোগলু নিশ্চিত করেছেন, সিরিয়ায় আন্তর্জাতিক সহায়তা পৌঁছানোর সুবিধার্থে আরও দুটি সীমান্ত গেট খুলে দেওয়া হবে।

ইউরোপী ইউনিয়ন (ইইউ) নিশ্চিত করেছে, সিরিয়া সরকারের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে সহায়তা বাবদ ৩০ লাখ ৫০ হাজার পাউন্ড দেওয়া হবে। তবে, ওই অর্থ অবশ্যই সরকারি ও বিদ্রোহী-নিয়ন্ত্রিত এলাকায় পৌঁছে দিতে হবে। সূত্র: আল জাজিরা।