ঢাকা ০১:৫৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

ভয়াবহ জ্বালানি সঙ্কটে ইউরোপ

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৩:১৯:২৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ নভেম্বর ২০২২
  • / ৪৩৫ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

ভয়াবহ জ্বালানি সঙ্কটের মুখোমুখি ইউরোপসহ আশপাশের দেশগুলো। জ্বালানির মজুত ১২ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে যাওয়ার আশঙ্কায় ক্ষণ গুনছে পশ্চিমা দেশগুলো। আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ওপেক প্লাস উৎপদান কমানোর ঘোষণার পর তেল-গ্যাসের চাহিদা ও জোগানের সমন্বয় ঘটাতে উত্তর আফ্রিকার দেশগুলোর প্রতি নজর এখন পশ্চিমাদের।

ইউক্রেনে রুশ সামরিক অভিযানের আগে ইউরোপে গ্যাসের ৪০ শতাংশই আসত রাশিয়া থেকে। তবে যুদ্ধ শুরুর পর মস্কোর ওপর একের পর এক নিষেধাজ্ঞায় পাল্টে যেতে শুরু করে দৃশ্যপট। নিষেধাজ্ঞা বাড়তে থাকায় জ্বালানি সরবরাহ কমিয়ে দেয় রাশিয়া। সেই থেকেই জ্বালানি ঘাটতি দেখা দেয় পশ্চিমা দেশগুলোতে।

তবে কেবল ইউরোপ নয়, যুদ্ধ শুরুর পর বিশ্বজুড়েই জ্বালানির সঙ্কট দেখা দেয়। এ পরিস্থিতিতে উল্টোপথে হাঁটে আন্তর্জাতিক জ্বালানি তেল বাণিজ্যের অন্যতম নিয়ন্ত্রক জোট ওপেক প্লাস। সংস্থাটি দৈনিক ২০ লাখ ব্যারেল তেল উৎপাদন কমানোর ঘোষণা দেয়। এতে আরো জটিল আকার ধারণ করে জ্বালানি সঙ্কট।

এ পরিস্থিতিতে হন্যে হয়ে নতুন জ্বালানি রফতানিকারক খুঁজছে ইউরোপ। আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ওপেক প্লাস উৎপাদন কমানোর ঘোষণার পর তেল-গ্যাসের চাহিদা ও জোগানের সমন্বয় ঘটাতে উত্তর আফ্রিকার দেশগুলোর দিকে ঝুঁকছে ইউরোপ। পশ্চিমা বিশ্বের নজর এখন মরক্কো ও নাইজেরিয়ার গ্যাস পাইপলাইনের দিকে।

পশ্চিম আফ্রিকার ১৩টি দেশের ওপর দিয়ে ইউরোপে যাওয়া এ পাইপলাইনে এরই মধ্যে ৩০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইইউ। এছাড়া চলতি বছরই উত্তর-পশ্চিম আফ্রিকার বিভিন্ন জায়গায় নতুন তেল-গ্যাস ক্ষেত্র খুঁজতে ইইউর সঙ্গে আড়াই কোটি ইউরোর প্রাথমিক চুক্তি করেছে মরক্কো।

তবে বিলিয়ন ডলারের এ পাইপলাইন থেকে গ্যাস পেতে ইউরোপকে অপেক্ষা করতে হবে বেশ কয়েক বছর। অদূর ভবিষ্যতে মস্কো সরবরাহ আরও কমিয়ে দিতে পারে– এ আশঙ্কায় দীর্ঘমেয়াদি জ্বালানি উৎস হিসেবে মরক্কো ও নাইজেরিয়ার গ্যাস পাইপলাইনকেই লাভজনক মনে করছে ইইউ। যদিও বিশেষজ্ঞরা বলেন, আফ্রিকা থেকে জ্বালানি পেতে যে সময় লাগবে, তা নেই ইউরোপের কাছে। কারণ, খুব দ্রুতই ফুরিয়ে আসছে ইউরোপের জ্বালানি মজুত। যুক্তরাজ্যভিত্তিক আন্তর্জাতিক পরামর্শক সংস্থার তথ্য বলেন, জ্বালানি মজুত ১২ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে যাওয়ার আশঙ্কায় পড়েছেন পশ্চিমা দেশগুলো।

অন্যদিকে নিজেদের জ্বালানি চাহিদা মেটাতে আগে থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের তেল আমদানি করছে ব্রিটেন। তবে ওপেক প্লাসের উৎপাদন কমানোর ঘোষণার পর রিজার্ভে টান পড়েছে যুক্তরাষ্ট্রের। যদিও ২০২৪ সালে আসন্ন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ও রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণেই বাইডেন প্রশাসন তেল রফতানি বন্ধ করতে পারছে না বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে দীর্ঘদিন ব্রিটেনে তেল রফতানি করা যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষেও সম্ভব হবে না বলে আশঙ্কা তাদের। ফলে ইউরোপের জ্বালানি সঙ্কট মোকাবিলায় গ্যাস পাইপলাইন নির্মাণ, পারমাণবিক চুল্লি এবং এনএলজি আমদানির ওপর জোর দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।

নিউজটি শেয়ার করুন

ভয়াবহ জ্বালানি সঙ্কটে ইউরোপ

আপডেট সময় : ০৩:১৯:২৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ নভেম্বর ২০২২

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

ভয়াবহ জ্বালানি সঙ্কটের মুখোমুখি ইউরোপসহ আশপাশের দেশগুলো। জ্বালানির মজুত ১২ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে যাওয়ার আশঙ্কায় ক্ষণ গুনছে পশ্চিমা দেশগুলো। আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ওপেক প্লাস উৎপদান কমানোর ঘোষণার পর তেল-গ্যাসের চাহিদা ও জোগানের সমন্বয় ঘটাতে উত্তর আফ্রিকার দেশগুলোর প্রতি নজর এখন পশ্চিমাদের।

ইউক্রেনে রুশ সামরিক অভিযানের আগে ইউরোপে গ্যাসের ৪০ শতাংশই আসত রাশিয়া থেকে। তবে যুদ্ধ শুরুর পর মস্কোর ওপর একের পর এক নিষেধাজ্ঞায় পাল্টে যেতে শুরু করে দৃশ্যপট। নিষেধাজ্ঞা বাড়তে থাকায় জ্বালানি সরবরাহ কমিয়ে দেয় রাশিয়া। সেই থেকেই জ্বালানি ঘাটতি দেখা দেয় পশ্চিমা দেশগুলোতে।

তবে কেবল ইউরোপ নয়, যুদ্ধ শুরুর পর বিশ্বজুড়েই জ্বালানির সঙ্কট দেখা দেয়। এ পরিস্থিতিতে উল্টোপথে হাঁটে আন্তর্জাতিক জ্বালানি তেল বাণিজ্যের অন্যতম নিয়ন্ত্রক জোট ওপেক প্লাস। সংস্থাটি দৈনিক ২০ লাখ ব্যারেল তেল উৎপাদন কমানোর ঘোষণা দেয়। এতে আরো জটিল আকার ধারণ করে জ্বালানি সঙ্কট।

এ পরিস্থিতিতে হন্যে হয়ে নতুন জ্বালানি রফতানিকারক খুঁজছে ইউরোপ। আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ওপেক প্লাস উৎপাদন কমানোর ঘোষণার পর তেল-গ্যাসের চাহিদা ও জোগানের সমন্বয় ঘটাতে উত্তর আফ্রিকার দেশগুলোর দিকে ঝুঁকছে ইউরোপ। পশ্চিমা বিশ্বের নজর এখন মরক্কো ও নাইজেরিয়ার গ্যাস পাইপলাইনের দিকে।

পশ্চিম আফ্রিকার ১৩টি দেশের ওপর দিয়ে ইউরোপে যাওয়া এ পাইপলাইনে এরই মধ্যে ৩০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইইউ। এছাড়া চলতি বছরই উত্তর-পশ্চিম আফ্রিকার বিভিন্ন জায়গায় নতুন তেল-গ্যাস ক্ষেত্র খুঁজতে ইইউর সঙ্গে আড়াই কোটি ইউরোর প্রাথমিক চুক্তি করেছে মরক্কো।

তবে বিলিয়ন ডলারের এ পাইপলাইন থেকে গ্যাস পেতে ইউরোপকে অপেক্ষা করতে হবে বেশ কয়েক বছর। অদূর ভবিষ্যতে মস্কো সরবরাহ আরও কমিয়ে দিতে পারে– এ আশঙ্কায় দীর্ঘমেয়াদি জ্বালানি উৎস হিসেবে মরক্কো ও নাইজেরিয়ার গ্যাস পাইপলাইনকেই লাভজনক মনে করছে ইইউ। যদিও বিশেষজ্ঞরা বলেন, আফ্রিকা থেকে জ্বালানি পেতে যে সময় লাগবে, তা নেই ইউরোপের কাছে। কারণ, খুব দ্রুতই ফুরিয়ে আসছে ইউরোপের জ্বালানি মজুত। যুক্তরাজ্যভিত্তিক আন্তর্জাতিক পরামর্শক সংস্থার তথ্য বলেন, জ্বালানি মজুত ১২ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে যাওয়ার আশঙ্কায় পড়েছেন পশ্চিমা দেশগুলো।

অন্যদিকে নিজেদের জ্বালানি চাহিদা মেটাতে আগে থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের তেল আমদানি করছে ব্রিটেন। তবে ওপেক প্লাসের উৎপাদন কমানোর ঘোষণার পর রিজার্ভে টান পড়েছে যুক্তরাষ্ট্রের। যদিও ২০২৪ সালে আসন্ন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ও রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণেই বাইডেন প্রশাসন তেল রফতানি বন্ধ করতে পারছে না বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে দীর্ঘদিন ব্রিটেনে তেল রফতানি করা যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষেও সম্ভব হবে না বলে আশঙ্কা তাদের। ফলে ইউরোপের জ্বালানি সঙ্কট মোকাবিলায় গ্যাস পাইপলাইন নির্মাণ, পারমাণবিক চুল্লি এবং এনএলজি আমদানির ওপর জোর দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।