ডালিমের উন্নত জাতই হলো আনার বা বেদানা। ডালিম খুবই আকর্ষণীয়, মিষ্টি,সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর একটি ফল।
বেদানা খেতে কার না ভালো লাগে ছোট থেকে বড় বেদনার প্রতি আকর্ষণ সব্বার। দানাদার এই ফলের বীজ মুখের মধ্যে দিলেই সুমিষ্ট রসে মন উতলা হয়ে ওঠে।
বাংলাদেশের মাটি বেদানা চাষের জন্য উপযোগী বিধায় আমাদের দেশের বসতবাটির আঙ্গিনায় ডালিমের চাষ দেখা যায়। আনার বা ডালিমের অনেক ঔষধি গুণও রয়েছে। স্বাস্থ্যসম্মতভাবে অত্যন্ত বলবর্ধক এই ফল রুগীদের পথ্য হিসাবে আদর্শ। বাজারেও এর চাহিদা থাকায় এই ফলের বহুল পরিমাণে আমাদের দেশে চাষ করা সম্ভব।
তবে বাড়ির ছাদে এই ফলের চাষ নিয়ে অনেকেই ওয়াকিবহাল নন। সহজে, বুদ্ধিমত্তার প্রয়োগে এই ফলের চাষ বাড়ির ছাদেও করে দেখিয়েছেন রাজশাহী সোনালী ব্যাংকের প্রিন্সিপাল অফিসার মোঃ আহমুদুর রহন সুজন। তিনি নগরীর শাহমখদুম থানাধীন কয়েরডাঁরা এলাকায় প্রায় ১৬শ’ বর্গফুট ছাদে গড়ে তুলেছেন ছাদ বাগান।
পৃথিবী জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে ১২শ’ জাতের বেদানার গাছ। এর মধ্যে মাহমুদুর রহমান সুজনের সংগ্রহে রয়েছে ৬০ প্রকার। অধিকাংশে গাছেই ঝুলতে দেখা গেছে টকটকে লাল বেদানা।
দানাদার বেদানার রং, অতি রসালো এবং নরম বীজ এর কারণে বাজারে আমদানিকৃত বেদানার তুলনায় অনেকটা সুস্বাদু।
ইদানিং অনেকেই বাড়ির ছাদে ছাদ কৃষিতে মেতে উঠলেও রাজশাহীতে প্রথমবারের মত বিভিন্ন প্রকার বেদানার চারা রোপন করে আলোচনায় উঠে এসেছেন ওই ব্যাংক কর্মকর্তা।
এ ছাদ বাগানে গাছে গাছে বিদেশী বেদানা আনার দেখে পড়শীকেও তাক লাগিয়ে দিয়েছেন আহমুদুর রহমান সুজন। স্থানীয়দের কাছে তিনি আনার সম্রাট নামে পরিচিতি অর্জন করেছেন।
স্থানীয়রা অনেকেই বলছেন, আমাদের দেশের মাটিতে এবং ছাদের উপর বিদেশী বেদানা চাষ করা সম্ভব এটা আমাদের জানা ছিলোনা। এছাড়া বেদানাগুলোও যেমন রসালো তেমন সুমিষ্ট।রীতিমতো অনেকেই চারা সংগ্রহ করছেন এবং পরামর্শ নিচ্ছেন ওই ব্যাংক কর্মকর্তার কাছে।
জানতে চাইলে আহমুদুর রহমান সুজন বলেন, আমি মহামারি করোনার মধ্যে শুরু করি ছাদ বাগান এবং বিভিন্ন মাধ্যম দিয়ে সংগ্রহ করি বিদেশী বেদানা বা আনাড় গাছের চারা।
যেমন আমার পরিচিত একজন কৃষিবিদ অষ্ট্রেলিয়া থেকে দুটি বেদানার চারা আমাকে এনে দিয়েছিলেন। সেই গাছে প্রচুর পরিমাণ বেদানা ধরে। কারণ আমাদের দেশের মাটি এবং আবহওয়ার জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত হচ্ছে অষ্ট্রেলিয়ান বেদানার চারা। প্রথম বছর থেকেই ফল দিবে এবং প্রতিটি বেদানা ৩০০/৩৫০ গ্রাম ওজনের হয়ে থাকে। যেমন রসালো এবং দানাযুক্ত তেমন সুমিষ্ট।
গাছগুলো পরিচর্যায় মাটি, গবর, খয়ল, সবজি, পঁচা পানি দিয়ে জৈব সার তৈরি করে গাছগুলোতে ব্যবহার করা হয়। তবে একটি বিষয় লক্ষ রাখতে হবে; গাছে কোনো প্রকার পানি জমতে দেয়া যাবেনা। সুনিস্কাশন ব্যবস্থা অবশ্যই থা্কতে হবে বলে জানান আহমুদুর রহমান সুজন।
রাজশাহী কৃষি অফিস বলছে, এ অঞ্চলের আবহাওয়াতেও বেদানা চাষ করা সম্ভব। বীজ ও কলম থেকেই জন্ম নেয় বেদানা গাছ। বর্ষা মৌসুমের শুরুতে এ গাছের চারা রোপন করতে হয়। চারা রোপনের এক থেকে দু’বছরের মধ্যে বেদানার ফলন আসতে শুরু হয়।