ঢাকা ০৬:২৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

বাজারে সয়াবিন তেলের সঙ্কট

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৩:৪১:০৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ নভেম্বর ২০২২
  • / ৪৫৩ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

সম্প্রতি দাম বৃদ্ধির পর নিত্যপণ্যের বাজারে সয়াবিন তেলের সঙ্কট দেখা দিয়েছে। এর জন্য খুচরা ব্যবসায়ীরা ডিলারদের দায়ী করছেন।

এদিকে, গত ১ নভেম্বর সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দেয় বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন। তারপরই বাজারে তেলের সরবরাহ কমিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন ব্যবসায়ীরা।

সরেজমিনে রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা যায়, খুচরা পর্যায়ে সয়াবিন তেলের মূল্য না বাড়লেও কমে গেছে সরবরাহ। কিছু ক্ষেত্রে ক্রেতাদের গুনতে হচ্ছে বাড়তি টাকা।

তারা বলছেন, গত এক সপ্তাহ ডিলাররা বাজারে কোনো ধরনের বোতলজাত তেল দিচ্ছেন না। যা ছিল এর মধ্যে ৫ লিটারের কিছু বোতল ছাড়া বাকি সব বিক্রি হয়ে গেছে। এখন তাদের কাছে তিন দিন বিক্রি করার যাবে সে পরিমাণ তেল রয়েছে।

খুচরা ব্যবসায়ী সোলাইমান হক বলেন, অগ্রিম টাকা দিয়েও কোম্পানির কাছ থেকে তেল মিলছে না। বাজারে ফ্রেশ ও তীর ব্র্যান্ডের পাঁচ লিটারের কিছু তেলের সরবরাহ থাকলেও এক লিটারের বোতল সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। পাঁচ লিটারের বোতলজাত তেল যা রয়েছে তা দিয়ে আরও ২-৩ দিন চলবে।

তেল কিনতে আসা জহিরুল হোক বলেন, তেল কিনতে এসে দেখি এক লিটারের কোনো বোতল নাই, সবই পাঁচ লিটারের। সবার তো পাঁচ লিটারের বোতল কেনার সামর্থ্য থাকে না। কিছুদিন পর পর কোম্পানিগুলো সংকট তৈরি করে আর ভোগান্তি পোহাতে হয় আমাদের।

সংশ্লিষ্টরা জানান, খুচরা পর্যায়ে সয়াবিন তেলের মূল্য না বাড়লেও তবে সরবরাহ কমে গেছে। কিছু ক্ষেত্রে ক্রেতাদের বাড়তি টাকা গুনতে হচ্ছে।

তীর কোম্পানির ডিলার সাইফুল হোসেন বলেন, গত এক সপ্তাহ ধরে কোম্পানি তেলের সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে। অর্ডার করেও আমরা তেল পাচ্ছি না।

গত ৩ অক্টোবর বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ১৪ টাকা এবং খোলা সয়াবিন তেলের দাম ১৭ টাকা কমানো হয়। বর্তমানে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ১৭৮ টাকা, খোলা সয়াবিন তেলের দাম ১৫৮ টাকা লিটার এবং ৫ লিটার বোতলজাত তেলের দাম ৮৮০ টাকা।

আন্তর্জাতিক বাজারে ক্রুড তেলের দাম বৃদ্ধি ও ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমে যাওয়ার কারণে গত ১ নভেম্বর সয়াবিন তেলের দাম লিটারপ্রতি ১৫ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব দেয় ভোজ্যতেল পরিশোধন ও বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠান মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন।

মূল্যবৃদ্ধির প্রস্তাবে সরকার সায় না দিলেও পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে রোববার (১২ নভেম্বর) এ বিষয়ে বৈঠক হবে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, মূল্য বৃদ্ধির প্রস্তাবে কাজ করছে ট্যারিফ কমিশন। তারা আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম ও আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলোর এলসির কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত বুধবার ট্যারিফ কমিশনে ভোজ্যতেল ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বৈঠকে ব্যবসায়ীরা দাম বাড়ানোর প্রস্তাবের পক্ষে নানা যুক্তি তুলে ধরে। তেলের পাশাপাশি চিনির দামের বিষয়েও আলোচনা করা হয়। এছাড়া এলসি খোলা সংক্রান্ত জটিলতার বিষয়ে ব্যবসায়ীরা ট্যারিফ কমিশনকে অবহিত করে।
প্রস্তাবিত মূল্যবৃদ্ধি কার্যকর হলে প্রতি লিটার বোতলজাত তেলের দাম ১৯৩, পাঁচ লিটারের বোতলের দাম ৯৫৫ এবং খোলা সয়াবিন প্রতি লিটারের দাম হবে ১৭৩ টাকা।

নিউজটি শেয়ার করুন

বাজারে সয়াবিন তেলের সঙ্কট

আপডেট সময় : ০৩:৪১:০৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ নভেম্বর ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

সম্প্রতি দাম বৃদ্ধির পর নিত্যপণ্যের বাজারে সয়াবিন তেলের সঙ্কট দেখা দিয়েছে। এর জন্য খুচরা ব্যবসায়ীরা ডিলারদের দায়ী করছেন।

এদিকে, গত ১ নভেম্বর সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দেয় বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন। তারপরই বাজারে তেলের সরবরাহ কমিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন ব্যবসায়ীরা।

সরেজমিনে রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা যায়, খুচরা পর্যায়ে সয়াবিন তেলের মূল্য না বাড়লেও কমে গেছে সরবরাহ। কিছু ক্ষেত্রে ক্রেতাদের গুনতে হচ্ছে বাড়তি টাকা।

তারা বলছেন, গত এক সপ্তাহ ডিলাররা বাজারে কোনো ধরনের বোতলজাত তেল দিচ্ছেন না। যা ছিল এর মধ্যে ৫ লিটারের কিছু বোতল ছাড়া বাকি সব বিক্রি হয়ে গেছে। এখন তাদের কাছে তিন দিন বিক্রি করার যাবে সে পরিমাণ তেল রয়েছে।

খুচরা ব্যবসায়ী সোলাইমান হক বলেন, অগ্রিম টাকা দিয়েও কোম্পানির কাছ থেকে তেল মিলছে না। বাজারে ফ্রেশ ও তীর ব্র্যান্ডের পাঁচ লিটারের কিছু তেলের সরবরাহ থাকলেও এক লিটারের বোতল সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। পাঁচ লিটারের বোতলজাত তেল যা রয়েছে তা দিয়ে আরও ২-৩ দিন চলবে।

তেল কিনতে আসা জহিরুল হোক বলেন, তেল কিনতে এসে দেখি এক লিটারের কোনো বোতল নাই, সবই পাঁচ লিটারের। সবার তো পাঁচ লিটারের বোতল কেনার সামর্থ্য থাকে না। কিছুদিন পর পর কোম্পানিগুলো সংকট তৈরি করে আর ভোগান্তি পোহাতে হয় আমাদের।

সংশ্লিষ্টরা জানান, খুচরা পর্যায়ে সয়াবিন তেলের মূল্য না বাড়লেও তবে সরবরাহ কমে গেছে। কিছু ক্ষেত্রে ক্রেতাদের বাড়তি টাকা গুনতে হচ্ছে।

তীর কোম্পানির ডিলার সাইফুল হোসেন বলেন, গত এক সপ্তাহ ধরে কোম্পানি তেলের সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে। অর্ডার করেও আমরা তেল পাচ্ছি না।

গত ৩ অক্টোবর বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ১৪ টাকা এবং খোলা সয়াবিন তেলের দাম ১৭ টাকা কমানো হয়। বর্তমানে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ১৭৮ টাকা, খোলা সয়াবিন তেলের দাম ১৫৮ টাকা লিটার এবং ৫ লিটার বোতলজাত তেলের দাম ৮৮০ টাকা।

আন্তর্জাতিক বাজারে ক্রুড তেলের দাম বৃদ্ধি ও ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমে যাওয়ার কারণে গত ১ নভেম্বর সয়াবিন তেলের দাম লিটারপ্রতি ১৫ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব দেয় ভোজ্যতেল পরিশোধন ও বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠান মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন।

মূল্যবৃদ্ধির প্রস্তাবে সরকার সায় না দিলেও পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে রোববার (১২ নভেম্বর) এ বিষয়ে বৈঠক হবে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, মূল্য বৃদ্ধির প্রস্তাবে কাজ করছে ট্যারিফ কমিশন। তারা আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম ও আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলোর এলসির কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত বুধবার ট্যারিফ কমিশনে ভোজ্যতেল ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বৈঠকে ব্যবসায়ীরা দাম বাড়ানোর প্রস্তাবের পক্ষে নানা যুক্তি তুলে ধরে। তেলের পাশাপাশি চিনির দামের বিষয়েও আলোচনা করা হয়। এছাড়া এলসি খোলা সংক্রান্ত জটিলতার বিষয়ে ব্যবসায়ীরা ট্যারিফ কমিশনকে অবহিত করে।
প্রস্তাবিত মূল্যবৃদ্ধি কার্যকর হলে প্রতি লিটার বোতলজাত তেলের দাম ১৯৩, পাঁচ লিটারের বোতলের দাম ৯৫৫ এবং খোলা সয়াবিন প্রতি লিটারের দাম হবে ১৭৩ টাকা।