ঢাকা ০৪:৩০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৩, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

ফরিদপুরে সরকারি জমি নিজ নামে বিএস করে কোটি টাকা বিক্রির অভিযোগ

// বিশেষ প্রতিবেদক //
  • আপডেট সময় : ০৪:৪১:৪১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩
  • / ৫৩৫ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ফরিদপুরে জেলা প্রশাসকের খাস খতিয়ানের জমি কৌশলে নিজ নামে বিএস-পরচা করে বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেছে।

জানা যায়, বাবুল রায় নামে এক ব্যক্তি ফরিদপুর ১১৬ নং কমলাপুর মৌজা যাহার খতিয়ান নং ৮৫, মালিক বাংলাদেশ সরকার পক্ষে জেলা প্রশাসক ফরিদপুর। মোট জমি দুই দাগে ১.৪৪+৩৬.০০ সর্বমোট ৩৭.৪৪ শতাংশ। এর মধ্যে বাবুল রায়, পিতাঃ হারাধন রায়, বিএস খতিয়ানের মাধ্যমে ৪টি দাগ ব্যবহার করে যাহা ৮২১/ ৮২৬/ ৮২১/ ৯০১/ ৮২২/ ৯০২ দেখিয়েছে। তবে উক্ত জমি বহুবার চেষ্টা করে নাম পত্তন করতে পারে নাই বিগত পৌর ভুমি তহশিলদার জাহানারা বেগম থাকা অবস্থায়।

জাহানারা বেগম উক্ত খতিয়ান রেজিষ্ট্রারে দাগ উল্লেখ করে লাল কালি দিয়ে লিখে গিয়েছিলেন এই জমি সরকারি, কোন অবস্থাতেই কোন ব্যক্তি মালিকানায় নাম পত্তন করা যাবে না। পরবর্তীতে জাহানারা বেগম অনত্র বদলী হয়ে চলে গেলে বাবুল রায় তার নিজ স্ত্রী সীমা রানী দে এর নামে হেবা কবলা দলিল করে দেয়। যাহা তারিখ ১৬/০৬/২০২১ইং, যার দলিল নং- ৬৩০৮। বাবুল রায় স্ত্রীর নামে দলিল হেবা করে দিয়ে দুই জন ব্যক্তির নিকট যথাক্রমে ৫ ও ৭ শতাংশ করে জমি প্রায় ৩ কোটি টাকায় বিক্রি করে দেয়। ক্রয়কৃতরা হলেন কল্যাণ বাড়ৈ রায়, মাদারীপুর, যার দলিল নং- ৩৫০৬, তারিখঃ ১২/০৪/২০২৩ইং, যার নামপত্তন নং- অঈ(খ) ও মোহসিন উদ্দিন ফকির পূর্ব খাবাসপুর দলিল নং- ৮৩০৮ অঈ(খ) , তারিখ- ০১/০৬/২০২২।

এ বিষয়ে বাবুল কুমার রায় জানান, এই সম্পত্তি আমাদের আমি আমার স্ত্রীর নামে হেবা কবলা দলিল করে দিয়ে জমি বিক্রয় করেছি। তিনি আরও জানান , আমাদের জমির বিষয়ে সরকারের সাথে মামলা চলমান।
ফরিদপুর পৌর ভুমি তহশিলদার টিটো জানান, এই সম্পত্তি সরকারি, বাবুল রায় বিক্রি করতে পারে না। ইতি পূর্বে জাহানারা বেগম দায়িত্বে থাকা অবস্থায় অনেক চেষ্টা করেছিলেন নাম পত্তন করার জন্য কিন্তু পারে নাই। জাহানারা বেগম অন্যত্র বদলী হওয়ার পরে অফিসের সরকারী নথি গোপন করে কাজটা করিয়েছে।

তিনি আরো বলেন, আমি তো কয়েকদিন ধরে এখানে বদলী হয়ে এসেছি এবং নাম পত্তন বাতিল করার জন্য এসিল্যান্ড অফিসে আবেদন করা হয়েছে। একাধিক ব্যক্তিরা জানান, এসি ল্যান্ড অফিসের কালুঙ্গোকে ম্যানেজ করে এ কাজটি করেছে।
এ বিষয়ে সদ্য অবসর প্রাপ্ত (৭ দিন) এসি ল্যান্ড অফিসের কালুঙ্গো নীল মিয়া সরকার জানান, বাবুল রায়ের জমির নামপত্তন যাদের কাছে বিক্রি করা হয়েছে সে বিষয়ে আমি কিছুই জানি না।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এলাকার একাধিক ব্যক্তিরা জানান, আমরা যতদুর জানি এই সম্পত্তি মন্দিরের বা অন্য কারো। বাবুল রায় কিভাবে তার নামে বিএস পরচা তৈরি করেছে আমাদের জানা নেই। তবে আমরা শুনেছি দুই ব্যক্তির নিকট এই সম্পত্তি প্রায় ৩ কোটি টাকায় বিক্রি করে দিয়েছে এবং এর সার্বিক সহযোগীতা করেছে এসি ল্যান্ড অফিসের কালুঙ্গো নীল মিয়া সরকার ।

এ বিষয়ে ফরিদপুর সদর সহকারি ভূমি কমিশনার (এসিল্যান্ড) জিয়াউর রহমান জানান , বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে । তদন্ত চলছে । জমি ক্রয়কৃতদের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে বলা হয়েছে ঐ জমির উপরে যেন কোন স্থাপনা না করা হয় যাচাই বাছাইয়ের তদন্তের আগে ।

বা/খ/রা

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ফরিদপুরে সরকারি জমি নিজ নামে বিএস করে কোটি টাকা বিক্রির অভিযোগ

আপডেট সময় : ০৪:৪১:৪১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩

ফরিদপুরে জেলা প্রশাসকের খাস খতিয়ানের জমি কৌশলে নিজ নামে বিএস-পরচা করে বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেছে।

জানা যায়, বাবুল রায় নামে এক ব্যক্তি ফরিদপুর ১১৬ নং কমলাপুর মৌজা যাহার খতিয়ান নং ৮৫, মালিক বাংলাদেশ সরকার পক্ষে জেলা প্রশাসক ফরিদপুর। মোট জমি দুই দাগে ১.৪৪+৩৬.০০ সর্বমোট ৩৭.৪৪ শতাংশ। এর মধ্যে বাবুল রায়, পিতাঃ হারাধন রায়, বিএস খতিয়ানের মাধ্যমে ৪টি দাগ ব্যবহার করে যাহা ৮২১/ ৮২৬/ ৮২১/ ৯০১/ ৮২২/ ৯০২ দেখিয়েছে। তবে উক্ত জমি বহুবার চেষ্টা করে নাম পত্তন করতে পারে নাই বিগত পৌর ভুমি তহশিলদার জাহানারা বেগম থাকা অবস্থায়।

জাহানারা বেগম উক্ত খতিয়ান রেজিষ্ট্রারে দাগ উল্লেখ করে লাল কালি দিয়ে লিখে গিয়েছিলেন এই জমি সরকারি, কোন অবস্থাতেই কোন ব্যক্তি মালিকানায় নাম পত্তন করা যাবে না। পরবর্তীতে জাহানারা বেগম অনত্র বদলী হয়ে চলে গেলে বাবুল রায় তার নিজ স্ত্রী সীমা রানী দে এর নামে হেবা কবলা দলিল করে দেয়। যাহা তারিখ ১৬/০৬/২০২১ইং, যার দলিল নং- ৬৩০৮। বাবুল রায় স্ত্রীর নামে দলিল হেবা করে দিয়ে দুই জন ব্যক্তির নিকট যথাক্রমে ৫ ও ৭ শতাংশ করে জমি প্রায় ৩ কোটি টাকায় বিক্রি করে দেয়। ক্রয়কৃতরা হলেন কল্যাণ বাড়ৈ রায়, মাদারীপুর, যার দলিল নং- ৩৫০৬, তারিখঃ ১২/০৪/২০২৩ইং, যার নামপত্তন নং- অঈ(খ) ও মোহসিন উদ্দিন ফকির পূর্ব খাবাসপুর দলিল নং- ৮৩০৮ অঈ(খ) , তারিখ- ০১/০৬/২০২২।

এ বিষয়ে বাবুল কুমার রায় জানান, এই সম্পত্তি আমাদের আমি আমার স্ত্রীর নামে হেবা কবলা দলিল করে দিয়ে জমি বিক্রয় করেছি। তিনি আরও জানান , আমাদের জমির বিষয়ে সরকারের সাথে মামলা চলমান।
ফরিদপুর পৌর ভুমি তহশিলদার টিটো জানান, এই সম্পত্তি সরকারি, বাবুল রায় বিক্রি করতে পারে না। ইতি পূর্বে জাহানারা বেগম দায়িত্বে থাকা অবস্থায় অনেক চেষ্টা করেছিলেন নাম পত্তন করার জন্য কিন্তু পারে নাই। জাহানারা বেগম অন্যত্র বদলী হওয়ার পরে অফিসের সরকারী নথি গোপন করে কাজটা করিয়েছে।

তিনি আরো বলেন, আমি তো কয়েকদিন ধরে এখানে বদলী হয়ে এসেছি এবং নাম পত্তন বাতিল করার জন্য এসিল্যান্ড অফিসে আবেদন করা হয়েছে। একাধিক ব্যক্তিরা জানান, এসি ল্যান্ড অফিসের কালুঙ্গোকে ম্যানেজ করে এ কাজটি করেছে।
এ বিষয়ে সদ্য অবসর প্রাপ্ত (৭ দিন) এসি ল্যান্ড অফিসের কালুঙ্গো নীল মিয়া সরকার জানান, বাবুল রায়ের জমির নামপত্তন যাদের কাছে বিক্রি করা হয়েছে সে বিষয়ে আমি কিছুই জানি না।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এলাকার একাধিক ব্যক্তিরা জানান, আমরা যতদুর জানি এই সম্পত্তি মন্দিরের বা অন্য কারো। বাবুল রায় কিভাবে তার নামে বিএস পরচা তৈরি করেছে আমাদের জানা নেই। তবে আমরা শুনেছি দুই ব্যক্তির নিকট এই সম্পত্তি প্রায় ৩ কোটি টাকায় বিক্রি করে দিয়েছে এবং এর সার্বিক সহযোগীতা করেছে এসি ল্যান্ড অফিসের কালুঙ্গো নীল মিয়া সরকার ।

এ বিষয়ে ফরিদপুর সদর সহকারি ভূমি কমিশনার (এসিল্যান্ড) জিয়াউর রহমান জানান , বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে । তদন্ত চলছে । জমি ক্রয়কৃতদের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে বলা হয়েছে ঐ জমির উপরে যেন কোন স্থাপনা না করা হয় যাচাই বাছাইয়ের তদন্তের আগে ।

বা/খ/রা