Deprecated: Optional parameter $avatar declared before required parameter $id_or_email is implicitly treated as a required parameter in /home/banglakhaborbd/public_html/wp-content/themes/Newspaper pro/lib/metabox/user-function.php on line 55
পঞ্চগড়ের ঘটনা ঢাকা ও লন্ডন থেকে মনিটর করা হয়েছে: তথ্যমন্ত্রী - বাংলা খবর
ঢাকা ০৪:৫৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

পঞ্চগড়ের ঘটনা ঢাকা ও লন্ডন থেকে মনিটর করা হয়েছে: তথ্যমন্ত্রী

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১০:৩৯:৫০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ মার্চ ২০২৩
  • / ৪৬২ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

পঞ্চগড় প্রতিনিধি: আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, পঞ্চগড়ে সহিংসতার ঘটনা ঢাকা এবং লন্ডন থেকে মনিটর করা হয়েছে। এটি একটি পরিকল্পিত হামলা উল্লেখ করে তিনি বলেন, শিবিরের বাঁশের কেল্লা ফেসবুক পেজ থেকে উস্কানি ছড়ানো হয়েছে। সাবেক সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা এবং হারুন অর রশিদের ফেসবুক পেজ থেকে নানা ধরণের উস্কানিমুলক বক্তব্য দেওয়া হয়েছে।

এই এলাকার বিএনপি জামায়াত নেতারাও ভেতরে ভেতরে উস্কানি দিয়েছে। তারা শুধু ওই সম্প্রদায়ের ওপর হামলা করেনি। তারা পুলিশের উপর হামলা করেছে, ট্রাফিক বক্স জ্বালিয়ে দিয়েছে, র‌্যাবের গাড়িতে আগুন দিয়েছে, ডিসি অফিসে হামলার চেষ্টা করা হয়েছে।

মন্ত্রী বলেন, রাজাকারের উত্তরসূরীরা পঞ্চগড়ে জ্বালাও পোড়াও, হত্যা, লুটপাট করেছে। ইসলাম কখনো, রসুলুল্লাহ (সা.) কখনো ইসলামের নামে অন্যের ঘরবাড়ি জ্বালানোর কথা বলেনি। মানুষ হত্যা করার কথা বলেনি। ধর্মের নামে লুটতরাজের কথা বলেনি। যারা এসব করেছে, তারা ইসলামের শত্রু। মুক্তিযুদ্ধের সময় রাজাকাররা যেমন ইসলাম রক্ষার নামে মানুষের ঘরবাড়ি জ্বালিয়েছে, ইসলাম রক্ষার নামে মানুষ হত্যা করেছিল, ইসলাম রক্ষার কথা বলে আমাদের মা বোনদের ইজ্জত লুন্ঠন করা হয়েছে। এখানেও তাই করা হয়েছে।

রবিবার (১২ মার্চ) দুপুরে পঞ্চগড়ের আহমদিয়া সম্প্রদায়ের উপর হামলা, বাড়িঘরে ভাংচুর অগ্নিসংযোগ, লুটপাটসহ দুই যুবক হত্যার ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শন শেষে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের বায়তুল আফিয়্যাত মসজিদের সামনে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার ও সাংবাদিকদের সামনে এসব কথা বলেন। মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ তো এখন ডিজিটাল। কে কখন কোথায় ফোন করে, ফোনে কি কথা বলে, কে কাকে কতবার ফোন করেছে, এটা ট্র্যাক করা তো কঠিন কাজ নয়। আমরা জানি কারা কি করেছে। এখানে কিছু স্থানীয় মানুষের সাথে বহিরাগতরা অংশ নিয়েছে। তবে যারা এই ঘটনার সাথে জড়িত তারা যে দলের হোক, যে রংয়ের হোক তাদের পুলিশ অবশ্যই আইনের আওতায় আনবে। বর্তমানে পুলিশের সেই প্রযুক্তি রয়েছে। মাটির নিচ থেকে হলেও তাদের গ্রেপ্তার করা হবে।

আহমদিয়া সম্প্রদায়কে উদ্যেশ্য করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আপনাদের সাথে সংহতি জানাতে আমরা এখানে এসেছি। আপনারা ভয় পাবেন না, আপনাদের সাথে দেশের মানুষ আছে, আমরা আছি, আমাদের দল আছে।

এসময় রেলমন্ত্রী ও পঞ্চগড়-২ আসনের সংসদ সদস্য নূরুল ইসলাম সুজন, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, পঞ্চগড়-১ আসনের সংসদ সদস্য মো. মজাহারুল হক প্রধান, আহমদিয়া সম্প্রদায়ের গণসংযোগ বিভাগের প্রধান আহমদ তবশীর চৌধুরী বক্তব্য রাখেন।

এছাড়া জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম, পুলিশ সুপার এসএম সিরাজুল হুদা, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার সাদাত সম্রাট, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আমিরুল ইসলাম, পঞ্চগড় পৌর মেয়র জাকিয়া খাতুনসহ প্রশাসন ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে কাদিয়ানী সম্প্রদায়ের সালানা জলসাকে কেন্দ্র করে লুটপাট অগ্নি সংযোগ ও সংঘর্ষের ঘটনায় নতুন করে আরো ৪টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ নিয়ে মোট মামলার সংখ্যা দাঁড়ালো ২০টিতে। এর মধ্যে পঞ্চগড় সদর ও বোদা থানায় দুইটি করে মামলা দায়ের হয়েছে। এদিকে গত ২৪ ঘন্টায় এ মামলাগুলোতে আরো ৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ নিয়ে মোট গ্রেপ্তারের সংখ্যা দাঁড়ালো ১৮৭ জনে।

এদিকে ২০টি মামলার মধ্যে পঞ্চগড় সদর থানায় ১৫টি ও বোদা থানায় ৫টি মামলা দায়ের করা হয়। পুলিশের ট্রাফিক অফিস ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ, সরকারি কাজে বাধা দান, আইনশৃঙ্খলার অবনতি ও বিস্ফোরণ ঘটানো, বিভিন্ন সরকারি স্থাপনা ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ, বিশেষ ক্ষমতা আইন সহ বেশ কিছু অভিযোগে পুলিশ বাদী হয়েছে পঞ্চগড়ে সদর থানায় ১৩টি ও বোদা থানায় ৪টি সহ ১৭টি মামলা, র‌্যাবের গাড়ি পোড়ানোয় র‌্যাবের পক্ষ থেকে একটি এবং আহমদীয়া সম্প্রদায়ের উপর হামলা বাড়ি ঘরে লুটপাট অগ্নিসংযোগ ও আহমদিয়া সম্প্রদায়ের একজনকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে পঞ্চগড় সদর থানায় একটি ও বোদা থানায় একটি সহ দুইটি মামলা দায়ের করা হয়। মামলাগুলোতে মোট আসামি করা হয়েছে নামীয়সহ অজ্ঞাত ১২ হাজার জনকে।

গত শুক্রবার (৩ মার্চ) আহমদ নগরে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের তিন দিনব্যাপী বার্ষিক সালানা জলসা বন্ধের দাবিতে সম্মিলিত খতমে নবুওয়াত সংরক্ষণ পরিষদ সমর্থক মুসল্লিরা বিক্ষোভ করেন। তাদের অমুসলিম ঘোষণার দাবিতে শহরে ব্যাপক তাণ্ডব চালায় বিক্ষুব্ধরা। এতে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় পঞ্চগড়। সংঘর্ষে দুই যুবক মারা যান। রাত ৮ টায় ঘোষণা দিয়ে জলসা বন্ধ করা হলেও পরদিন শনিবার গুজব ছড়িয়ে আবারও ওই সম্প্রদায়ের লোকজনের বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুরসহ অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে।

নিউজটি শেয়ার করুন

পঞ্চগড়ের ঘটনা ঢাকা ও লন্ডন থেকে মনিটর করা হয়েছে: তথ্যমন্ত্রী

আপডেট সময় : ১০:৩৯:৫০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ মার্চ ২০২৩

পঞ্চগড় প্রতিনিধি: আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, পঞ্চগড়ে সহিংসতার ঘটনা ঢাকা এবং লন্ডন থেকে মনিটর করা হয়েছে। এটি একটি পরিকল্পিত হামলা উল্লেখ করে তিনি বলেন, শিবিরের বাঁশের কেল্লা ফেসবুক পেজ থেকে উস্কানি ছড়ানো হয়েছে। সাবেক সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা এবং হারুন অর রশিদের ফেসবুক পেজ থেকে নানা ধরণের উস্কানিমুলক বক্তব্য দেওয়া হয়েছে।

এই এলাকার বিএনপি জামায়াত নেতারাও ভেতরে ভেতরে উস্কানি দিয়েছে। তারা শুধু ওই সম্প্রদায়ের ওপর হামলা করেনি। তারা পুলিশের উপর হামলা করেছে, ট্রাফিক বক্স জ্বালিয়ে দিয়েছে, র‌্যাবের গাড়িতে আগুন দিয়েছে, ডিসি অফিসে হামলার চেষ্টা করা হয়েছে।

মন্ত্রী বলেন, রাজাকারের উত্তরসূরীরা পঞ্চগড়ে জ্বালাও পোড়াও, হত্যা, লুটপাট করেছে। ইসলাম কখনো, রসুলুল্লাহ (সা.) কখনো ইসলামের নামে অন্যের ঘরবাড়ি জ্বালানোর কথা বলেনি। মানুষ হত্যা করার কথা বলেনি। ধর্মের নামে লুটতরাজের কথা বলেনি। যারা এসব করেছে, তারা ইসলামের শত্রু। মুক্তিযুদ্ধের সময় রাজাকাররা যেমন ইসলাম রক্ষার নামে মানুষের ঘরবাড়ি জ্বালিয়েছে, ইসলাম রক্ষার নামে মানুষ হত্যা করেছিল, ইসলাম রক্ষার কথা বলে আমাদের মা বোনদের ইজ্জত লুন্ঠন করা হয়েছে। এখানেও তাই করা হয়েছে।

রবিবার (১২ মার্চ) দুপুরে পঞ্চগড়ের আহমদিয়া সম্প্রদায়ের উপর হামলা, বাড়িঘরে ভাংচুর অগ্নিসংযোগ, লুটপাটসহ দুই যুবক হত্যার ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শন শেষে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের বায়তুল আফিয়্যাত মসজিদের সামনে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার ও সাংবাদিকদের সামনে এসব কথা বলেন। মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ তো এখন ডিজিটাল। কে কখন কোথায় ফোন করে, ফোনে কি কথা বলে, কে কাকে কতবার ফোন করেছে, এটা ট্র্যাক করা তো কঠিন কাজ নয়। আমরা জানি কারা কি করেছে। এখানে কিছু স্থানীয় মানুষের সাথে বহিরাগতরা অংশ নিয়েছে। তবে যারা এই ঘটনার সাথে জড়িত তারা যে দলের হোক, যে রংয়ের হোক তাদের পুলিশ অবশ্যই আইনের আওতায় আনবে। বর্তমানে পুলিশের সেই প্রযুক্তি রয়েছে। মাটির নিচ থেকে হলেও তাদের গ্রেপ্তার করা হবে।

আহমদিয়া সম্প্রদায়কে উদ্যেশ্য করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আপনাদের সাথে সংহতি জানাতে আমরা এখানে এসেছি। আপনারা ভয় পাবেন না, আপনাদের সাথে দেশের মানুষ আছে, আমরা আছি, আমাদের দল আছে।

এসময় রেলমন্ত্রী ও পঞ্চগড়-২ আসনের সংসদ সদস্য নূরুল ইসলাম সুজন, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, পঞ্চগড়-১ আসনের সংসদ সদস্য মো. মজাহারুল হক প্রধান, আহমদিয়া সম্প্রদায়ের গণসংযোগ বিভাগের প্রধান আহমদ তবশীর চৌধুরী বক্তব্য রাখেন।

এছাড়া জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম, পুলিশ সুপার এসএম সিরাজুল হুদা, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার সাদাত সম্রাট, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আমিরুল ইসলাম, পঞ্চগড় পৌর মেয়র জাকিয়া খাতুনসহ প্রশাসন ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে কাদিয়ানী সম্প্রদায়ের সালানা জলসাকে কেন্দ্র করে লুটপাট অগ্নি সংযোগ ও সংঘর্ষের ঘটনায় নতুন করে আরো ৪টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ নিয়ে মোট মামলার সংখ্যা দাঁড়ালো ২০টিতে। এর মধ্যে পঞ্চগড় সদর ও বোদা থানায় দুইটি করে মামলা দায়ের হয়েছে। এদিকে গত ২৪ ঘন্টায় এ মামলাগুলোতে আরো ৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ নিয়ে মোট গ্রেপ্তারের সংখ্যা দাঁড়ালো ১৮৭ জনে।

এদিকে ২০টি মামলার মধ্যে পঞ্চগড় সদর থানায় ১৫টি ও বোদা থানায় ৫টি মামলা দায়ের করা হয়। পুলিশের ট্রাফিক অফিস ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ, সরকারি কাজে বাধা দান, আইনশৃঙ্খলার অবনতি ও বিস্ফোরণ ঘটানো, বিভিন্ন সরকারি স্থাপনা ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ, বিশেষ ক্ষমতা আইন সহ বেশ কিছু অভিযোগে পুলিশ বাদী হয়েছে পঞ্চগড়ে সদর থানায় ১৩টি ও বোদা থানায় ৪টি সহ ১৭টি মামলা, র‌্যাবের গাড়ি পোড়ানোয় র‌্যাবের পক্ষ থেকে একটি এবং আহমদীয়া সম্প্রদায়ের উপর হামলা বাড়ি ঘরে লুটপাট অগ্নিসংযোগ ও আহমদিয়া সম্প্রদায়ের একজনকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে পঞ্চগড় সদর থানায় একটি ও বোদা থানায় একটি সহ দুইটি মামলা দায়ের করা হয়। মামলাগুলোতে মোট আসামি করা হয়েছে নামীয়সহ অজ্ঞাত ১২ হাজার জনকে।

গত শুক্রবার (৩ মার্চ) আহমদ নগরে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের তিন দিনব্যাপী বার্ষিক সালানা জলসা বন্ধের দাবিতে সম্মিলিত খতমে নবুওয়াত সংরক্ষণ পরিষদ সমর্থক মুসল্লিরা বিক্ষোভ করেন। তাদের অমুসলিম ঘোষণার দাবিতে শহরে ব্যাপক তাণ্ডব চালায় বিক্ষুব্ধরা। এতে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় পঞ্চগড়। সংঘর্ষে দুই যুবক মারা যান। রাত ৮ টায় ঘোষণা দিয়ে জলসা বন্ধ করা হলেও পরদিন শনিবার গুজব ছড়িয়ে আবারও ওই সম্প্রদায়ের লোকজনের বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুরসহ অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে।