কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি :
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্যাতনের শিকার শিক্ষার্থী ফুলপরী পছন্দের হল বাছাই করেছেন। দেশরত্ন শেখ হাসিনা হল নির্যাতনের শিকার হওয়া এই শিক্ষার্থী সেই হল ছেড়ে পছন্দ করেছেন বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল।
শনিবার (৪ মার্চ) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পাবনা ও কুষ্টিয়া পুলিশের নিরাপত্তায় ক্যাম্পাসে ঢোকেন ফুলপরী। এ সময় তার বাবা আতাউর রহমানও সঙ্গে ছিলেন। এসে তিনি ছাত্র উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে থাকার ইচ্ছা পোষণ করেন।
ফুলপরী বলেন, অভিযুক্তদের সাময়িক বহিষ্কার করলে তারা পরবর্তীতে আবার আমাকে ক্ষতি করতে পারে। এ জন্য তাদের স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করতে হবে। যাতে ভবিষ্যতে কেউ এ ধরনের দুঃসাহস দেখাতে না পারে।
ফুলপরীর বাবা বলেন, তারা আমার মেয়েকে মেরে ফেলতে পারতো। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ, তারা যেন আমার মেয়েকে নিরাপত্তা ও সার্বিকভাবে সহযোগিতা করেন। ফৌজদারি আদালতে এদের শাস্তি হওয়া উচিত।
তিনি আরও বলেন, আর কাউকে যাতে নির্যাতনের শিকার হতে না হয়, সেজন্য অভিযুক্তদের স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করতে হবে।
এ ব্যাপারে প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ বলেন, পাবনা ও কুষ্টিয়া পুলিশের মাধ্যমে ফুলপরীকে নিরাপত্তার সাথে ক্যাম্পাসে নিয়ে আসা হয়েছে। তার সঙ্গে ছিলেন সহকারী প্রক্টর শাহাবুব আলম। ক্যাম্পাসে এসে ফুলপরী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে থাকার ইচ্ছা পোষণ করেন। আমরা ছাত্র উপদেষ্টার মাধ্যমে কথা বলেছি এবং তার পছন্দের হলে সিট বরাদ্দ দেওয়ার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
এর আগে বুধবার (১ মার্চ) বিচারপতি জে বি এম হাসান ও রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ আদেশে অস্থায়ীভাবে বহিষ্কার হয় অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেত্রী সানজিদা চৌধুরী অন্তরাসহ ৫ জনকে। হাইকোর্ট থেকে ভুক্তভোগী যে হলে থাকতে চায় সে হলের আবাসিকতা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, গত ১১ ও ১২ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে দুই দফায় ফুলপরীকে রাতভর নির্যাতন ও বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণের অভিযোগ ওঠে শাখা ছাত্রলীগ সহ-সভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরা, ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের তাবাচ্ছুম ও মোয়াবিয়া, আইন বিভাগের ইসরাত জাহান মীম ও ফাইন আর্টস বিভাগের হালিমা খাতুন উর্মীর বিরুদ্ধে।
ভুক্তভোগীর লিখিত অভিযোগের পর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, হল প্রশাসন ও শাখা ছাত্রলীগ এবং হাইকোর্ট কর্তৃক পৃথক পৃথক তদন্ত কমিটি গঠিত হয়। এ ঘটনায় হাইকোর্টেও রিট হয়। পরে হাইকোর্টের নির্দেশে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসন। এ ঘটনায় প্রতিটি তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে ফুলপরীকে নির্যাতনের সত্যতা প্রমাণিত হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ইতিমধ্যে অভিযুক্তদের হল এবং শাখা ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়।